তারাবির নামাজে আজ কোরআন মাজিদ খতম দেওয়া হবে। খতম তারাবির সময় কোরআন তেলাওয়াতের ক্ষেত্রে ইমাম সাহেব একবার বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম জোরে পড়েন। সেই সঙ্গে সূরা নাস শেষ করে আবার সূরা বাকারা থেকে কিছু অংশ পড়েন। অনেকেই এটা নিয়ে নানা প্রশ্ন করেন।
মাসয়ালা হলো, খতম তারাবির নামাজে কোনো একটি সূরার শুরুতে উচ্চ আওয়াজে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম পড়তে হয়। কারণ, এটি কোরআন মাজিদের স্বতন্ত্র একটি আয়াত, যা দুই সূরার মাঝে পার্থক্য করার জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। এ জন্য তারাবির নামাজে কোরআন খতম পরিপূর্ণ করতে হলে যেকোনো একটি সূরার শুরুতে উঁচু আওয়াজে বিসমিল্লাহ পড়তে হবে। অন্যথায় খতম অপূর্ণ থেকে যাবে। আর ইমামের জন্য সব নামাজেই সূরা ফাতেহা এবং সব সূরার শুরুতে অনুচ্চস্বরে বিসমিল্লাহ বলা মোস্তাহাব। -ইমদাদুল ফাতাওয়া : ১/৩২৮
বিজ্ঞাপন
অন্যদিকে হাফেজ সাহেবরা রমজান মাসে তারাবির নামাজে কোরআন মাজিদ খতম করার পর শেষ রাকাতে সূর বাকারা থেকে কিছু অংশ পড়ে থাকেন। কোরআন মাজিদ খতম হলে তেলাওয়াত বন্ধ না করে পুনরায় শুরু থেকে কিছু পরিমাণ তেলাওয়াত করে আবার নতুন খতম শুরু করার কথা হাদিসে বলা হয়েছে। সুতরাং এ নিয়মটি নামাজের বাইরের তেলাওয়াতে যেমন মোস্তাহাব তেমনিভাবে নামাজের খতমেও অনুসরণীয়।
অবশ্য ১৯তম রাকাতে খতম করে ২০তম রাকাতে শুরু থেকে পড়ার চেয়ে উত্তম হলো, ১৮তম রাকাতে খতম করে শেষ দুই রাকাতে শুরু থেকে কিছু অংশ তেলাওয়াত করা। যেন প্রথম ও দ্বিতীয় রাকাতে কেরাতের ধারাবাহিকতা বহাল থাকে। -সুনানে জামে তিরমিজি : ২/১৪৩
বিজ্ঞাপন
আরেকটি মাসয়ালা হলো, কোরআন মাজিদ খতম করার ক্ষেত্রে সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার কোনো বিধান শরিয়তে নেই। সাহাবা-তাবেয়িন থেকে এমন কোনো আমলের প্রমাণ নেই। ইসলামি স্কলাররা এই আমলকে অপছন্দ করেছেন। সুতরাং তারাবিতে কোরআন মাজিদ খতমের সময় সূরা ইখলাস তিনবার পড়ার প্রচলন সঠিক নয়। তাই এ থেকে বিরত থাকা এবং অন্য সূরার ন্যায় যথানিয়মে একবারই তেলাওয়াত করা। -ইমদাদুল ফাতাওয়া : ১/৩২৬
হজ এজেন্সি এবং হজযাত্রীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আরও ৮দিন বাড়ানো হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মামুন আল ফারুক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি উভয় মাধ্যমের হজযাত্রীদের নিবন্ধনের সময় আগামী ১৯ ডিসেম্বর থেকে ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে ৩ লাখ টাকা জমা দিয়ে প্রাথমিক নিবন্ধন করা যাবে এবং একই সঙ্গে হজ প্যাকেজের সম্পূর্ণ অর্থ পরিশোধ করে চূড়ান্ত নিবন্ধন করার জন্য সম্মানিত হজযাত্রীকে বিশেষভাবে অনুরোধ করা হলো।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ বিবেচনায় হজ এজেন্সি এবং হজযাত্রীদের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে উক্ত সময় বৃদ্ধি করা হলো। তবে এরপর আর কোনো সময় বৃদ্ধি সুযোগ নেই বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৮ নভেম্বর কাঙ্ক্ষিত হজযাত্রী নিবন্ধন না করায় ১৫দিন সময় বাড়ানো হয়েছিল।
মদিনায় মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করতে আসা হাজার হাজার মুসল্লি প্রতিদিন নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের রওজা মোবারক জিয়ারত করেন। এরই মাঝে কেউ কোনো মূল্যবান বা ছোটখাটো জিনিস হারিয়ে ফেললে তা উদ্ধারে রয়েছে মসজিদের বিশেষ সেবা।
মসজিদে নববিতে হারানো জিনিসপত্র ফিরে পেতে অতিথিরা সরাসরি ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড অফিসে’ রিপোর্ট করতে পারেন। মসজিদের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে ৩৬৬ ও ৩৬৭ নম্বর গেটের কাছাকাছি অবস্থিত এ অফিসে কাজ করছেন বিশেষভাবে নিয়োজিত কর্মীরা। অফিসে কোনো কিছু হারিয়ে গেলে কর্মীরা হারানো সামগ্রীর বিবরণ সংগ্রহ করেন, তাদের কাছে যা পাওয়া গেছে তা মিলিয়ে দেখেন, মিলে গেলে তা ফেরত দিতে সহায়তা করেন।
