খেলাধুলা ও রসিকতা, ইসলাম কী বলে?
কোরআনে কারিম মানবজাতির হেদায়েতের মূল উৎস, মূল আলো। তাতে মানবজীবনের সফলতার প্রতিটি বিষয় উল্লেখ রয়েছে। কেননা ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা। তাতে মানুষের মন-মেজাজ, চিন্তা-চেতনার প্রতি গভীরভাবে খেয়াল রাখা হয়েছে।
ইসলামে হাসি-উল্লাস, রসিকতা এবং শারীরিক সুস্থতা ও প্রশান্তির জন্য খেলাধুলার অনুমতি রয়েছে। শুধু এতটুকুই নয়, অলসতা দূর করে স্বস্তিবোধ ধরে রাখতে নতুন আমেজ আনার পাশাপাশি উৎসাহ-উদ্দীপনা, শক্তি ও সাহস অর্জন করতে আদেশও দিয়েছে।
কেননা এসব বিষয় জীবন গঠনে বিশাল ভূমিকা রাখে। তবে বিষয়গুলো হতে হবে শরিয়ত সমর্থিত ও অর্থবোধক। অনর্থক ও অবৈধ বিনোদন, খেলাধুলা অবশ্যই বর্জনীয়। তাই ইসলাম অলসতা, কর্মহীনতা, হীনমন্যতা, ভীরুতা পছন্দ করে না। বরং হাস্যোজ্জ্বল, কর্মঠ, সাহসি, দৃঢ়মনা ও প্রবল আত্মবিশ্বাসী হওয়াকে ইসলাম বেশি পছন্দ করে।
কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা চান তোমাদের জন্য সহজ করতে, তিনি তোমাদের জন্য কঠিন করতে চান না।’ -সুরা বাকারা : ১৮৫
আরেক আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, ‘আল্লাহতায়ালা তোমাদের জন্য দ্বীনের মধ্যে কোনো সংকীর্ণতা রাখেননি।’ -সুরা হজ : ৭৮
হজরত আলী (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোনো সাহাবিকে পেরেশান দেখতেন, তখন রসিকতা করে তার মনে আনন্দ দান করতেন। -মিরকাত : ১/২১৮
অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘দুর্বল মুমিন অপেক্ষা সবল মুমিন শ্রেষ্ঠ এবং আল্লাহর কাছে বেশি প্রিয়। (তবে) প্রত্যেকের মধ্যেই কল্যাণ আছে। তোমাকে যা উপকার দেবে সে বিষয়ে প্রলুব্ধ হও, আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো। অক্ষম অকর্মণ্য হয়ো না। কোনো (অবাঞ্ছিত) বিষয়ে আক্রান্ত হলে বলো না, যদি আমি এটা করতাম তাহলে এটা এটা হতো; বরং বলবে আল্লাহর ফয়সালা; তিনি যা চান তা-ই করেন। কারণ ‘যদি’ কথাটা শয়তানের কাজের পথ খুলে দেয়।’ -সহিহ মুসলিম : ২৬৬৪
বর্ণিত হাদিসে চিন্তা ও কর্মশক্তিকে কাজে লাগানোর গভীর শিক্ষা আছে। ভারসাম্যপূর্ণভাবে গোটা বিষয়টি উম্মতের চিন্তা-চেতনায় উপস্থিত করা হয়েছে।
এসব আয়াত ও হাদিস থেকে খুব সহজেই বোঝা যায়, নেক কাজে শক্তি ও স্পৃহা বাড়াতে আনন্দ-ফূর্তি, হাসি–খুশি, রসিকতা, বিনোদন ও খেলাধুলা শরিয়তে একেবারে বর্জনীয় নয়; বরং পছন্দনীয় ও ভালো কাজ।