কোরবানি: ইসলামের বিধান, ধর্মীয় ঐতিহ্য, সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার



ড. মাহফুজ পারভেজ, অ্যাসোসিয়েট এডিটর, বার্তা২৪.কম
কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বিধান, ছবি: সংগৃহীত

কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বিধান, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

‘কিন্তু মনে রেখো কোরবানির গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ আল্লাহ সচেতনতা। এই লক্ষ্যেই কোরবানির পশুগুলোকে তোমাদের অধীন করে দেওয়া হয়েছে। অতএব আল্লাহ তোমাদের সৎপথ প্রদর্শনের মাধ্যমে যে কল্যাণ দিয়েছেন, সেজন্যে তোমরা আল্লাহর মহিমা ঘোষণা করো। হে নবী! আপনি সৎকর্মশীলদের সুসংবাদ দিন যে, আল্লাহ বিশ্বাসীদের রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কোনো বিশ্বাসঘাতক, অকৃতজ্ঞকে পছন্দ করেন না।’ -সূরা হজ: ৩৭-৩৮

কোরবানি ইসলামের বিধান, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার। কোরবান বা আদ্বহা বা আজহাকে ইসলামি বিধান হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা পবিত্র ঈদুল আজহার উৎসবকালে আল্লাহতায়ালার জন্য পশু উৎসর্গের মাধ্যমে প্রতিপালন করতে হয়। আরবিতে যার অর্থ, ‘কারও নিকটবর্তী হওয়া।’

পবিত্র কোরআনে একাধিক জায়গায় কোরবানির উল্লেখ আছে। যার মধ্যে পশু কোরবানি এবং অন্য সাধারণ ভাবনার বা কাজের কথাও বলা হয়েছে, যা দ্বারা আল্লাহর নিকটবর্তী হওয়া যায়।

ইসলামে কোরবানির ইতিহাস বেশ প্রাচীন। পবিত্র কোরআনে হাবিল এবং কাবিলের ঘটনার উল্লেখ পাওয়া যায়, যাতে হাবিল প্রথম মানুষ যিনি আল্লাহর জন্য একটি পশু কোরবানি করেন। ধর্মীয় বিবরণ অনুযায়ী, হাবিল একটি ভেড়া এবং তার ভাই কাবিল তার ফসলের কিছু অংশ স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নিবেদন করেন।

তৎকালে আল্লাহর নির্ধারিত শরিয়ত বা পদ্ধতি ছিল এই যে, আগুন আকাশ থেকে নেমে আসবে এবং গ্রহণযোগ্য কোরবানি কবুল বা গ্রহণ করবে। তদনুসারে, আকাশ থেকে আগুন নেমে আসে এবং নেককার হাবিলের জবেহকৃত পশুটির কোরবানি গ্রহণ করে। অন্যদিকে কাবিলের ফসলস্বরূপ প্রদত্ত কোরবানি প্রত্যাখ্যাত হয়।

কাবিল এই ঘটনায় ঈর্ষান্বিত হয়ে তার ভাই হাবিলকে হত্যা করে, যা মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ডরূপে পরিচিত। কাবিল তার কৃতকর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হওয়ায় আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেননি। পবিত্র কোরআনে ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ মানবজাতির জন্য উপদেশ আকারে উপস্থাপিত হয়েছে।

পরবর্তীতে আল্লাহতায়ালা ইসলামের নবী ও রাসূল, মুসলিম জাতির পিতা, হজরত ইবরাহিম আলাইহি ওয়াসাল্লামকে স্বপ্নযোগে তার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুটি কোরবানি করার নির্দেশ দেন। ‘তুমি তোমার প্রিয় বস্তু আল্লাহর নামে কোরবানি করো,’ মর্মে তিনি আদিষ্ট হয়ে সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহর জন্য ১০টি উট কোরবানি করেন। কিন্তু পুনরায় তিনি কোরবানি করার জন্য আদেশ প্রাপ্ত হন। নবী ইবরাহিম এবার ১০০টি উট কোরবানি করেন।

