শিশু জন্মদানের পর নারীদের মধ্যে যেসব পরিবর্তন আসে
শিশু জন্মদানের প্রক্রিয়াটি খুবই জটিল এবং স্পর্শকাতর। একাধিক জীবন এর সাথে জড়িত থাকে। প্রায় সকল নারীদের জীবনেই কখনো না কখনো এই সময়টা আসে। নবজাতক অনেক বেশি কোমল হয়, তাই তাদের বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। তবে অনেক সময় মা শিশুর যত্ন নিতে গিয়ে নিজের পেছনেই সময় দিতে পারেন না।
শিশু জন্মদানের পর কয়েক মায়ের নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে। এসময় মায়ের শরীরে নানারকম পরিবর্তন আসে। এসবের কারণে অনেক নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যে প্রভাব পড়তে পারে। কারো কারো ক্ষেত্রে প্রসবের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পরও যন্ত্রণা স্থায়ী হতে পারে।
চিকিৎসক রাশি আগরওয়াল একজন ভারতীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি প্রসব পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্য ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি বলেন,‘সন্তান প্রসবের পরই শরীর গর্ভাধারণের আগের পর্যায়ে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করে। এই সময়ে নিজের এবং সন্তানের যত্ন নেওয়া অনেক বেশি প্রয়োজন। সেই জন্য যথাযথ প্রস্তুতিও নেওয়া উচিত। শরীর বড় একটি পরিবর্তনের প্রক্রিয়া দিয়ে গেছে, তাই যত বেশি সম্ভব বিশ্রাম নিন। বলা সহজ হলেও এই নিয়মটি অনুসরণ করা সহজ নয়।
পরিবারের সদস্যদের এই সময় বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হয়। পারিবারিক কাজগুলো তাদের সামলানো উচিত। যেন মা শিশুর প্রতি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিতে পারে। পাশাপাশি নিজের অনুভূতি এবং বিশ্রামের প্রতিও মনোনিবেশ করতে পারে। মায়ের জন্য ভাল এবং পুষ্টিকর খাদ্যের যোগান অনেক বেশি প্রয়োজন। কারণ, মায়ের শরীর থেকিই শিশুর শরীরে খাদ্য এবয় পুষ্টি সরবরাহ হবে। প্রসব পরবর্তী সময়ে শাক-সবজি, ফল এবং লেবু জাতীয় খাদ্য মায়ের শরীর পুনরুদ্ধার করতে পারে।’
চিকিৎসক রাশি আরও পরামর্শ দেন,‘শারীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিতে হবে। সন্তান আসার পর একজন নারীর জীবন পরিবর্তিত হয়ে যায়। নতুন দায়িত্ব এবং হরমোনের পরিবর্তনের কারণে অনেসে মানসিক অশান্তিতে ভোগেন। এই পর্যায়ে স্বামীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। তার কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন এবং যত্ন প্রয়োজন।
নবজাতকের মায়ের মধ্যে মেজাজ পরিবর্তন, ঘন ঘন কান্নাকাটি- সাধারণ কিছু লক্ষণ হতে পারে। তবে অনেকের মধ্যে শিশুর প্রতি অনুভূতিহীনতা, এমনকি বাঁচতে না চাওয়ার মতো গুরুতর মানসিক পরিবর্তনও লক্ষ্য করা যেতে পারে। সেসব ক্ষেত্রে চিকিৎসক, ওষুধ এবং থেরাপির সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজনও হতে পারে।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস