জিলহজ মাসের প্রথম দশক, পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দশক



ইউসুফ নুর, অতিথি লেখক, ইসলাম

  • Font increase
  • Font Decrease

হিজরি বর্ষের সর্বশেষ মাস জিলহজ। এ মাসের প্রথম দশক অত্যন্ত বরকতময় ও গুরুত্বপূর্ণ। এ দশকের রাতগুলো মুসলিম উম্মাহর জন্য নেকি ও পূণ্য অর্জনের মৌসুম বলা চলে। আল্লাহ প্রদত্ত এ সুযোগের সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে পরকালের পাথেয় সংগ্রহ করা মুসলমানদের দায়িত্ব।

পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয় আসমান ও পৃথিবী সৃষ্টির দিন থেকেই আল্লাহর বিধান ও গণনায় মাস বারোটি। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটি সুপ্রতিষ্ঠিত বিধান। সুতরাং এ মাসগুলোতে তোমরা নিজেদের প্রতি (পাপাচারের মাধ্যমে) অবিচার করো না।’ –সূরা আত-তাওবা: ৩৬

হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বর্ণনা অনুযায়ী চারটি সম্মানিত। ওই মাসগুলো হচ্ছে- জিলকদ, জিলহজ, মহররম ও রজব

ইমাম জাসসাস রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘তোমরা এ মাসগুলোতে নিজেদের প্রতি অবিচার করো না’ কোরআনের এই বাক্য থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যায় যে, এ মাসগুলোর এমন বৈশিষ্ট্য রয়েছে- যার ফলে এতে ইবাদত করা হলে বছরের বাকি মাসগুলোতে ইবাদতের তওফিক ও সাহস লাভ করা যায়। অনুরূপ এ মাসগুলোতে পাপাচার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে পারলে বছরের অন্যান্য মাসগুলোতেও পাপাচার থেকে বিরত থাকা সহজ হয়। তাই এমন সুযোগের সদ্ব্যবহার থেকে বঞ্চিত থাকা হবে অপূরণীয় ক্ষতি। -আহকামুল কুরআন

জিলহজ মাসের প্রথম দশককে ঈমানি আবেগ দিয়ে বরণ করে নেওয়া পূণ্যের প্রথম ধাপ। এ ক্ষেত্রে আমাদের করণীয় হলো-

তওবা
ইবাদতের রাতগুলোকে তওবা ও ইস্তেগফারের মাধ্যমে স্বাগত জানাতে হয়। তওবা দ্বারা গুনাহ মাফ হয় এবং ইবাদতের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। তওবা দুনিয়ার উন্নতি ও আখেরাতের মুক্তির চাবিকাঠি। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ –সূরা আন নুর: ৩১

ইবাদতের দৃঢ় সংকল্প
বরকতময় রাতগুলোতে ইবাদত করার দৃঢ় সংকল্প থাকা চাই। ভালো কথা বলার ও ভালো কাজ করার অদম্য আগ্রহ থাকলেই আল্লাহর সাহায্য পাওয়া যায়। যে ব্যক্তি একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর দিকে অগ্রসর হবে, আল্লাহ তার জন্য আমলের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে দেবেন। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘যারা আমার জন্য সাধনা করে, আমি অবশ্যই তাদেরকে আমার পথে পরিচালিত করবো। নিশ্চয় আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের সঙ্গে আছেন।’ –সূরা আল আনকাবুত: ৬৯

https://img.imageboss.me/width/700/quality:100/https://img.barta24.com/uploads/news/2018/Aug/14/1534258979073.jpg

গুনাহ না করা
কল্যাণের এ দিনগুলোতে পাপাচারে লিপ্ত হওয়া নিজের ওপর চরম অবিচার করার শামিল। গুনাহের কারণে আল্লাহর অভিশাপ নেমে আসে। তার দয়া ও করুণার পথ বন্ধ হয়ে যায়। পাপাচারে লিপ্ত ব্যক্তি ইবাদত ও নেক আমলের অনুরাগ হারিয়ে ফেলে। আপাদমস্তক পাপাচারে নিমজ্জিত থেকে মুক্তির আশা করা বাতুলতামাত্র।

হজরত মুআজ (রা.) বর্ণিত এক হাদিসে আছে, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকো। কারণ, গুনাহের কারণে আল্লাহর আজাব নেমে আসে।’ -মুসনাদে আহমদ: ২১৫৭০

বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত দশক
মহিমান্বিত জিলহজের প্রথম দশকের কতিপয় বৈশিষ্ট্য এখানে তুলে ধরছি-

১. আল্লাহতায়ালা এ দিনগুলোর শপথ করেছেন: তিনি বলেন, ‘শপথ ফজরের, শপথ দশ রজনীর।’ –সূরা আল ফজর: ১-২

অধিকাংশ তাফসিরবিদের মতে, এখানে জিলহজের প্রথম ১০দিনের কথা বলা হয়েছে। ইমাম ইবনে কাসির রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এটাই বিশুদ্ধতম মত।

২. আল্লাহকে স্মরণ করার নির্ধারিত রাত: এ প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, ‘যাতে নির্ধারিত দিনগুলোতে তারা আল্লাহকে স্মরণ করে।’ –সূরা আল হজ: ২৮

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস ও আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.)সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ তাফসিরবিদের মতে আয়াতে নির্ধারিত দিনগুলো দ্বারা জিলহজের প্রথম ১০ দিন বোঝানো হয়েছে। -তাফসিরে ইবনে কাসির

৩. পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দশক: হজরত জাবির (রা.) বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ দিনগুলো হলো- জিলহজের প্রথম দশক।’ –ইবনে হিব্বান

৪. আরাফার দিন: ৯ জিলহজ, আল্লাহর কাছে সর্বোত্তম দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে আরাফার দিনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ আর কোনো দিন নেই।’ -ইবনে হিব্বান

আরাফার দিন, মহামুক্তির মহান দিবস। মুমিনের কাঙ্খিত দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই যেদিনে আরাফার দিন হতে অধিক বান্দাকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। তিনি এদিন বান্দার খুব কাছে চলে আসেন ও তাদের নিয়ে ফেরেশতাদের কাছে গর্ব করে বলেন, এরা কি চায়? শুধু আরাফার দিনের বৈশিষ্ট্য মর্যাদা ও ফজিলতের ব্যাপারে আলোকপাত করার জন্য স্বতন্ত্র রচনা প্রয়োজন। আলেমরা বলেন, জিলহজের প্রথম দশকের শ্রেষ্ঠত্বের জন্য আরাফার দিনই যথেষ্ট।

৫. কোরবানির দিন: ১০ জিলহজ, কোরবানির দিন। বছরের সর্বোৎকৃষ্ট দিন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আল্লাহর কাছে সর্বাধিক সম্মানিত দিন হচ্ছে- কোরবানির দিন।’ -আবু দাউদ ও নাসায়ি

আরও পড়ুন: ইসলামে সংখ্যালঘুর অধিকার প্রতিষ্ঠিত বিষয়

ফজিলতপূর্ণ দশক
জিলহজের প্রথম দশকে ইবাদতের মর্যাদা ও সওয়াব অনেক বেশি। ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘এমন কোনো দিন নেই, যে দিনগুলোর নেক আমল আল্লাহর কাছে জিলহজের এই ১০ দিনের অপেক্ষা অধিক প্রিয়। সাহাবারা বলেন, হে আল্লাহর রাসূল! আল্লাহর পথে জিহাদ করাও কি এতো প্রিয় নয়? হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আল্লাহর রাস্তায় জিহাদও এর চাইতে অধিক প্রিয় নয়। তবে কোনো ব্যক্তি যদি নিজের সত্ত্বা ও সম্পদ নিয়ে আল্লাহর পথে বেরিয়ে যায় এবং এ দু’টির কিছু নিয়ে আর ফিরে আসতে না পারে তবে তার ব্যাপার ভিন্ন। (অর্থাৎ শহিদের মর্যাদা স্বতন্ত্র)। -তিরমিজি

ফজিলতপূর্ণ জিলহজের প্রথম দশকের কতিপয় আমল-
১. হজ-ওমরা: হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘তোমরা পরপর হজ ও ওমরা করো। কেননা, হজ ও ওমরা দারিদ্র ও গুনাহ মিটিয়ে দেয়, যেমন হাপরের আগুনে লোহা ও সোনা-রূপার ময়লা দূর হয়। কবুল হজের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া আর কিছুই নয়।–তিরমিজি: ৭৫৭

২. নফল রোজা ও নামাজ: জিলহজের প্রথম দশদিনের নফল রোজা রাখার অনেক সওয়াব। আল্লাহতায়ালা তা খুব পছন্দ করেন। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এমন কোনো দিন নেই, যে দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে জিলহজের ১০ দিনের ইবাদতের তুলনায় বেশি প্রিয়। প্রতিটি রোজা এক বছরের রোজার সমতুল্য এবং প্রতিটি রাতের ইবাদত শবেকদরের ইবাদতের সমতুল্য। -সুনানে তিরমিজি: ৭০৬

তবে আরাফার দিনের রোজার ফজিলত স্বতন্ত্র। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘আমি আল্লাহর কাছে আশা করি যে, তিনি আরাফার দিনের রোজার বিনিময়ে পূর্ববর্তী বছর ও পরবর্তী বছরের গুনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন।’ –সুনানে তিরমিজি: ৬৯৭

৩. জিকির: কল্যাণের এ দশকে অধিকহারে আল্লাহর জিকির ও তসবিহ পাঠের জন্য হাদিস শরিফে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘জিলহজের ১০ দিনের চাইতে আল্লাহর কাছে অধিক মর্যাদাবান দিন নেই। আর এমন কোনো দিন নেই, যে দিনের ইবাদত আল্লাহর কাছে এ ১০ দিনের ইবাদত অপেক্ষা অধিক প্রিয়। অতএব, তোমরা এ দিনগুলোতে বেশি বেশি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবার ও আলহামদুলিল্লাহ পড়োভ’ –আহমদ

এ দশকে যেকোনো সময়ে একাকী ও সমবেতভাবে তাকবির দেওয়া সুন্নত। তবে ৯ জিলহজের ফজর থেকে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর তাকবির বলা সুন্নত।

৪. কোরবানি: সামর্থ্যবান প্রত্যেক মুসলিম নর-নারীর ওপর কোরবানি ওয়াজিব। এছাড়া নফল কোরবানিও করা যায়। কোরবানি প্রভুপ্রেমের নিদর্শন। এর বিনিময়ে আল্লাহর পক্ষ থেকে রয়েছে অশেষ সওয়াব ও বিপুল ক্ষমার আশ্বাস। হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হজরত ফাতেমা রাযিয়াল্লাহু আনহাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে ফাতেমা! তুমি তোমার কোরবানির কাছে যাও এবং তা দেখো। কেননা, কোরবানির পশুর রক্তের প্রথম ফোটার বিনিময়ে তোমার অতীত সমস্ত গুনাহ মাফ হয়ে যাবে।’ –আত তারগিব ওয়াততারহিব: ৬২৪

এ ছাড়া পূণ্যময় এ দশকে প্রত্যেক নেক আমলের সওয়াব বিপুলভাবে বৃদ্ধি পায়। তাই আল্লাহর সন্তোষ ও করুণা অর্জনের উদ্দেশে যার যার সাধ্যমতো সৎ কাজ বেশি বেশি করা। এ ছাড়া দান-সদকা, কোরআন তেলাওয়াত, কোরআন শিক্ষা, ইসলামি জ্ঞান ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম, আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা, মাতা-পিতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার, দুঃস্থ ও অসহায় লোকদের সেবায় আত্মনিয়োগ, সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধ, দাওয়াত ও জনহিতকর কর্মসূচির মাধ্যমে কল্যাণময় এ দশক উদযাপন করার সুযোগ রয়েছে।

