আল্লাহর সঙ্গ অনুভব করার লাভ



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল্লাহর স্মরণে গোনাহ কমে, ছবি: সংগৃহীত

আল্লাহর স্মরণে গোনাহ কমে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সর্বাবস্থায় ‘আল্লাহতায়ালা আমার সঙ্গে আছেন’- এই কল্পনা ধরে রাখার চেষ্টা করা। আলেমরা বলেন, প্রত্যেক নামাজের পর দুই থেকে পাঁচ মিনিটের জন্য আল্লাহর সান্নিধ্যের মোরাকাবা করলে এই অনুভূতি জন্মায়। মোরাকাবা এভাবে করা, চোখ বন্ধ করে মনে মনে ভাবা, ‘আমি যেখানেই থাকি না আল্লাহতায়ালা আমার সঙ্গে আছেন।’ অথবা এই আয়াতের বিষয়বস্তু নিয়ে চিন্তা করা, ‘তিনি তোমাদের সঙ্গে আছেন, যেখানেই তুমি থাকো না কেন।’ -সূরা মুজাদালা : ০৭

নির্জন স্থান হোক অথবা লোকালয়, শহর হোক অথবা জঙ্গল-মরুভূমিত, আবাদ-জনপদ হোক অথবা জনশূন্য পাহাড়, প্রান্তর বা গুহা, যেখানেই হোক না কেন আল্লাহর দৃষ্টি ও জ্ঞান থেকে কেউ গোপন থাকতে পারে না। এভাবে নিয়মিত কিছুদিন করতে পারলে- ইনশাআল্লাহ ধীরে ধীরে আল্লাহর সান্নিধ্যের সার্বক্ষণিক অনুভূতি অন্তরে বসে যাবে এবং গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হবে।

অভিজ্ঞ আলেমরা আরও বলেন, যখন গোনাহ করতে মন চাইবে, তখন নিজেকে নিজে বলবেন, ‘আল্লাহকে ভয় করো।’ অথবা নিজেকে বলবেন, ‘আমি আল্লাহকে ভয় করি।’

এ বিষয়ে আমরা অনেক হাদিস জানি। প্রসিদ্ধ এক হাদিস আছে যে, ‘আল্লাহর ভয়ে ভীত বান্দা কেয়ামতের দিন আরশের ছায়ায় স্থান পাবে। হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এবং এমন ব্যক্তি (আরশের নিচে ছায়া পাবে) যাকে অভিজাত সুন্দরী কোনো রমণী প্রস্তাব দেওয়া সত্ত্বেও সে বলে, আমি আল্লাহকে ভয় করি।’ -সহিহ বোখারি : ১৪২৩

এক্ষেত্রে সহিহ বোখারিতে ৩ জনের ঘটনা সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। যারা একটি গুহায় আটকা পড়ে। তাদের একজন এই বলে দোয়া করল, ওগো আল্লাহ! আমার এক চাচাত বোন ছিল। আমি তার প্রেমে মত্ত ছিলাম। সে দোয়া করতে যেয়ে আল্লাহর কাছে নিজের অপরাধ স্বীকার করে বলে, আমি তার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। আমি তাকে কুপ্রস্তাব দিলাম। কিন্তু সে অস্বীকার করল। একবার সে অভাবে পড়ল। তাই আমার কাছে টাকা চাইতে আসল। আমি তাকে কুকর্মের বিনিময়ে প্রয়োজনীয় দিনার দিতে রাজি হলাম। সেও প্রস্তাবে রাজি হয় এবং যখন আমি খারাপ কাজ করার জন্য প্রস্তুতি নেই; ঠিক তখনই আমার চাচাতো বোন বলে উঠল, ‘আল্লাহকে ভয় করো।’

ওগো আল্লাহ! তার এই কথার প্রভাবে এবং আপনার ভয়ে আমি সেই কাজ থেকে সরে আসি। আর তার থেকে টাকাটাও আর ফেরত নেইনি। আমার এই কাজ যদি আপনার জন্য হয়ে থাকে তাহলে পাথরটা একটু খুলে দেন। আল্লাহতায়ালা পাথরটা একটু খুলে দিলেন। তাহলে বুঝা গেল, এটা একটা কার্যকর আমল।

দয়াময় আল্লাহর প্রতি ভয় পোষণ করা মুমিনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় বিষয়। এটা ঈমানের বৈশিষ্ট্যসমূহের মাঝে অন্যতম। সুরা আল ফাতিরের ২৮ নম্বর আয়াতে আল্লাহ বলেন, আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই কেবল তাকে ভয় করে। নিশ্চয় আল্লাহ পরাক্রমশালী ক্ষমাময়। যে ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে কেউ তার ক্ষতি করতে পারে না। আর যে আল্লাহ ছাড়া অন্যকে ভয় করে কেউ তার উপকার করতে পারে না।

