তাসবিহে ফাতেমির অবাক করা ফজিলত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
তাসবিহে ফাতেমি, ছবি: সংগৃহীত

তাসবিহে ফাতেমি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি আমল তাসবিহে ফাতেমি, যা মুমিনরা পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আমল করে থাকেন। তাসবিহে ফাতেমি হলো- বিশেষ কিছু জিকির, যা নবী কারিম (সা.) তার কলিজার টুকরা কন্যাকে শিক্ষা দিয়েছেন।

হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, হজরত আলী (রা.) বলেন, একবার ফাতেমা (রা.) জাঁতা (গম পেষার যন্ত্র বিশেষ) ব্যবহারে তার হাতে যে কষ্ট পেতেন তার অভিযোগ নিয়ে নবী কারিম (সা.)-এর কাছে এলেন। কেননা তার কাছে নবী (সা.)-এর নিকট কিছু দাস আসার খবর পৌঁছে ছিল।

কিন্তু তিনি নবী (সা.)-কে পেলেন না। তিনি তার অভিযোগ আম্মাজান আয়েশা (রা.)-এর কাছে বলেন। নবী কারিম (সা.) ঘরে এলে হজরত আয়েশা (রা.) বিষয়টি তাকে জানালেন।

হজরত আলী (রা.) বলেন, রাতে আমরা যখন শুয়ে পড়েছিলাম, তখন তিনি (নবীজি) আমাদের কাছে এলেন। আমরা উঠতে চাইলাম, কিন্তু তিনি বলেন, তোমরা উভয়ে নিজ স্থানে থাকো। তিনি এসে আমার ও ফাতেমার মাঝখানে বসলেন। এমনকি আমি আমার পেটে তার দুই পায়ের শীতলতা উপলব্ধি করলাম। তারপর তিনি বললেন, তোমরা যা চেয়েছ তার চেয়ে কল্যাণকর বিষয় সম্পর্কে তোমাদের কি জানাবো না? তোমরা যখন তোমাদের শয্যাস্থানে যাবে, অথবা বললেন, তোমরা যখন তোমাদের বিছানায় যাবে, তখন তেত্রিশবার ‘সুবহানাল্লাহ’, তেত্রিশবার ‘আলহামদুলিল্লাহ’ এবং চৌত্রিশবার ‘আল্লাহু আকবার’ বলবে। এটা খাদেম অপেক্ষা তোমাদের জন্য অধিক কল্যাণকর। -সহিহ বোখারি : ৫৩৬১

সুবহানাল্লাহ, এই বিশেষ জিকিরগুলো, বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে করার নির্দেশনা হাদিসে পাওয়া যায়, প্রতিটিতেই এই আমলটির বিশেষ ফজিলত আছে। যেমন প্রতি নামাজের পর এই আমল করলে সাগরের ফেনা পরিমাণ গোনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রতি ওয়াক্ত নামাজের শেষে তেত্রিশবার আল্লাহর তাসবিহ (সুবহানাল্লাহ) বা পবিত্রতা বর্ণনা করবে, তেত্রিশবার আল্লাহর তামহিদ (আলহামদুলিল্লাহ) বা আল্লাহর প্রশংসা করবে এবং তেত্রিশবার তাকবির বা আল্লাহর মহত্ত্ব (আল্লাহু আকবার) বর্ণনা করবে আর এভাবে নিরানব্বইবার হওয়ার পর শততম পূর্ণ করতে বলবে ‘লা-ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহ্দাহু লা-শারিকা লাহু লাহুল মুল্কু ওয়ালাহুল হাম্দু ওয়াহুওয়া আলা-কুল্লি শাইয়িন্ ক্বাদির’ অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া প্রকৃত কোনো উপাস্য নেই। তিনি একক ও তার কোনো অংশীদার নেই।

সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী একমাত্র তিনিই। সব প্রশংসা তারই প্রাপ্য। তিনি সব কিছু করতে সক্ষম- তার গোনাহসমূহ সমুদ্রের ফেনারাশির মতো অসংখ্য হলেও ক্ষমা করে দেওয়া হয়। -সহিহ মুসলিম : ১২৩৯

