‘মাওলানা সাদের সঙ্গে মতবিরোধ আদর্শিক কারণে’

  • ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কাকরাইলের মুরব্বিরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে কাকরাইলের মুরব্বিরা, ছবি: বার্তা২৪.কম

দিল্লির মাওলানা সাদকে কেন্দ্র করে তাবলিগ জামাতে যে মতবিরোধ সেটা নেতৃত্বের কোনো বিরোধ নয়, আদর্শিক কারণে বিরোধ বলে জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শীর্ষ মুরব্বিরা। তারা বলেছেন, মাওলানা সাদের ভ্রান্ত মতাদর্শের কারণেই মূলত আলেমরা তার বিরোধিতা করছেন। শুধু বাংলাদেশের আলেমরা নন, সারা বিশ্বের আলেমরাই তার বিরোধিতা করেছেন। খোদ দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজ থেকেই প্রথম সাদবিরোধিতা শুরু হয়। পরে দারুল উলুম দেওবন্দও এ ব্যাপারে ফতোয়া দেন। সেই ফতোয়ার ভিত্তিতেই বাংলাদেশের আলেমরা সাদ সাহেবের ভ্রান্ত মতাদর্শের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে বার্ডস আই রুফটপ রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় তাবলিগের মুরব্বিরা এসব কথা বলেন। সভায় তাবলিগ জামাতের কয়েকজন শীর্ষ মুরব্বি এবং জাতীয় পত্রিকা, অনলাইন পোর্টাল ও টেলিভিশনের প্রায় ৩০ জন রিপোর্টার অংশগ্রহণ করেন।

বিজ্ঞাপন

‘তাবলিগ জামাতের চলমান পরিস্থিতি ও বিশ্ব ইজতেমা-২০২০ এর প্রস্তুতি’ শীর্ষক বৈঠকে তাবলিগ জামাতের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন মুফতি মাহফুজুল হক, মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মাওলানা আমানুল হক, ক্যাপ্টেন ইফখোর আহমেদ ও ইঞ্জিনিয়ার আনিসুর রহমান।

বৈঠকে তাবলিগের ইতিহাস, তাবলিগের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। আলোচনায় উঠে আসে তাবলিগের সংকটের বিষয়টিও। এ বিষয়ে উপস্থিত মুরব্বিরা জানান, তাবলিগের সংকটের মূলে রয়েছে, যৌথ নেতৃত্ব তথা পরামর্শভিত্তিক পদ্ধতি বাদ দিয়ে একক নেতৃত্বে কাজ চালানো, মাওলানা সাদের কোরআন-হাদিসবিরোধী মনগড়া নানা মন্তব্যে অনঢ় থাকা এবং পূর্ববতী তিন হজরতজির উসুল ও কর্মপন্থা থেকে সরে যাওয়া। একজন মাওলানা সাদের সঙ্গে বিশ্বের অন্য মুরুব্বিদের মতবিরোধ নেতৃত্ব নিয়ে নয়, আদর্শিক কারণে।

মুরব্বিরা বলেন, বাংলাদেশে অনেকে তাবলিগের সংকটকে সাদপন্থী ও জুবায়েরপন্থী বলে চিহ্নিত করার চেষ্টা করেন, এটাও ভুল। কারণ, বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাবলিগ পরিচালিত হচ্ছে যৌথ নেতৃত্ব তথা শুরার মাধ্যমে। এখানে একক কেউ নেই।

তাবলিগের মুরব্বিরা জানান, এবার তাবলিগ জামাতের ইজতেমা এক পর্বেই হচ্ছে। আর সেটা ১০ জানুয়ারি শুরু হয়ে ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। পরের সপ্তাহে মাওলানা সাদের অনুসারীরা ইজতেমা করলেও সেটাকে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব বলতে নারাজ বিরোধী পক্ষের মুরব্বিরা।

তাবলিগ জামাতের চলমান সংকট নিয়ে সাংবাদিকরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তাবলিগের মুরব্বিরা সেগুলোর জবাব দেন। তাবলিগ ও ইজতেমা সম্পর্কে যেকোনো বিষয়ে জানার থাকলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার আহ্বান জানান।

বিজ্ঞাপন

মতবিনিময় সভায় সাংবাদিকদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের মোস্তাক আহমেদ, যুগান্তরের উবায়দুল্লাহ বাদল, বাংলাদেশ প্রতিদিনের শফিকুল ইসলাম সোহাগ, দৈনিক নয়া দিগন্তের খালিদ সাইফুল্লাহ, ডেইলি অবজারভারের মহসিনুল কবীর লেবু, বাংলা ট্রিবিউনের আকবর হোসেন, আলোকিত বাংলাদেশের রকিবুল হক, ইনকিলাবের শামসুল ইসলাম, বার্তা২৪.কমের মুফতি এনায়েতুল্লাহ, ঢাকা টাইমসের জহির উদ্দিন বাবর, আরটিভির মাজহারুল ইসলাম, এসএ টিভির নাসের আহমদ, রাইজিং বিডির মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন, দৈনিক মানবকণ্ঠের সলিমউল্লাহ মেসবাহ, সময়ের আলোর আমিন ইকবাল, এই দিনের এম এ আহাদ শাহীন, আওয়ার ইসলামের হুমায়ুন আইয়ুব, ইনসাফ২৪ এর মাহফুজ খন্দকার, পাবলিক ভয়েসের হাবিবুর রহমান মিছবাহ প্রমুখ।