সাজা বাড়লেও কমছে না বাল্য বিয়ে



নাজমুল আহসান রাজু, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

শাস্তিযোগ্য অপরাধ, তবুও কৌশলে হচ্ছে বাল্য বিয়ে। সাজার মেয়াদ বাড়িয়েও লাগাম টানা যাচ্ছে না এ অপরাধের। কোনোমতে গোপনে বিয়ে হয়ে গেলেই তা আর অপরাধ বলে গণ্য হচ্ছে না।

বাল্য বিয়েকে শাস্তিযোগ্য বলা হলেও পাশাপাশি ‘বিশেষ বিধানে’ বাল্য বিয়েকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে আইনে। যদিও বিশেষ বিধানের প্রক্রিয়া জটিলতর। বিধি প্রণয়নের গত এক বছরে ওই প্রক্রিয়ায় বিয়ে হয়নি একটিও। তবে সাজার বিধান উপেক্ষা করেই বাল্য বিয়ে হচ্ছে হরহামেশা।

আইন বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে ‘বিশেষ বিধান’ বাল্য বিয়ে নিরোধে সহায়ক হবে না। বরং আইনের অপব্যবহারে বাল্য বিয়ে অব্যাহত থাকবে। এটি হতাশাজনক ও শিশু আইনের লঙ্ঘন।

মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৭ হাজার ২৬২টি বাল্য বিয়ে ঠেকিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যে ২০১৮ সালে বন্ধ হয়েছে ১ হাজার ৭৫৬টি বাল্য বিয়ে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ করা হয়েছে ১ হাজার ১৬২টি। স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে বন্ধ করা হচ্ছে বাল্য বিয়ে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বর-কনে ও অভিভাবকদের কাছ থেকে মুচলেকা আদায় এবং কারা ও অর্থদণ্ড দেওয়ার ঘটনাও ঘটছে।

গত ১৮ নভেম্বর (সোমবার) সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার শ্রীফলগাঁতী গ্রামের কল্পনা আক্তারের (ছদ্মনাম) সঙ্গে আগকয়ডা গ্রামের মাহফুজুর রহমানের (ছদ্মনাম) বিয়ে বন্ধ করে প্রশাসন। কনের বয়স ১৪ বছর। বরের বয়স ২২। বিয়ের দিন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. মাহবুব হাসান বর-কনে উভয়পক্ষকে ৫ হাজার টাকা করে জরিমানা করেন বাল্য বিয়ে আইন ভঙ্গ করার অপরাধে। তবে অভিভাবকরা পালিয়ে যান।

বাল্য বিয়ে নিরোধে ২০১৭ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সংসদে পাস হয়েছে ‘বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭’। নতুন আইনটি কার্যকর করা হয় ওই বছরের ১১ মার্চ থেকে। এর আগে ১৯২৯ সালের বাল্য বিবাহ নিরোধ আইন বলবৎ ছিল। বিলোপ করা আইনে বাল্য বিয়ের শাস্তি ছিল এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা হাজার টাকা অর্থদণ্ড।

নতুন আইনে প্রাপ্তবয়স্ক কোনো ছেলে বা মেয়ে যদি অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে বা মেয়েকে বাল্য বিয়ে করেন, তাহলে অনধিক ২ বছরের কারাদণ্ড বা অনধিক ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ড দেওয়ার বিধান করা হয়েছে। আর অপ্রাপ্তবয়স্ক ছেলে বা মেয়ে বাল্য বিয়ে করলে অনধিক ১ বছর বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড বা উভয়দে দণ্ডিত হবে। বাল্য বিয়ের জন্য অভিভাবকদেরও শাস্তির আওতায় এনে অনধিক ২ বছর ও অন্যূন ৬ মাসের কারাদণ্ড বা অনধিক ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান রখা হয়েছে।

আইনের বিশেষ বিধানের ১৯ ধারায় বলা হয়েছে ‘এ আইনের অন্যান্য বিধানে যা কিছুই থাকুক না কেন, বিধি দ্বারা নির্ধারিত কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে অপ্রাপ্তবয়স্কের সর্বোত্তম স্বার্থে, আদালতের নির্দেশ এবং বাবা-মা বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতিতে, বিধি দ্বারা নির্ধারিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করে, বিয়ে হলে তা এ আইনের অধীনে অপরাধ বলে গণ্য হবে না।’