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত কাব ইবনে উজরা (রা.) বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এমন কতগুলো তাসবিহ রয়েছে যার পাঠকারী তার সওয়াব থেকে বঞ্চিত হবে না। প্রত্যেক নামাজের পর সে সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার, আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার এবং আল্লাহু আকবর ৩৪ বার বলবে। -সুনানে নাসায়ি : ১৩৪৯

মাতাফ ও মসজিদে হারামের নিচতলা উমরাকারীদের জন্য সংরক্ষিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: পবিত্র কাবা তাওয়াফ করছেন উমরাকারীরা।

ছবি: পবিত্র কাবা তাওয়াফ করছেন উমরাকারীরা।

  • Font increase
  • Font Decrease

আগের নিয়মে ফিরছে পবিত্র কাবার মাতাফ। এখন থেকে স্বাভাবিক পোশাকে আর মাতাফে (কাবার চার পাশের উন্মুক্ত জায়গাকে মাতাফ বলে) তাওয়াফ করা যাবে না। মাতাফ ও মসজিদে হারামের নিচতলা শুধুমাত্র উমরাকারীদের জন্য সংরক্ষিত। তবে স্বাভাবিক পোশাকে নফল তাওয়াফ মসজিদের হারামের অন্যান্য ফ্লোরে করা যাবে।

রবিবার (৩০ জুন) থেকে এই নিয়ম কার্যকর হয়েছে বলে সৌদি আরবের জননিরাপত্তা অধিদপ্তর ও হারামাইন পরিচালনা পরিষদ ঘোষণা দিয়েছে।

আরব নিউজের খবরে বলা হয়, মাতাফ ও মসজিদে হারামের নিচতলায় এখন থেকে শুধুমাত্র উমরা পালনকারীরা প্রবেশ করতে পারবেন।

এর মাধ্যমে নতুন উমরা মৌসুম শুরু কথা বলা হয়েছে। ঘোষণায় বলা হয়, এর ফলে উমরা পালনকারীরা স্বাচ্ছন্দে কাবা তাওয়াফ করাতে পারবেন।

উল্লেখ, ২০২৪ সালের হজ মৌসুম শেষ হওয়ার পর সৌদি আরবের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয় উমরা ভিসা দেওয়া শুরু করেছে।

করোনার পর থেকে মাতাফে ইহরাম পরিধান ছাড়া কাউকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয় না। অর্থাৎ যারা উমরা পালন করবেন, শুধুমাত্র তারাই মাতাফে গিয়ে পবিত্র কাবা তওয়াফ করতে পারেন।

যদিও স্বাভাবিকভাবে নফল তাওয়াফ মসজিদে হারামের বিভিন্ন ফ্লোরে করার ব্যবস্থা রয়েছে। এমতাবস্থায় অনেকে ইহরামের কাপড় পরিধান করে মাতাফে নামেন এবং নফল তাওয়াফ করেন। এভাবে উমরার নিয়ত ছাড়া ইহরামের কাপড় পরিধান করে নফল তাওয়াফ করতে ইসলামি স্কলাররা নিরুৎসাহিত করেছেন।

তাদের মতে, উমরার নিয়ত ছাড়া ইহরামের কাপড় পরিধান করে নফল তাওয়াফ করা জায়েজ আছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা না মেনে উল্লিখিত কৌশল অবলম্বন করা ঠিক নয়। বরং এটি প্রতারণার মাধ্যমে নিজের আত্মসম্মান বিপন্ন করার মতো একটি বিষয়। তাই এই ধরনের তাওয়াফ করা থেকে বিরত থাকা চাই।

;

হাজিরা মদিনায় যেসব কাজ করেন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মসজিদে নববি থেকে বের হচ্ছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে নববি থেকে বের হচ্ছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মদিনাতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এই মসজিদকে কেন্দ্র করে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পারস্পরিক সহাবস্থানের নীতি ঘোষণা করে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে এক জাতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলে মদিনায় শান্তি স্থাপিত হয়।

চার খলিফার আমলে মদিনাই ছিল দারুল খিলাফত বা রাজধানী (৬৫৬ খ্রি. পর্যন্ত)। হাদিস শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবেও মদিনার সুখ্যাতি ছিল। বায়তুল্লাহ শরিফ জিয়ারত করার পর হাজিদের মদিনায় যেতে হয়।

ফরজ হজ আদায়ের পর বা আগে হাজিরা মদিনায় যান, তারা মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ ও রওজায়ে আতহারে সালাম পেশ করেন। অবসর সময়ে মদিনার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখেন।