কারও অন্তরে যখন আল্লাহভীতি সৃষ্টি হয়, তখন তা প্রবৃত্তির মন্দ তাড়না ও চাহিদাগুলোকে জ্বালিয়ে নিঃশেষ করে দেয় এবং এর ফলে তার মন থেকে দুনিয়ার মোহ কমে যায়।

হিজরি নববর্ষের সূচনা যেভাবে



এইচ এম মনিরুজ্জামান, অতিথি লেখক, ইসলাম
হিজরতের ঘটনাকে স্মারক বানিয়ে হিজরি সাল প্রবর্তিত হয়, ছবি: সংগৃহীত

হিজরতের ঘটনাকে স্মারক বানিয়ে হিজরি সাল প্রবর্তিত হয়, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রাচীনকাল থেকেই সন গণনা প্রচলিত। আরবদের মধ্যে গোত্রগত বিভাজনের কারণে নানা ধরনের বর্ষ গণনা করা হতো। তবে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য কোনো সাল বা বর্ষ ছিল না। বিভিন্ন প্রকারের এসব সনের মধ্যে হজরত নুহ (আ.)-এর বন্যা সন, ইয়েমেনের খ্রিস্টান বাদশাহ আবরাহা কর্তৃক কাবাঘর ধ্বংসের জন্য প্রেরিত হস্তিবাহিনীর নামে আমুল ফিল, আমুল ফুজ্জার, আমুল ফাতহ, হবুতি, লুই এবং খসরু সন উল্লেখযোগ্য।

এ ছাড়া আরবরা বণিক ছিল বিধায় আন্তর্জাতিক লেনদেনের ক্ষেত্রে রোমান সনকে অনুসরণ করত। ব্যাবেলি সন চালু হয় সম্রাট বুখতে নসরের জন্ম তারিখ থেকে। মিসর ত্যাগ করে বনি ইসরাঈল যেদিন মুক্ত হয়, সে দিন থেকে তাদের সন গণনা শুরু হজরত ঈসা (আ.)-এর জন্মদিন থেকে খ্রিস্টাব্দ বা ইংরেজি সনের প্রচলন।

গুপ্ত সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ও উজ্জয়িনীর কিংবদন্তি রাজা বিক্রমাদিত্য খ্রিস্টপূর্ব ৫২ অব্দে ভারতবর্ষে বিক্রমাব্দ প্রচলন করেন। রোমীয়, ব্যাবেলীয়, ইংরেজি, ইরানি, হিন্দুস্তানি প্রত্যেকটি সনের সূচনাতে কোনো না কোনো ঐতিহাসিক ঘটনা আছে।

হিজরতের ১৭ বছর পর ইসলামের দ্বিতীয় খলিফা হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) যখন রাষ্ট্র ক্ষমতায়, তখন অনেক নতুন ভূখণ্ড ইসলামি খেলাফতের অন্তর্ভুক্ত হয়। রাষ্ট্রীয় কাগজপত্র ইত্যাদিতে সাল-তারিখ উল্লেখ না থাকায় অসুবিধা হতো। আর তখন কুফার গভর্নর ছিলেন হজরত আবু মুসা আল আশয়ারি (রা.)। তাই তিনি প্রশাসনিক কাজের অসুবিধার কথা জানিয়ে সন ও তারিখ নির্ধারণের আবেদন করেন। সে আবেদনকে গুরুত্ব দিয়ে এবং প্রশাসনিক কাজের সুবিধার্থে হজরত ওমর (রা.) একটি পরামর্শ সভার আয়োজন করেন।

যেহেতু নবী কারিম (সা.)-এর হিজরতেই ইসলামের পূর্ণতা লাভ, কল্যাণধর্মী রাষ্ট্র গঠন এবং মানব ইতিহাসে নবদিগন্তের সূচনা করে, তাই সে সভাতেই প্রিয় নবী (সা.)-এর হিজরতের বছরকে সন গণনার বছর হিসেবে নির্ধারণের জন্য হজরত আলী (রা.) পরামর্শ দেন। পবিত্র মহররম মাস থেকে ইসলামি বর্ষ হিজরি সালের শুরু করা এবং জিলহজ মাসকে সর্বশেষ মাস হিসেবে নেওয়ার পরামর্শ দেন হজরত উসমান (রা.)। সর্বসম্মতিক্রমে তা গৃহীত হয়। আর তখন থেকেই ইসলামি বর্ষ বা হিজরি সন গণনার শুরু।

নবীজি (সা.)-এর মক্কা মোকাররমা থেকে মদিনা মোনাওয়ারায় হিজরতের ঘটনা মুসলমানদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। হিজরত মানে ছেড়ে যাওয়া, পরিত্যাগ করা; দেশান্তর হওয়া ও দেশান্তরিত করা। পরিভাষায় হিজরত হলো ধর্মের জন্য এক স্থান ত্যাগ করে অন্য স্থানে চলে যাওয়া। সর্বোপরি মহান আল্লাহর আদেশ পেয়ে নবুওয়তের ত্রয়োদশ বর্ষে ৬২২ খ্রিস্টাব্দের ১২ সেপ্টেম্বর হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) মক্কা মোকাররমা থেকে মদিনা শরিফের উদ্দেশে হিজরত করেন। ২৩ সেপ্টেম্বর মোতাবেক ৮ রবিউল আওয়াল মদিনা মোনাওয়ারার পার্শ্ববর্তী কোবায় পৌঁছান তিনি। ২৭ সেপ্টেম্বর মোতাবেক ১২ রবিউল আওয়াল জুমার দিনে নবী কারিম (সা.) মদিনা মোনাওয়ারায় প্রবেশ করেন। তিনি যখন মদিনা শরিফে প্রবেশ করেন, তখন তাকে বরণ করার জন্য তার উটের দড়ি নিয়ে আনসারি সাহাবিদের মাঝে টানাটানি শুরু হলো। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘উট ছেড়ে দাও। যেখানে সে বসবে, সেটাই হবে আমার বাসস্থান। তাকে এমনই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

উট বনু নাজ্জার গোত্রের এলাকায় গিয়ে দাঁড়াল, যা ছিল হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর নানার বাড়ি। এই গোত্রের হজরত আবু আইয়ুব আনসারি (রা.)-এর বাড়ির সামনে গিয়ে উট বসে পড়ল। এখানেই নবী কারিম (সা.)-এর বাসস্থান নির্ধারণ করা হলো। এখানেই গড়ে উঠেছে মসজিদে নববি ও মদিনাতুর রাসুল বা রাসুলের শহর। -আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া

মূলত, হিজরতের ঐতিহাসিক স্মৃতিবিজড়িত ঘটনা স্মারক বানিয়ে হিজরি সাল প্রবর্তিত হয়।

;

নতুন গিলাফে ঢেকেছে প্রাণের কাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
পবিত্র কাবায় জড়ানো নতুন গিলাফের নকশা, ছবি: সংগৃহীত

পবিত্র কাবায় জড়ানো নতুন গিলাফের নকশা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হিজরি নববর্ষের প্রথম রাতে পবিত্র কাবাঘরে নতুন গিলাফ পরানো হয়েছে। দক্ষ প্রযুক্তিবিদ এবং কারিগরদের একটি বিশেষ দল কাবাঘরে নতুন গিলাফ প্রতিস্থাপন করেছেন। এবারই প্রথমবারের মতো গিলাফ পরিবর্তনের কাজে কয়েকজন নারী কর্মী অংশ নিয়েছেন।

শনিবার (৬ জুলাই) এশার নামাজের পর গিলাফ পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হয়। পুরো কার্যক্রমটি তত্ত্বাবধান করে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদের সাধারণ কর্তৃপক্ষ।

বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত প্রকৌশলী এবং প্রযুক্তিবিদদের তত্ত্বাবধানে ১৫৯ জন দক্ষ কারিগরের সমন্বয়ে গঠিত বাদশাহ আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সের একটি দল গিলাফ পরিবর্তনের কাজ করেছেন। পুরোনো গিলাফ সরিয়ে নতুন গিলাফ কাবার ওপর পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে।

গিলাফ পরিবর্তনের জন্য কারখানা থেকে গিলাফটি বিশেষ ট্রাকে করে কাবা প্রাঙ্গণে আনা হয়। পরে পুরোনো গিলাফ থেকে সোনার সূচিকর্ম করা টুকরাগুলো সরিয়ে নতুন গিলাফ লাগানোর কাজ শুরু হয়।

প্রথমবারের মতো গিলাফ পরিবর্তনের কাজে কয়েকজন নারী কর্মী অংশ নিয়েছেন, ছবি: সংগৃহীত

