কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে দেড় কোটি পশু

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন, ছবি : সংগৃহীত

গতবারের চেয়ে এবার ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য পশুর সংখ্যা বেশি প্রস্তুত রয়েছে। খামারি ও প্রান্তিক চাষিরা জানিয়েছে, প্রায় ১ কোটি ৪৫ লাখ কোরবানিযোগ্য পশু প্রস্তুত। ফলে এবার বিদেশি পশুর ওপর নির্ভর করতে হবে না।

গত ৭ বছরের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি, সর্বাধিক পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। আর বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময় ২০২১ সালে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি দেওয়া হয়। ওই বছর মাত্র ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা ঈদুল আজহায় আল্লাহর সন্তুষ্টি আদায়ের নিমিত্তে পশু কোরবানি করে থাকেন। কোরবানিকৃত এসব পশুর বেশিরভাগই দেশের খামারিরা লালন-পালন করে বড় করেন।

এবার কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা প্রায় এক কোটি ৪৫ লাখের ওপরে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

মন্ত্রণালয় সূত্রে আরও জানা গেছে, ২০২৩ সালে সারাদেশে ১ কোটি ৪১ হাজার ৮১২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। যদিও গতবছর সারা দেশে কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ১ কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি।

২০২২ সালে কোরবানি দেওয়া গবাদিপশুর সংখ্যা ছিল ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি। ২০২১ সালে এ সংখ্যা ছিল ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি। ২০২০ সালে ৯৪ লাখ ৫০ হাজার ২৬৩টি। ২০১৯ সালে ১ কোটি ৬১ লাখ ৪ হাজার ২৮১টি। ২০১৮ সালে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৯ হাজার ৭০টি ও ২০১৭ সালে ১ কোটি ৪২ লাখ ১ হাজার ৯৫৬টি পশু কোরবানি করা হয়।

২০২৩ সালে সবচেয়ে বেশি ঢাকা বিভাগে ও ময়মনসিংহ বিভাগে সবচেয়ে কম পশু কোরবানি হয়েছে। মাঠ পর্যায়ের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে ২৫ লাখ ৪৮ হাজার ১৮৪টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৭৭টি, রাজশাহী বিভাগে ২১ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৯টি, খুলনা বিভাগে ৯ লাখ ৪৯ হাজার ৫৮১টি, বরিশাল বিভাগে ৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৭৩টি, সিলেট বিভাগে ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩৯টি, রংপুর বিভাগে ১১ লাখ ৪৯ হাজার ১৮৭টি ও ময়মনসিংহ বিভাগে ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৯০২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।

এর মধ্যে ৪৫ লাখ ৮১ হাজার ৬০টি গরু, ১ লাখ ৭ হাজার ৮৭৫টি মহিষ, ৪৮ লাখ ৪৯ হাজার ৩২৮টি ছাগল, ৫ লাখ ২ হাজার ৩০৭টি ভেড়া ও ১ হাজার ২৪২টি অন্যান্য পশু।

অবশ্য এই হিসেবের বাইরে অনেকে নিজের পালিত গবাদি পশু কোরবানি দিয়ে থাকেন, যা হিসেবে আসে না।

কোরবানি একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। সামর্থ্যবান প্রত্যেক নারী-পুরুষের ওপর কোরবানি ওয়াজিব। কোরবানি দিতে হবে শরিয়ত যে ধরনের পশু পছন্দ করে। যেমন- উট, গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা ইত্যাদি দিয়ে। এ ধরনের পশুকে কোরআন মাজিদের ভাষায় বলা হয় ‘বাহিমাতুল আনআম অর্থাৎ অহিংস্র গৃহপালিত চতুষ্পদ জন্তু।’

ইসলামি স্কলারদের মতে, কোরবানির জন্য উটের বয়স পাঁচ বছর, গরু বা মহিষ দুই বছর, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা এক বছরের হওয়া শর্ত। বয়স কম, কিন্তু দেখতে হৃষ্টপুষ্ট এমন পশু দিয়ে কোরবানি করা জায়েজ হওয়ার পক্ষে বিশেষজ্ঞরা মত দিয়েছেন।

শরিয়তের পরামর্শ হলো, হৃষ্টপুষ্ট, বেশি গোশত, নিখুঁত এবং দেখতে সুন্দর পশু কোরবানি করা। কোরবানির পশু সব ধরনের দোষ-ত্রুটিমুক্ত হওয়া চাই। ভেড়া, দুম্বা, ছাগল এসব পশু একজন কোরবানি করতে পারবেন। উট, গরু, মহিষ সর্বোচ্চ সাতজন কোরবানি করতে পারবেন।