এরপরেও তিনি একই আদেশ পেয়ে ভাবলেন, আমার কাছে তো এ মুহূর্তে প্রিয় পুত্র ইসমাইল (আ.) ছাড়া আর কোনো প্রিয় বস্তু নেই। তখন তিনি পুত্রকে কোরবানির উদ্দেশ্যে মিনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন। যখন নবী ইবরাহিম তার পুত্রকে কোরবানি দেওয়ার জন্য গলদেশে ছুরি চালানোর চেষ্টা করেন, তখন তিনি বিস্মিত হয়ে দেখেন যে তার পুত্রের পরিবর্তে একটি প্রাণী কোরবানি হয়েছে এবং তার পুত্রের কোন ক্ষতি হয়নি।

এই ঐতিহাসিক ধর্মীয় ঘটনাকে স্মরণ করে সারাবিশ্বের মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতি বছর এই দিবসটি ঈদ উল আধহা/আজহা নামে উদযাপন করেন।

ইসলামে হিজরি ক্যালেন্ডারের ১২তম চন্দ্রমাসের জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সকাল থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত কোরবানি করার সময় হিসাবে নির্ধারিত। এ দিনে বিশ্বজুড়ে মুসলমানরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কোরবানি দেন।

কোরবানি শব্দটি ব্যাপকার্থে আল্লাহর পথে শহীদ হওয়াকে বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়। আবার ব্যক্তির সম্পদ, সময়, চেষ্টা, উদ্যম আল্লাহর বিধান মতে ধর্মীয় উদ্দেশ্যে বিলিয়ে দেওয়াকেও আল্লাহর রাস্তায় কোরবানি বলা হয়। পবিত্র কোরআনে কোরবানি সম্পর্কে একাধিক সূরায় উল্লেখ আছে। যেমন-

‘অতএব হে মানুষ! আল্লাহ সচেতন হও। আল্লাহতায়ালার ধর্মবিধান লঙ্ঘন হতে দূরে থাকো। জেনে রাখো, আল্লাহ মন্দ কাজের শাস্তিদানে কঠোর।’ -সূরা বাকারা: ১৯৬

‘হে নবী! কিতাবিগণকে আদমের দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের ঘটনা ভালো করে বর্ণনা করো। তারা যখন কোরবানি করেছিল, তখন একজনের কোরবানি কবুল হলো। কিন্তু অন্যজনের কোরবানি কবুল হলো না। ক্ষিপ্ত হয়ে সে বলল, আমি তোমাকে খুন করবো। অপরজন বলল, প্রভু তো শুধু আল্লাহ সচেতনদের কোরবানিই কবুল করেন।’ -সূরা মায়েদা: ২৭

‘হে নবী! ওদের বলুন, আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন, আমার মরণ- আমার সবকিছুই বিশ্বজাহানের প্রতিপালক আল্লাহরই জন্যে। তিনি একক ও অদ্বিতীয়। এ আদেশই আমি পেয়েছি। আমি সমর্পিতদের মধ্যে প্রথম।’ -সূরা আনআম: ১৬২-১৬৩

‘আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্যে কোরবানিকে ইবাদতের অংশ করেছি। যাতে জীবনোপকরণ হিসেবে যে গবাদি পশু তাদেরকে দেওয়া হয়েছে, তা জবাই করার সময় তারা আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে আর সব সময় যেন মনে রাখে একমাত্র আল্লাহই তাদের উপাস্য। অতএব তার কাছেই পুরোপুরি সমর্পিত হও। আর সুসংবাদ দাও সমর্পিত বিনয়াবনতদের, আল্লাহর নাম নেওয়া হলেই যাদের অন্তর কেঁপে ওঠে, যারা বিপদে ধৈর্যধারণ করে, নামাজ কায়েম করে আর আমার প্রদত্ত জীবনোপকরণ থেকে দান করে।’ -সূরা হজ: ৩৪-৩৫