১ বছর ৭ মাস ২৬ দিন পর ২০১৮ সালের ৬ অক্টোবর সরকার বাল্য বিয়ে নিরোধ, বিধিমালার প্রজ্ঞাপন জারি করে। বিধিমালার ১৭ ধারায় বাল্য বিয়ের বিশেষ বিধান প্রয়োগ শিরোনামে বলা হয়েছে, উভয়পক্ষের অভিভাবকরা উপযুক্ত আদালতে দালিলিক প্রমাণসহ যৌথভাবে আবেদন করবে। আদালত সত্যতা নিরূপনে উপজেলা যাচাই কমিটিতে আবেদনটি পাঠাবে। ৭ সদস্যের উপজেলা যাচাই কমিটি ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে মতামত দেবে। এরপর আদালত যদি মনে করে, বিয়ে হওয়া সমীচীন, বা এটাই তার জন্য সবচেয়ে ভালো, তাহলে বিয়ের অনুমতি দিতে পারবেন।

জানা গেছে, ২০১৬ সালে ইউনিসেফের ‘বাল্য বিয়ের অবসান: অগ্রগতি ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক প্রতিবেদন অনুযায়ী বাংলাদেশে বিবাহিত নারীদের মধ্যে যাদের বয়স ২২ থেকে ২৪ বছর, তাদের ৫২ জনের বিয়ে হয়েছিল ১৮ বছরের আগে। এদের মধ্যে ১৮ জনের বিয়ে হয়েছে ১৫ বছর বয়স হওয়ার আগে।

শিশু অধিকার অ্যাডভোকেসি জোটের ২০১৮ সালে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ১৮ বছরের নিচে বাল্য বিয়ের হার ৫০ শতাংশের বেশি। ১৯টি জেলার ৮৫টি ঘটনা জরিপ করে দেখা গেছে, ১৫ বছরের নিচে ২০১৫ সালে বাল্য বিয়ে ছিল ৬২ দশমিক ৮ শতাংশ। ২০১৭ সালে তা ১০ দশমিক ৭ শতাংশ কমেছে। ১৮ বছরের কম বয়সে ২০১৫ সালে বাল্য বিয়ে হয়েছিল ৬২ দশমিক ৮ শতাংশ। পরের বছর কিছুটা কমে হয়েছে ৫৯ দশমিক ৭ শতাংশ।

২০১৮ সালের ১৯ অক্টোবর ‘বাংলাদেশের শিশু: প্রতিশ্রুতি ও অগ্রগতি ২০১৭’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য রয়েছে। ইউনিসেফের সহায়তায় ২০১৬ ও ২০১৭ সালে জরিপটি পরিচালিত হয়েছিল। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক), অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ও সেভ দ্যা চিল্ড্রেনসহ ৯টি সংগঠন জরিপে অংশ নেয়।

তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) সর্বশেষ ২০১৫ সালের জরিপ অনুযায়ী বাংলাদেশে বাল্য বিয়ের হার কমেছে। এ জরিপে বলা হয়, ২০০৬ সালে দেশে বাল্য বিয়ের হার ছিল ৬৪ দশমিক ১ শতাংশ। ২০১৪ সালে এসে তা কমে দাঁড়ায় ৫২.৩ শতাংশে।

ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী বাল্য বিয়ে রোধ করা গেলে আন্তঃপ্রজন্মের দরিদ্র চক্র থেকে বের হয়ে সমাজে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ বাড়ানো সম্ভব। নারীর ক্ষমতায়নের মাধ্যমে শিক্ষিত নারী শিশুর সঠিক পরিচর্যা, ছোটো কিন্তু পরিকল্পিত পরিবার, পরিবারের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে নেতৃত্ব দিতে পারে। যাতে সমাজের সবাই লাভবান হয়।

বাল্য বিয়ের হার প্রসঙ্গে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহারের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ীর ১৪ বছরের কিশোরী কুলসুম বেগম (ছদ্মনাম)। বিয়ে হয়েছে এক বছর হলো। তার স্বাস্থ্য ভঙ্গুর। স্বামী রিয়াজের (ছদ্মনাম) বয়স মাত্র ১৮। পারিবারিক অশান্তির কারণে তাদের নিয়ে বসেছে সালিশ। ৬ দফা সালিশের পর সপ্তম দফার সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। কুলসুমের অভিযোগ, স্বামী কোনো কাজ করে না। প্রায়ই মারধর করে। সালিশে সিদ্ধান্ত হয় বিচ্ছেদের।

