কোরবানির গোশত বণ্টনের সমাজপ্রথা মানা কি জরুরি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
কোরবানির গোশত, ছবি: সংগৃহীত

কোরবানির গোশত, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কোনো কোনো এলাকায় কোরবানির গোশত বণ্টনের একটি সমাজপ্রথা চালু আছে। তা হলো- এলাকায় যারা কোরবানি করেন, তাদের কোরবানির গোশতের তিন ভাগের একভাগ সমাজে জমা ‎করতে হয়। পরে ওই গোশত নির্দিষ্ট সমাজভুক্ত সবার মাঝে (যারা কোরবানি করেছেন বা করেননি) বণ্টন করা হয়।

সাধারণ দৃষ্টিতে এটি একটি ভালো উদ্যোগ মনে হতে পারে, কিন্তু কোনো সামাজিক প্রথা বা রীতি পালন করার জন্য তা ‎শরিয়তের দৃষ্টিতে শুদ্ধ ও আমলযোগ্য কি না- তাও নিশ্চিত হতে হয়। ভালো নিয়ত থাকলেও শরিয়ত সমর্থন করে না ‎অথবা ইসলামের নীতির সঙ্গে মানানসই নয়- এমন কোনো কাজ করা বা এমন কোনো রীতি অনুসরণের সুযোগ ‎নেই।

বর্ণিত সামাজিক প্রথাটিতে উদ্দেশ্য ভালো হলেও যে পদ্ধতিতে তা করা হয় তাতে শরিয়তের দৃষ্টিতে মৌলিক কিছু আপত্তি ‎রয়েছে। তার অন্যতম হলো, সামাজিক এ প্রথার কারণে সবাই তার কোরবানির এক তৃতীয়াংশ গোশত সমাজের ‎লোকদের হাতে দিতে বাধ্য থাকে এবং এর বিলি-বণ্টন ও গ্রহিতা বাছাইয়ের ক্ষেত্রে শুধু সমাজপতিদের হাত থাকে। ‎গোশত বণ্টনের ক্ষেত্রে এমন বাধ্যবাধকতা শরিয়তসম্মত নয়। কেননা শরিয়তে কোরবানি ও গোশত বণ্টন একান্তই কোরবানিদাতার নিজস্ব কাজ।

ঈদের দিন সম্মিলিতভাবে জামাতে নামাজ আদায় করতে বলা হলেও কোরবানির জন্য কত মূল্যের পশু কিনবে, সে পশু ‎কোথায় জবাই করবে, গোশত কীভাবে বণ্টন করবে- এ বিষয়গুলো কোরবানিদাতার ইচ্ছার ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

‎শরিয়তে কোরবানির কিছু গোশত সদকা করতে উৎসাহিত করা হয়েছে এবং আত্মীয়-স্বজন ও গরীব-দুঃখীদের কোরবানির ‎গোশত দিতে তাকিদ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তা কোরবানিদাতার ওপর অপরিহার্য করা হয়নি। বরং কোরবানিদাতা কী ‎পরিমাণ গোশত নিজে রাখবে, কী পরিমাণ সদকা করবে এবং কাকে কাকে বিলি করবে আর কী পরিমাণ আগামীর ‎জন্য সংরক্ষণ করবে- এগুলো কোরবানিদাতার একান্ত নিজস্ব ব্যাপার এবং ব্যক্তিগতভাবে করার কাজ। এটিকে ‎সামাজিক নিয়মে নিয়ে আসা ঠিক নয়।

শরিয়তের মাসয়ালা জানা না থাকার কারণে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গোশত বণ্টনের বর্ণিত যে পদ্ধতি প্রচলিত- তা পরিহারযোগ্য। এখানে চলমান প্রথাটির কিছু ক্ষতির দিক উল্লেখ করা হলো-

