ওয়ারিশ ঠকানো ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না



মুফতি মাহফূযুল হক, অতিথি লেখক, ইসলাম
ওয়ারিশ ঠকানো ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না, ছবি: সংগৃহীত

ওয়ারিশ ঠকানো ব্যক্তির ইবাদত কবুল হয় না, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তৃতীয় তারাবির কোরআন তেলাওয়াতে হাফেজ সাহেবরা শোনাবেন সূরা আলে ইমরানের ৯১ নম্বর আয়াত থেকে সূরা নিসার ৮৭ নম্বর আয়াত পর্যন্ত। আজকের তেলাওয়াতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে। এসবের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে- ওয়ারিশদের অধিকার ও মৃতের সম্পদ বণ্টন। কেউ মারা গেলে তার সম্পদের কতটুকু কে পাবে এর বিস্তারিত আলোচনা থাকছে সূরা নিসার বিভিন্ন আয়াতে।

মৃতের সম্পদ আল্লাহর করা আইন অনুযায়ী ওয়ারিশদের মাঝে ভাগ হওয়া ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিধান। সাধারণত দেখা যায় বিভিন্ন বিধানের মূলনীতিটা আল্লাহতায়ালা নিজে কোরআনে বলে দিয়েছেন। পরবর্তীতে সেগুলোর শাখাগত খুঁটিনাটি বিধান আল্লাহ নিজে সরাসরি না বলে নবীর মাধ্যমে আমাদের শিখিয়েছেন। কিন্তু মৃতের পরিত্যক্ত সম্পদ বণ্টনের শাখাগত প্রায় সকল খুঁটিনাটি বিধানসমূহ নবীর মাধ্যমে না শিখিয়ে মহান আল্লাহ নিজে সরাসরি শিখিয়েছেন। আত্মীয়ের নাম নিয়ে নিয়ে বলে দিয়েছেন কে, কতটুকু পাবে।

মৃতের সম্পদ বণ্টনের পর মহান আল্লাহ কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, ‘উহা (মৃতের সম্পদ বণ্টনের এ আইন) আল্লাহর সীমানা। যে আল্লাহ ও তার রসূলের আনুগত্য করবে (আল্লাহর বিধান অনুযায়ী মৃতের সম্পদ বণ্টন করবে) তিনি তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। যার তলদেশে নদ-নদী প্রবাহিত। সে সেখানে চিরকাল থাকবে। উহা মহা সফলতা। আর যে আল্লাহ ও তার রাসূলের অবাধ্য হবে, আল্লাহর (ওই) সীমানা লংঘন করবে (মৃতের সম্পদ আল্লাহর আইন মতো বণ্টন না করে, নিজের খেয়াল-খুশি মতো বণ্টন করবে) আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন। সে তাতে চিরকাল থাকবে। উহা লাঞ্ছনাদায়ক শাস্তি।’

আজকের তারাবির পর প্রত্যেকেরই বিশেষ কর্তব্য হবে, নিজের অতীত মিলিয়ে নেওয়া। পরিবারের অতীত মৃতদের সকল সম্পদ কি আল্লাহর আইন অনুযায়ী ঠিক ঠিকভাবে বণ্টন হয়েছে! যদি হয়ে থাকে আলহামদুলিল্লাহ। আর যদি না হয়ে থাকে তাহলে এখনই সংশোধন করতে উদ্যোগী হই। মৃতের সম্পদ বণ্টনে আল্লাহর আইন অমান্য করার জন্য, ওয়ারিশ ঠকানোর জন্য শুধু তওবা যথেষ্ট হবে না। তওবার আগে ওয়ারিশদের হক ফিরিয়ে দিতে হবে। আর ওয়ারিশদের হক ফিরিয়ে তাদের মন খুশি করার আগ পর্যন্ত ফরজ-নফল কোনো ইবাদত কবুল হবে না। নামাজ-রোজা-তারাবি-হজ কোনো ইবাদত কবুল হবে না। জাকাত-ফেতরা-সদকা-দান-খয়রাত কোনো অনুদান কবুল হবে না।

কোনো মুসলমান মারা গেলে তাকে কবরস্থ করার পর পর তার আত্মীয়দের প্রথম কর্তব্য হলো- তার সম্পদের বিষয়ে পারিবারিক পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেওয়া। এক্ষেত্রে মৃতের পরিবারের যিনি অভিভাবক মূলত: প্রধান দায়টা তার ওপর বর্তায়। কিন্তু আমাদের দেশে মৃতের সম্পদের ক্ষেত্রে এটা হয় প্রথম ভুল। কবরস্থ করার পরপরই এ বিষয়ে পরামর্শে বসা হয় না। অনেক পরিবারে দেখা যায় বিশ বছর-ত্রিশ বছর হয়ে গেছে তাও সম্পদ বণ্টন করা হয়নি। অথচ দায়িত্ব ছিল কবর দিয়ে এসেই সম্পদ বণ্টন করা।

মৃতের সম্পদ বণ্টনের প্রচলিত আরও কিছু ত্রুটি
১. বোন, ফুফুদের জমির অংশ না দেওয়া। নামে কিছু দিলেও কিনে রাখা হয়, আবার সঠিক বাজারমূল্যও দেওয়া হয় না। নামমাত্র পরিমাণে অনেক অনেক কম মূল্য দেওয়া হয়।

২. বোন, ফুফুরা পিতার ওয়ারিশ দাবি করলে খারাপ নজরে দেখা হয়। তাদের মন্দ ভাবা হয়। অথচ এটা তাদের হক। আল্লাহ প্রদত্ত পাওনা। নিজের পাওনা দাবি করা কি কোনো অন্যায়?

৩. বোন, ফুফুদের আতিথেয়তা, ঈদের উপহার ইত্যাদিকে ওয়ারিশের বিনিময় গণ্য করা হয়। অথচ পিতা মারা যাওয়ার সাথে সাথেই বোন, ফুফুদের পুরোপুরি ভাগ তাদের ভোগদখলে বুঝিয়ে দিতে হবে। আবার এর পরেও তারা বেড়াতে আসলে তাদের আতিথেয়তা করতে হবে, সামর্থ্য অনুযায়ী ঈদে তাদের উপহার দিতে হবে। আতিথেয়তা আর ঈদের উপহার এটাতো পিতার ওয়ারিশ নয়। এটা হলো ভাই-বোনের সম্পর্কের হক, ফুফু-ভাতিজার সম্পর্কের হক।

৪. বোন, ফুফু ওয়ারিশ দাবি করলে তাদের ওয়ারিশ দিয়ে দিয়ে তাদের সঙ্গে সম্পর্ক চ্ছিন্ন করা হয়। অথচ ওয়ারিশ দিয়ে দেওয়া ফরজ আবার সম্পর্ক রক্ষা করাও ফরজ। ওয়ারিশ দেওয়ার পরেও বোন-ফুফুর সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষা করতেই হবে।

৫. স্বামী মারা যাওয়ার পর স্ত্রী যদি অন্যত্র বিবাহ বসে তবে তাকে তার মৃত স্বামীর সম্পদের ভাগ দেওয়া হয় না। অথচ এটা বড়ো জুলুম। মৃত স্বামীর সম্পদের ভাগ পাওয়ার জন্য তো মহান আল্লাহ বিধবা থাকার শর্ত জোড়ে দেননি। তাই অন্যত্র বিবাহ বসলেও সে তার পূর্বের মৃত স্বামীর সম্পদের ভাগ পুরোপুরিই পাবে।

৬. স্থাবর সম্পদ ভাগ করা হলেও অস্থাবর সম্পদ ভাগ করা হয় না। আগে থেকে যার দখলে যেটা ছিল সে সেটা রেখে দেয়। এটাও অন্যায়। সম্পদ বণ্টনের পরামর্শ সভায় সবকিছু উপস্থিত করতে হবে। স্থাবর সম্পদের মতো অস্থাবর সম্পদও আল্লাহর আইন অনুযায়ী ভাগ হবে। সে বস্তু ভাগ করা যায় না, বা ভাগ করলে তা ব্যবহার উপযোগী থাকে না সেই বস্তু ওয়ারিশদের ভেতরে বা বাইরে নিলামে বিক্রি করে যে পরিমাণ মূল্যই পাওয়া যাবে তা-ই ভাগ করতে হবে।

৭. মৃতের ব্যবহারের জিনিষপত্র ভাগ না করে কোনো মিসকিনকে দান করা হয় বা স্মৃতি হিসেবে কেউ রেখে দেয় বা বরকত হিসেবে কেউ রেখে দেয়। এটাও ভুল। মৃতের সম্পদের সামান্য-বেশি কোনোঅংশই কাউকে দান করা যাবে না, স্মৃতি রক্ষার জন্য, বরকত হাসিলের জন্য কাউকে দেওয়া যাবে না। সব ভাগ করতে হবে। ভাগে যিনি পাবেন তিনি ইচ্ছে হলে দান করবেন বা অন্য কিছু করবেন।

৮. ওয়ারিশদরর মধ্যে শিশু থাকলে তার ভাগ আলাদা করা হয় না। বড়োরা নিজের মতো করে ভোগ করতে থাকে।

৯. মেয়েকে ঠকানোর জন্য পিতা ছেলেদের নামে সম্পদ লিখে দেয়ে, এটাও অন্যায় ও গোনাহের কাজ।

১০. অনেকে সময় আল্লাহর বণ্টনকৃত ভাগ থেকে ভাতিজাদের বঞ্চিত করার জন্য ছেলে না থাকলে মেয়েদের নামে সম্পদ লিখে দেয়। এটাও পাপের কাজ। সর্বাবস্থায় আল্লাহর সিদ্ধান্ত মেনে চলতে হবে।

   

আগামীতে হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট: ধর্মমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ধর্মমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত রূপকল্প-২০২১ ও ২০৪১ অনুসারে উন্নত-সমৃদ্ধ স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে হজ ব্যবস্থাপনায় আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটানো হয়েছে।

তিনি বলেন, হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত যে পোর্টালটি রয়েছে সেখানে আমরা নতুন নতুন ফিচার যুক্ত করছি। আগামী দিনে বাংলাদেশের হজ ব্যবস্থাপনা হবে বিশ্বের মধ্যে অন্যতম স্মার্ট হজ ব্যবস্থাপনা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে ঢাকা হজ অফিসের সম্মেলন কক্ষে হজযাত্রী প্রশিক্ষণ ২০২৪ ’র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী এ কথা বলেন।

ফরিদুল হক খান বলেন, আপনারা সকলেই যাতে সহী-শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে পারেন সেজন্যই মূলত আজকের এই প্রশিক্ষণ। আমরা প্রশিক্ষণের জন্য অত্যন্ত দক্ষ প্রশিক্ষক নির্বাচন করেছি। আপনারা যদি প্রশিক্ষণের প্রতি মনযোগী হতে পারেন তাহলে আপনারা হজের নিয়ম-কানুন, হুকুম-আহকাম, ধারাবাহিক আনুষ্ঠানিকতা- সবকিছু আয়ত্তে আনতে পারবেন।

তিনি বলেন, আমাদের দেশের বেশিরভাগ মানুষেরই প্রবণতা হলো জীবনের শেষ প্রান্তে এসে হজ পালন করা। হজ অনেক পরিশ্রমসাধ্য ইবাদত, এর জন্য শারীরিক সামর্থ্য থাকা বাঞ্চনীয়। অনেকেরই সেই শারীরিক সামর্থ্য থাকে না। যার কারণে তাদের পক্ষে হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন করা অনেক কষ্টকর হয়ে যায়।

তিনি বলেন, অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে জমানো সঞ্চয় দিয়েই হজব্রত পালন করতে যান। এদেশের অধিকাংশ মানুষেরই দ্বিতীয় বার হজ করার মতো আর্থিক সঙ্গতি থাকে না। সে কারণে আপনার পরিশ্রম ও অর্থ যেন বিফলে না যায় সেজন্য অবশ্য মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)’র নির্দেশিত পথ অনুসরণ করে হজ সম্পাদন করতে হবে। সহী ও শুদ্ধভাবে হজব্রত পালন করতে হবে।