মসজিদে নববি প্রতিদিন অসংখ্য মুসলিমের প্রাণের গন্তব্য। নামাজ আদায় করতে ও নবী কারিম (সা.)-এর কবর জিয়ারত করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রায় ৫ লক্ষাধিক মুসল্লি প্রতিদিন এখানে সমবেত হন। যাত্রা ও ইবাদতের একাগ্রতায় যেন কোনো বিঘ্ন না ঘটে, সেই লক্ষ্যে ‘লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড অফিস’টি মুসল্লিদের সেবায় কাজ করছে।
মসজিদে নববির বর্তমান আয়তন প্রায় ১০০,০০০ বর্গমিটার। সম্প্রসারণের পর এটি প্রায় ৪ লাখ মানুষের ধারণক্ষমতা অর্জন করেছে। মসজিদে নববির মোট ৪১টি দরজা আছে। যার মাধ্যমে মুসল্লিরা সহজেই মসজিদে প্রবেশ ও প্রস্থান করতে পারেন। এসব দরজার প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন নাম ও গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। প্রবেশদ্বারগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বাবুস সালাম, বাবুল ফাতাহ, বাবুল বাকিসহ আরও অন্যান্য দরজা।
প্রতিদিন মসজিদে নববিতে এত বড় সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতি ও তাদের সুবিধার জন্য বিশাল পরিসরে অত্যাধুনিক অনেক সেবামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
ইউরোপের মধ্যে অস্ট্রিয়া একটি ব্যতিক্রমধর্মী দেশ। যেখানে ১৯১২ সাল থেকে ইসলাম অস্ট্রিয়ায় সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত একটি ধর্ম। জাতিভিত্তিক রাষ্ট্র হয়েও অস্ট্রিয়া ১৯১২ সালে ইসলাম ধর্মকে রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে সেখানে (তখন) বসবাসকারী কয়েক হাজার মুসলিমকে দেশের নাগরিকত্বে অন্তর্ভুক্ত করেছিল।
উসমানীয় সাম্রাজ্য কর্তৃক ১৪৬৩ সাল থেকে ১৮৭৮ সাল পর্যন্ত শাসিত ও ১৯০৮ পর্যন্ত অটোমান অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ বসনিয়া ও হার্জেগোভিনাকে ১৯০৮ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য (১৮৬৭ থেকে ১৯১৮) তাদের অধীনে সংযুক্ত করে।
অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের এই অঞ্চলে ৬ লাখ মুসলমান বাস করতো, যাদের ধর্মীয় অনুশীলনকে রক্ষা করা জরুরি হয়ে দাঁড়ায়। সেই সময় বসনিয়ান মুসলমানরা সম্রাটের দেহরক্ষী হিসেবে কাজ করতেন, ইমামরা সামরিক চ্যাপ্লেন (ধর্মীয় বা আধ্যাত্মিক নেতা) হিসেবে কাজ করতেন। মুসলমানদের ধর্মীয় অনুশীলন রক্ষা সংক্রান্ত উদ্বেগটি ১৮৭৪ সালে সম্পাদিত স্বীকৃতি আইন। ১৮৭৪ যা ধর্মীয় সমাজের আইনি স্বীকৃতি মোতাবেক ১৯১২ সালে অস্ট্রিয়ায় ইসলাম আইনি স্বীকৃতি পায়।
১৯৭১ সালে মুসলমানদের একটি সংস্থা ‘ইসলামি আইন ১৯১২’-এর ধারা মোতাবেক একটি ইসলামিক কমিউনিটি প্রতিষ্ঠা করার জন্য আবেদন করলে, ১৯৭৯ সালে ‘ইসলামিক রিলিজিয়াস অথরিটি ইন অস্ট্রিয়া’ পাবলিক আইনের অধীনে একটি কর্পোরেশন হিসেবে গঠিত হয়।
সংস্থাটি ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষকদের মাধ্যমে দেশটিতে ধর্মীয় শিক্ষার ব্যবস্তা, ইসলামি ধর্মীয় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং তাদের চলমান প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা করাসহ মুসলমানদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বহুবিধ কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। বর্তমানে এটি অস্ট্রিয়ার মুসলমানদের ধর্মীয় বিষয়ের সরকারি প্রশাসনের প্রতিনিধিত্বকারী সর্ববৃহৎ সংস্থা।
এই সংগঠনের ধারাবাহিক তৎপরতায় ২০১৫ সালে অস্ট্রিয়ার পার্লামেন্ট ইসলামি আইন-১৯১২ তে সংশোধনী এনে অস্ট্রিয়ায় গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হয়, এমন করে ইসলাম বিকাশের সুযোগ সম্প্রসারিত করে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯০৮ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্য মুসলিম অধ্যুষিত বসনিয়া এবং হার্জেগোভিনা দখল করে নিলে সেখানকার মুসলিম অধিবাসীরা খ্রিস্টানদের শাসনের অধীনে চলে আসে। এছাড়া প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তিতে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য বিলুপ্ত হলে মুসলিমরা ব্যাপকভাবে নিজ নিজ দেশে ফিরে যায় এবং মাত্র কয়েক শ’ মুসলমান অস্ট্রিয়ায় বসবাস করতে থাকে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ‘ইসলামিক ল’ অনেকটাই অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে।
এর পর বেশ কয়েক বছর মুসলিম নেতারা সরকারের কাছে দেন-দরবার করেন আইনটিতে সংশোধনীর। প্রয়োজনীয় আইনের সুরক্ষা না থাকায় অস্ট্রিয়ায় মুসলিমরা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকরূপে বসবাস করছিল। তাদের দাবি পূরণে ২০১৫ সালে প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে আইনটিকে যুগোপযোগী করা হয়।
আইনের সংশোধনীতে ইসলামের সরকারি স্ট্যাটাস নিশ্চিত করার পাশাপাশি মুসলিমদের অধিকারগুলো সম্প্রসারিত করা হয়। এর ফলে ইসলামি আচার-আচরণ কিংবা মুসলিম উৎসব পালনের জন্য মুসলিমরা কর্মস্থল থেকে ছুটি নিতে পারছেন। এই আইনবলে হাসপাতালে, কারাগারে এবং সশস্ত্রবাহিনীতে অবস্থানকালে মুসলিমরা তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক অনুশাসন পালন এবং হালাল খাবারের অধিকার নিশ্চিত করার সুযোগ পাচ্ছেন। সংশোধিত আইনে ইমাম প্রশিক্ষণের জন্য ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইসলামি অধ্যয়ন প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে।
সংশোধনীতে অস্ট্রিয়ার কোনো ইসলামি গ্রুপের দেশের বাইরে থেকে অর্থায়ন নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি অস্ট্রিয়ার কোনো মসজিদে বিদেশি ইসলামি ধর্মনেতার নেতৃত্ব প্রদান করা হয়েছে। সেই সঙ্গে সব ইমামকে জার্মান ভাষায় কথা বলা এবং ইমামদের ভিয়েনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামি প্রোগ্রাম থেকে উত্তীর্ণ হয়ে অথবা সমমানের অন্যকোনো প্রশিক্ষণে উত্তীর্ণ হয়ে তাদের ‘পেশাগত যোগ্যতা’ প্রমাণ করতে হবে।
বর্তমানে অস্ট্রিয়ায় রোমান ক্যাথলিকদের পরেই ইসলাম হচ্ছে দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্ম। সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অস্ট্রিয়ার মুসলমানরা ব্যাপক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। তা সত্ত্বেও এগিয়ে চলছেন মুসলমানরা।
অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনায় অবস্থিত বিখ্যাত দানিউব নদী। এই নদীর পাড়েই ভিয়েনা ইসলামিক সেন্টার ও মসজিদের অবস্থান। একটি মিনার ও সবুজ রঙের এক গম্বুজের মসজিদটি দেখতে বেশ সুন্দর। বিশাল গম্বুজের নিচে মূল নামাজের স্থান।
মসজিদের সামনে রয়েছে গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা, পাশে ওজুর ব্যবস্থা। পেছন দিকে শিশুদের খেলাধুলার স্থান। রয়েছে নারীদের জন্য প্রবেশের আলাদা পথ। পুরো মেঝেতে কার্পেট পাতা, সাজানো-গোছানো সুন্দর ছিমছাম পরিবেশ। বারান্দায় আলমারিতে বিভিন্ন ইসলামিক বইপত্র সাজানো আছে। বাঁ-পাশে আলাদা কক্ষ।
১৯৬৮ সালে একটি মসজিদ তৈরির জন্য অস্ট্রিয়া সরকারের সহায়তায় দানিউব নদীর কাছে ৮ হাজার ৬০০ বর্গমিটার জমি ক্রয় করে আটটি ইসলামিক রাষ্ট্র। কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে এর নির্মাণ কাজ শুরু হতে বিলম্ব হয়। পরে সৌদি বাদশাহ ফয়সাল বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের আর্থিক সহায়তায় ১৯৭৭ সালের ১ জুলাই মসজিদটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। দুই বছরের বেশি সময়ে এটি সম্পন্ন হয় ১৯৭৯ সালের নভেম্বরে এসে।
