‘বেহেই লাশ লইয়া যাইতাছে, আমি বাড়িতগে কিতা কইয়াম’

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছেলের শোকে কাতর এক বাবা, ছবি: বার্তা২৪.কম

ছেলের শোকে কাতর এক বাবা, ছবি: বার্তা২৪.কম

‘বেহেই লাশ লইয়া যাইতাছে, আমি বাড়িতগে কিতা কইয়াম। কি জবাব দেম। রাকিব কই। আমার বাবা রাকিব।’ এভাবেই বিলাপ করছিলেন নেত্রকোনার মদন থানা প্রাঙ্গণে মাটিতে বসে থাকা শফিকুল ইসলাম নামে এক বৃদ্ধ পিতা। তার বাড়ি ময়মনসিংহের চর সিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামে।

এ সময় তার সাথে কথা হলে তিনি জানান, তার ছেলে হাফেজ রাকিব। ছেলে রাকিব একটা মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। বুধবার (৫ আগস্ট) সকালে মাদরাসার অন্য শিক্ষক ও ছাত্রদের সঙ্গে রাকিবও নেত্রকোনার মদন উপজেলার উচিতপুর এলাকায় ট্রলারে করে আনন্দ ভ্রমণে হাওরে এসেছিল। এর মধ্যে দুপুরে ওই এলাকার রাজালীকান্দা নামক স্থানে ট্রলার ডুবির ঘটনা ঘটলে ট্রলারে থাকা ১৮ জন নিখোঁজ হন এবং সাঁতরে প্রাণে বাঁচেন ৩০ জন। পরে স্থানীয় লোকজন ও দমকল বাহিনীর কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালিয়ে ১৭ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে মদন থানায় নিয়ে রাখেন এবং একজন নিখোঁজ থাকায় উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখা হয়।

বিজ্ঞাপন

ট্রলার ডুবির সংবাদ পেয়ে বিকেলে ছেলে রাকিবের খোঁজে ময়মনসিংহ থেকে মদন থানায় ছুটে আসেন বৃদ্ধ শফিকুল ইসলাম। কিন্তু ১৭ জনের মৃতদেহ তাদের স্বজনরা নিয়ে গেলেও শফিকুল ইসলাম তাদের মধ্যে খোঁজে পাননি তাঁর শিক্ষক ছেলে হাফেজ রাকিবকে। তিনি তখন নিশ্চিত বুঝতে পারেন, যে লোকটি নিখোঁজ রয়েছে, সেই তাঁর ছেলে রাকিব।

তাই রাকিবের বৃদ্ধ পিতা মদন থানা প্রাঙ্গণে মাটিতে বসে, কখনওবা গড়াগড়ি দিয়ে বিলাপ করে কাঁদছিলেন। আর যাকেই দেখছিলেন তাকেই বলছিলেন- তার ছেলে রাকিবকে খোঁজে দিতে।

বিজ্ঞাপন

এ বিষয়ে মদন থানার ওসি রমিজুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, ট্রলার ডুবিতে নিহতদের মৃতদেহ তাদের স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। এছাড়া নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে অভিযান তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনূকুলে না থাকায় অভিযান পরিচালনা করতে সমস্যা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।