‘কোরবানির পশুকে আল্লাহ তাঁর মহিমার প্রতীক করেছেন। তোমাদের জন্যে এতে রয়েছে বিপুল কল্যাণ। অতএব এগুলোকে সারিবদ্ধভাবে বাঁধা অবস্থায় এদের জবাই করার সময় আল্লাহর নাম উচ্চারণ করো। এরপর এরা যখন জমিনে লুটিয়ে পড়ে, তখন তা থেকে মাংস সংগ্রহ করে তোমরা খাও এবং কেউ চাক না চাক সবাইকে খাওয়াও। এভাবেই আমি গবাদি পশুগুলোকে তোমাদের প্রয়োজনের অধীন করে দিয়েছি, যাতে তোমরা শোকরিয়া আদায় করো।’ -সূরা হজ: ৩৬

‘ছেলে যখন পিতার কাজকর্মে অংশগ্রহণ করার মতো বড় হলো, তখন ইবরাহিম একদিন তাকে বলল, ‘হে আমার প্রিয় পুত্র! আমি স্বপ্নে দেখেছি যে, তোমাকে কোরবানি দিতে হবে। এখন বলো, এ ব্যাপারে তোমার মত কী? ইসমাইল জবাবে বলল, ‘হে আমার পিতা! আপনাকে যা আদেশ করা হয়েছে, তাই করুন- ইনশাল্লাহ! আল্লাহর ইচ্ছায় আপনি আমাকে বিপদে ধৈর্যশীলদের একজন হিসেবেই পাবেন।’ -সূরা সাফফাত: ১০২

‘মনে রেখো, এ ছিল এক সুস্পষ্ট পরীক্ষা। আমি তাকে সুযোগ দিলাম এক মহান কোরবানির। পুরো বিষয়টি স্মরণীয় করে রাখলাম প্রজন্মের পর প্রজন্মে। ইবরাহিমের প্রতি সালাম। এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কৃত করি।’ -সূরা সাফফাত: ১০৬-১১০

‘অতএব তুমি তোমার প্রতিপালকের জন্যেই নামাজ পড়ো ও কোরবানি দাও। নিশ্চয়ই তোমার প্রতি যেই বিদ্বেষ পোষণ করবে, বিলুপ্ত হবে ওর বংশধারা।’ -সূরা কাওসার: ১০৮

ফলে কোরবানি মুসলমানদের জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বিধান, যার সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইসলাম তথা একেশ্বরবাদী ধর্মের সুপ্রাচীন ইতিহাস ও ঐতিহ্য আর সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের সুমহান পরম্পরা।

ফের বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময়



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে। বর্ধিত সময় অনুযায়ী আগামী ৩০ মার্চ পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

সোমবার (২৭ মার্চ) নিবন্ধনের সময় বাড়িয়ে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।

জানা গেছে, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারিভাবে নিবন্ধন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৩৯ জন। কোটা পূরণে এখনো নিবন্ধন বাকি রয়েছে ৯ হাজার ৮৫৯। এর মধ্যে সরকারিতে ফাঁকা ৫ হাজার ১০৮, বেসরকারিতে ৪ হাজার ৭৫১।

হজ অনুবিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, চলতি বছর বাংলাদেশ থেকে কতজন হজ করতে যাবেন তা সৌদি সরকারকে জানানোর শেষ তারিখ আগামী ৯ মে।

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এবার হজের খরচ বেশি হওয়ায় শুরু থেকেই নিবন্ধনে ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। কিন্তু তারা তো কাউকে ডেকে এনে নিবন্ধন করাতে পারেন না।

চাঁদ দেখা সাপেক্ষে চলতি বছরের ২৭ জুন (৯ জিলহ্জ) পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। সৌদি আরবের সঙ্গে হজচুক্তি অনুযায়ী, এবার বাংলাদেশ থেকে এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজ করতে পারবেন। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং অবশিষ্ট এক লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজ করার সুযোগ পাবেন।

;