ফরিদুল হক খান বলেন, সৌদি আরবে আপনার পরিচয় শুধু একজন হজযাত্রী নয়, আপনার পরিচয়-আপনি একজন বাংলাদেশি। আপনার আচার-আচরণ, কথাবার্তা ও চালচলনের মাধ্যমেই বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি প্রকাশ পাবে।

তিনি সৌদি আরবের আইন-কানুন, নিয়ম-শৃঙ্খলা প্রতিপালনে কোনরূপ বিচ্যুতি না ঘটে সেদিকে যত্নবান থাকার আহ্বান জানান।

এছাড়া, কারো জন্য দেশের ভাবমূর্তি ও সম্মান যেন ক্ষুন্ন না হয় সেদিকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার জন্য হজযাত্রীদেরকে অনুরোধ জানান তিনি।

ধর্মসচিব মু. আ. হামিদ জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যদের মধ্যে হজ অনুবিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম, যুগ্মসচিব ড. মো. মঞ্জরুল হক ও ঢাকা হজ অফিসের পরিচালক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বক্তব্য রাখেন।

প্রশিক্ষণে সরকারি মাধ্যমে নিবন্ধিত ঢাকার হজযাত্রীরা অংশগ্রহণ করছেন।

;

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনা নিয়ে আশঙ্কা এজেন্সি মালিকদের



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন হজ এজেন্সির মালিকেরা। তাই সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে দ্রুত সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন এজেন্সি মালিকেরা।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান অপারেটিং হজ এজেন্সির মালিকরা।

সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে বলে হাবিবুল্লাহ মুহাম্মদ কুতুবুদ্দীন লিখিত বক্তব্যে বলেন, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কিছু ঊর্ধতন কর্মকর্তা এবং মক্কা হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তাদের অবহেলা ও দায়িত্বহীনতার কারণে হজ ব্যবস্থাপনায় জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে এবারের হজ ব্যবস্থাপনায় বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা করছেন তারা।

তিনি আরও বলেন, গত ১৮ এপ্রিল ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের হজ ১ শাখা থেকে সৌদি সরকারের একটি চিঠির বরাতে জানানো হয়- আগামী ২৯ এপ্রিল হজ যাত্রীদের ভিসা ইস্যু বন্ধ হয়ে যাবে।

চিঠিতে আরও জানানো হয়, ২৯ এপ্রিলের মধ্যে আবশ্যিকভাবে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে হবে। এজেন্সীর অবহেলার কারণে হজযাত্রীদের হজে গমন অনিশ্চিত হলে সে এজেন্সীর বিরুদ্ধে হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা আইন ২০২১ অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এর আগে, গত ১০ ফ্রেব্রুয়ারি ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক চিঠিতে জানানো হয়, সৌদি সরকারের হজ ও উমরা মন্ত্রণালয়ের আবাসন, ক্যাটারিং সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল প্রকার অনলাইন চুক্তি (সার্ভিস কোম্পানি, পরিবহান, ইত্যাদি) সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। অথচ এখনো অনেক এজেন্সির ৮০ শতাংশ কার্যক্রম বাকি।

এমন অবস্থায় সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এবং সকল প্রতিবন্ধকতা নিরসনের জন্য প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চেয়ে হজ এজেন্সি মালিকেরা অনুরোধ করেন।

এছাড়াও কিছু সুনির্দিষ্ট সুপারিশ করেন তারা। সেগুলো হলো- দ্রুত সময়ের মধ্যে সকল হাজির মিনার জোন নির্ধারণ করে ই হজ সিস্টেম আপডেট করতে হবে। ফাইনাল ফ্লাইট শিডিউল ঘোষণা ও সকল এজেন্সির হজযাত্রী অনুপাতে টিকেট নিশ্চিত করতে হবে। মোয়াজ্জেমদের জন্য বারকোড ভিসার বিষয়টি নিশ্চিত করা। যাদের সৌদি একাউন্টে এখনো রিয়াল জমা হয়নি তাদের একাউন্টে দ্রুত রিয়াল জমার ব্যবস্থা করা।

