গুগল ডুডলে আধুনিক ভাস্কর্যের অগ্রদূত নভেরা আহমেদ
বাংলাদেশের প্রথম আধুনিক ও কিংবদন্তি ভাস্কর ও চিত্রশিল্পী নভেরা আহমেদের ৮০তম জন্মবার্ষিকী আজ। সে উপলক্ষে গুগল সেজেছে নভেরা আহমেদ ও তাঁর তৈরি ভাস্কর্যের আদলে।
বাংলাদেশ থেকে গুগলে প্রবেল করলে গুগলের প্রচলিত লোগোর বদলে নভেরা আহমেদের প্রতিকৃতি সমেত তাঁর তৈরি ভাস্কর্যের আদল দেখাচ্ছে। এটাই হলো গুগলের ডুডল। বিশেষ দিবস, বিশেষ ব্যক্তিত্বের জন্ম-মৃত্যুদিনে তাঁদের নিয়ে তথ্য সাজিয়ে ভিন্ন ধরণের ডুডল প্রকাশ করে থাকে গুগল।
১৯৩৯ সালের এই দিনে ভাস্কর নভেরা জন্ম নেন সুন্দরবনে শিল্পমনা এক পরিবারে। পৈতৃক নিবাস চট্টগ্রামে হলেও, বাবার কর্মসূত্রে সুন্দরবনে থাকা হয়েছে প্রথম দিকে।
ছোটবেলা থেকে মায়ের হাতে তৈরি পুতুল দেখা বড় হওয়া নভেরা ত্রিমাত্রিক ভাস্কর্য তৈরির প্রতি আকর্ষণ বোধ করতেন। ছেলেবেলার সে আকর্ষণ থেকেই শিল্পের এই মাধ্যমে ঝুঁকে পড়া হয় তার।
১৯৯৭ সালে একুশে পদক প্রাপ্ত নভেরা আহমেদ ছিলেন অভূতপূর্ব, রহস্যময়ী ও দারুণ প্রতিভাবান একজন। তাঁর কাজ সম্পর্কে প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন বলেছিলেন, ‘এখন নভেরা যা করছেন, সেটা বুঝতে আমাদের অনেকদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে’। অর্থাৎ সময়ের আগেই তিনি এমন কিছু শিল্পকর্ম সৃষ্টি করে গেছেন, যা পুরোপুরিভাবে বুঝতে হলে এখনও আমাদের বেশ অনেকটা সময়ের প্রয়োজন হবে!
সময়ের আগে এগিয়ে থাকা আধুনিক ভাস্কর্যের অগ্রদূত নভেরা আহমেদ তৎকালীন সময়ে পূর্ব পাকিস্তানের ঢাকায় সরকারি শিল্পকলা একাডেমির পাঠ্যক্রমে ভাস্কর্য যুক্ত হওয়ার আগেই, আধুনিক ভাস্কর্যের প্রচলন করেন তিনি। ১৯৫৭ সালে কেন্দ্রীয় গণগ্রস্থাগারের প্রাচীরে তিনি প্রথম উন্মুক্ত ভাস্কর্য ‘কাউ উইথ টু ফিগারস’ তুলে ধরেন।
নভেরা আহমেদের তৈরি শতাধিক ভাস্কর্যের মাঝে বিখ্যাত কয়েকটি হলো ‘চাইল্ড ফিলোসফার’, ‘মা ও শিশু’, ‘এক্সটার্মিনেটিং অ্যাঞ্জেল’, ‘পরিবার’, ‘যুগল’, ‘ইকারুস’, ‘জেব্রা ক্রসিং’ প্রভৃতি।
২০১৫ সালের ৫ মে ফ্রান্সের প্যারিসে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করা নভেরা আহমেদের তৈরি করা ভাস্কর্য এখনও বিশ্বের নানান দেশে সমাদরের সঙ্গে প্রদর্শন করা হয়।