করোনায় রক্ষা, না হলে লোডশেডিং হতে পারতো: পিডিবি চেয়ারম্যান



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন

পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন

  • Font increase
  • Font Decrease

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী বেলায়েত হোসেন বলেছেন, ‘কোভিড-১৯ এর কারণে আমাদের চাহিদা কিছুটা কমে যাওয়ায় শান্তিতে আছি, ১৪ হাজার মেগাওয়াট চাহিদা হলে, লোডশেডিয়ের প্রশ্ন আসতেই পারতো। যদি তাত্বিকভাবে বলি তাহলে বলবো কোনো রিজার্ভ মার্জিন নেই।’

শুক্রবার (১৪ আগস্ট) বিকেলে অ্যানার্জি অ্যান্ড পাওয়ার আয়োজিত ‘বিদ্যুতের বর্ধিত উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে বিতর্ক’ শীর্ষক ভার্চুয়াল সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।

পিডিবি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমাদের বর্তমান উৎপাদন সক্ষমতা হচ্ছে ২০ হাজার ৩০০ মেগাওয়াট। অক্সিলারি কনজামশন ৫ শতাংশের মতো কমলে হয় ১৯ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। যেকোনো একটি সিস্টেমে প্ল্যান্ট ফ্যাক্টর থাকে, ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ধরা হয় ৮০ভাগ। সাড়ে ১৯ হাজার মেগাওয়াট থেকে ২০ শতাংশ কমলে, সাড়ে ১৫ হাজার মেগাওয়াট থাকে গ্রিডকে ডেলিভারি দেওয়ার মতো ক্যাপাসিটি। গ্রিডকে নিরবচ্ছিন্ন রাখার জন্য স্পিনিং মার্জিনে রাখতে হয়। ১০শতাংশ মার্জিন রাখলে দাঁড়ায় ১৪ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এবছর কিন্তু চাহিদা ফোরকাস্ট করা হয়েছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট।’

তিনি আরও বলেন, ‘জ্বালানি সরবরাহের ক্ষেত্রে কিছু বিষয় মাথায় রাখতে হয়। আমাদের গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে ১১হাজার মেগাওয়াট। ১৫০০ এমএমসিএফডি চাহিদার বিপরীতে গ্যাস সরবরাহ পাচ্ছি ১২০০ এমএমসিএফডি। যা দিয়ে ৬ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন করতে পারি। প্রায় ২৫ শতাংশ গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বসে থাকছে। গ্যাস থেকে পাওয়া যাচ্ছে সর্বোচ্চ ৮২৫০ মেগাওয়াটের মতো।’

চেয়ারম্যান বলেন, ‘তেল ভিত্তিক রয়েছে ৭ হাজার মেগাওয়াটের মতো। এরমধ্যে ৩২শ মেগাওয়াট বৃবহৃত হচ্ছে। বাড়তি থাকলো ৩২’শ মেগাওয়াট। গ্যাসের কারণে উৎপাদন ঘাটতি মিটাপ করলে বাড়তি উৎপাদন ক্ষমতা থাকে মাত্র ৮’শ মেগাওয়াট। এতো বড় সিস্টেমে কি ৮’শ মেগাওয়ার্ট খুব বেশি। এটা হয়তো এটাকে আপনি অতিরিক্ত বলবেন।’

তিনি বলেন,, ‘আমাদের জ্বালানি নিরাপত্তা যদি বেশি হতো, যদি ম্যাক্সিমাম গ্যাস পেতাম। গ্যাসের উৎপাদন ও আমদানি চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখে ৩২০০ মেগাওয়াট হাতে রাখা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এর জরুরি প্রয়োজন ছিল। এটা নিয়ে বিতর্ক করার সুযোগ নেই। বিদ্যুতের বাড়তি উৎপাদন ক্ষমতা নিয়ে যারা কথা বলেন তাদের এসব ডাটা বিশ্লেষণ করার অনুরোধ করছি।’

বিদ্যুৎ বিভাগের উন্নয়ন ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী বলেছেন প্রকৃত উৎপাদন ক্ষমতা ১৭ হাজার প্লাস, এটি কতটুকু সারপ্লাস? ইকোনমিক জোনগুলো যেভাবে দ্রুত হচ্ছিল, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক ১৫ হাজার প্লাস দাঁড়াতো। এটাকে যদি বিবেচনায় নেন, তাহলে ঠু মাচ।’

তিনি আরও বলেন, ‘জার্মানিতে রিজার্ভ মার্জিন কোনো কোনো সময়ে শত ভাগ। ভারতের রিজার্ভ মার্জিন ৭০ ভাগের মতো। তারা দিনের বেলা সোলারে চালায়। আমাদের এখানে অস্বাভাবিক বা অপরিকল্পিত কিছু হয়নি। কোভিডের কারণে চাহিদা কমেছে, মাস্টারপ্লান রিভিউ করছি। বিদ্যুতের লোডশেডিং সংক্রান্ত বিষয় আমাদের আগাম জানানো উচিত, কোনো কোনো জায়গায় মাইকিং করি। বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা গ্রাম-গঞ্জে কি অবস্থায় রয়েছে আপনারা অনেকে ভালো জানেন। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে কাজ করছি।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ সালেক সূফী বলেন, ‘জ্বালানি তেল থেকে সরে আসতে হবে। বর্তমান জেনারেশন ক্যাপাসিটি যদি বলি সঠিক রয়েছে। আজকে গ্যাস সেক্টর উন্নত হয়নি। সেই ব্যর্থতার দায় বিদ্যুৎ নেবে কেনো। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত যদি আমলা নির্ভর বেশি হয়, স্বাস্থ্যখাতের মতো অবস্থা হতে পারে। বিদ্যুৎ খাত একশ মিটার গতিকে দৌড়াচ্ছে। জ্বালানি খাত ৫০ মিটার গতিতে দৌড়াচ্ছে। পেট্রোবাংলার ব্যর্থতার জন্য আজকের এই অবস্থা তৈরি হয়েছে।’

ড. মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সরকারি বিভিন্ন প্রচারণাতে হাইলাইট করতে গিয়ে। রিয়েল ক্যাপাসিটি বলা হয় নি। হয়তো ইচ্ছাকৃতভাবে এটা করা হয়েছে। কয়লা আমদানি করার ক্ষেত্রে কোনো লিমিটেশন নেই, কিন্তু দেশিয় কয়লার কথা বলা হলেই নানা রকম মন্তব্য। আমরা কি বাস্তবভিত্তিক প্লান করি, নাকি ফরমায়েশি প্ল্যান করি।’

বাংলাদেশ ইনডিপেন্ডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার এসোসিয়েশন (বিপপা) প্রেসিডেন্ট ইমরান করিম বলেন, ‘কোভিডকালীন সময় না হলে, হয়তো হাজার থেকে দেড় হাজার মেগাওয়াটের লোডশেডিং দেখতে পেতাম। প্রয়োজনের নিরিখে চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আমরাও চাইনা পিডিবি চাপে থাকুক। সরকার লিকুইড ফুয়েল পর‌্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেবে, এটাকে আমরা সাধুবাদ জানাই। পাবলিক সেক্টরের অদক্ষ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো বন্ধ করে দেওয়া উচিত।’

আশুগঞ্জ পাওয়ার কোম্পানির চেয়ারম্যান ও বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ বলেন, ‘গত দেড় বছর আগে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গ্যাস না থাকলে সেখানে নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পেমেন্ট ভিত্তিতে তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো নবায়ন হতে পারে। গ্যাসের ক্রাইসিস রয়েছে আমাদের গ্যাস পাওয়ার কথা ১৪ থেকে ১৫০০ এমএমসিএফডি। আমরা ম্যাক্সিমাম পেয়েছি ১২০০ এমএসসিএফডি। ক্যাপটিভের গ্যাস পিডিবিকে দিলে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ সহজ হতো।’

অধ্যাপক ড. ইজাজ হোসেন বলেন, ‘আমাদের যে গ্রোথ দায় কোভিডের ঘাড়ে ঠেলে দেওয়া যায়। কোভিডের আগেই চাহিদা কমে গেছে। শিল্পে চাহিদা বাড়েনি। ৩ বছর ধরে চাহিদা বাড়ছে না।, কতোদিন আবাসিকে ভর করবেন। ২০২০ এরপর দেখতে পারবেন ওভার ক্যাপাসিটি কতো দেখতে পাবে। একটি বিদেশি প্রতিষ্ঠান দেখিয়েছে, ২০৩০ সালের পর বাড়তি ক্যাপাসিটি ৫৮ শতাংশ মতো বাড়তি হবে। দেশের যদি ইকোনমির গ্রোথ না হয়, এটা কার দোষ, পাওয়ার ডিভিশনের দোষ? নেক্সট ইয়ারের ডিমান্ড অ্যানালাইসিস খুব ঠান্ডা মাথায় করতে হবে। অস্বাভাবিক পরিকল্পনার কারণে আজকে বিদ্যুতের দাম বেশি। ভবিষ্যতেও বেশিই থাকবে।’

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, ‘পুরো পাওয়ার সেক্টরটাই সমস্যা। সর্বাঙ্গে ব্যাথা ওষুধ দিবো কোথা। ২০১১ সালে যে প্লান করা হয়েছিল। সেই প্লান অনুযায়ী উৎপাদন ক্ষমতা বাড়েনি। তখন তেল ভিত্তিক বিদ্যুৎ নিরোৎসাহিত করা হয়েছিল। ২০১৮ সালে ডিসেম্বরে পিডিবিকে চিঠি দিয়ে তেল ভিত্তিক ৩১’শ মেগাওয়ার্ট করতে হবে। চাহিদা তাৎক্ষনিকভাবে এটা কোন পরিকল্পনার অংশ ছিল। ওইটাই বজ্রপাত ঘটাইছে বিদ্যুৎ খাতে। পেশাদার পেশাজীবীদের দিয়ে চালানো হোক। ডেপুটেশন বাতিল করা হোক।’

এনার্জিপ্যাকের সিইও হুমায়ুন রশীদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যদি এনাফ থাকে। তাহলে বিদেশি বিনিয়োগকারিরা আগ্রহী হবে। জেনারেশন হতে হবে আরও বেশি, আগামীতে চাহিদা আরও বেশি বাড়বে। অর্থনৈতিক জোনগুলো আসছে সেখানে অনেক চাহিদা বাড়বে। প্রতিবছর ৩ মিলিয়ন লোক জব মার্কেটে আসছে। সরকার দিতে পারছে মাত্র দেড় মিলিয়নের মতো। এই জব মার্কেট বাড়ানোর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি বিদ্যুৎ। এখন সফটওয়ার নির্ভর মেশিন। এগুলো নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ চায়। আমরা কষ্টে আছি, কোয়ালিটি এবং নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দিতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের চিন্তা করতে হবে ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য। আর এর জন্য এনার্জি এন্ড পাওয়ারের নিরাপত্তা জরুরি। এখানে যদি ব্যর্থ হই, তাহলে নতুন প্রজন্মের জন্য নিশ্চিত ভবিষ্যত গঠনে ব্যর্থ হবো। সাপ্লাই চেইনটা আরও দক্ষ করতে হবে।’

সেমিনার পরিচালনা করেন অ্যানার্জি অ্যান্ড পাওয়ারে এডিটর মোল্লাহ আমজাদ হোসেন।

   

ভোট ডাকাতি, কোনো দিন আর এই বাংলাদেশে হবে না: ইসি হাবিব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নির্বাচন কমিশনার (অব.) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আহসান হাবিব খান বলেছেন, ভোট ডাকাতি, ভোট চুরি কোনো দিনই আর বাংলাদেশে হবে না। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের কোনো প্রশ্নই আসে না। প্রত্যেক ইউনিয়নে একজন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। আইনশৃঙ্খলার চাদরে ঘেরা থাকবে, কেউ কিচ্ছু করতে পারবে না।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল চারটায় ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ সাধারণ নির্বাচন উপলক্ষে বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিকে প্রার্থীদের সাথে আচরণবিধি ও অন্যান্য বিষয়ে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ইসি হাবিব।

তিনি বলেন, এ ধরনের যাদের অসৎ উদ্দেশ্য আছে—ভোট ডাকাতি, ভোট চুরি, পূর্বের জিনিস পুনরাবৃত্তি কোনোদিন আর এই বাংলাদেশে হবে না। আমরা কমিশন যতদিন আছি।