এক. অনেক কোরবানিদাতার পরিবারের সদস্য-সংখ্যা বেশি হওয়ায় অথবা অন্যকোনো যৌক্তিক কারণে নিজ পরিবারের ‎জন্য বেশি গোশত রাখার প্রয়োজন হয়, ফলে সে পরিবারের জন্য বেশি গোশত রাখতে চায়। আবার অনেকে তার ‎কোনো দরিদ্র আত্মীয়কে কোরবানির গোশত দিতে চায়। কিন্তু সামাজিক এই বাধ্যবাধকতার কারণে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ‎সামাজিক রীতি অনুযায়ী কোরবানির এক তৃতীয়াংশ গোশত সমাজে দিতে বাধ্য হয়। অথচ হাদিসে ইরশাদ ‎হয়েছে, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো মুসলমানের সম্পদ তার সন্তুষ্টি ব্যতীত হালাল নয়।’ -মুসনাদে আহমাদ : ২০৬৯৫

দুই. প্রচলিত প্রথায় গোশতদাতা তার দানের অংশটি কাকে দেবে সে স্বাধীনতা হারায়। হয়তো সে তার নিকটাত্মীয় অথবা ‎পরিচিত কাউকে একটু বেশি পরিমাণে দিত, কিন্তু এক্ষেত্রে তার জন্য এমনটি করার সুযোগ থাকে না।

তিন. অনেক মানুষ এমন আছেন, যারা প্রত্যেকের হাদিয়া বা সদকা গ্রহণ করতে চান না। আর শরিয়তও কাউকে সবার ‎হাদিয়া বা সদকা গ্রহণ করতে বাধ্য করেনি। কিন্তু সামাজিক এই রীতির কারণে গোশত গ্রহণকারী প্রত্যেকেই অন্য ‎সবার হাদিয়া বা সদকা গ্রহণ করতে বাধ্য হয়। বলাবাহুল্য এ ধরনের ঐচ্ছিক বিষয়ে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা ‎মোটেই উচিত নয়।

চার. এ ধরনের বাধ্যবাধকতা আরোপের আরেকটি ক্ষতির দিক হলো, সমাজের কিছু মানুষ এমন থাকে, যাদের আয় ‎রোজগার হারাম পন্থায় হয়। সেক্ষেত্রে জেনে বুঝে তাদের কোরবানির গোশত সমাজের সবার ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া ‎হয়। অথচ হারাম উপার্জনের মাধ্যমে কোরবানিকৃত পশুর গোশত খাওয়া জায়েজ নয়।

মোটকথা, শরিয়তের শিক্ষা মোতাবেক প্রত্যেককে তার কোরবানির অংশ দান করার বিষয়ে স্বাধীন রাখতে হবে। প্রচলিত পদ্ধতিতে বা অন্য কোনোভাবে বাধ্যবাধকতা আরোপ করা যাবে না। কোরবানিদাতা নিজ দায়িত্ব ও বিবেচনা মতো যাকে ‎যে পরিমাণ হাদিয়া করতে চায় করবে এবং গরিব-মিসকিনকে যে পরিমাণ সদকা করতে চায় করবে। নবী কারিম ‎সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সময় থেকে শত শত বছর যাবৎ এ পদ্ধতিই চলমান আছে। এই পদ্ধতিই অবলম্বন ‎করা জরুরি। শরিয়ত যা চালু করতে বলেনি এমন কোনো প্রথা চালু করা থেকে বিরত থাকতে হবে। -সহিহ মুসলিম : ১৯৭২

   

সন্তানের কাঁধে চড়ে মায়ের হজ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
সন্তানের কাঁধে চড়ে মায়ের হজ, ছবি: সংগৃহীত

সন্তানের কাঁধে চড়ে মায়ের হজ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছর হজের দিন অর্থাৎ আরাফাতের ময়দান এক হৃদয়স্পর্শী দৃশ্যের সাক্ষী হয়েছে। এক হজযাত্রী তার বৃদ্ধ মাকে কাঁধে নিয়ে ছায়ার খোঁজে পথ চলছেন। এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

