টানা ৪০ দিন জামাতে নামাজ পড়ে পুরস্কার পেল ২৭ কিশোর
নরসিংদী জেলার শেখেরচরের ২৭ কিশোর টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের (তাকিবরে উলাসহ, নামাজের প্রথম তাকবির) সঙ্গে আদায় করে বাইসাইকেল পুরস্কার পেয়েছেন। পুরস্কারপ্রাপ্ত কিশোরদের বয়স ১৫ বছরের কম। পুরস্কার বিজয়ী দু’জনের আগে থেকেই সাইকেল থাকায়, তাদের পাঞ্জাবি, লুঙ্গি ও ধর্মীয় বই পুরস্কার দেওয়া হয়।
শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) বাবুরহাট বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদে জুমার নামাজের পর ওই ২৭ কিশোরের হাতে পুরস্কারের বাইসাইকেল তুলে দেওয়া দেওয়া হয়। এসময় এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
কিশোরদেরকে নামাজের প্রতি আকৃষ্ট করে মসজিদমুখি করার লক্ষ্যে আয়োজিত এমন উদ্যোগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
কেন এমন উদ্যোগ নিলেন, আর কীভাবে উদ্ধুদ্ধ হলেন এ কাজের? বার্তা২৪.কম এর সঙ্গে আলাপকালে তিনি এর উত্তরে বলেন, প্রথমত আমি শায়খুল হাদিস মাওলানা মুহাম্মদ মামুনুল হকে বয়ানের মাধ্যমে জানতে পারি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান কিশোরদের মসজিদমুখি করতে এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। এর পর একদিন পত্রিকায় দেখি, ভারতেও এমন একটি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আমার কাছে খুব ভালো লাগে। আমি সেখান থেকে অনুপ্রাণিত হই এবং একদিন জুমাপূর্ব বয়ানে বিষয়টি উত্থাপন করি। আলহামদুলিল্লাহ উপস্থিত মুসল্লিরা একাত্মতা প্রকাশ করেন। পরে পনেরো বছরের কম বয়সী কিশোরদের মধ্যে একটানা ৪০ দিন ৫ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের মসজিদের তাকবিরে উলার সঙ্গে আদায় করার প্রতিযোগিতা ঘোষণা করি। বিজয়ী প্রত্যেককে একটি করে সাইকেল পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা দেই। ঘোষণার পর থেকে প্রায় দুই শতাধিক কিশোর মসজিদে নিয়মিত জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় শুরু করে।
পুরস্কারের ঘোষক মুফতি ইমদাদুল্লাহ কাসেমি আরও বলেন, ঘোষণার পর থেকে প্রায় দুই শতাধিক কিশোর মসজিদে নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতের সঙ্গে আদায় করা শুরু করে। তারা ঠিকমতো নামাজ আদায় করছে কিনা তা হিসার রাখার জন্য প্রতি ওয়াক্ত নামাজের পর হাজিরা নেওয়া হতো। যদি কেউ কোনো ওয়াক্তে অনুপস্থিত থাকতো তখন তার গণনা বন্ধ করে দেওয়া হতো। তবে সে চাইলে তার নাম আবার লিখিয়ে নতুন করে নামাজের দিন গণনা শুরু করতে পারত। এভাবে নিয়মিত যাচাই-বাছাই ও হাজিরার ভিত্তিতে সর্বশেষ ২৭ জন বিজয়ী হয়।
প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে তাদের শুধু নামাজই পড়ানো হয়নি। বরং সঠিকভাবে নামাজ শিক্ষা ও নামাজ সম্পর্কে জরুরি মাসয়ালাও শেখানো হয়, সেই সঙ্গে তালিম-তরবিয়ত এবং নামাজের প্রতি মানুষকে আহবানের পাশাপাশি দ্বীনি ইসলাম সম্পর্কে শিক্ষা দেওয়া হয় বলেও জানান তিনি।
স্থানীয়রা ইমাম সাহেবের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, খতিব সাহেব হুজুরের এ কার্যক্রম বাচ্চাদের নামাজের প্রতি আগ্রহী করে তুলেছে। আমরা বিষয়টি প্রায় কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছি যে, ছেলেরা নামাজে নিয়মিত আসছে। তাদের পদচারণায় মসজিদ সব সময় মুখরিত থাকতো।
পুরস্কারপ্রাপ্তরা তাদের অনুভূতি জানাতে গিয়ে বলেন, আমরা এ পুরস্কার পেয়ে অত্যন্ত খুশি।