মেঝেতে বসে খাওয়ার অভ্যাস করুন
একটা সময় বেশিরভাগ বাড়িতেই মেঝেতে বসে খাবার খাওয়া হতো। এমনকি অনুষ্ঠান বাড়িতেও লোকজন মেঝেতে বসেই খেতেন। কিন্তু এখন সেটি আর নেই বললেই চলে। তবে স্বাস্থ্য ভালো রাখতে পুরনো সেই অভ্যাস ফেরানোর পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকরা বলছেন, এতে হজম ভালো হয়, ওজন কমায়, ফ্লেক্সিবিলিটি উন্নত করে, রক্ত সঞ্চালন ভালো হয় এবং মন এবং শরীরকে শান্ত রাখে। জেনে নিন, বিস্তারিত-
হজম ভালো হয়: মেঝেতে বসে খাওয়ার সময় যেভাবে হাঁটু ভাজ করে বসতে হয়, সেটি সুখাসনের ভঙ্গি। একই সময়ে বসা, খাওয়া এবং যোগাসনও হয়ে যায়। এভাবে বসলে পেটের তলদেশে চাপ পড়ে এবং এই ভঙ্গি মানসিক উদ্বেগ থেকেও মুক্ত করে। এতে ভালো হজম হয়। এভাবে বসে খাওয়ার জন্য সামনের দিকে অনেকটা ঝুঁকে যাওয়া এবং খাবার মুখে নেওয়ার পর সোজা হয়ে যাওয়ার ফলে পেটের পেশীগুলি সক্রিয় হয়ে ওঠে এবং হজম শক্তি আরও ভালো করে।
ওজন কমায়: সাধারণত অতিরিক্ত খাওয়ার ফলে ওজন বাড়তে শুরু করে। ভেগাস নার্ভ মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় যে আপনি পরিতৃপ্ত হয়েছেন কি না বা আপনার পেট ভরেছে কি না। কিন্তু টেবিল-চেয়ারে বসে খেলে, এই স্নায়ু ঠিকমতো কাজ করে না। ব্রেনে সংকেত পাঠাতে পারে না। আর এমনটা হওয়ার কারণে বেশি মাত্রায় খাওয়া হয়ে যায়, ফলে ওজন বাড়ে। খাওয়ার সময় মেঝেতে বসলে এই স্নায়ু ভালোভাবে কাজ করে, ফলে অতিরিক্ত খাওয়ার সুযোগ থাকে না।
রক্ত সঞ্চালন ভালো হয়: ভালো হজম হওয়ার জন্য শরীরে সঠিক রক্ত সঞ্চালন হওয়া খুবই প্রয়োজন। এই ভঙ্গিতে বসে থাকার ফলে শরীরের পেশী শক্তিশালী হয় এবং শরীরের রক্তসঞ্চালনও ঠিক মতো হয়। এছাড়া, মাটিতে বসে শরীরে অক্সিজেন সরবরাহের পরিমাণও বেড়ে যায়। যার প্রভাব পড়ে সোজা হার্টের ওপর। হার্ট ভালো থাকে।
ফ্লেক্সিবিলিটি উন্নত করে: এই অভ্যাসটি আমাদের শরীরকে আরও শক্তিশালী এবং ফ্লেক্সিবল করে তুলতে পারে। এতে পা, হাঁটু, নিতম্ব, কোমর, মেরুদণ্ড, বুক এবং গোড়ালি প্রসারিত করে, যার ফলে এই অংশগুলি আরও ফ্লেক্সিবল হয়। এভাবে বসার সময় হাঁটু যেভাবে বাঁকাতে হয়, তাতে হাঁটুর ভালো ব্যায়াম হয়। শরীরের নীচের অংশের গাঁটগুলি আরও সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে কোনও ব্যথা বা বেদনা হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। কিন্তু চেয়ারে বেশিক্ষণ বসে থাকলে পিঠে, নিতম্বে ব্যথা হয় এবং সেগুলো শক্ত ও দুর্বল হয়ে পড়ে।