ইজতেমায় লাখো কণ্ঠের ফরিয়াদ, আমিন... আল্লাহুম্মা আমিন



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, বিভাগীয় প্রধান, ইসলাম
ইজতেমা মঞ্চে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা ও মাওলানা যোবায়ের

ইজতেমা মঞ্চে মাওলানা ইবরাহিম দেওলা ও মাওলানা যোবায়ের

  • Font increase
  • Font Decrease

বিশ্ব ইজতেমা ময়দান (টঙ্গী, গাজীপুর) থেকে: আলমি শুরার তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠিত তাবলিগ জামাতের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে। ইজতেমার ইতিহাসে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো বাংলাদেশি শীর্ষ আলেম মোনাজাত পরিচালনা করলেন। এর আগে গত বছরের ইজতেমায় মাওলানা যোবায়ের প্রথমবারের মতো মোনাজাত করেন। ইজতেমার শুরু থেকেই দিল্লি নিজামুদ্দিনের মুরব্বিরা আখেরি মোনাজাত পরিচলানা করে আসছিলেন।

শনিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১০টা ৪৩ মিনিটে আখেরি মোনাজাত শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন কাকরাইল মসজিদের খতিব, কাকরাইলের মুরব্বি ও বিশ্ব তাবলিগের শুরা সদস্য হাফেজ মাওলানা যোবায়ের।

আরবি-বাংলায় মোনাজাত

মোনাজাতের আগে বিভিন্ন মেয়াদে তাবলিগের জন্য বের হওয়া সাথীদের উদ্দেশ্যে বিশেষ দিক-নির্দেশনা তথা হেদায়েতি বয়ান করেন ভারতের রায়বেন্ড মারকাজের মুরব্বি মাওলানা খুরশেদ আলম। তার বয়ান বাংলায় অনুবাদ করেন মাওলানা আবদুল মতিন। এরপর ভারতের শীর্ষ তাবলিগি মুরব্বি ও বিশ্ব তাবলিগের শুরা সদস্য মাওলানা ইবরাহিম দেওলা দোয়া ও মোনাজাতের তাৎপর্য নিয়ে সংক্ষেপে বয়ান করেন। এর পর শুরু হয় আখেরি মোনাজাত।

বেলা ১০টা ৪৩ মিনিটে শুরু হওয়া মোনাজাত ১১টা ৬ মিনিটে শেষ হয়। ২৩ মিনিট স্থায়ী আখেরি মোনাজাতের প্রথম ১০ মিনিট আরবিতে আল্লাহতায়ালার প্রশংসা, নবী করিম (সা.)-এর ওপর দরুদ শরিফ, কোরআনে কারিমে বর্ণিত বিভিন্ন দোয়া সম্বলিত আয়াত এবং হাদিসে উল্লেখিত দোয়া ফজিলতপূর্ণ দোয়াগুলো পাঠ করেন মাওলানা যোবায়ের। তিনি আরবি ও বাংলা ভাষায় মোনাজাত পরিচালনা করেন।

 চারদিকে শুধু কান্নার আওয়াজ

আখেরি মোনাজাতে আত্মশুদ্ধি ও নিজ নিজ গোনাহমাফের পাশাপাশি দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে হেফাজতের জন্য দু’হাত তুলে আল্লাহতায়ালার দরবারে রহমত প্রার্থনা করা হয়। এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে আকাশ-বাতাস মুখরিত হয়ে উঠে পুরো টঙ্গী এলাকা। নানা বয়সি মানুষের কান্নার ধ্বনিতে তুরাগ তীরের আকাশ-বাতাস ভারি করে তুলে। বিশাল জনসমুদ্রে নেমে আসে পিনপতন নীরবতা, শুধু শোনা যায় কান্নার আওয়াজ। যে যেখানে ছিলেন সেখানে দাঁড়িয়ে কিংবা বসে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। কান্নায় বুক ভাসান তারা। মুঠোফোন ও স্যাটেলাইট টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারের সুবাধে দেশ-বিদেশের আরও লাখ লাখ মানুষ একসঙ্গে হাত তোলেন আল্লাহর দরবারে। দোয়া কবুলের ফরিয়াদের জন্য লাখ লাখ মানুষ সমস্বরে বুকফাঁটা কান্নার আর্তনাদ করে আল্লাহুম্মা আমিন, আমিন ইয়া রাব্বাল আলামীন বলে কাঁদতে থাকেন। হালকা বৃষ্টির ফোঁটা কান্নার আবেগকে আরও বাড়িয়ে দেয়, পুরো এলাকায় তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।