সৌদি গণমাধ্যম আল-আখবারিয়ায় প্রচারিত ভিডিওতে দেখা যায়, আরাফাতের ময়দানের এক রাস্তায় একজন হজযাত্রী গরম থেকে বাঁচতে তার মাকে কাঁধে নিয়ে পথ চলছেন। অন্য একজন হজযাত্রী ওই বয়স্ক নারীকে সূর্যের তাপ থেকে রক্ষা করার জন্য তার ওপর ছাতা ধরে হাঁটছেন।

এমনিতে এবার হজের দিন অস্বাভাবিক গরম ছিলো। ফলে হজযাত্রীর বৃদ্ধ মা তীব্র গরমে ক্লান্তবোধ করছিলেন এবং হাঁটতে কষ্ট হচ্ছিল। এ সময় তিনি মাকে কাঁধে বসিয়ে পথচলা শুরু করেন।

প্রকাশিত ভিডিওটি মায়ের প্রতি প্রেম এবং ভক্তির একটি স্বতঃস্ফূর্ত চিত্রকে মানুষের সামনে তুলে ধরেছে। মায়ের প্রতি ছেলের অটল আনুগত্যের প্রতীক এই ছবি। যদিও ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি। কিন্তু গলায় থাকা পরিচয়পত্রের ফিতার রঙ দেখে অনুমান করা হচ্ছে, তারা ভারতীয়। তবে ভিডিওতে দেখা গেছে, মাকে কাঁধে নিয়ে তার চোখে মুখে আনন্দের ছাপ ছিলো স্পষ্ট।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সক্রিয়রা ওই ব্যক্তির কাজের প্রশংসা করে এটিকে মা-বাবার প্রতি সম্মানের একটি সুন্দর অভিব্যক্তি বলে অভিহিত করেছেন। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। অনেকেই ব্যক্তির নিঃস্বার্থ কাজের জন্য তাকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন।

কিছু মানুষ জানিয়েছেন, ছেলের সদয় আচরণ দেখে আল্লাহতায়ালা তাকে রহমত দান করবেন।

আবার কেউ লিখেছেন, অন্তর থেকে ভালোবাসা এমন ভাগ্যবান সন্তানদের জন্য। এমন সন্তান শুধু পরিবারেরই নয়, সমাজের আলোকিত দর্পন। আল্লাহ এই সন্তানের চেষ্টাকে তুমি কবুল করো।

;

আলোচিত ফিলিস্তিনি সাংবাদিক স্ত্রীর বদলি হজ আদায় করলেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল জাজিরার ফিলিস্তিন প্রতিনিধি ওয়ায়েল হামদান ইবরাহিম আদ-দাহদুহ, ছবি: সংগৃহীত

আল জাজিরার ফিলিস্তিন প্রতিনিধি ওয়ায়েল হামদান ইবরাহিম আদ-দাহদুহ, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবের রাজকীয় মেহমান হিসেবে স্ত্রীর বদলি হজ আদায় করলেন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার ফিলিস্তিন প্রতিনিধি ওয়ায়েল হামদান ইবরাহিম আদ-দাহদুহ। আরব বিশ্বে তিনি ‘আবু হামজা’ নামে পরিচিত।

সৌদি সংবাদমাধ্যমকে জানান, এ নিয়ে দুই বার হজ পালন করেছেন তিনি।

যুদ্ধের সময় ফিলিস্তিনের গাজায় দায়িত্ব পালনকালে তিনি পরিবারের অধিকাংশ সদস্য হারিয়েছেন।

তিনি বলেন, ২০২৩ সালে আমি আমার স্ত্রীকে হারিয়েছি। আমার স্ত্রীর রয়ে যাওয়া ফরজ হজ আদায় করতে পেরে আমি আনন্দিত। স্ত্রীকে দেওয়া ওয়াদা রক্ষা করাটা আমার হজে বাড়তি আনন্দ যোগ করেছে। আনন্দের আরেকটি কারণ হলো, এটি পৃথিবীর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ গণ-জমায়েত। মুসলমানদের অধিকাংশই এক স্থানে একই সময়ে হজের উদ্দেশ্যে একত্রিত হোন।

গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা শুরুর পর অত্যন্ত সাহসিকতার সঙ্গে সর্বশেষ আপডেট বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরার জন্য তিনি পৃথিবীব্যাপী প্রসিদ্ধি লাভ করেন।

বিশ্ববাসীর সামনে গাজায় ইসরায়েলের বর্বরতা তুলে ধরার জন্য তিনি একাধিকবার প্রাণনাশের হুমকি পান। এমনকি একবার তার অবস্থান লক্ষ্য করে হামলাও চালায় ইসরায়েলি সেনারা। গুরুতর আহত হলেও ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। এরপর লোকজন তাকে ‘গাজী’ উপাধিতে ভূষিত করে।

গাজায় ইসরায়েলের ভয়াবহ হামলায় তিনি বেঁচে গেলেও হাজার হাজার নিরীহ ফিলিস্তিনির ন্যায় পৃথক পৃথক ইসরায়েলি হামলায় শহীদ হয়- তার ২ ছেলে, মেয়ে, নাতনি এবং স্ত্রী।

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি থেকে তার পরিবারের সদস্যদের লক্ষ্য করে ধারাবাহিক হামলা শুরু হলে তার বড় সন্তান সাংবাদিক হামজা আদ-দাহদুহ (২৭), ভাতিজা আহমদ (৩০) ও মুহাম্মদ আদ-দাহদুহ নির্মমভাবে প্রাণ হারান।

১৬-১৭ জানুয়ারিতে কাতার ও মিসরীয় সাংবাদিকদের সিন্ডিকেটের তৎপরতায় ওয়ায়েল আদ-দাহদুহকে গাজা থেকে প্রথমে মিসর তারপর কাতারে সরিয়ে আনা হয়। এর আগে তার অন্য ৪ সন্তানকে মিসর নেওয়া হয়।

;

দেড় শতাধিক স্বজন হারানো ফিলিস্তিনি নারীকে হজ করালো সৌদি



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হজযাত্রীরা জামারা থেকে কংকর নিক্ষেপ করে ফিরছেন, ছবি: সংগৃহীত

হজযাত্রীরা জামারা থেকে কংকর নিক্ষেপ করে ফিরছেন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ফিলিস্তিনের নারী মাইশা হাসান। গাজায় দখলদার ইসরায়েলি হামলায় পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়সহ প্রায় দেড় শতাধিক স্বজন হারিয়েছেন তিনি। শতাধিক স্বজন হারানোর কষ্ট বুকে বয়ে বেড়ানো এই নারী সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের আমন্ত্রণে পবিত্র হজ পালন করেছেন।

হজ পালনের সুযোগ পেয়ে তিনি স্বস্তি ও শান্তি পেয়েছেন। স্বজন হারানো ব্যাথা ও কষ্ট আগের থেকে অনেকটাই কষ্ট কমে এসেছে তার। সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানের আমন্ত্রণে এক হাজার ফিলিস্তিনি এবার হজ পালনের সুযোগ পেয়েছেন। তাদের অন্যতম হলেন- মাইশা।

মাইশা জানান, তাদের বাড়িতে বোমা ফেলেছিল ইসরায়েল। এ কারণেই এত সংখ্যক স্বজনের প্রাণহানি হয়েছে। বাড়িটিও মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।

বর্তমানে মাইশা হাসান গাজার দক্ষিণাঞ্চলের একজন শরণার্থী। সেখানে যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত বিচ্ছিন্ন। টেলিভিশনের খবর থেকে তিকি শতাধিক স্বজনের মৃত্যু সম্পর্কে জানতে পারেন। মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে মাত্র ২৫ জনের দাফন হয়েছে। বাকিরা ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন। তাদেরকে উদ্ধার করা যায়নি।

