শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য সরানো সংক্রান্ত ট্রাইব্যুনালের রায় প্রকাশ
জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, ইউটিউব ও এক্স থেকে সরানো সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় প্রকাশ করা হয়েছে। প্রকাশিত রায় পাঠানো হয়েছে বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট দফতরে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
একই সঙ্গে রোববার (৮ ডিসেম্বর) তার দেওয়া বক্তব্য বিদ্বেষমূলক কিনা খতিয়ে দেখে সরকারকে ব্যবস্থা নিতে হবে বলেও জানিয়েছে প্রসিকিউশন।
এর আগে. গত ৫ ডিসেম্বর প্রসিকিউশন টিমের এক আবেদনের শুনানি শেষে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজার নেতৃত্বাধীন ৩ সদস্যের বেঞ্চ গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অতিদ্রুত এ আদেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমাদের আবেদন ট্রাইব্যুনাল শুনেছেন এবং মঞ্জুর করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আদেশ দিয়েছেন যে যেসব হেট স্পিচ (বিদ্বেষমূলক বক্তব্য) এখনো আছে, সেগুলো যেন অতিদ্রুত রিমুভ (সরানো) হয়।
আদালতের আদেশের কথা উল্লেখ করে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের অধীনে যে মামলাগুলো তদন্ত অবস্থায় আছে, তদন্তকালে কোনো আসামি এমন কোনো হেট স্পিচ (বিদ্বেষমূলক বক্তব্য) দিতে পারবেন না, যাতে এই মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত হয়।
শেখ হাসিনার বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের উদাহরণ টেনে মোনাওয়ার হোসেন বলেন, আপনারা ইতিমধ্যে দেখেছেন, সোশ্যাল মিডিয়া (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম) এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়াতে (সম্প্রচারমাধ্যম) মামলার একজন আসামি শেখ হাসিনার কিছু কিছু বক্তব্য ও ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে। সেখানে তিনি (শেখ হাসিনা) কিছু বক্তব্য দিয়েছেন, যেখানে তিনি বলেছেন ২২৭টি মামলা হয়েছে (শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে)। অতএব তিনি ২২৭ জনকে হত্যার সার্টিফিকেট পেয়ে গেছেন, লাইসেন্স পেয়ে গেছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) আরও বলেছেন, তোমাদের বাড়িঘর পোড়াচ্ছে, তাঁদের বাড়িঘর নেই। এই শব্দগুলো দিয়ে এই মামলার ভিকটিমকে (ভুক্তভোগী) একধরনের থ্রেড (হুমকি) দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের কারণে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে ভয় পাবেন উল্লেখ করে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন বলেন, যেসব সাক্ষী এসব মামলায় (জুলাই-আগস্টের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা) জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁদের কিন্তু ট্রাইব্যুনালে এসে সাক্ষী দিতে হবে। এখন এ ধরনের বক্তব্য (শেখ হাসিনার বক্তব্য) পাবলিশড (প্রকাশিত) হয়, ব্রডকাস্ট (সম্প্রচার) হয়, তাহলে আমরা ট্রায়ালের সময় (বিচারকাজ চলাকালে) সাক্ষীদের আনতে পারব না। তারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।