প্রার্থীরা যে অভিযোগ করছেন তার প্রমাণসহ লিখিত দিলে ব্যবস্থা নেবেন জানিয়ে ইসি হাবিব বলেন, আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে বিশ্বাসী। সকলের জন্য সমান সুযোগ, কে কোন, কার প্রার্থী এটা আমাদের কাছে বিবেচ্য নয়। যদি নেতা হয়, মন্ত্রী হয় অথবা কর্মী হয়, সে আমাদের কাছে সমান। আমাদের প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা সর্বদা সকলের জন্য সচেষ্ট। যদি কোনো প্রকার কিছু হয়, সঙ্গে সঙ্গে সেই ভোটকেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হবে। প্রয়োজনে আমরা আবার করব।

ইসি বলেন, মতবিনিময় সভায় প্রার্থীরা একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন। আমরা তাদের লিখিত আকারে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে দিতে বলেছি। নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও সুন্দর পরিবেশে করতে আমরা কাজ করছি। আমরা আগের চেয়েও একটা ভালো নির্বাচন উপহার দেব।

বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।

এ সময় বরিশাল সদর ও বাকেরগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরাও উপস্থিত ছিলেন।

 

;

পাঁচ দ্বিপাক্ষিক নথি স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশ- থাইল্যান্ড



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: নথিতে স্বাক্ষর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

ছবি: নথিতে স্বাক্ষর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের মধ্যে ভিসা অব্যাহতি, জ্বালানি সহযোগিতা, পর্যটন এবং শুল্ক ও  মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) সংক্রান্ত আলোচনার বিষয়ে পাঁচটি দ্বিপাক্ষিক নথিতে স্বাক্ষর করেছে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী স্রেথা থাভিসিন। 

ব্যাংককে থাই গভর্নমেন্ট হাউসে (থাই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়) এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের পর দুই রাষ্ট্র প্রধানের উপস্থিতিতে একটি চুক্তি, তিনটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) এবং একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

নথিগুলোর মধ্যে রয়েছে অফিসিয়াল পাসপোর্ট হোল্ডারদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তি, জ্বালানি সহযোগিতা, শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা এবং পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক এবং ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা সংক্রান্ত লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই)।

জ্বালানি সহযোগিতা ও পর্যটন সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভিসা অব্যাহতি  সংক্রান্ত চুক্তিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, এলওআই নথিতে সই করেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী আহসানুল ইসলাম টিটু এবং শুল্ক বিষয়ে পারস্পরিক সহায়তা সংক্রান্ত আরেকটি এমওইউতে সাক্ষর করেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনীম।
যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দ্বিপাক্ষিক নথিতে স্বাক্ষর করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দুই পক্ষ ২০২৪ সালের মধ্যে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) নিয়ে আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছে এবং দুই দেশ এ বিষয়ে একটি লেটার অব ইনটেন্ট (এলওআই) স্বাক্ষর করেছে।

তিনি বলেন, দুই দেশ থাই ও বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের মধ্যে সহজ যোগাযোগের সুবিধার্থে অফিসিয়াল পাসপোর্টহোল্ডারদের জন্য ভিসা ছাড় সংক্রান্ত চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সম্ভাবনা অন্বেষণ করতে জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, থাই জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে সুফল লাভের লক্ষ্যে শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তা বিষয়ে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে এবং সর্বোত্তম পর্যটন অনুশীলন থেকে সুফল পেতে পর্যটন ক্ষেত্রে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে।

যৌথ সংবাদ সম্মেলনে থাই প্রধানমন্ত্রী বলেন, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশ একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) জন্য একসঙ্গে কাজ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন যে, লেটার অফ ইন্টেন্ট আলোচনার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে সহায়তা করবে।

তিনি বলেন, অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসা অব্যাহতির চুক্তি থাই ও বাংলাদেশী কর্মকর্তাদের আরও বেশি সফর বিনিময়ের জন্য সুবিধা দিবে। জ্বালানি সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা স্মারক দুই দেশের সত্যিকারের সম্ভাবনা বাস্তবে রূপদান  করতে সাহায্য করবে।

