ধর্ষণের ৭২ ঘণ্টা পর মামলা না নেওয়ার কথা লিখিত রায়ে নেই
রাজধানীর বনানীর রেইনট্রি হোটেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রীর ধর্ষণের মামলার রায়ের সময় মৌখিকভাবে ৭২ ঘণ্টা পর ধর্ষণ মামলা না নেওয়ার কথা বললেও লিখিত রায়ে এমন কোনো পর্যবেক্ষণ দেননি বিচারক কামরুন্নাহার।
চার বছর আগে বনানীর রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় ১১ নভেম্বর রায় দেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭-এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার। রায়ে আপন জুয়েলার্সের মালিকের ছেলে সাফাত আহমেদসহ পাঁচ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়।
বিচারক এ সময় পর্যালোচনায় বলেন, ঘটনার ৭২ ঘণ্টার পরে কেউ মামলা নিয়ে এলে পুলিশ যাতে মামলা রেকর্ড না করে সে বিষয়ে পর্যালোচনায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হোটেলে ভিকটিমরা স্বেচ্ছায় থাকতে গিয়েছেন। তারা ধর্ষণের শিকার হয়নি। এ ছাড়া, এক নম্বর আসামি (সাফাতের) সদ্য ডিভোর্সি স্ত্রী ফারিয়া মাহবুব পিয়াসার প্ররোচণায় এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে বলা হয়।
এর পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন। আইনজীবী, নারী অধিকারকর্মী, সমাজবিজ্ঞানী, অপরাধবিজ্ঞানীসহ সচেতন মহলও এই মামলার রায়ের পর্যবেক্ষণে সন্তুষ্ট হতে পারেননি।
লিখিত রায়ের একটি কপি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। ইংরেজিতে লেখা ৫৪ পৃষ্ঠার লিখিত রায়ে ধর্ষণের অভিযোগের ক্ষেত্রে ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশ যেন মামলা না নেয়, সে–সংক্রান্ত কোনো নির্দেশনা বা পর্যবেক্ষণ পাওয়া যায়নি। তবে লিখিত রায়ে ৭২ ঘণ্টার প্রসঙ্গ এনেছেন মোছা. কামরুন্নাহার। কিন্তু এর প্রেক্ষাপট ভিন্ন
এ মামলার আসামিরা হলেন- সাফাত আহমেদ, সাফাতের দুই বন্ধু নাঈম আশরাফ ওরফে এইচএম হালিম ও সাদমান সাকিফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল হোসেন ও দেহরক্ষী রহমত আলী। আসামিদের মধ্যে শুধু রহমত আলী ছাড়া বাকি সবাই ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ বনানীর ‘দ্য রেইনট্রি’ হোটেলে জন্মদিনের অনুষ্ঠানের কথা বলে ওই দুই তরুণীকে নিয়ে আসা হয়। উপর্যুপরি মদ খাওয়ানোর পর ওই দুই তরুণীকে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগ আনা হয়। এ ঘটনায় ৬ মে রাজধানীর বনানী থানায় ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগী এক ছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি করেন।