১৯৭৯ সালের ২০ নভেম্বর এ বৃহত্তম মসজিদটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন অস্ট্রিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট রুডফ ক্রিসেলগার। মসজিদের গম্বুজটির উচ্চতা ১৬ মিটার এবং ব্যাস ২০ মিটার। মিনারটির উচ্চতা ৩২ মিটার। এ কেন্দ্রটি মসজিদ ছাড়াও ইসলামি শিক্ষা ও ইসলামিক সংস্কৃতি বিকাশে সহায়তা প্রদান করে থাকে।
এই ইসলামি কেন্দ্র ও মসজিদ ছাড়াও রাজধানী ভিয়েনার বাইরে গ্রাস, সালসবব্রুর্গ, লিনস ও ক্লাগেনফুট শহরেও বেশ কয়েকটি মসজিদ আছে।
মজার বিষয় হলো, সেখানকার প্রবাসী বাংলাদেশি মুসলমানদের পরিচালিত পাঁচটি মসজিদ রয়েছে। যেগুলোতে নিয়মিত নামাজ আদায়ের পাশাপাশি কোরআন মাজিদ শিক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।
প্রতিদিন গড়ে ৪-৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মীকে ভিসা দিচ্ছে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাস। আগামী দিনে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়ার এ ধারা সৌদি আরব অব্যাহত রাখবে বলেও জানিয়েছেন ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের উপ-রাষ্ট্রদূত আবদুল আজিজ ফাহাদ এম আল ইব্রাহিম।
রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশকে উপহার হিসেবে ৩৭২ টন কোরবানির গোশত হস্তান্তর উপলক্ষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ নিশ্চয়তা দেন।
‘স্যাক্রিফিসিয়াল মিট ডিস্ট্রিবিউশন প্রজেক্ট’ শিরোনামে রাজধানীর বারিধারাস্থ সৌদি দূতাবাসে উপহারের গোশতের কার্টুনগুলো বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করেন তিনি। পবিত্র হজের সময়ে কোরবানি হওয়া ৪০ হাজার পশুর ৩৭২ টন গোশত বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের জন্য উপহার হিসেবে পাঠিয়েছে সৌদি আরব।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ জামিলসহ বাংলাদেশ সরকারের একাধিক কর্মকর্তা এবং সৌদি দূতাবাসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, এসব গোশত সৌদি আরবের বাদশাহ মোহাম্মদ সালমান বিন আবদুল আজিজ এবং ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের জন্য উপহার। এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যকার সুসম্পর্ককে আরও মজবুত করবে বলে অনুষ্ঠানে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করা হয়।
দূতাবাসের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা জানান, সৌদি আরব থেকে প্রাপ্ত ওই বিশেষ উপহার ৬৪টি জেলার ৯৫টি উপজেলার এতিমখানা, মাদরাসা ও অসহায় মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হবে।
একই অনুষ্ঠানে সৌদি প্রধানমন্ত্রী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে ডেপুটি হেড অব মিশন বলেন, তাদের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সূচি এখনও চূড়ান্ত হয়নি। হওয়া মাত্র জানিয়ে দেওয়া হবে।
বর্তমানে সৌদি আরবে তিন মিলিয়ন বাংলাদেশি কর্মী রয়েছে। গত মাসে বাংলাদেশ থেকে ৮৩ হাজার কর্মী নিয়েছে সৌদি সরকার। যা গত ৩৫ মাসের মধ্যে কোনো একক দেশ হিসেবে সর্বোচ্চ। উপসাগরীয় দেশটি তার ‘ভিশন- ২০৩০’ বাস্তবায়নে দেশজুড়ে মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। ২০৩৪ সালে বিশ্বকাপ ফুটবলের আয়োজক হবে রিয়াদ। সে উপলক্ষে বিউটিফিকেশনসহ বিশাল কর্মযজ্ঞ হবে। এতে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ থেকে বাড়তি জনশক্তি নেবে সৌদি আরব। বাংলাদেশিরাও সেখানে সুযোগ পেতে পারেন।
উল্লেখ্য, গত চার দশক ধরে সৌদি আরবের হজের গোশত বিতরণের কার্যক্রম চলে আসছে। কার্যক্রমটি সফল করতে কাজ করেন ২৫ হাজারের বেশি দক্ষ কর্মী। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিশ্বের ২৫টিরও বেশি দেশের দুর্বল জনগোষ্ঠীর হাতে তুলে দেওয়া হয় কোরবানির এই গোশত।