তারা বলেন, বর্তমানে সৌদি একাউন্টে টাকা ঢুকতে দেড় মাস সময় লাগে। যদি কারো একাউন্টে ১ পয়সাও কম থাকে তাহলে তার হজে যাওয়া সম্ভব হবে না। এবং বর্তমানে সরকারের বিভিন্ন চার্জ একবারে হিসাব করে পাঠানো অনেকটা অসম্ভব। এছাড়া যাদের এখনো মেননজাইটিস ও ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা হয়নি তাদের জন্য দ্রুত টিকার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও ভিসা ইস্যু কার্যক্রম অন্যান্য বছরের মতো সর্বশেষ ফ্লাইটের এক সপ্তাহ পূর্ব পর্যন্ত চালু রাখার দাবি জানান তারা। আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে অনেকে হজ করতে যাওয়ার ইচ্ছে করলেও সকল প্রস্তুতির পর মারা গেছেন। আবার কেউ মারাত্মক রোগাক্রান্ত হয়েছেন। এছাড়াও দুর্ঘটনা ইত্যাদি কারণে যেতে পারেন না। তাই সেই হজযাত্রীর পরিবর্তে তার পরিবারের অন্য কোন সদস্যদের যাওয়ার ব্যবস্থা করা যেতো তাহলে জমাকৃত টাকা গচ্চা যেতো না। বর্তমানে যে অবস্থা আছে তাতে ভিসা ইস্যু এতো আগে বন্ধ হয়ে গেলে অহেতুক প্রচুর টাকা সৌদি আরবে চলে যাবে। এতে দেশের ক্ষতি হবে। যদি বিষয়টি সৌদি সরকারকে বুঝাতে আমরা সক্ষম হই তাহলে আমাদের বিশ্বাস সৌদি সরকার বাস্তবতা বুঝে অবশ্যই বিবেচনা করবেন।

;

যে গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার কেউ নেই



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

গ্রামের মানুষের মাঝে ছাগল বিতরণ করা হচ্ছে, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সম্মিলিত ও সুপরিকল্পিত উদ্যোগে বদলে গেছে প্রত্যন্ত একটি গ্রামের চিত্র। গ্রামটির সকল পরিবার হয়েছে সচ্ছল। ওই গ্রামে এখন আর ফেতরা কিংবা জাকাত নেওয়ার মানুষ নেই। সবাই স্বাবলম্বী।

কিশোরগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার দানাপাটুলি ইউনিয়নের চাঁদের হাসি গ্রাম। এই চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের এমন উদ্যোগের ফলে বদলে গেছে গ্রামের দৃশ্যপট।

সংগঠনটি নিজ গ্রামের গন্ডি পেরিয়ে এখন পার্শ্ববর্তী গ্রামের মানুষদের স্বাবলম্বী করতে উদ্যোগ নিয়েছে। এমন প্রশংসনীয় কাজ করা সংগঠনটির নেই নিবন্ধন, নেই বাহারি অফিস। তারা প্রচারে নয়, কাজে বিশ্বাসী। যার প্রমাণ, ফাউন্ডেশনের জনকল্যাণমূলক নানা কাজ।

জানা গেছে, ২০০৩ সালে চাঁদের হাসি গ্রামের প্রয়াত মাওলানা হেলান উদ্দিনের প্রচেষ্টায় দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে গ্রামে সকল পরিবারের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে অসহায়-গরীব মানুষের মাঝে বিতরণ করে আসছে। এভাবে দীর্ঘ ২১ বছরে এই কার্যক্রমের ফলে চাঁদের হাসি গ্রামে এখন আর ফেতরা ও জাকাত নেওয়া মতো মানুষ নেই। ইতোমধ্যে সংগঠনটি গ্রামের ৮০ জন অসহায় গরীব মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছে।

