হিজরি নববর্ষ ১৪৪৬

বছর শুরু হোক সুন্দর জীবনের প্রত্যয়ে

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মহররম আল্লাহর মাস, ছবি: সংগৃহীত

মহররম আল্লাহর মাস, ছবি: সংগৃহীত

যেকোনো শুরু ও সমাপ্তিতে থাকে বহু পাওয়া না পাওয়ার গল্প। একটি বছর, একটি মাস, একটি সপ্তাহ, একটি দিন এবং মুমিনের প্রতিটি কাজের শুরু ও সমাপ্তির মাঝে থাকে গভীর তাৎপর্য। সবার এই কামনা থাকা উচিত যে পুরো জীবন কিংবা অন্তত সব শুরু ও সমাপ্তি যেন হয় সুন্দর আর অমলিন। নির্মল ও পবিত্র।

শুরু হয়েছে ১৪৪৬ হিজরি সন। এক বছর আগে ঠিক একইভাবে শুরু হয়েছিল ১৪৪৫ হিজরি। তখন আজকের এই দিনকে মনে হয়েছিল অনেক দূর। যেমন আজ দূর মনে হচ্ছে আগামী বছরকে। এই যে মনে হওয়া, এটা অনেক সময়ই গাফিলতি সৃষ্টি করে। আর জীবন ও জীবনের পরিণতি সম্পর্কে যে ব্যক্তি গাফিলতির শিকার হয় তার দুর্ভোগ হয় বড় বেদনাবহ। নতুন বছর আগমন যেমন খুশি ও আনন্দের, তেমনি জীবন থেকে একটি বছর হারিয়ে যাওয়ার বেদনাও মিশে থাকে তার সঙ্গে।

বিজ্ঞাপন


হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বুদ্ধিমান ওই ব্যক্তি, যে নিজের পর্যালোচনা করে এবং মৃত্যু-পরবর্তী জীবনের জন্য প্রস্তুতি নেয়। আর নির্বোধ ও অক্ষম ওই ব্যক্তি, যে মনোবৃত্তির অনুসরণ করে এবং অলীক কল্পনায় ডুবে থাকে।’ -জামে তিরমিজি : ২৪৫৯

নতুন বছর মানুষকে ভাবতে শেখায়। নতুন করে মহান রবের আনুগত্যে আহ্বান করে। বছরের প্রথম দিনে মুমিন ব্যক্তি পুরোনো বছরের আত্মপর্যালোচনা করবে। বিগত বছরের হিসাব নেবে। নতুন বছরের কর্মপরিকল্পনা সাজাবে। আরো নবোদ্যমে কর্মতৎপর হয়ে উঠবে। কারণ মুসলমানের কাছে প্রতিটি দিন মূল্যবান। প্রতিটি সকাল মানেই নতুন আরেকটি সুযোগ। সেই সুযোগ হলো নিজের ঈমান-আমলকে সমৃদ্ধ করার। গোনাহ ছেড়ে দেওয়ার, পাপ কাজ না করার।

বিজ্ঞাপন

প্রত্যেক মুসলমানের উচিত কোরআন-হাদিসের পথ অনুসরণ করা। নবীজীবনের আদর্শ মেনে চলা। নতুন বছরে তওবা-ইস্তেগফার করে নতুন করে আল্লাহর গোলামির জীবন শুরু করা। নতুন বছরে নিজেকে নতুনভাবে ঢেলে সাজানো। নতুন আত্মপ্রত্যয় গ্রহণ করা। পেছনের সব গোনাহ ক্ষমা করিয়ে নিয়ে নতুন করে জীবনের পথ চলা।

এই নতুন বছরে প্রতিজ্ঞা হোক পাপমুক্ত জীবনের। পাপ-পঙ্কিলতার আঁধার কেটে পুণ্যের সূর্যোদয় হোক মুমিনের জীবনে। আমরা স্মরণ করি নবী কারিম (সা.)-এর এই বাণী- ‘দুনিয়াতে তুমি পরদেশি কিংবা পথিকের মতো থাকো এবং নিজেকে কবরবাসীদের মধ্যে গণ্য করো। (অর্থাৎ তোমাকে যে নিশ্চিত কবরে যেতে হবে, সেটা মনে রাখো)। -জামে তিরমিজি : ২৩৩৩

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) কতই না সুন্দর বলেছেন, ‘তুমি যখন সন্ধ্যায় উপনীত হও তখন সকালের অপেক্ষা করো না। যখন সকালে উপনীত হও, সন্ধ্যার অপেক্ষা করো না। সুস্থতার সময়ই অসুস্থতাকালের প্রস্তুতি নাও এবং জীবন থাকতেই নাও মৃত্যুর প্রস্তুতি। হে আল্লাহর বান্দা! তুমি তো জানো না আগামীকাল তোমার কী উপাধি হবে (জীবিত না মৃত)!’ -সহিহ বোখারি : ৬৪১৬

বছরের শুরুতে কৃত সব গোনাহ থেকে আল্লাহর কাছে পানাহ চাওয়া উচিত। গোনাহমুক্ত নতুন জীবনের জন্য আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা দরকার। এ সময় কোরআন ও হাদিসের দোয়াগুলো আবেগের সঙ্গে পড়া। শুধু মুখের পড়া নয়, বরং দোয়ার অর্থ ও মর্ম উপলব্ধি করে বিষয়গুলো আল্লাহর কাছে চাওয়া।