নবীর দেশের মসজিদগুলো কী রমজানে খুলবে?
আর মাত্র কয়েক দিন। তারপর পুরো বিশ্বের মুসলমানরা রহমত, বরকত ও ক্ষমার মাস রমজানকে বরণ করে নেবে। মহিমান্বিত ও বরকতে আবৃত এ মাসের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে বিশ্বের মুসলমানরা।
সত্যি বলতে কী, এ বারের রমজান মাসকে মুসলমানদের জন্য একটু ভিন্ন পরিস্থিতিতে বরণ করতে হচ্ছে। বর্তমান অবস্থার প্রেক্ষিতে মুসলমানদের জন্য এটা মেনে নেওয়া বেশ কঠিন। কিন্তু তার পরও সময়ের প্রেক্ষাপটে মেনে নেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কেননা, এ বছর যখন রমজান আসছে, তখন বলতে গেলে পুরো পৃথিবীর মসজিদগুলো বন্ধ থাকছে। আর এটি শুধুমাত্র করোনাভাইরাস বিস্তার রোধকল্পেই।
সৌদি আরব। নবীর দেশ। পূণ্যভূমির এই দেশটির পরিস্থিতি অন্য দেশগুলো হতে ভিন্ন কিছু নয়। ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চার হাজার ছাড়িয়েছে। করোনার বিস্তার রোধে দেশটির সরকার নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে এবং সেসব কঠোরভাবে পালন করার হচ্ছে।
গত ১৭ মার্চ দেশটির শীর্ষ উলামাদের সম্মিলিত সিদ্ধান্তে সকল মসজিদগুলোতে সাময়িকভাবে জামাত স্থগিতের আদেশ দেওয়া হয়। শুধুমাত্র আজান চালু থাকার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
এসব সিদ্ধান্তে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনা হলেও প্রশ্ন থেকে যায়, পুরো পৃথিবীতে বিশেষ করে মক্কা-মদিনার এই দেশেও কী বর্তমান সময়ের মতো রমজানেও জামাত ও জুমা স্থগিত থাকবে?
এ বিষয়ে সৌদি ধর্ম মন্ত্রণালয়ের এক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা মুহাম্মদ আকীলকে শুক্রবার (১০ এপ্রিল) মসজিদ খোলার বিষয়ে সৌদি সংবাদ মাধ্যমের বরাতে ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ! করোনাভাইরাসের প্রকোপ কেটে যাওয়ার আগ পর্যন্ত রমজানেও সকল মসজিদে জামাত স্থগিতের আদেশ জারি বহাল থাকবে।’
সৌদি সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত ওই ফোনালাপে তিনি বলেন, ‘জামাত স্থগিত রাখার মূল কারণ হলো- মানুষকে একে অপরের সংস্পর্শে যেতে না দেওয়া। কারণ এই ভাইরাস মানুষের সংস্পর্শে বেশি ছড়ায়। শীর্ষ আলেমদের নতুন কোনো সিদ্ধান্ত ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতি না পেলে বর্তমানের এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকবে।’
এদিকে হারামাইন বিষয়ক অধিদফতরের সদস্য আহমদ মানসুরি বলেন, নামাজের জামাত স্থগিতের বিষয়ে গৃহিত সকল রূপরেখা এবং নানা পদক্ষেপ মূলত সর্ব্বোচ্চ উলামা বোর্ডের নানা দিক-নির্দেশনার একটি অংশ।
আর এটি দেশটির নাগরিক ও বহিরাগতদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায কথা বিবেচনায় নিয়েই করা হয়েছে।
এই প্রতিবেদন লেখার সময়, সৌদি আরবে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা চার হাজারেরও বেশি। মৃত্যু সংখ্যা ৫৫। এ যাবত পর্যন্ত সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৭২০ জনের বেশি।
কোভিড-১৯ গত বছর ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে সর্বপ্রথম চীনের উহান প্রদেশে দেখা যায়। তারপর খব দ্রুত তা পুরো পৃথিবীতে বিস্তার লাভ করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী পুরো পৃথিবীতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে। সংখ্যা বিবেচনায় আমেরিকা, ইতালি, স্পেন, জার্মানী, চীন, ইরান, ফ্রান্স, ব্রিটেন ও দক্ষিণ কোরিয়ায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বেশি।
-আল উম্মাহ পত্রিকা অবলম্বনে