১৮ এপ্রিল পবিত্র লাইলাতুল কদর



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শুক্রবার থেকে পবিত্র রমজান মাস শুরু হচ্ছে। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) রাতে তারাবির নামাজ আদায় করেন। শেষ রাতে প্রথম সেহরি খাওয়া হবে।

এই হিসেবে আগামী ১৮ এপ্রিল (২৬ রমজান) মঙ্গলবার দিবাগত রাতে পবিত্র শবে কদর পালিত হবে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মুকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক খান।

পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, মুসলমানদের জন্য রমজান মাস রহমত, বরকত ও মাগফেরাতের বার্তা বয়ে আনে। সংযমের এ মাসে মুসলিমরা আত্মশুদ্ধি ও আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশায় ইবাদত-বন্দেগি করে থাকেন।

;

রোজার পুরস্কার মিলবে যেসব আমলে



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

পবিত্র মাহে রমজানে কোনোভাবেই আল্লাহতায়ালার অসন্তুষ্টিমূলক কোনো কাজে লিপ্ত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সর্বোপরি মাহে রমজান ও রোজা মহান মালিককে সন্তুষ্ট করার সুবর্ণ অবসর। এ জন্য আমাদের মাহে রমজান ও রোজা হওয়া চাই হারাম, কবিরা গোনাহ ও নাফরমানি মুক্ত। মিথ্যা, প্রতারণা, অন্যায়, অত্যাচার, পাপাচার, সুদ, ঘুষ ও দুর্নীতি মুক্ত হওয়া। তবেই আমরা রমজান ও রোজার পূর্ণাঙ্গ পুরস্কার গ্রহণ করতে পারব।

আল্লাহ পাককে সন্তুষ্ট করার, মুত্তাকি হওয়ার লক্ষ্য অর্জন করতে পারব। এ লক্ষে রমজান মাসে কিছু বিষয়ের প্রতি বিশেষভাবে খেয়াল রাখা দরকার। এর অন্যতম হলো-

সময়ের অপচয়রোধ

জীবন সেকেন্ড, মিনিট, ঘণ্টার সমষ্টি। এই ক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র সময়ই আমার জীবন। জীবনের একটি মুহূর্ত বেখেয়াল, অবহেলায় কাটিয়ে দেওয়া মানে এই সময়টা নষ্ট করে ফেলা। সে আর কখনও ফেরত আসবে না। এক একটি মুহূর্ত জীবনে একবারই আসে। প্রত্যেকটি দিন আগমন করে আমাকে আহবান করে তাকে ভালোভাবে ব্যবহার করার জন্য। সে এও বলে দেয়, হিসাবের দিনেই কেবল সে আবার আমার সামনে হাজির হবে। যে ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার করে, দুনিয়ার জীবনে সে সফলতা পায়। আমার রমজান ৩০ দিনের হলে ২৫,৯২,০০০ সেকেন্ডের সমষ্টি। রমজানের চাঁদ উদিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা কমতে শুরু করে। আমার কাছে রমজানের প্রতিটি সেকেন্ড মূল্যবান। আমি, আপনি যদি হিসাব করে এই সেকেন্ডগুলো কাজে লাগাতে পারি, তবে আমি আপনি অবশ্যই সফল হতে পারব। একজন পরীক্ষার্থী যেমন প্রত্যেকটি সেকেন্ডের হিসাব রেখে উত্তর লিখতে থাকে। তেমনি আমার আপনারও এই মূল্যবান সময়ের যথাযথ কদর করে রোজা পালন করলে, এই বছরের রমজান আমার আপনার জীবনে এক ব্যতিক্রম রমজান মনে হবে এবং এক ব্যতিক্রম ফল বয়ে আনবে। তাই গল্পগুজব, আড্ডা, টিভি দেখা, ফেসবুক অনলাইনে সময় ব্যয়, অবসরে শুধু ঘুমানো, এখানে সেখানে ঘুরাফেরা করা ইত্যাদি কাজগুলো বর্জন করি। তবে আমার রমজান হবে প্রাণবন্ত।