লেখক: ইমাম ও খতিব, কাতার ধর্ম মন্ত্রণালয়, কাতার।

   

সৌদি পৌঁছেছেন ২৪ হাজার ২৩৬ হজযাত্রী



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ থেকে চলতি মৌসুমে হজ পালন করতে ২৪ হাজার ২৩৬ জন হজযাত্রী সৌদি আরব পৌঁছেছেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় তিন হাজার ৭৪৭ জন ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী ২০ হাজার ৪৮৯ জন। এখন পর্যন্ত ৭৯ হাজার ৯০১টি ভিসা ইস্যু করা হয়েছে।

শুক্রবার (১৭ মে) হজ সম্পর্কিত সর্বশেষ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়।

বুলেটিনে জানানো হয়, এ পর্যন্ত ৬১টি ফ্লাইটের মধ্যে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ২১টি, সৌদি এয়ারলাইনসের ২০টি এবং ফ্লাইনাস এয়ারলাইনস ২০টি ফ্লাইট পরিচালনা করছে।

হেল্পডেস্ক থেকে পাওয়া তথ্য মতে, হজযাত্রীদের সৌদি আরবে যাওয়ার প্রথম ফ্লাইট শুরু হয় গত ৯ মে। আগামী ১০ জুন পর্যন্ত যাওয়ার ফ্লাইট চলবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন এবারের হজ অনুষ্ঠিত হবে। হজ শেষে ২০ জুন ফিরতি ফ্লাইট শুরু হবে। এবার সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনা মিলিয়ে মোট ৮৫ হাজার ২৫৭ জন হজ করতে যাবেন।

দেশে ফেরার ফ্লাইট শেষ হবে আগামী ২২ জুলাই। ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় অনুমোদিত এবার হজ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি।

;

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সির মালিকের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়াকে দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহাঃ আবু তাহির সাক্ষরিত এত প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, ২০২৪ সনের হজ মৌসুমে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হ.লা, ০৬৭২) এর অধীন ৪৪৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধিত রয়েছে। উক্ত এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীদের মধ্যে অদ্যাবধি কোন ভিসা করা হয়নি। তথাপি এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় কর্তৃক যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এতে এজেন্সিটিতে নিবন্ধিত হজযাত্রীগণ প্রতারিত হওয়ার আশংকা তৈরি হয়েছে এবং তাঁদের এ বছর হজে যাওয়া অনিশ্চিত হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (ই.লা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া যাতে দেশ ত্যাগ করতে না পারে এবং একইসাথে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন।

এমতাবস্থায়, আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লি: (হলা. ০৬৭২) এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব মো: আব্দুস সালাম মিয়া এর দেশ ত্যাগ রোধ করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে কেন এসব এজেন্সি বর্ধিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা করানো হয়নি তার ব্যাখ্যা চেয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছিলো ধর্ম মন্ত্রণালয়।

জানা গেছে আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি ৪৪৪ জন হজ যাত্রীর কারোরই ভিসার জন্য আবেদন করেনি। এমতাবস্থায় এই এজেন্সিসহ আরও ৫টি এজেন্সিকে শোকজ করা হয়।

মঙ্গলবার (১৪ মে) ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুহা. আবু তাহেরের সই করা একটি চিঠিতে এ শোকজ করা হয়। গত বুধবার (১৫ মে) যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করে শোকজের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

শোকজ পাওয়া এজেন্সিগুলো হলো- ওয়ার্ল্ডলিঙ্ক ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ৫৭০, যাত্রী সংখ্যা ২৮৬), আনসারি ওভারসিস (লাইসেন্স ৬০১, যাত্রী সংখ্যা ২৬০, ভিসা করা হয়েছে মাত্র ৫ জনের), আল রিসান ট্রাভেল এজেন্সি (লাইসেন্স ৬৭২, যাত্রী সংখ্যা ৪৪৪), মিকাত ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলস (লাইসেন্স ১০২৫, যাত্রী সংখ্যা ৩৭৫), নর্থ বাংলা হজ ট্রাভেলস এন্ড ট্যুরস (লাইসেন্স ১০৮৬, যাত্রী সংখ্যা ২৬০), হলি দারুন নাজাত হজ ওভারসিস (লাইসেন্স ১৪৬২, যাত্রী সংখ্যা ২৫০)। এসব এজেন্সির মাধ্যমে মোট ১৮৭৫ জনের চলতি বছর হজে যাওয়ার কথা ছিল। এর মধ্যে মঙ্গলবার পর্যন্ত আনসারি ওভারসিস মাত্র ৫ জনের ভিসা সম্পূর্ণ করেছে। বাকি পাঁচটি এজেন্সি একজন যাত্রীরও ভিসা আবেদন করতে পারেনি।