গিলাফে স্বর্ণের এমব্রয়ডারি করা ৫৩টি টুকরা রয়েছে। যার মধ্যে বেল্টের জন্য ১৬টি, বেল্টের নীচে সাতটি, চারটি কোণার টুকরো, ১৭টি ঝুলন্ত, পাঁচটি দরজার পর্দার জন্য, রুকনে ইয়েমেনির জন্য একটি এবং দুটি টুকরা হাজরে আসওয়াদ ও মিজাবে রহমতের জন্য। হাতে কাজ করা স্বর্ণের সুতার সূচিকর্ম সম্পূর্ণ করতে প্রায় ১২০ দিন সময় লাগে। এ কাজে যুক্ত রয়েছেন দুই শতাধিক দক্ষ কর্মী।

পবিত্র কাবার গিলাফ তৈরিতে মোট ১২০ কেজি স্বর্ণ, ১০০ কেজি রুপা এবং ১ হাজার কেজি প্রাকৃতিক সিল্ক ব্যবহার করা হয়। গিলাফটির ওজন ১ হাজার ৩৫০ কেজি, উচ্চতা ১৪ মিটার মিটার। গিলাফের চারটি পৃথক দিক এবং দরজার জন্য আলাদা একটি পর্দা রয়েছে। যেখানে বাইরে থেকে কালো কাপড়ের ওপর স্বর্ণের সুতা দিয়ে বোনা কোরআনের আয়াত ও অন্যান্য নকশা শোভা পায়। গিলাফের সব কাজ শেষ করতে ছয় থেকে আট মাস সময় লাগে।

হজযাত্রীদের ভিড়ে গিলাফকে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া থেকে রক্ষার জন্য গত ২২ মে পবিত্র হজের আগে গিলাফের নীচের অংশ ৩ মিটার ওপরে উঠিয়ে রাখা হয়।

আগে হজের দিন (৯ জিলহজ) কাবার গিলাফ বদলানো হতো। কয়েক বছর ধরে এ রীতিতে পরিবর্তন এসেছে। হারামাইন পরিচালনা পরিষদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হিজরি বছরের প্রথম দিন মহররমের কাবার গিলাফ পরিবর্তন করা হয়।

দুই পবিত্র মসজিদের ধর্মীয় বিষয়ক প্রেসিডেন্ট শায়খ আবদুর রহমান আস-সুদাইস জানিয়েছেন, রাজকীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে।

এর আগে গত ১৮ জুন সৌদি বাদশাহর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কাবাঘরের সদ্যঃপ্রয়াত প্রধান রক্ষক শায়খ আবদুল মালিক আল-শায়বির কাছে নতুন গিলাফ হস্তান্তর করা হয়। বর্তমানে প্রধান রক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শায়খ আবদুল ওয়াহাব বিন জয়নুল আবেদিন আল-শায়বি।

;

এক সপ্তাহে নবীর রওজায় ৫১ লাখ জিয়ারতকারী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা

রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ পড়ছেন মুসল্লিরা

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র হজের আগে-পরে হজযাত্রীদের হৃদয়ের আয়নায় উঁকি দিতে থাকে নবীজির শহরের নাম- মদিনা মোনাওয়ারা। এ নগরীর পরতে পরতে নবীজির স্মৃতি বিদ্যমান। মসজিদে কুবা, উহুদ পাহাড়, খন্দক যুদ্ধে পরিখা খননের ইতিহাস, রহমতের স্তম্ভ, রিয়াজুল জান্নাত ইত্যাদি জায়গায় স্বপ্নে নয়, বাস্তবে সশরীরে ডুব দেয় নবীপ্রেমিক মুমিনরা। প্রেম, ভালোবাসা আর শ্রদ্ধাবোধে ভরে যায় মন। এবারও হজের আগে যারা মদিনা এসেছেন, তারা মসজিদে নববিতে গিয়ে নামাজ পড়ছেন। জেয়ারত করেছেন। মদিনার ঐতিহাসিক স্থানগুলো ঘুরে ঘুরে হৃদয়কে শীতল করেছেন।

এরই ধারাবাহিকতায় হজের পর গত এক সপ্তাহে ৫১ লাখের বেশি জিয়ারতকারী মসজিদে নববিতে আগমন করেছেন ও নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের পবিত্র রওজা মোবারক জিয়ারত করেছেন। মসজিদে নববি কর্তৃপক্ষের বরাতে এই তথ্য জানিয়েছে সৌদি সংবাদমাধ্যম এসপিএ।

মসজিদে নববিতে নামাজ পড়ছেন মসুল্লিরা

খবরে বলা হয়েছে, মসজিদে নববি বিষয়ক জেনারেল অথোরিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এক সপ্তাহে ৫১ লাখ ৭ হাজার ৯৩৩ জন জিয়ারতকারী মসজিদে নববিতে আগমন করেছেন।