ফজর নামাজের পরে বের হলে সবকিছু ভালোভাবে দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। মসজিদে নববির সামনে ও শহরের অন্যান্য রাস্তায় চালকেরা ‘জিয়ারা, জিয়ারা’ বলে হাজিদের ডাকাডাকি করেন ট্যাক্সি ড্রাইভাররা। জিয়ারা মানে ‘ভ্রমণ’। সেখান থেকে দলবেঁধে কিংবা একা যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

উহুদ যুদ্ধের প্রান্তর, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, হজের পর বিপুল সংখ্যক হাজি মদিনায় এসেছেন। মদিনায় হাজিরা ঐতিহাসিক কুবা মসজিদ, দুই কিবলার মসজিদ, খন্দক যুদ্ধের স্থান এবং উহুদ পাহাড় দেখার পাশাপাশি স্থানীয় ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, কেনাকাটা ও মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করে সময় কাটাচ্ছেন।

হাজিরা সাধারণত মসজিদে নববিতে নামাজ শেষে রওজা শরিফে সালাম পেশ করে নফল আমল, জিকির-আজকার ও কোরআন তেলাওয়াত শেষে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের জন্য রওয়ানা হন।

মদিনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে হাজিরা জানান, চমৎকার আয়োজনের কারণে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। এখানকার মানুষজন অত্যন্ত বন্ধুবৎসল। বিভিন্ন স্থান দেখার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকে মসজিদে কুবা। এখানে দুই রাকাত নফল আদায়ের পর, অনেকেই মসজিদ কিবলাতাইনে যান। এ ছাড়া মসজিদে কুবার কাছে রয়েছে মসজিদে জুমা। যেখানে মদিনায় হিজরতের পর প্রথম জুমার নামাজ পড়া হয়।

একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্য তাকওয়ার ভিত্তিতে নির্মিত হয়েছে মসজিদে কুবা। আল্লাহতায়ালা স্বয়ং এ মসজিদের পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন ও এখানে যারা নামাজ আদায় করতেন তাদের প্রশংসা করেছেন।

কেনাকাটা করছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী কারিম (সা.) প্রতি শনিবার, পায়ে হেঁটে অথবা বাহনে চড়ে, মসজিদে কুবায় আসতেন। সহিহ বোখারি : ১১৯৩

এই হাদিসের অনুসরণে অনেকেই মসজিদে নববি থেকে হেঁটে মসজিদে কুবায় যান। হেঁটে যাওয়ার জন্য প্রশস্ত রাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে। পথে রয়েছে ছোট ছোট দোকান, যেখানে খাবার ছাড়াও বিভিন্ন স্যুভেনির বিক্রি করা হয়, আরও রয়েছে প্রচুর খেজুরের দোকান। সেখান থেকে হাজিরা তাদের প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য খেজুর, টুপি, তাসবিহসহ বিভিন্ন জিনিস কেনেন।

মদিনায় হাজিরা উহুদ পাহাড় এবং উহুদ যুদ্ধের স্থান এবং শহিদদের কবর জিয়ারত করেন। হাজিদের পরিদর্শনের জায়গা থেকে বাদ যায় না, মদিনার খেজুরের বাগানও। হাজিরা এসব স্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলেন। সেই সঙ্গে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে মসজিদে নববিকে ঘিরে গড়ে ওঠা বাজারগুলো থেকে প্রয়োজনমতো কেনাকাটা করেন। এভাবে নির্ধারিত আট দিন কেটে যায় হাজিদের।

;

নবীজিকে যে কূপের পানি দিয়ে শেষ গোসল দেওয়া হয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গারস কূপ, মদিনা, ছবি: সংগৃহীত

গারস কূপ, মদিনা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজ শেষে মদিনায় আসা হাজিরা এখানকার ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করছেন। এসব স্থানের মাঝে হাজিদের বিশেষ আগ্রহ গারস কূপকে ঘিরে। দর্শনার্থীরা এই কূপের পানি সংগ্রহ করেন, স্মৃতি হিসেবে ছবি তোলেন।