শোকজের চিঠিতে বলা হয়, গত ৯ মে থেকে হজযাত্রীদের সৌদি আরব গমন শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ১৭ হাজার ১৪১ জন হজযাত্রী সৌদি আরবে পৌঁছেছেন। ২৫৯টি এজেন্সি/লিড এজেন্সির অধিকাংশই হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন করলেও একাধিকবার তাগিদ দেওয়া সত্ত্বেও ৬টি এজেন্সি এখন পর্যন্ত হজযাত্রীদের ভিসা করেনি। ভিসা সম্পন্ন না করায় হজযাত্রীদের হজে গমনে অনিশ্চয়তার আশঙ্কা রয়েছে। এজেন্সির এমন কর্মকাণ্ড সুষ্ঠু হজ ব্যবস্থাপনার অন্তরায়। তাই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না করার বিষয়ে ১৫ মের মধ্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ে যথাযথ ব্যাখ্যা প্রদান করতে হবে। একইসঙ্গে সব হজযাত্রীর ভিসা দ্রুত সম্পন্ন করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

এদিকে বৃহস্পতিবার (১৬ মে) ৯টি বেসরকারি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মতিউল ইসলাম।

অতিরিক্ত সচিব আরও বলেন, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন করতে না পারায় জন্য, ১২টি এজেন্সিকে ব্যাখ্যা প্রদানের পাশাপাশি সচিবালয়ে ডেকে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে আজকের মধ্যে এই ১২টির মধ্যে ৯টি হজ এজেন্সিকে ভিসা প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এসব এজেন্সি ভিসা করতে না পারার ব্যাখ্যা তুলে ধরেছে মন্ত্রণালয়ের কাছে।

চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনা হজ করতে যাবেন ৪ হাজার ৫৬২ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় যাবেন ৮০ হাজার ৬৯৫ জন।

সৌদি আরবে চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ১৬ জুন হজ অনুষ্ঠিত হতে পারে। হজ কার্যক্রমে অংশগ্রহণকারী হজ এজেন্সির সংখ্যা ২৫৯টি। হজ ফ্লাইট শুরু হয়েছে ৯ মে। শেষ হজ ফ্লাইট ১০ জুন। হজযাত্রীদের প্রথম ফিরতি ফ্লাইট ২০ জুন আর শেষ ফিরতি ফ্লাইট ২২ জুলাই।

;

আন্তরিক তওবার একটি অশ্রুকণা পাপকে মুছে দেয়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

দুনিয়ার নানাবিধ সমস্যায় নিরাশ হয়ে আমাদের কতজনই না নিদ্রাহীন রাত অতিবাহিত করি, নানা নেশায় জড়িয়ে যাই। একবারও মনে হয় না, সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘আমাকে ডাকো, আমি সাড়া দেবো।’ আমরা আল্লাহকে ডাকতে পারি না। জানেন এর কারণ কী?