এর মধ্যে অনেকেই নবী কারিম (সা.)-এর রওজা জিয়ারত করেছেন এবং ২৫ লাখ ৯ হাজার ৪৫৯ জন নারী ও পুরুষ রিয়াজুল জান্নাতে নামাজ আদায় করেছেন।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এক সপ্তাহে ১৫৭০ টন জমজমের পানি বিতরণ করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় রোজাদারদের মাঝে ১৪ হাজার ৮২২ প্যাকেট ইফতার বিতরণ করা হয়েছে।

মসজিদে নববীর পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রতিনিয়ত জীবাণুনাশক ব্যবহার করা হচ্ছে। মসজিদ এবং আঙ্গিনা পরিষ্কার করার জন্য ১৬ লাখ ৮৪ হাজার ৩৪৬ লিটার ডিটারজেন্ট ব্যবহার করা হয়েছে।

;

হালাল ফুড মার্কেট শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
হালাল ফুড মার্কেট শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত, ছবি: সংগৃহীত

হালাল ফুড মার্কেট শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

হালাল প্রোডাক্ট রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে শীর্ষ দশটি দেশের ৮টিই অমুসলিম দেশ। অপরদিকে আমদানিকারক দেশ হিসেবে শীর্ষ থাকা ১০টি দেশের ৮ম বাংলাদেশ। আর ভোক্তাদের চাহিদা হিসেবে বাংলাদেশে হালাল কনজ্যুমারের চাহিদা বেশ তুঙ্গে। এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, হালাল কনজ্যুমারের দেশ হিসাবে শীর্ষ ৩ দেশের একটি বাংলাদেশ। বাংলাদেশে হালাল একটি বড় মার্কেট। সুতরাং আমাদের এমনভাবে বিজনেস কৌশল তৈরি করতে হবে, যেন আমরা অদূর ভবিষ্যতে হালাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে পরিণত হতে পারি। এজন্য দরকার হালাল সার্টিফিকেশন।

শুক্রবার (৫ জুলাই) রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় আইএফএ কনসালটেন্সির উদ্যোগে ‘হালাল ফুড মার্কেট: বৈশ্বিক বাজার এবং শরিয়াহ পর্যালোচনা’ শীর্ষক বিশেষ কর্মশালায় এসব কথা বলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর এবং বিএসটিআই হালাল ইন্সপেকশন টিমের সদস্য মো. আরিফুল ইসলাম।

দেশের আলোচিত শরিয়াহ কনসালটেন্সি ফার্ম আইএফএ কনসালটেন্সির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এই কর্মশালায় ছাত্র, ব্যবসায়ী ও আলেমসহ নানা পেশার মানুষজন উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালায় হালাল ফুড, হালাল ট্যুরিজম, হালাল লাইফস্টাইলসহ হালাল অর্থনীতির নানা সেক্টর নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিপার্টমেন্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বিভাগের অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রফেসর মো. আরিফুল ইসলাম বাংলাদেশসহ বিশ্বজুড়ে হালাল ফুডের সার্টিফিকেশন মার্কেটের ব্যাপ্তি এবং প্রসার নিয়ে বিশদ তথ্য তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে হালাল ফুডের মার্কেট ভলিয়ম হলো- ২৪৬৭ বিলিয়ন ডলারের অধিক। এর গ্রোথ রেট ৯%-এর অধিক।

কর্মশালায় অন্যতম আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএফএ কনসালটেন্সির প্রতিষ্ঠাতা ডিরেক্টর মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম, সিএসএএ।

তিনি বলেন, আমরা হোটেল-রেস্টুরেন্টে যেসব গোশত খাই, সেগুলো হালাল সার্টিফিকেশনের আওতায় নিয়ে আসা উচিত। শুধু তাই নয়, আমাদের দেশে রপ্তানিকৃত বহু খাদ্য এমন আছে, যাতে হারাম উপাদান নিহিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এর অন্যতম হলো- চকোলেট ও আইসক্রিম।

মুফতি আব্দুল্লাহ মাসুম এ বিষয়ে সবাইকে সচেতন হওয়ার এবং অন্যকে সচেতন করার আহবান জানিয়ে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে হালাল গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

তিনি বলেন, সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এটাকে কার্যকর করার জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি। বাংলাদেশে হালাল মার্কেটকে এগিয়ে নিতে এবং মানুষকে সচেতন করতে আইএফএ কনসালটেন্সি নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে যাচ্ছে। সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে আমরা যেকোনোভাবে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত।

;