২ বছর আগে চাঁদের হাসি গ্রামের দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর পেয়েছেন ওহেদ আলী। তিনি জানান, ঘর পেয়ে মাথা গুজার ঠাঁই হয়েছে। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভালোভাবেই চলছে তার সংসার।

মাহমুদ বেগম নামে এক কলেজ শিক্ষার্থী জানান, তার পরিবার দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সহায়তা ঘর ও সেলাই মেশিন পেয়েছেন। তার বাবা নেই মা ও ছোট বোনকে নিয়ে ঘরে বসবাস করছেন। সেলাই মেশিনের মাধ্যমে মানুষের জামা কাপড় সেলাই করে নিজেও স্বাবলম্বী হয়েছেন।

চাঁদের হাসি দরিদ্র বিমোচন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাসুদ আলম জানান, ২০০৩ সালে আমাদের সংগঠনটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এলাকার চলনশীল মানুষের ফেতরা ও জাকাত একসঙ্গে করে আমরা কাজ করে থাকি। এভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করার পর থেকে ইসলামের বিধি মোতাবেক যে ৮টি খাত রয়েছে সে হিসাবে বর্তমানে আমাদের গ্রামে জাকাত-ফেতরা নেওয়ার মতো কোনো মানুষ নেই।

সংগঠনটি গ্রামের অসহায় ও গরীব মানুষকে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা সহায়তাও দিয়ে আসছে। গ্রামের বেকারত্ব ঘোচাতে অসহায় ও গরীব মানুষের মাঝে গরু, ছাগল, সেলাই মেশিন, অটোরিকশা ও ভ্যান গাড়ি বিতরণ করেছে।

;

রাজধানীতে শীতল পানি বিতরণ করল ইসলামী ছাত্র আন্দোলন



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের, ছবি : সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তীব্র তাপদাহে সৃষ্ট সংকটে দেশব্যাপী শীতল পানি ও শরবত বিতরণ কর্মসূচী পালন করছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ।

বিভিন্ন জেলা, থানা, ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভ্রাম্যমাণ ভ্যান নিয়ে পথচারী, দিনমজুর, রিকশাচালকসহ তৃষ্ণার্ত মানুষের মাঝে ঠান্ডা পানি বিতরণ করেছে সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ। এছাড়া খাবার স্যালাইন ও পকেট রুমাল বিতরণ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬ ও ৬৭ নম্বর ওয়ার্ডে শ্রমজীবী ও পথচারীদের মাঝে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ ঢাকা মহানগর পূর্বের ডেমরা থানা শাখার উদ্যোগে বিশুদ্ধ শীতল পানি, স্যালাইন ও ওয়ালেট টিস্যু বিতরণ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান বিষয়ক সম্পাদক শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমানের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখার সহ-সভাপতি মুহাম্মাদ মাইনুল ইসলাম, ডেমরা থানা শাখার সভাপতি শাহাদাত হোসেন মৃধা, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিইন বিন আমজাদ, কফিল উদ্দিনসহ থানা ও ওয়ার্ড নেতৃবৃন্দ।

এ সময় প্রধান অতিথি শেখ মুহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান বলেন, অপরিকল্পিত নগরায়ন, জলাধার ভরাট ও অবাধে বৃক্ষ নিধনের ফলেই অসহনীয় তাপদাহে নগরে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। সাময়িক স্বস্তির জন্য আমরা শীতল পানির বিতরণ কর্মসূচি পালন করছি। কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই সমাধানের জন্য নগরকে সবুজায়ন ও বসবাসের উপযোগী করতে রাষ্ট্রকেই যথাযথ ভূমিকা পালন করতে হবে।

নগর সহ-সভাপতি মাইনুল ইসলাম বলেন, যতদিন তীব্র তাপদাহ থাকবে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগর পূর্বের উদ্যোগে নগরজুড়ে বিশুদ্ধ শীতল পানি বিতরণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

;