ঈদুল ফিতরের সম্ভাব্য তারিখ
১৪৪৫ হিজরি মোতাবেক ২০২৪ সালের শাওয়াল মাসের জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক নবচন্দ্র আট এপ্রিল গ্রিনিচ মান সময় ১৮:২০। অর্থাৎ তখন সৌদি আরবের সময় রাত ৯টা ২০ মিনিট। আর বাংলাদেশে রাত ১২টা ২০ মিনিট। অর্থাৎ ৯ এপ্রিল ১২টা ২০ মিনিট। তাহলে দেখা যাক, কোন্ দেশে কোন্ তারিখে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।
সৌদি আরব
যেহেতু নবচন্দ্রের ক্ষণে সৌদি আরবে আট এপ্রিল রাত ৯টা ২০ মিনিট, সেহেতু ৯ এপ্রিল ওই দেশে ঈদ উদযাপিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আবার ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় সৌদির আকাশে বাঁকা চাঁদ এমনভাবে হাসি ছড়াবে যে, তার দর্শন পেতে টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে হবে না, অর্থাৎ সৌদিরা এবার ১ শাওয়ালের চাঁদ খালি চোখেই দেখবে এবং ত্রিশ রোজা পূর্ণ করে ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর উদযাপন করবে।
মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশ
মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার কিছু দেশ সৌদি আরবের একদিন পর রোজা শুরু করেছিল। ওই দেশগুলো সৌদি আরবের সঙ্গেই ঈদ উদযাপন করবে। যেমন, মরক্কো নিশ্চিতভাবে ১০ এপ্রিল ঈদুল ফিতর পালন করবে, অর্থাৎ পৃথিবীর বহু দেশে ত্রিশ রোজা হলেও মরক্কোতে রোজা হবে ঊনত্রিশটি।
ওমানও সৌদির একদিন পর রোজা শুরু করেছিল। ঈদের বিষয়টি নিশ্চিত নয়। তবে সৌদির সঙ্গে ওমানের ঈদ হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল।
বাংলাদেশ
নবচন্দ্রের ক্ষণে বাংলাদেশের সময় ৯ এপ্রিল মধ্যরাত অর্থাৎ বারোটা বিশ মিনিটে (আট এপ্রিল দিবাগত রাত)। তাহলে ৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় কি বাংলাদেশের আকাশে চাঁদ দেখা যাবে?
৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাংলাদেশে যখন সূর্যাস্ত হবে, তখন চাঁদের বয়স ১৮ ঘণ্টা। আকাশ পরিস্কার থাকলে চাঁদ খালি চোখে দেখা যেতে পারে। আবার টেলিস্কোপ ব্যবহার করলে দেখা যাবে, এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।
কিন্তু আমাদের ঈদ-রোজা সৌদি-সাপেক্ষ মনস্তত্বের কারণে বাংলাদেশ হয়ত চাঁদ দেখতে পাবে না। যেহেতু আগেই ঘোষণা হয়ে যাবে যে, ১০ তারিখ সৌদি আরবে ঈদ, তাই ৯ তারিখ সন্ধ্যায় আমরা যেন চাঁদকে দেখতেই পাবো না বা দেখতে চাইবো না। তাহলে এমন সম্ভাবনা প্রবল যে, ত্রিশ রোজা পূর্ণ করে আমরা বাংলাদেশে ১১ এপ্রিল বৃহস্পতিবার ঈদুল ফিতর উদযাপন করব।
তবে কেউ ১০ তারিখ সন্ধ্যায় বাংলাদেশের আকাশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখলে সেটি অনেক বড় আকারের দেখবেন। কারণ তখন চাঁদ মামার বয়স ৪২ ঘণ্টা। আর বাংলাদেশ যদি ৯ এপ্রিল চাঁদ দেখে ১০ এপ্রিল ঈদ উদযাপন করে, সেটি হবে বিরাট এক ঘটনা (যার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ)।
এ বছর ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের একদিন আগে তথা ১০ এপ্রিল ঈদ হতে পারে, তবে নিশ্চিতভাবে বলা যায় না।
লেখক : প্রফেসর ও চেয়ারম্যান, আরবি বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়