সরিষাবাড়ীর ১ নম্বর সাতপোয়া ইউনিয়ন পরিষদ মিলনায়তনে ২ পক্ষের উপস্থিতিতে বিচ্ছেদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আবু তাহের। কেন বিচ্ছেদের ফয়সালা জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিয়ে হয়েছে ১ বছর। মেয়েটি প্রাপ্তবয়স্ক নয়। বিয়ের এ ১ বছরে ছেলেকে ৬ বার সতর্ক করে মেয়েকে ঘরে তুলে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে সালিশে মেয়েটির জীবন রক্ষায় বিচ্ছেদের পক্ষে মত দেওয়া হয়।

মানবাধিকার ব্যক্তিত্ব ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না বার্তা২৪.কমকে বলেন, বাল্য বিয়ে নিরোধ আইনের কারণে মানুষের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। অভিভাবকরা জানেন, বাল্য বিয়ে দিলে শাস্তি পেতে হবে। তবে খারাপ দিক হলো বিশেষ বিয়ের বিধান। বিশেষ বিয়ের সুযোগ রাখায় যারা ‘ধর্ষক’ তারা উৎসাহিত হবে। তারা মনে করবে, শালিসে বিয়ে করলেই পার পাওয়া যাবে। কয়েক দিন পর কারাগার থেকে বের হয়ে আবার একই অপরাধ করবে না, তার নিশ্চয়তা নেই।

জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফাওজিয়া করিম ফিরোজ বলেছেন, আইন করলেই হবে না। সচেতনতা বাড়াতে জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের কমিটির পাশাপাশি মাধ্যমিক স্কুলে কমিটি করতে হবে। কারণ মাধ্যমিকের মেয়েরাই বাল্য বিয়ের শিকার হয় বেশি। সচেতনতা সৃষ্টি হলে বাল্য বিয়ে নিরোধে সাফল্য আসবে।

   

হাইকোর্টের রায় প্রকাশ: রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

৩৬ বছর আগে রাষ্ট্রধর্ম ইসলামকে চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদন সরাসরি খারিজের রায় প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। রায়ের পর্যবেক্ষণে হাইকোর্ট বলেছেন, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও আঘাত করে না।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) রায় প্রদানকারী বিচারপতিদের স্বাক্ষরের পর ৫২ পৃষ্ঠার রায়ের অনুলিপি প্রকাশিত হয়।

এর আগে, বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন তিন বিচারপতির বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ রায়ের অনুলিপিতে স্বাক্ষর করেন। বেঞ্চের অন্য দুই বিচারপতি হলেন— বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

রিটটি খারিজের সিদ্ধান্তের সঙ্গে তিন বিচারপতি একমত পোষণ করেছেন। তবে, রায়ে পৃথক পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল।

বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দারের লেখা পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম শুধু সংবিধানের প্রস্তাবনায় উল্লিখিত শুধু মৌলিক নীতিগুলো অন্য কোনও বিধানের সঙ্গেও অসঙ্গতিপূর্ণ নয়। সংবিধানে ইসলামকে ‘রাষ্ট্রধর্ম মর্যাদা’ প্রদান করা হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে রাজনৈতিক মর্যাদা প্রদানের বাধ্যবাধকতা নেই। অনুচ্ছেদ ২(ক) অবশ্যই সামগ্রিকভাবে পড়তে হবে এবং পড়লে এটা সুস্পষ্ট হয় যে, ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম করার ধারণার সন্নিবেশ কোনোভাবেই ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের সাংবিধানিক অধিকারকে খর্ব করে না। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামোকেও প্রভাবিত করে না এবং সংবিধানে বাহুল্যও সৃষ্টি করে না।

রায়ে বলা হয়েছে, তর্কিত সংশোধনী সংবিধানে সন্নিবেশিত রাষ্ট্রধর্ম ধর্মনিরপেক্ষতার ধারণাকেও প্রভাবিত করে না। অতএব, আমরা মনে করি যে, তর্কিত সংশোধনীর মাধ্যমে অনুচ্ছেদ ২(ক) সন্নিবেশ করে ইসলামকে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া সংবিধানবিরোধী নয়। বিষয়টিকে সহজ করার প্রয়াস হিসেবে, উপস্থাপিত যুক্তিতর্ক আমরা আমাদের রায়ে আলোচনা করেছি।

প্রসঙ্গত, ১৯৮৮ সালে অষ্টম সংশোধনীর মাধ্যমে সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম হিসেবে ইসলামকে সংযুক্ত করেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সংবিধানে ২(ক) অনুচ্ছেদ যুক্ত করে বলা হয়, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাবে।