১৫ শতাব্দী পুরোনো কূপটি কুবা মসজিদের প্রায় দেড় কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে আল-আওয়ালি পাড়ায় অবস্থিত, জায়গাটি মসজিদে নববির দক্ষিণে। বর্তমানে কূপটি সংস্কার করে সংরক্ষণ করা হয়েছে। সংস্কারের পর কূপের চারপাশে সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ হাঁটার জন্য প্রশস্ত রাস্তা বানানো হয়েছে। রয়েছে অজু ও নামাজের জায়গা, এ ছাড়া দর্শনার্থীদের জন্য পানির কল স্থাপন করা হয়েছে- যেন তারা সহজেই পানি সংগ্রহ করতে পারেন।

কূপটি মালিক বিন আনা-নাহাত খনন করেন। তিনি ছিলেন সাহাবি সাদ বিন খাইছামার দাদা। তার ঘরেই (কুবায়) আল্লাহর রাসুল (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকালে অবতরণ করেন। ওই সময় তিনি এই কূপের মালিক ছিলেন। গারস কূপের পানি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে পান করতেন। মৃত্যুর পর নবী করিম (সা.)-কে এই কূপের পানি এনে বরইপাতা মিশ্রিত করে পানি গরম করার পর গোসল দেওয়া হয়।

দর্শনার্থীরা গারস কূপ থেকে পানি সংগ্রহ করছেন, ছবি: সংগৃহীত

এখানে ইংরেজিতে সাইনবোর্ড টাঙানো আছে ‘গারস ওয়েল’ বা গারস কূপ। লোহার নেট দিয়ে আটকানো কুয়াটির চারদিক। এই কূপের পানি বেশ মিষ্টি। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) নিয়মিত এখানে আসতেন। এই কূপের পানি দিয়ে গোসল ও অজু করতেন। এই কূপের পানি পান করতেন। তিনি একসময় হজরত আলী (রা.)-কে ডেকে বলেন, মৃত্যুর পর যেন এই কূপের পানি দিয়ে তার শেষ গোসল করানো হয়। হজরত আলী (রা.) তার কথামতো এখানকার পানি দিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে শেষ গোসল করিয়েছিলেন।

কূপের চারদিকে রয়েছে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) এবং তার সাহাবিদের পদধূলি। এখনও প্রতিদিন প্রচুর দর্শনার্থী কূপটি দেখতে আসেন। কূপটি বর্তমানে সৌদি আরবের একটি ল্যান্ডমার্ক হিসেবে বিবেচিত। সৌদি কমিশন ফর ট্যুরিজম এবং ন্যাশনাল হেরিটেজ বর্তমানে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করে।

এই কূপ ছাড়াও মদিনায় আরও বিখ্যাত দুটি কূপ আছে। একটি বিরে শিফা (শিফা কূপ) ও বিরে উসমান (উসমান রা.-এর কূপ)। বিরে শিফা ছিল মদিনার একটি দূষিত ও বিষাক্ত পানির কূপ। এটি মদিনা থেকে ১০২ কিলোমিটার দূরে বদর যাওয়ার পথে মূল সড়ক থেকে হাতের ডানে সাত কিলোমিটার ভেতরে অবস্থিত। বদর যুদ্ধ থেকে ফেরার পথে পানির সংকট দেখা দিলে এই কূপে রাসুল (সা.) থুথু নিক্ষেপ করে আল্লাহর কাছে দোয়া করেন, পরে এর বিষাক্ত পানি সুপেয় পানিতে পরিণত হয়। এখান থেকেও দর্শনার্থীরা পানি সংগ্রহ করেন।

অন্যদিকে মদিনার অন্যতম সুপেয় পানির উৎস ছিল বিরে উসমান। শুরুতে এই কূপটি মদিনার এক ইহুদির মালিকানাধীন ছিল। সে চড়ামূল্যে কূপটির পানি বিক্রি করত। পরে হিজরতের পর হজরত উসমান (রা.) ইহুদির কাছ থেকে কূপটি কিনে নেন এবং সর্বসাধারণের ব্যবহারের জন্য ওয়াকফ করে দেন। হজরত উসমান (রা.)-এর নামে এই কূপের নামকরণ করা হয় বিরে উসমান।