এ বছর পবিত্র হজ পালনের পর স্বজন হারানোর বেদনা কিছুটা কমেছে বলে জানান মাইশা। তিনি নিজেকে আল্লাহর কাছে সঁপে দিয়েছেন। হজে গিয়ে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংসতার বিচার চেয়েছেন।

মাইশা হাসান তাকে হজে আমন্ত্রণের জন্য সৌদি বাদশাহকে ধন্যবাদ জানান। গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, হজ তার দুঃখ-বেদনার চক্র ভেঙে দিয়েছে।

উল্লেখ্য, এ বছর প্রায় ২ হাজার ফিলিস্তিনি হজ পালন করেছেন। এর মধ্যে ১ হাজার হলেন গাজার সেসব পরিবারের সদস্য- যারা ইসরায়েলি হামলায় নিহত বা আহত হয়েছেন কিংবা ইসরায়েলের কারাগারে বন্দি আছেন। তাদের হজের যাবতীয় ব্যয় সৌদি সরকার বহন করছে।

;

সৌদিতে হজযাত্রীর মৃতের সংখ্যা ৯০০ ছাড়াল



আন্তর্জাতিক ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সৌদি আরবে চলমান তীব্র তাপদাহে এখন পর্যন্ত ৯২২ জন হজযাত্রীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেইসঙ্গে এখনও নিখোঁজ রয়েছেন অনেকে। 

সৌদির সরকারি প্রশাসন, মক্কার বিভিন্ন হাসপাতাল এবং সৌদির বিভিন্ন দেশের দূতাবাসের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য সহায়তার ভিত্তিতে মৃত হজযাত্রীদের একটি সংখ্যাগত টালি করেছে আন্তর্জাতিক বার্তাসংস্থা এএফপি। সেই টালির সর্বশেষ তথ্য থেকে মৃত হজযাত্রীদের এই সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া গেছে।

গত ১৪ জুন থেকে শুরু হয় এবারের হজের আনুষ্ঠানিকতা। এর আগেই সৌদির হজ মন্ত্রণালয় এক বিশেষ সতর্কবার্তা জারি করে জানায়, হজের সময় ৪৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়াতে পারে সেখানকার তাপমাত্রা। সেইসঙ্গে তীব্র এ তাপদাহ থেকে হজযাত্রীদের নিরাপদ রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি হজযাত্রী ও তাদের এজেন্সিগুলোর প্রতি জারি করে কিছু নির্দেশনাও।

সৌদির আবহওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক সপ্তাহ ধরে মক্কার তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে।

সোমবার মক্কার তাপমাত্রা ছিল ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

জানা গেছে, মৃতদের অধিকাংশই মিসরের নাগরিক। মক্কার প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে, হজের শুরু থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০০ মিসরীয় হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে।

মিসর ছাড়াও জর্ডান, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, সেনেগাল, তিউনিসিয়া, বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকরাও রয়েছেন মৃত হজযাত্রীদের তালিকায়।

সৌদির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এবার হজ করতে গিয়ে মারা গেছেন ২৭ জন বাংলাদেশি। আর হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) বলছে, সৌদিতে এখন পর্যন্ত ৩০ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে ২৭ জনের তথ্য সৌদি সরকার অফিসিয়ালি ঘোষণা করেছে। বাকি তিনজন এখনো নিখোঁজ রয়েছে।

এছাড়া হজের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালন করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছেন বহুসংখ্যক যাত্রী। এই গরমে নিরাপদ আশ্রয়ের বাইরে থাকা এই হজযাত্রীদের সবাই বেঁচে আছেন— এমন নিশ্চয়তা নেই। তাই সামনের দিনগুলোতে মৃত হজযাত্রীদের সংখ্যা আরও বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।

;