কথা হোক কম

যখন আপনি আমি কথা কম বলব, তখন অনেক অনর্থক এমন কি ফাহেশা কথা থেকে বেঁচে যাব। জীবনের অনেক সময়ও বেঁচে যাবে। বেশি কথা বললে, গীবত, পরনিন্দা, মিথ্যা এ ধরণের অনেক কথা মুখ ফঁসকে বেরিয়ে যেতে পারে। যে সময় আমি অযথা গল্প কথায় লিপ্ত হব, এই সময়টাকে আমি কোরআন তেলাওয়াত, তাফসির অধ্যয়ন, হাদিস পাঠ, বিভিন্ন মাসনুন দোয়া, ইস্তেগফার, দরুদ শরিফ পাঠ, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো বিভিন্ন জিকিরে মশগুল হতে পারি। অনায়াসে অনেক বরকতের ভাগিদার হতে পারি।

কাজে গতিময়তা

কাজ ছাড়া জীবন অচল, আমরা কেউ চাকুরি করি, কেউ ব্যবসা, কেউ কৃষিকাজ ইত্যাদি। এই রমজানে আমার কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। কাজের গতি বাড়িয়ে দেই। কাজের গতি বাড়িয়ে কাজের সময়কে কমিয়ে আনি। এই বেঁচে যাওয়া সময়টিকে আমি ইবাদত-বন্দেগি, কোরআন তেলাওয়াত, দরুদ, ইস্তেগফার পাঠে ব্যয় করি। তাহলে দেখা যাবে কাজের এই গতিময়তা পুরো বছর আমাকে বরকত দেবে। আমার অনেক সময় হাতে থাকবে, বিশেষভাবে মাওলাকে ডাকার জন্য আমার সময়ের অভাব হবে না।

সোশ্যাল মিডিয়া বর্জন

রমজান মাস আমার জন্য আমার মহান রবের এক মহান উপহার। এই মাস সওয়াব কামাইয়ের মাস। এই মাস সোশ্যাল নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকার মাস নয়। আপনার বিশেষ কোনো প্রয়োজনে আপনি নেটওয়ার্কে যুক্ত থাকতে পারেন। কিন্তু ফেসবুক, টুইটার, ইনস্ট্রাগ্রাম, ইউটিউভ ইত্যাদি মাধ্যমগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। আপনি হয়তো ভালো কিছু দেখতে চান, ভালো কিছু শুনতে চান। এই ভালো দেখার সঙ্গে, ভালো শোনার সঙ্গে কিছু খারাপও আপনার নজরে এসে যাবে। এই সময় আমি আপনি নেটওয়ার্কহীন অন্য ইবাদতে মশগুল হই। যার নেটওয়ার্ক আমার আর আমার রবের সঙ্গে সংযোগ করে দেবে- ইনশাআল্লাহ।

;

শুক্রবার থেকে রোজা শুরু



ইসলাম ডেস্ক, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

আজ বুধবার দেশের কোথাও চাঁদ দেখা না যাওয়ায় আগামী শুক্রবার থেকে রোজা শুরু হচ্ছে।

বুধবার (২২ মার্চ) সন্ধ্যায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সভাকক্ষে বৈঠক করে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটি এ কথা জানায়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন ধর্মমন্ত্রী ও কমিটির সভাপতি অধ্যক্ষ মতিউর রহমান।

বৈঠক শেষে জানানো হয়, বাংলাদেশের কোথাও পবিত্র রমজান মাসের চাঁদ দেখা যায়নি। ফলে আগামী শুক্রবার থেকে শুরু হবে রমজান মাস গণনা। সে ক্ষেত্রে বৃহস্পতিবার দেশের মসজিদগুলোতে বাদ এশা তারাবির নামাজের মধ্য দিয়ে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা পবিত্র রমজানের কার্যক্রম শুরু করবেন। এরপর ওই দিন দিবাগত ভোররাতে সাহ্‌রি খেয়ে প্রথম রোজা রাখতে হবে।

;