‘অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন হতে পারে ড. ইউনূসের’
গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের ২৫ কোটি ২২ লাখ ৬ হাজার ৭৮০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা মামলায় অভিযুক্ত হয়েছেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তার সঙ্গে অভিযুক্ত হয়েছেন গ্রামীণ টেলিকমের আরও ১৩ কর্মকর্তা।
বুধবার (১২ জুন) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক সৈয়দ আরাফাত হোসেনের আদালত অন্যান্য ধারার সঙ্গে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায়ও আসামিদের উপস্থিতিতে এ অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলা হতে আসামিদের অব্যাহতির আবেদন নাকচ করে দেন তিনি। অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হলো।
অন্য অভিযুক্তরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. নাজমুল ইসলাম, পরিচালক ও সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক পারভীন মাহমুদ, নাজনীন সুলতানা, মো. শাহজাহান, নূরজাহান বেগম ও পরিচালক এস এম হাজ্জাতুল ইসলাম লতিফী, অ্যাডভোকেট মো. ইউসুফ আলী, অ্যাডভোকেট জাফরুল হাসান শরীফ, গ্রামীণ টেলিকম শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ মাহমুদ হাসান ও প্রতিনিধি মো. মাইনুল ইসলাম ও দফতর সম্পাদক কামরুল ইসলাম।
দুর্নীতি দমন কমিশনের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন কাজল বার্তা২৪.কমকে বলেন, আদালত অন্যান্য ধারার সঙ্গে দণ্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ড. ইউনূসসহ ১৪ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন। ৪০৯ ধারাটি দণ্ডবিধির হলেও এটি দুদকের সিডিউলভুক্ত। সাজা দেওয়া না দেওয়া আদালতের এখতিয়ার। তবে এ ধারায় অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড কিংবা সর্বনিম্ন ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে আসামিদের।
তবে তার এ বক্তব্যের তীব্র বিরোধিতা করেন ড. ইউনূসের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মামুন। তিনি বার্তা২৪.কমকে বলেন, ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে ৪০৯ ধারায় অভিযোগ গঠনের মতো কোন উপাদানই নাই। গ্রামীণ টেলিকমের শ্রমিক-কর্মচারীদের কল্যাণ তহবিলের টাকা তারা রেখে থাকলে ব্যাংকে রেখেছেন। উক্ত অ্যাকাউন্টের সিগনেটরি ট্রেড ইউনিয়নের ও মালিক পক্ষের। ড. ইউনূস উক্ত অ্যাকাউন্টের সিগনেটরি নন। কেউ তার কাছে টাকা রাখেন নাই। কিংবা তিনি কাউকে টাকা আত্মসাতের প্ররোচনা দেন নাই। সুতরাং তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। তিনি আদালতের অভিযোগ গঠনের আদেশ চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে যাবেন।
গত বছরের ৩০ মে দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে আসামিদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন। অর্থ আত্মসাতের ঘটনা তদন্ত করে চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি ড. ইউনূসসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি।