বুড়িগঙ্গার তালিকা বহির্ভূত সুয়ারেজ লাইন বন্ধের প্রতিবেদন চান হাইকোর্ট
বুড়িগঙ্গায় তালিকাভুক্ত ৬৮টি সুয়ারেজ লাইন ছাড়া অন্য লাইন থাকলে তা বন্ধ করে ৭ জানুয়ারির মধ্যে হলফনামা দিতে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষকে (বিআইডব্লিউটিএ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। পরিবেশ অধিদফতরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আমাতুল করিম। ওয়াসার পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার এ এম মাছুম। বিআইডব্লিউটিএর পক্ষে ছিলেন সৈয়দ মফিজুর রহমান।
আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, বিআইডব্লিউটিএর প্রতিবেদন অনুসারে বুড়িগঙ্গায় এখন ৬৮টি সুয়ারেজ লাইন রয়েছে। এর বাইরে বুড়িগঙ্গার দুই পাড়ে জরিপ করে যদি সুয়ারেজ লাইন পাওয়া যায়, তাহলে সেগুলো ৭ জানুয়ারির মধ্যে বন্ধ করে বিআইডব্লিউটিএকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া পরিবেশ অধিদফতর যে ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সেবা (বিদ্যুৎ) সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করেছে, এর বাইরে অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান আছে কিনা, সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। আর ওয়াসা তাদের দেওয়া হলফনামা প্রত্যাহার করেছে। নতুন করে রোববারের মধ্যে তারা প্রতিবেদন দেবে। রোববার সে বিষয়ে আদেশ দেবেন আদালত।
গত ১৭ নভেম্বর পরিবেশ ছাড়পত্রহীন ২৭টি প্রতিষ্ঠান বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদফতরকে ১৫ দিনের মধ্যে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একইসঙ্গে ওয়াসার এমডিকে শো’কজ করে আদেশের জন্য ২ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
এদিন পরিবেশ অধিদফতর জানায়, রাজধানীর সদরঘাট থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত বুড়িগঙ্গা নদীর তীরের উত্তর পাড়ে গড়ে ওঠা ১৮টি প্রতিষ্ঠানের সেবা (বিদ্যুৎ) সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে বন্ধ করা হয়েছে।
আর ওয়াসা হলফনামার মাধ্যমে জানায়, বুড়িগঙ্গায় যে ৬৭টি লাইন রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকা ওয়াসার ১৬টি। আর বিআইডব্লিউটিএ বলছে ৬৮টি লাইন রয়েছে।
তবে এর আগে গত ১৮ জুন ওয়াসার দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বুড়িগঙ্গায় ওয়াসার কোনো সুয়ারেজ লাইন নেই। ওয়াসার এ দুই ধরনের প্রতিবেদনে ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার ওয়াসা তাদের হলফনামা প্রত্যাহার করে নেয়। নতুন করে হলফনামা দিতে রোববার পর্যন্ত ওয়াসাকে সময় দেওয়া হয়।
২০১০ সালে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) পক্ষে একটি রিট করা হয়েছিল। ওই রিটের শুনানি শেষে তিন দফা নির্দেশনা দিয়ে ২০১১ সালের ১ জুন রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই রায়ের ধারাবাহিকতায় সম্পূরক আবেদন করে এইচআরপিবি।