আমাদের হৃদয়মন পৃথিবীর সঙ্গে খুব বেশি মাত্রায় যুক্ত হয়ে গেছে। তাই প্রয়োজনীয় সময়ে আল্লাহর কথা স্মরণ হয় না। উচিৎ ছিলো, এটা মনে করা- দুনিয়ায় আমরা কেবলই ভ্রমণকারী। কোনো কিছুই স্থায়ী হয় না, মানুষের স্মৃতিও না।

ছোট পাপ বলে কিছু নেই
‘ছোট’ পাপ, এটা এমন কিছু না- এমন ভাবনাকে প্রশ্রয় দেবেন না। সাদামাটা মিথ্যা কথা এবং গসিপগুলো প্রায়ই আমাদের পতনের কারণ হয়। অজুহাতের আশ্রয় নেবেন না। কেবল আপনি মুখে মুখে অনুতপ্ত হবেন আর কাজে কোনো পরিবর্তন আসবে না তাতে লাভ হবে না। হৃদয় থেকে অনুশোচনা করুন। এটা অনুভব করুন। আপনি এটি যে আন্তরিকভাবে করছেন তার প্রতিফলন ঘটান।

হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম উপায়
আপনি যদি অনুভব করেন যে, শয়তান গতকাল আপনাকে পরাজিত করেছে, আজ তাকে পরাস্ত করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করুন। আরও নেক আমল করুন, বেশি বেশি অনুশোচনা করুন এবং সর্বশক্তিমানের সান্নিধ্য লাভ করুন। মনে রাখবেন, প্রার্থনা হলো হৃদয়ের রোগ নিরাময়ের অন্যতম সেরা উপায়। আপনার হৃদয় এবং আত্মার সঙ্গে কথা বলুন। সর্বশক্তিমানের নিকটবর্তী হন। তিনি আপনাকে স্বস্তি দেবেন।

অর্থহীনতায় সময় নষ্ট করবেন না
চারদিকের হইচই শুনে বিভ্রান্ত হবেন না। বিরতি নিন এবং প্রতিচ্ছবি দেখুন। আপনি বুঝতে পারবেন যে আপনার চারপাশের সব অর্থহীনতায় আপনি কতটা সময় নষ্ট করেছেন। আর সেই সঙ্গে আপনি বারবার তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। অতীতপাপের জন্য, সেসব পাপ যার কথা আপনি ভুলে গেছেন অথবা উপেক্ষা করেছেন তার জন্য। করুণাময়ের কাছে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করুন, এ জন্য তিনি যেন আপনাকে শাস্তি না দেন।

পাপহীনতার পথে ফিরে আসুন
এখন যা ঘটছে তাই সর্বোত্তম। এটি আপনাকে বিশ্বাস করতে হবে। এটি আপনি এ মুহূর্তে উপলব্ধি নাও করতে পারেন, তবে যদি তার ওপর আস্থাবান হন তবে পুরস্কার আপনি পাবেন। আর কখনও ছোট পাপকে ছোট হিসাবে নেবেন না। বিপদটি হলো- এটি করতে করতে তা অভ্যাসে পরিণত হয় এবং একসময় এটাকে স্বাভাবিক মনে হতে থাকবে। পাপকে স্বীকৃতি দিন, আর পাপহীনতার স্বাভাবিক পথে ফিরে আসুন।

কোনো দ্বিধা নয়, তওবা করুন
আপনার আন্তরিক ক্ষমা ভিক্ষার একটি অশ্রুকণা আপনার পাপকে মুছে দিতে পারে। সর্বশক্তিমান ক্ষমা করতে ভালোবাসেন! দ্বিধা করবেন না, অনুতাপ প্রকাশ করুন। পাপের হাজার আনন্দবিন্দুকে আন্তরিক অনুতাপের একটি অশ্রুবিন্দু সর্বশক্তিমানের কৃপায় মুছে দিতে পারে।

আমরা কাঁদি, তিনি শুনেন। আমরা আহত হই, তিনি নিরাময় করেন। আমরা ডাকি, তিনি জবাব দেন। আমরা অনুতাপ করি, তিনি ক্ষমা করেন। সবকিছুর জন্য, সব সময় সর্বশক্তিমানের কাছেই চান, তার কাছেই প্রার্থনা করুন।

মানুষের কাছে অভিযোগ নয়
আপনার যেকোনো সমস্যা সম্পর্কে সবার কাছে অভিযোগ করাকে অভ্যাসে পরিণত করবেন না। বেশিরভাগই এ জন্য কিছু করার কথা ভাবে না। সর্বশক্তিমানের সঙ্গে কথা বলুন, সবকিছুতে নিয়ন্ত্রণ তার। তিনি আপনার পাপের পরিমাণ কত বেশি তা নিয়ে পরোয়া করেন না। আপনি কতটা এ জন্য অনুতপ্ত হচ্ছেন, সেটি দেখেন তিনি। আপনার পাপ যেন আপনাকে হতাশ না করে!

কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘আপনি বলুন, সত্যিই কি তোমরা সেই মহাপ্রভুকে অস্বীকার করছ! যিনি পৃথিবীকে মাত্র দুদিনে সৃষ্টি করেছেন এবং তার অংশীদার নির্ধারণ করছ? তিনি তো সমস্ত জগতের প্রতিপালক। যিনি পৃথিবীতে তার উপরাংশে পাহাড় স্থাপন করেছেন এবং জমিনের ভিতরাংশ বরকতপূর্ণ করেছেন আর ভূগর্ভে সুষমরূপে খাদ্যদ্রব্য মজুদ করেছেন মাত্র চার দিনে। সব যাচনাকারীর জন্য সমানভাবে। অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করলেন আর তা ছিল ধোঁয়াশাচ্ছন্ন।’ -সুরা ফুসিসলাত : ৯-১১

হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়াকে মহব্বত করল সে তার পরকালকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। আর যে ব্যক্তি পরকালকে মহব্বত করল সে তার দুনিয়াকে ক্ষতিগ্রস্ত করল। সুতরাং তোমরা অস্থায়ী বস্তুর ওপর চিরস্থায়ী বস্তুকে প্রাধান্য দাও।’ -মুসনাদে আহমাদ

অন্য হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত সাহল ইবনে সাদ (রা.) বর্ণনা করেছেন, এক ব্যক্তি হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর খেদমতে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যা করলে আল্লাহ আমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষেরাও আমাকে ভালোবাসবে। তিনি বললেন, দুনিয়া ত্যাগ করো, আল্লাহ তোমাকে ভালোবাসবেন এবং মানুষের কাছে যা আছে, তার প্রতি লালসা করো না, তবে লোকেরা তোমাকে ভালোবাসবে। -জামে তিরমিজি

;

শান্তির শহরে হাজিদের স্বাগত জানায় শান্তির পায়রা



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
মক্কার কবুতর, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার কবুতর, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

মক্কার কবুতরের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের হজ ও উমরাযাত্রীদের বিশেষ পরিচিতি রয়েছে। মক্কার রাস্তায় ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে বেড়ানো পায়রাগুলো লম্বা গলা ও আকর্ষণীয় রঙের জন্য পরিচিত। মসজিদে হারামের পথে এই কবুতরগুলোর দেখা মেলে। সেখানে আসা মানুষ তাদের খাবার খাওয়ায়। তাদের ছবি তোলে।

কবুতরের আধিক্যের কারণে মিসফালার একটি এলাকার নাম কবুতর চত্বর বলে পরিচিত পেয়েছে। এখানে প্রচুর আফ্রিকান নারী কবুতরের খাবার বিক্রি করেন। পবিত্র নগরী মক্কার ‘মসজিদে হারামের’ চত্বরে ঘুরে বেড়ানো ‘শান্তির পায়রা’ যেন হজ ও উমরা পালনে আসা মানুষকে স্বাগত জানায় ডানা ঝাপটে।

আরও পড়ুন : লোকশূন্য মক্কায় অভুক্ত নেই কবুতরগুলো

আরব নিউজের এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, মক্কায় ব্যাপক লোকসমাগম হলেও কবুতরগুলো ভয় পায় না। জনশ্রুতি আছে, এসব কবুতর পবিত্র কাবা ও আশপাশের এলাকায় মলত্যাগ করে না। এ কারণে হজ ও উমরাপালনে আসা মানুষ এবং স্থানীয়দের আরও প্রিয়পাত্রে পরিণত হয়েছে কবুতরগুলো।

মক্কায় ব্যাপক লোকসমাগম হলেও কবুতরগুলো ভয় পায় না, ছবি: সংগৃহীত

মক্কার ইতিহাস গবেষক সামির আহমেদ বারকা বলেন, গ্র্যান্ড মসজিদের বিভিন্ন স্থানে কবুতরসহ নানা জাতের পাখি ঘুরে বেড়ায়। মক্কায় তারা নিরাপদে, নিশ্চিন্তে বসবাস করছে। এসব পাখি ও কবুতর শিকার করতে শরিয়তে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।

পৃথিবীর অন্য পাখি ও কবুতরদের চেয়ে এগুলো আলাদা। তাদের বৈশিষ্ট্য হলো- সুন্দর আকৃতি, চমৎকার রং, টানাটানা চোখ আর লম্বা গলা।

মক্কার খুব জনপ্রিয় বিষয়গুলোর একটিতে পরিণত হয়েছে এসব পাখি। কোনো দয়ালু ব্যক্তি যদি খাবার দেন, এই আশায় প্রায়ই ডানা ঝাপটে ওড়াউড়ি করতে কিংবা দালানকোঠার পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায় তাদের। এই কবুতর ও পবিত্র নগরীতে আসা মানুষের মধ্যে এই চমৎকার সম্পর্ক চলে আসছে শত শত বছর ধরে।

সুন্দর আকৃতি, চমৎকার রং, টানাটানা চোখ আর লম্বা গলা এসব কবুতরের বৈশিষ্ট্য, ছবি: সংগৃহীত

বারকা আরও বলেন, ‘কেউ কেউ এই সংরক্ষিত কবুতরগুলোর সঙ্গে যোগসূত্র খুঁজে পান সে সব কবুতরের, হজরত মুহাম্মদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করার সময় যারা বাসা বেঁধেছিল সাওর পর্বতের গুহার মুখে। পুরস্কার হিসেবে ওই কবুতর এবং এদের বংশধরদের মক্কার পবিত্র নগরীতে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ করে দেন সৃষ্টিকর্তা।’ যদিও এই মত নিয়ে অনেকের আপত্তি রয়েছে।

ঐতিহাসিক শেখ মোহাম্মদ তাহির আল-কুরদি বলেন, এই কবুতরগুলো আবাবিল পাখির বংশধরও হতে পারে। কোরআন মাজিদের বর্ণনা অনুযায়ী, আবরাহা আল-আশরামের বাহিনীকে ধ্বংস করতে আল্লাহ এদের পাঠিয়ে ছিলেন।

ওই বাহিনী কাবাকে ধ্বংস করতে চেয়েছিল, তবে এই পাখির ঝাঁক তাদের ওপর ছোট ছোট পাথর নিক্ষেপ করে। এতে আল-আশরামের বাহিনী ধ্বংস হয়ে যায়। আল-আশরাম ও তার বাহিনী হাতির বাহিনী নামে পরিচিত। কোরআন মাজিদে উল্লেখ আছে তাদের কাহিনি।

এই পাখিগুলোর বিশেষ গুরুত্ব আছে, ছবি: সংগৃহীত

বারকা বলেন, ‘অনেকে বিশ্বাস করেন, এই সংরক্ষিত পাখিরা হজরত নূহ (আ.)-এর জাহাজে থাকা দুটি কবুতরের বংশধর। ঐতিহাসিক বিভিন্ন বইয়ে এর উল্লেখ আছে, এ বিষয়টিও মাথায় রাখতে হবে।’

এই পাখিগুলোর বিশেষ গুরুত্ব আছে। মক্কার অধিবাসী বলুন আর হজ, উমরা করতে আসা মানুষ কারোরই এদের মারার অনুমতি নেই। তেমনি তাদের বাসা থেকে এই পাখিদের তাড়িয়ে দেওয়া এবং ডিম ভাঙাও নিষিদ্ধ। এমনকি মক্কা অঞ্চলের লোকজন তাদের ভবনে জানালার পাশে কবুতরের থাকার জন্য বিশেষ মাঁচা বানিয়ে দেয়।

;