মোনাজাতে দেশ-বিদেশের ৩০ লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।

অতিরিক্ত মাইকে স্বস্তি

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আখেরি মোনাজাত প্রচারের জন্য গণযোগাযোগ অধিদফতর ও গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস বিশেষ ব্যবস্থা নেয়। এর মধ্যে গণযোগাযোগ অধিদফতর ইজতেমা ময়দান থেকে আবদুল্লাহপুর ও বিমানবন্দর রোড পর্যন্ত এবং গাজীপুর জেলা তথ্য অফিস ইজতেমা ময়দান থেকে চেরাগআলী, টঙ্গী রেলস্টেশন, স্টেশন রোড থেকে শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার উড়াল সেতু ও আশপাশের অলিগলিতে পর্যাপ্ত মাইক সংযোগ দেওয়া হয়। আখেরি মোনাজাত উপলক্ষে টঙ্গী, গাজীপুর, উত্তরাসহ চারপাশের এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলকারখানা, মার্কেট, বিপণিবিতান ও অফিসসহ সবকিছু বন্ধ ছিল। ফলে এসব এলাকার কর্মজীবিদের মোনাজাতে অংশ নিতে কোনো সমস্যা হয়নি। তাবলিগি কর্তৃপক্ষের নিষেধ সত্ত্বে প্রচুর নারী মোনাজাতে অংশ নেন।

মোনাজাতে যা বলা হয়

আখেরি মোনাজাতে হাফেজ মাওলানা যোবায়ের বলেন, হে আল্লাহ! আমাদের ঈমানকে আরও মজবুত করে দিন। আমাদেরকে আপনার প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করুন। আমাদের জীবনের সব পাপ মাফ করে দিন। হে আল্লাহ! আপনি ক্ষমাশীল, আপনার কাছেই তো আমরা ক্ষমা চাইব। আমাদের ক্ষমা করুন। দ্বীনের ওপর চলা সহজ করে দিন। দুনিয়ার সব বালা-মুসিবত থেকে আমাদের হেফাজত করুন।

হে আল্লাহ! আমরা পাপীষ্ঠ, আমরা অপরাধী, আমরা ভুলে যাই, আমরা ভুল করি; অনুগ্রহ করে আমাদের সব গোনাহ আপনি ক্ষমা করে দিন। আমাদের মা-বাবা, আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে কবরবাসী প্রত্যেক মুসলমানের গোনাহ মাফ করে দিন।

ও দয়াময় মাওলা! যে কাজের জন্য আপনি আমাদের দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন, যে দায়িত্ব দিয়েছেন-  আমরা সে সব থেকে অলস, গাফেল। মেহেরবানি করে আমাদের গাফলতির পর্দা উঠিয়ে দিন। আমাদের উদাসীনতা দূর করুন। আমাদের কাজের শক্তি দিন, অলসতা দূর করে দিন।

হে আল্লাহ! উম্মত আজ দাওয়াতের কাজ থেকে দূরে সরে গেছে, জাগতিক মোহ, নফসের পূজা আর প্রবৃত্তির অনুসরণে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আপনি সবাইকে দ্বীনের সঠিক বুঝ দান করুন। জাগতিক মোহ, নফসের পূজা আর প্রবৃত্তির অনুসরণ থেকে দূরে রেখে আমাদের মূল জিম্মাদারির সঙ্গে জুড়ে থাকার তওফিক দিন।

হে আল্লাহ! আমাদেরকে ঈমানে পরিপূর্ণতা দান করুন। আপনার সমুদয় নির্দেশ আপনার হাবিবের সুন্নতমতে পালন করার তওফিক দিন। রাত-দিন, সকাল-বিকাল, দেশে-বিদেশে, জলে-স্থলে যখন যেখানে আপনার যে হুকুম, তা সঠিকভাবে পালন করার তওফিক দিন।

হে আল্লাহ! আমাদের ঈমান বাড়িয়ে দিন। ঈমানের দাওয়াতের কাজে ঘর থেকে বের হওয়ার তওফিক দিন। ঈমানের জন্য সাহাবায়ে কেরামের মতো যে কোনো ত্যাগ, কষ্ট ও ক্লেশ সহ্য করার ক্ষমতা ও সামর্থ্য দান করুন।

হে আল্লাহ! আমাদের দূর্বল ঈমানকে আপনি শক্তিশালী করে দিন। দাওয়াতে তাবলিগের ওপর আপনি ঈমানের মজবুতি রেখেছেন- এ কথা সবাইকে বুঝার ও মানার তওফিক দিন। সুন্নতমতে জীবন গড়ার তওফিক দিন। সুন্নতের দাওয়াত বিশ্বময় ছড়িয়ে দেওয়ার তওফিক দান করুন। বিদয়াত থেকে আমাদেরকে দূরে রাখুন। সুন্নত ও বিদয়াতকে চেনার ও পার্থক্য করার বিবেচনাবোধ দান করুন।