তখন স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটির পক্ষে ওই বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছিলেন ১৫ জন ব্যক্তি। তাদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন। তারা হলেন- সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, বিচারপতি কে এম সোবহান, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক খান সারওয়ার মুরশিদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, শিল্পী কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সেক্টর কমান্ডার সি আর দত্ত, লেখক বদরুদ্দীন উমর, অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।

;

গয়েশ্বর-কায়সার কামালের জামিন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রাজধানীর পল্টন ও রমনা থানার নাশকতার ছয় মামলায় জামিন পেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেন তিনি। শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আস্ সামছ জগলুল হোসেন তার এ জামিন মঞ্জুর করেন।

মামলাগুলোর মধ্যে পল্‌টন থানার চার ও রমনা থানার দুই মামলা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল জানান, গয়েশ্বরের হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় বৃহস্পতিবার আদালতে এসে আত্মসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেন।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপির মহাসমাবেশে সংঘর্ষের ঘটনায় এ ছয়টি মামলা দায়ের করা হয়।

গত ২২ জানুয়ারি বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে ২৫ মার্চ পর্যন্ত আগাম জামিন দেন।

এদিকে সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে সংঘর্ষের ঘটনায় করা মামলায় জামিন নিতে এদিন একই আদালতে আত্মসমর্পণ করেন বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। শুনানি শেষে আদালত তারও জামিন মঞ্জুর করেন।

;

শপথ নিলেন আপিল বিভাগের তিন বিচারপতি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের নবনিযুক্ত তিন বিচারপতি শপথ নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টায় সুপ্রিম কোর্ট জাজেস লাউঞ্জে এই তিন বিচারপতিকে শপথবাক্য পাঠ করান প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতি হলেন- বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুল হাফিজ, বিচারপতি মো. শাহিনুর ইসলাম ও বিচারপতি কাশেফা হোসেন।

এর আগে, বুধবার (২৪ এপ্রিল) সংবিধানের ৯৫(১) অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই তিনজনকে বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। পরে একই দিন দুপুরে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আপিল বিভাগে সদ্য নিয়োগ পাওয়া এই তিন বিচারপতির শপথ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় অনুষ্ঠিত হবে। প্রধান বিচারপতি তাদের শপথ পড়াবেন। শপথ গ্রহণের পর থেকে এই নিয়োগ কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগে পাঁচজন বিচারপতি রয়েছেন। নতুন এই তিনজনের নিয়োগ হওয়ায় আপিল বিভাগের বিচারপতির সংখ্যা আটজনে দাঁড়াল।

;

বীর মুক্তিযোদ্ধা হত্যায় ভাতিজার যাবজ্জীবন



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

তিন বছর আগে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জের পশ্চিম রোহিতপুর এলাকায় বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর আলীকে হত্যার দায়ে ভাতিজা ঠাণ্ডুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি ঠাণ্ডুকে ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নিহতের মেয়ে জেলিনা আক্তার মৌকে গুরুতর আঘাতের দায়ে তাকে আরও ১০ বছরের কারাদণ্ড, পাঁচ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাকে আরও এক মাস কারাভোগ করতে হবে।

বুধবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকার ৮ম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মিনহাজুল মনিরার আদালত এ রায় প্রদান করেন। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১৬ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

রায় ঘোষণার আগে ঠাণ্ডুকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে ফের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

ঠাণ্ডুর বাবা মারা যাওয়ার পর সে তার সম্পত্তি চাচা মোজাফফর আলীর কাছে বিক্রি করে অন্যত্র চলে যায়। মাঝে মধ্যে ঠাণ্ডু তার চাচার কাছে এসে খরচের টাকা দাবি করে নিয়ে যেত।

২০২১ সালের ১৫ জুলাই সে তার চাচার কাছে ৫০০ টাকা চাইলে মোজাফফর আলী তাকে ২০০ টাকা দিয়ে বলেন আর নাই। এরপর তিনি বাড়ির সামনে টিউবওয়েলে গোসল করতে যান। এসময় ঠাণ্ডু অতর্কিতভাবে চাচার পেটে চাকু ঢুকিয়ে দেয়। তার বড় মেয়ে জেলিনা আক্তার বাবাকে বাঁচাতে গেলে তাকেও আহত করে। দুই জনকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোজাফফর আলীকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় পরদিন মোজাফফর আলীর স্ত্রী নার্গিস বেগম মামলা দায়ের করেন।

;