হাজিরা মদিনায় যেসব কাজ করেন

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মসজিদে নববি থেকে বের হচ্ছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে নববি থেকে বের হচ্ছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সর্বপ্রথম মদিনাতে একটি মসজিদ নির্মাণ করেন। এই মসজিদকে কেন্দ্র করে তিনি ইসলাম প্রচারের কাজ শুরু করেন। তিনি জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে পারস্পরিক সহাবস্থানের নীতি ঘোষণা করে একটি চুক্তিপত্রের মাধ্যমে এক জাতির ভিত্তিতে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলে মদিনায় শান্তি স্থাপিত হয়।

চার খলিফার আমলে মদিনাই ছিল দারুল খিলাফত বা রাজধানী (৬৫৬ খ্রি. পর্যন্ত)। হাদিস শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবেও মদিনার সুখ্যাতি ছিল। বায়তুল্লাহ শরিফ জিয়ারত করার পর হাজিদের মদিনায় যেতে হয়।

বিজ্ঞাপন

ফরজ হজ আদায়ের পর বা আগে হাজিরা মদিনায় যান, তারা মসজিদে নববিতে নামাজ আদায়ের পাশাপাশি রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ ও রওজায়ে আতহারে সালাম পেশ করেন। অবসর সময়ে মদিনার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে দেখেন।

ফজর নামাজের পরে বের হলে সবকিছু ভালোভাবে দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। মসজিদে নববির সামনে ও শহরের অন্যান্য রাস্তায় চালকেরা ‘জিয়ারা, জিয়ারা’ বলে হাজিদের ডাকাডাকি করেন ট্যাক্সি ড্রাইভাররা। জিয়ারা মানে ‘ভ্রমণ’। সেখান থেকে দলবেঁধে কিংবা একা যাওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বিজ্ঞাপন
উহুদ যুদ্ধের প্রান্তর, ছবি: সংগৃহীত

সৌদি বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে, হজের পর বিপুল সংখ্যক হাজি মদিনায় এসেছেন। মদিনায় হাজিরা ঐতিহাসিক কুবা মসজিদ, দুই কিবলার মসজিদ, খন্দক যুদ্ধের স্থান এবং উহুদ পাহাড় দেখার পাশাপাশি স্থানীয় ঐতিহাসিক স্থান পরিদর্শন, কেনাকাটা ও মসজিদে নববিতে নামাজ আদায় করে সময় কাটাচ্ছেন।

হাজিরা সাধারণত মসজিদে নববিতে নামাজ শেষে রওজা শরিফে সালাম পেশ করে নফল আমল, জিকির-আজকার ও কোরআন তেলাওয়াত শেষে বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের জন্য রওয়ানা হন।

মদিনার ব্যবস্থাপনা নিয়ে হাজিরা জানান, চমৎকার আয়োজনের কারণে তাদের কোনো সমস্যা হয় না। এখানকার মানুষজন অত্যন্ত বন্ধুবৎসল। বিভিন্ন স্থান দেখার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকে মসজিদে কুবা। এখানে দুই রাকাত নফল আদায়ের পর, অনেকেই মসজিদ কিবলাতাইনে যান। এ ছাড়া মসজিদে কুবার কাছে রয়েছে মসজিদে জুমা। যেখানে মদিনায় হিজরতের পর প্রথম জুমার নামাজ পড়া হয়।

একমাত্র আল্লাহতায়ালাকে রাজি-খুশি করার জন্য তাকওয়ার ভিত্তিতে নির্মিত হয়েছে মসজিদে কুবা। আল্লাহতায়ালা স্বয়ং এ মসজিদের পক্ষে সাক্ষী দিয়েছেন ও এখানে যারা নামাজ আদায় করতেন তাদের প্রশংসা করেছেন।

কেনাকাটা করছেন হাজিরা, ছবি: সংগৃহীত

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘নবী কারিম (সা.) প্রতি শনিবার, পায়ে হেঁটে অথবা বাহনে চড়ে, মসজিদে কুবায় আসতেন। সহিহ বোখারি : ১১৯৩

এই হাদিসের অনুসরণে অনেকেই মসজিদে নববি থেকে হেঁটে মসজিদে কুবায় যান। হেঁটে যাওয়ার জন্য প্রশস্ত রাস্তার ব্যবস্থা রয়েছে। পথে রয়েছে ছোট ছোট দোকান, যেখানে খাবার ছাড়াও বিভিন্ন স্যুভেনির বিক্রি করা হয়, আরও রয়েছে প্রচুর খেজুরের দোকান। সেখান থেকে হাজিরা তাদের প্রিয়জনকে উপহার দেওয়ার জন্য খেজুর, টুপি, তাসবিহসহ বিভিন্ন জিনিস কেনেন।

মদিনায় হাজিরা উহুদ পাহাড় এবং উহুদ যুদ্ধের স্থান এবং শহিদদের কবর জিয়ারত করেন। হাজিদের পরিদর্শনের জায়গা থেকে বাদ যায় না, মদিনার খেজুরের বাগানও। হাজিরা এসব স্থান পরিদর্শনের পাশাপাশি স্মৃতি হিসেবে ছবি তুলেন। সেই সঙ্গে ঘরে ফেরার প্রস্তুতি হিসেবে মসজিদে নববিকে ঘিরে গড়ে ওঠা বাজারগুলো থেকে প্রয়োজনমতো কেনাকাটা করেন। এভাবে নির্ধারিত আট দিন কেটে যায় হাজিদের।