হে আল্লাহ! আমাদেরকে দ্বীনের ওপর অটল, অনড় ও অবিচল থাকার যোগ্যতা দিন। হে আল্লাহ! আমরা মুহতাজ, আপনি বে নায়াজ। আমরা পাপী, আপনি ক্ষমাকারী। আমরা উদাসীন, আপনি আমাদের সতর্ক থাকার তওফিক দিন। নামাজের পাবন্দি করার তওফিক দান করুন। জিন্দা নামাজ আদায় করার তওফিক দান করুন। নামাজে খুশ-খুজু দান করুন। জামাতের সঙ্গে তাকবিরে উলার সঙ্গে নামাজ পড়ার তওফিক দিন। আমাদের সব আমল কবুল করুন। ইখলাস দান করুন। অলসতা, বিলাসিতা ও লৌকিকতা থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! সকল বাঁধা ও সমস্যা দূর করে দিন। সবার ভেতর দ্বীনের ফিকির দান করুন। ঐক্যবদ্ধ থাকার তওফিক দিন। আমাদের বিভেদকে মিটিয়ে দিন। আমাদেরকে মনে হিংসা-বিদ্বেষ থেকে হেফাজতে রাখুন।

হে আল্লাহ! পৃথিবীর সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানকে আপনি কবুল করুন। সব মসজিদ, মাদরাসা, খানকা ও জামাতকে আপনি কবুল করুন। আলেমদের নেক হায়াত দান করুন। সবাইকে ইখলাসের সঙ্গে দ্বীনের কাজে লেগে থাকার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! যে সব জামাত আপনার রাস্তায় বেরিয়ে যাচ্ছে, তাদের আপনি জিম্মাদার হয়ে যান। সকল প্রকার বাধা দূর করে আপনি তাদের সাহায্য করুন। আর যারা আপনার রাস্তায় এখনও বের হতে পারেনি তাদেরকে দ্রুত আপনার রাস্তায় বের হওয়ার তওফিক দান করুন।

হে আল্লাহ! যারা অসুস্থ তাদেরকে সুস্থতা দান করুন। যারা বিভিন্ন সমস্যায় তাদের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান করে দিন। যারা ঋণগ্রস্ত তাদের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা করে দিন। যারা নিযার্তিত তাদের সহায়তা করুন। বেকারদের হালাল রুজির ব্যবস্থা করে দিন। বিবাহযোগ্যদের বিয়ের ব্যবস্থা করে দিন। যারা বিভিন্ন বৈধ বাসনা নিয়ে মোনাজাতে শরিক হয়েছে তাদের সেসব বাসনাগুলোকে আপনি কবুল করুন।

ইয়া আল্লাহ! মেহেরবানি করে আমাদের মোনাজাতকে কবুল করুন। যেভাবে আপনার কাছে চাওয়া দরকার- আমরা সেভাবে চাইতে পারিনি। কিন্তু আপনি অন্তযার্মী, আপনি সবার মনের কথা জানেন- সেটাকেই আপনি কবুল করে নেন।

হে আল্লাহ! এই ইজতেমাকে কবুল করুন। যারা ইজতেমার জন্য মেহনত করেছে তাদেরকে কবুল করুন। আমিন, ইয়া রাব্বাল আলামিন।

মাওলানা সাদ অনুসারীরা মাঠে আসবেন রোববার থেকে

আখেরি মোনাজাত শেষে শনিবার মধ্যরাতের আগে আলমি শুরার অনুসারী তাবলিগের সাথীরা ইজতেমার ময়দান মাঠ ত্যাগ করবেন, মাঠ বুঝিয়ে দেওয়া হবে প্রশাসনের কাছে। পরে প্রশাসন মাওলানা সাদের অনুসারী অনুসারীদে ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসিফুল ইসরামের অনুসারীদের কাছে ইজতেমার ময়দান বুঝিয়ে দেবেন। তারা রোববার (১৭) বাদ ফজর থেকে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কাজ শুরু করবেন। সোমবার আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ৫৪তম বিশ্ব ইজতেমা।

   

সৌদিতে আরও এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে গিয়ে মো. মোস্তফা (৮৯) নামে আরও এক হজ যাত্রী মারা গেছেন। শনিবার (১৮ মে) মক্কায় মারা যান তিনি।

রোববার (১৯ মে) রাত ২টার হজ পোর্টালের আইটি হেল্প ডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এর আগে, গত বুধবার (১৫ মে) চলতি হজ মৌসুমে সৌদি আরবের প্রথম বাংলাদেশি এক হজযাত্রী মারা যান। মো. আসাদুজ্জামান নামের ওই ব্যক্তি মদিনায় মৃত্যুবরণ করেন।

এ দিকে পবিত্র হজ পালন করতে গিয়ে এখন পর্যন্ত (১৮ মে রাত ১টা ৫৯ মিনিট) সৌদি পৌঁছেছেন ২৮ হাজার ৭৬০ জন হজযাত্রী। মোট ৭২টি ফ্লাইটে তারা সৌদিতে পৌঁছান। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ৩ হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২৫ হাজার ১৩ জন। এখন পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

হজ সম্পর্কিত সবশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এয়ারলাইন্স, সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ হজ অফিস ঢাকা এবং সৌদি আরব সূত্রে এ তথ্য জানিয়েছে হেল্পডেস্ক।

হেল্প ডেস্কের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত মোট ৭২টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২৮টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২৬টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করেছে।

হজ ফ্লাইট শুরু হওয়ার পর গত মধ্যরাত পর্যন্ত ৮১ হাজার ৮৬২ জন হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু হয়েছে। সে হিসেবে এখনো ৩ হাজার ৩৯৫ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি। সর্বশেষ শনিবার (১৮ মে) মো. মোস্তফা নামের ৮৯ বছর বয়সী হজযাত্রী মক্কায় মারা যান।

;

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না



মুফতি এনায়েতুল্লাহ, অ্যাসিস্ট্যান্ট এডিটর, বার্তা২৪.কম
হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

হজ ক্যাম্পে হজযাত্রীদের একাংশ, ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালনে বঞ্চিত হবেন না বলে আশাবাদী বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান।

ভিসা না হওয়া হজযাত্রীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন। তবে বাংলাদেশ হজ অফিসের পরিচালক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি হজ মৌসুমে নিবন্ধিত সবার ভিসা হবে বলে আমি আশাবাদী। কয়েকটি এজেন্সির হজযাত্রী নিয়ে জটিলতা হচ্ছে, তার অর্ধেকই ইতোমধ্যে সমাধান হয়েছে। বাকি কাজ সমাধানের পথে।

জিলহজ মাসে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। বাংলাদেশ থেকে ৯ মে শুরু হওয়া হজফ্লাইট শেষ হবে ১০ জুন। এই সময়ের মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় গাইডসহ হজপালনে সৌদি আরব যাবেন ৮৫ হাজার ১১৭ জন। ইতোমধ্যে ২৮ হাজার ৪ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। ৮২ হাজার ১০০ জনের ভিসা ভিসা হয়েছে। এখনও বেসরকারিভাবে নিবন্ধিত ৩ হাজার ৩৩৬ জনের ভিসা হয়নি।

মুহাম্মদ কামরুজ্জামান, পরিচালক, হজ অফিস, ছবি: বার্তা২৪.কম

জানা গেছে, যথাসময়ে ভিসার আবেদন না করায় ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০) কে ধর্ম মন্ত্রণালয় শোকজ করে। এসব এজেন্সির মাধ্যমে ১ হাজার ৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা রয়েছে।

আর আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে এখন পর্যন্ত কারও ভিসা না করায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে) এজেন্সির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগ স্থগিত ও তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

হজ এজেন্সির মালিকদের সংগঠন হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব)-এর সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম বার্তা২৪.কমকে বলেন, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সিসহ অভিযুক্ত এজেন্সির মালিকদের নিয়ে আমরা বসে, পয়েন্ট পয়েন্ট ধরে সমস্যা নিয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করেছি। ইতোমধ্যে হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস, ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস এবং মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের হজযাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদেরও হয়ে যাবে। নিবন্ধিত কোনো হজযাত্রী হজপালন থেকে বঞ্চিত হবেন না বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।

এমন আশাবাদী হওয়ার কারণ জানতে চাইলে হাব সভাপতি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনায় সৌদি আরব অংশে যে পরিমাণ অর্থ প্রেরণ করা দরকার এজেন্সিগুলো তা পাঠিয়েছে। আর যতটুকু সমস্যা রয়েছে, আশা করি তা সমাধান করা যাবে।

এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম, ছবি: বার্তা২৪.কম

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, ‘আমি এবার হজে কোনো লোক পাঠাইনি। আকবর হজ গ্রুপের মুফতি লুৎফর রহমান ফারুকী তার লাইসেন্সে সমস্যা হওয়ায় আমার লাইসেন্স ব্যবহার করে ৪৪৮ জন হজযাত্রী পাঠাচ্ছে। চলতি সমস্যা নিয়ে হাব সভাপতির সঙ্গে বৈঠকে মুফতি লুৎফর রহমান সৌদি থেকে ফোনে কথা বলেছেন, তিনি আশ্বস্থ করেছেন; আজকালের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জনের ভিসা হয়ে যাবে। আর আগামীকাল বা পরশুর মধ্যে সবার ভিসা হয়ে যাবে। তিনি মদিনার বাড়ি ভাড়া করেছেন, মক্কার বাড়িও ভাড়া হওয়ার পথে।’

;

মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগমুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করলেন বাবা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

আল হুমাইদি আল হারবি, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মৃত্যদণ্ড কার্যকরের আগ মুহূর্তে ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে দিলেন বাবা। শেষ সময়ে জন্মদাদা বাবার এমন উদারতা দেখে উপস্থিত কর্মকর্তারা হতবাক হয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছে সৌদি আরবে। খবর গালফ নিউজের।

আল হুমাইদি আল হারবি নামের ওই বাবা হঠাৎ করে দণ্ড কার্যকরের স্থানে যান। সেখানে গিয়ে ঘোষণা দেন, ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দিয়েছেন তিনি। ওই হত্যাকারীর দণ্ড কার্যকরের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে আল হুমাইদি আল হারবির কাছে একাধিকবার গিয়েছিলেন সরকারি কর্মকর্তারা।

কিন্তু ওই সময় তিনি ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। নিজ ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করার একমাত্র অধিকারী ব্যক্তি ছিলেন ওই বাবা। সে অনুযায়ী, বিনা শর্তে তিনি হত্যাকারীকে ক্ষমা করে দেন। এতে করে সেখানে থাকা সবাই বেশ অবাক হন।

আল হারবি জানিয়েছেন, ধর্মীয় দিক বিবেচনা করে তিনি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও প্রথমে হত্যাকারীকে ক্ষমা করতে চাননি। কিন্তু পরে নিজের মন পরিবর্তন করেন। ছেলের হত্যারকারীকে ক্ষমা করা ওই বাবার এমন উদারতার প্রশংসা করেছেন সাধারণ মানুষ। তারা এটিকে ক্ষমার একটি অনন্য উদাহরণ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

খবরে প্রকাশ, নিজ গোত্রের প্রতিবেশীর বন্ধুর ছেলের হাতে তার ছেলে খুন হন। দেশটির আইন অনুযায়ী বিচার শেষে হত্যাকারীর মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের আইনে রক্তপণ নিয়ে কিংবা অভিভাবক হিসেবে খুনিকে ক্ষমা করে দেওয়ার বিধান রয়েছে।

সে হিসেবে তিনি ছেলের খুনিকে ক্ষমা করে বলেন, ‘আমাদের সম্পর্ক আজও আগের মতো।’

তার স্পষ্ট কথা, আমি একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য ছেলের হত্যাকারীকে ক্ষমা করেছি। এ বিষয়ে সরকারি কর্মকর্তারা ক্ষমার কথা বললেও তার পরিবার ক্ষমা প্রসঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

তিনি আরও বলেন, ঘটনার পর আমাদের সম্পর্ক গত ছয় দশকের মতোই আজও আছে। ছেলের খুনের পর যেমন ছিল, এখনও সম্পর্ক তেমনি আছে।

হত্যাকারীর বাবা আবদুল মাজিদ আল হারবি বলেন, আমি নিহতের বাবাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে শ্রদ্ধা করি এবং সম্মান করি, তিনি আমার ভাইয়ের চেয়েও বেশি।

;

সৌদিতে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চলতি বছরের হজ মৌসুমে সৌদি আরবে মো. আসাদুজ্জামান নামের এক বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এটিই এবারের হজে প্রথম কোনো বাংলাদেশির মৃত্যু।

শনিবার (১৮ মে) হজ পোর্টালের আইটি হেল্পডেস্কের প্রতিদিনের বুলেটিন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, ১৫ মে আসাদুজ্জামান মদিনায় মসজিদে নববীতে থাকা অবস্থায় হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে পরেন। পরে তাকে কিং সালমান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। জানা গেছে, নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার ৭ নম্বর মাসকা ইউনিয়নের সাতাশী গ্রামের বাসিন্দা মো. আসাদুজ্জামান।

এদিকে শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৩টা পর্যন্ত ২৭ হাজার ১১১ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। অন্যদিকে এখনো ৪ হাজার ২৫৬ জন হজযাত্রীর ভিসা হয়নি।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই।

;