পিলখানা হত্যা মামলা: সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করে দাবি আদায়ের চেষ্টা
আইন-আদালত
সেনা কর্মকর্তাদের জিম্মি করে দাবি আদায়, বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ধ্বংস ও অকার্যকর করা, ভবিষ্যতে সেনা কর্মকর্তাদের প্রেষণে বিডিআরে আসা নিরুৎসাহিত করা পিলখানা হামলার লক্ষ্য ছিল বলে হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে।
বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী তার পর্যবেক্ষণে এ বিষয়ে ৭ কারণ চিহ্নিত করেন। কারণগুলো হলো- সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে সাংঘর্ষিক অবস্থানে দাঁড় করিয়ে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানো, তখনকার ৪৮ দিনের সরকারকে উৎখাতের প্রয়াসে দেশকে অস্থিতিশীল করা, দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করা, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করা, জাতিসংঘের শান্তি মিশনে অন্যান্য বাহিনীর অংশগ্রহণ ক্ষতিগ্রস্ত করা।
১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসনের সাবেক উপদেষ্টা মোসাদ্দেক আলী ফালুসহ ৩ জনকে অব্যাহতির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) শুনানি শেষে ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ এসএম জিয়াউর রহমানের আদালতের এই আদেশ দেন।
অব্যাহতি পাওয়া অপর দুই আসামি হলেন, আরএকে সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এ কে ইকরামুজ্জামান এবং স্টার সিরামিকসের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান।
এদিন আসামিদের পক্ষের আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার তাদের অব্যাহতি চেয়ে শুনানি করেন। দুদকের পক্ষে মীর আহাম্মদ আলী সালাম আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে মামলার দায় থেকে তাদের অব্যাহতির আদেশ দেন আদালত।
এদিন সকল আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
দুবাইয়ে ১৮৯ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ১৩ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় ফালুসহ ৩ জনের নামে বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, ফালু ও অন্য ৩ ব্যবসায়ী আরএকে সিরামিকস ও রাখেন ডেভেলপমেন্ট কোম্পানির এমডি এস এ কে একরামুজ্জামান, স্টার সিরামিকস লিমিটেডের পরিচালক সৈয়দ এ কে আনোয়ারুজ্জামান এবং পরিচালক ম. আমির হোসাইন দুবাইতে ২০১০ সালে আল মদিনা ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, ট্রাই স্টার লিমিটেড ও ডেভেলপমেন্ট ইইউই নামে ৩টি প্রতিষ্ঠান চালু করেন।
এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে তারা অবৈধভাবে দেশটি থেকে ১৮৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা পাচার করেন।
২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের সহকারি পরিচালক মো. গুলশান আনোয়ার প্রধান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক মামলায় গ্রেফতার চার সন্তানের বাবা দিনমজুর জামাল মিয়াকে জামিন দিয়েছেন আদালত। এতে মা হারা অসহায় চার শিশু সন্তান ফিরে পেল তাদের বাবাকে।
বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) দুপুরে গোপালগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক ফিরোজ মামুন এ জামিন দেন।
এর আগে, গত মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) ‘রাজনৈতিক মামলায়’ বাবা জেলে, মা-হারা ৪ শিশুর জীবন অনিশ্চিত’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়, এক মাস আগে জমজ সন্তান জন্মের পর মারা যান গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার জামাল মিয়ার স্ত্রী সাথী বেগম। মায়ের মৃত্যুর পর তাদের বাবা জামাল মিয়া তার ৪ সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে দেখাশোনা করতেন। তবে হত্যা মামলায় দিনমজুর জামাল মিয়াকে গ্রেফতার করে জেলে পাঠায় পুলিশ। ফলে তিন বোনকে নিয়ে দিশাহারা শিশু সাজ্জাদ। অভিভাবক না থাকায় পড়ালেখাও বন্ধ হতে চলেছে সাজ্জাদ ও তার বোনের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জামাল মিয়া পেশায় একজন দিনমজুর। একমাস আগে তার স্ত্রী সাথী বেগম যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। এর ছয়দিন পর সাথী বেগম মারা যান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর সদ্য জন্ম নেওয়া দুগ্ধপোষ্য দুই কন্যাসহ চার ছেলে মেয়ে নিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন জামাল মিয়া। ঘরে অসুস্থ মা ও চার শিশু সন্তানের লালন-পালন করে দিন কাটছিল তার।
এ অবস্থায় ৮ নভেম্বর দিবাগত রাতে কোটালীপাড়া থানা পুলিশ জামাল মিয়াকে বাড়ি থেকে ধরে থানায় নিয়ে যায়। এরপর তাকে গোপালগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জামাল মিয়ার ভাই মনির মিয়া বলেন, আমার ভাই বর্তমানে কোনো দলের সঙ্গে জড়িত নয়। একসময় আমতলী ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক ছিল। পুলিশ কী কারণে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠিয়েছে জানা নেই।
কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঢাকার তেজগাঁও থানা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন জামাল মিয়া। সে কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দলনেতা দিদার হত্যা ঘটনায় জড়িত। সেজন্য তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে জেলে পাঠানো হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজধানীর মিরপুরে নাহিদুল ইসলাম হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমদের ভাতিজা ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী আজম মুকুলকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। একইসাথে তার জামিনের আবেদন নাকচ করে দেন বিচারক।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার সাব-ইন্সপেক্টর আল-আমীন তালুকদার তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।
ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সেফাতুল্লাহর আদালত জামিনের আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বুধবার (১৩ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে র্যাব-২।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৯ জুলাই রাজধানীর মিরপুর এলাকায় গুলিতে নিহত হয় নাহিদুল ইসলাম। এ ঘটনায় তার ভগ্নিপতি মিরপুর মডেল থানায় হত্যা মামলা করেন।
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার সরফদিনগর গ্রামের নাজমা বেগম হত্যা মামলায় মো. রফিক মিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে আসামির উপস্থিতিতে এই রায় দেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ লিয়াকত আলী মোল্লা।
আদালত ও মামলা সূত্রে জানা যায়, আসামি রফিকের সঙ্গে প্রতিবেশী নাজমা বেগমের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিরোধ চলছিল। বিরোধের জেরে ২০২১ সালের জুন মাসের ৪ তারিখ সকাল ৬টায় নাজমা বেগম সরফদিনগর চকে মরিচ ক্ষেতে কাজ করার জন্য বের হলে আগে থেকে ওত পেতে থাকা রফিক তাকে বাঁশের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করে। এতে গুরুতর জখম হয় নাজমা। পরে তাকে উদ্ধার করে মুন্নু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার নিউরো সাইন্স হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে নাজমাকে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় তার ছেলে মো. জনি মিয়া হরিরামপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে থানার এসআই মো. আরিফ উল্লাহ মামলার তদন্ত করে ২০২১ সালের জুলাই মাসের ৬ তারিখ রফিককে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
রায়ে রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর আ ফ ম নূরতাজ আলম বাহার সন্তোষ প্রকাশ করলেও আসামিপক্ষের আইনজীবী রেজা ফেরদৌস আহমেদ উচ্চ আদালতে আপিল করার কথা বলেন।