বিরে উসমান বা উসমানের কূপ এখনো বিদ্যমান। এই কূপের স্বচ্ছপানিও প্রবহমান। সৌদি কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা ওই কূপের চারপাশে গড়ে ওঠা খেজুর বাগানে আজও কূপের পানি দিয়েই সেচকার্য সমাধা করা হয়। প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত থাকা হজরত উসমানের (রা.) এই কূপের আসল নাম ‘বিরে রুমা’ বা রুমা কূপ। কূপটির মালিক রুমা নামক এক ব্যক্তির নামানুসারে এটাকে রুমা কূপ বলা হতো। হজরত উসমান (রা.) ৩৫ হাজার দিরহামের বিনিময়ে কূপটি কিনে রাসুলকে (সা.) বলেন, আমি কূপটি কিনে নিয়েছি এবং আজ থেকে কিয়ামত পর্যন্ত এই কূপের পানি সমস্ত মুসলমানের জন্য উন্মুক্ত করে দিলাম।

;

শিক্ষার্থীদের বোরকা ও হিজাব পরিধানে বাধা নয়: খতিব মুফতি রুহুল আমীন



নিউজ ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
খতিব মুফতি রুহুল আমীন, ছবি: সংগৃহীত

খতিব মুফতি রুহুল আমীন, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলমান এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার্থীসহ কোনো শিক্ষার্থীকেই বোরকা ও হিজাব পরিধানে বাধা দেওয়া যাবে না বলে জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব মুফতি রুহুল আমীন।

রোববার (৩০ জুন) এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার মুকসুদপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্রে (কেন্দ্র কোড : ৩৩৬) মেয়ে পরীক্ষার্থীদের হিজাব, ওড়না ও বোরকা খুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের খতিব, গওহরডাঙ্গা মাদরাসার মুহতামিম ও খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের আমির মুফতি রুহুল আমীন।

এদিন গণমাধ্যমে খাদেমুল ইসলাম বাংলাদেশের জয়েন্ট সেক্রেটারি মুফতি মোহাম্মদ তাসনীমের পাঠানো বিবৃতিতে খতিব মুফতি রুহুল আমীন বলেন, আজ এইচএসসি পরীক্ষার সময় একজন পরিদর্শক মুকসুদপুর সরকারি কলেজ কেন্দ্র পরিদর্শনে আসেন এবং পরীক্ষার হল পরিদর্শনকালে তিনি হিজাব ও বোরকা আবৃত মেয়েদের বোরকা-হিজাব খুলতে বাধ্য করেন। এ সময় তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে নানা কটূকথা বলেন এবং পরবর্তী পরীক্ষার সময় তাদের বোরকা-হিজাব বা বড় উড়না পরিধান না করতে বলেন। তিনি বলেন, পরীক্ষার হলে চেহারা ও চুল খোলা থাকে এমন পোশাক পরিধান করে অংশ নিতে হবে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এমন ঘটনায় পরীক্ষার্থীরা ভীতসন্ত্রস্ত ও মর্মাহত হয়ে যান।

মুফতি রুহুল আমীন বলেন, পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে এমন আচরণ অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং কোনোভাবেই কাম্য নয়।

খতিব মুফতি রুহুল আমীন বিবৃতিতে আরও বলেন, বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ, এদেশের মানুষ ধর্মভীরু; ইসলামের প্রতিটি হুকুম-আহকাম পালনের ব্যাপারে যত্নশীল। আবহমানকাল থেকে মেয়েরা বোরকা-হিজাব পরিধান করে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে আসছে, কখনও কোনো সমস্যা হয়নি। কিন্তু হঠাৎ করে হজরত সদর সাহেব (রহ.) ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মভূমি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মুকসুদপুর সরকারি কলেজে কেন এমন ঘটনা ঘটানো হলো- এটা বোধগম্য নয়। তারা ইসলামের অলঙ্ঘনীয় বিধান পর্দার সঙ্গে কটাক্ষ করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানের অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে পরীক্ষা চলাকালীন সময় দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করতে চায় কি না- এ বিষয়ে সরকার ও সংশ্লিষ্টদের গভীর নজর রাখতে হবে।

শিক্ষার্থীরা যেন বোরকা-হিজাব পরিধান করে পরীক্ষায় অংশ নিতে এবং কোনো ধরনের হয়রানির শিকার হতে না হয়- সে বিষয়ে তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানিয়ে বলেন, যদি বোরকা-হিজাব পরিহিত পরীক্ষার্থীদের কোনো ধরনের হয়রানি করা হয় তাহলে যেকোনো পরিস্থিতির দায়ভার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে।

;