জন্মদিনে কাভার্ডভ্যান চাপায় প্রাণ গেল কাব্যের
সন্ধ্যায় ছিলো যশোরে শহরের মিশনপাড়া এলাকার কলেজপড়ুয়া কাব্য দাসের ২৫ তম জন্মদিনের অনুষ্ঠান। জন্মদিনে প্রতিবারই দিনটি ঘটা করে উদযাপন করলেও এবার করোনার কারণে পারিবারিক ভাবেই সীমাবদ্ধ রেখেছিল। মা কবিতা দাস ছেলে কাব্য দাসের পছন্দমতো খাবারও রান্না করেছিলো। কিন্তু জন্মদিন উদযাপন করা হলো না কাব্য দাসের। কাভার্ডভ্যানের চাকায় পিষ্ট হলো কাব্য দাসের প্রাণ।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিকেলে যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছার বেনেয়ালি গ্রামের গির্জার সামনে কাভার্ডভ্যানের মুখোমুখি ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই যুবক নিহত হয়। তাদের মধ্যে কাব্যই দাস এখনজন। একই ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে তার আরেক বন্ধু কাজী মুশফিক মাহবুব প্রিয়। যে বাড়ি সন্তান কাব্যকে ঘিরে আনন্দ আয়োজনে ব্যস্ত থাকার কথা, সেখানে এখন বিষাদের বেদনা, সন্তান হারানোর হাহাকার। পরিবারের বড় ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন বাবা-মা।
দুর্ঘটনায় নিহত কাব্য দাস জন দিলিপ দাসের বড় ছেলে ও ঢাকা কর্মাস কলেজের অর্নাস প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। আর কাজী মুশফিক মাহবুব প্রিয় শহরের সার্কিট হাউজ পাড়ার মাহবুবুর হকের ছেলে ও মাগুরা সরকারি কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
পুলিশ ও স্থানীয়ারা সূত্রে জানাগেছে, মঙ্গলবার বিকেলে যশোর থেকে মোটরসাইকেলে বেনাপোলে যাচ্ছিলেন মুশফিক ও কাব্য। বেলা ৩টার দিকে ঝিকরগাছার বেনেয়ালি গির্জার সামনে পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা বেপরোয়া কাভার্টভ্যান ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়।
কাব্যের বাবা জন দিলিপ দাস জানান, ছেলেকে মানুষের মতো মানুষ করার বড় স্বপ্ন ছিলো তার। যশোর ক্যান্টম্যান্ট কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করার পর তাকে উচ্চ শিক্ষার জন্য ঢাকার কর্মাস কলেজে ভর্তি করা হয়েছিলো। তবে করোনার কারণে সে বাড়িতেই অবস্থান করছিলো। মঙ্গলবার তার জন্মদিন ছিলো।
এ বিষয়ে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বার্তা ২৪.কমকে জানান, ঘাতক কাভার্টভ্যানটিও চালকদের আটক করা যায়নি। তবে পুলিশ আটকের অভিযান অব্যহত রেখেছে। তিনি আরো বলেন, মরদেহের দুটি সুরতহাল রিপোর্ট সমপন্ন হয়েছে। তবে নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে না বলে জানানো হয়েছে।