এছাড়া, শুল্ক বিষয়ে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সহায়তার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক কার্যকরভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ এবং চোরাচালান বিরোধী অভিযান পরিচালনা করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে সমঝোতা স্মারক সাক্ষরের ফলে উভয় দেশ পর্যটন ক্ষেত্রে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং সেরা অনুশীলন বিনিময় করার  সুযোগ পাবে।

এর আগে শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে পৌঁছালে সেখানে থাই কুহ ফাহ ভবনের সামনের লাল গালিচা বিছানো লনে তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। তিনি এ সময় সেখানে থাই সশস্ত্র বাহিনীর একটি চৌকস দলের দেয়া গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন।

স্রেথা থাভিসিন তার মন্ত্রিসভার সদস্যদের শেখ হাসিনার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসের অতিথি বইতে স্বাক্ষর করেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে একটি আনুষ্ঠানিক মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেন।

মধ্যাহ্নভোজে যোগ দেওয়ার আগে শেখ হাসিনা গভর্নমেন্ট হাউসে একটি থাই হস্তশিল্প প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিল তার ছোট বোন শেখ রেহানা ও বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক। থাই প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে ২৪ এপ্রিল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী ছয় দিনের সরকারি সফরে এখানে আসেন।

;

বরগুনায় বাড়ছে ডায়রিয়া রোগী, জায়গা নেই হাসপাতালের মেঝেতেও



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম, বরগুনা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে তীব্র গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন। এরই মধ্যে গরমজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। তীব্র গরমের মাঝে বরগুনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। সর্দি-জ্বর, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালগুলোতে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। তার ওপর নানা অব্যবস্থাপনায় বেড়েছে ভোগান্তি। হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে জায়গা না পেয়ে অনেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন হাসপাতালের বারান্দার মেঝেতে।

সিভিল সার্জন অফিসের তথ্যমতে, প্রতিদিন শতাধিক ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগী চিকিৎসা নিতে বরগুনা সদর হাসপাতালে আসছেন। এপ্রিলের শুরু থেকে এ পর্যন্ত বরগুনা জেলায় আক্রান্ত প্রায় ৪ হাজার মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে, চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ২৫০ শয্যার হাসপাতালে ৫৬ জন চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও রয়েছেন মাত্র ১৭ জন

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত এক সপ্তাতে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ৩৮২ জন ভর্তি হন। আর ভর্তি হওয়া এসব রোগীদের মধ্যে অধিকাংশই শিশু ও বয়স্ক। তবে হঠাৎ করে এভাবে ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার শয্যা সংকট দেখা গেছে। বাধ্য হয়ে হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। বরগুনা জেনারেল হাসপাতালসহ অন্যান্য স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঘুরে এমনই দেখা গেছে।

বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে মেয়েকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা মোসা. তামান্না নামে এক অভিভাবক বলেন, জ্বর ও ডায়রিয়া নিয়ে গত শনিবার তালতলী থেকে জেনারেল হাসপাতালে আমার মেয়েকে ভর্তি করাই। হাসপাতালে কোনো শয্যা না থাকায় মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। ভর্তির পর থেকে এখানে শুধু আইভি স্যালাইন দিচ্ছে। বাকি ওষুধপত্র বাইরে থেকে কিনতে হচ্ছে।

ডায়রিয়া আক্রান্ত আ. ছত্তার (৫০) বলেন, হাসপাতালে এসেছি সুস্থ হওয়ার জন্য। কিন্তু এখানের যেই অবস্থা এতে আরও বেশি দুর্বল হয়ে পড়েছি। অনেক রোগী সিট পাইনি, তাই মেঝেতে ঠাই হয়েছে।

হাসপাতালটির তত্ত্বাবধায়ক ডা. একেএম নজমুল আহসান বার্তা২৪.কমকে বলেন, হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে যাওয়ার কারণে একসঙ্গে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এজন্য আমাদের চিকিৎসকরা সেবা দিতে কিছুটা হিমশিম খাচ্ছেন।

বরগুনা সিভিল সার্জন প্রদীপ চন্দ্র মন্ডল বলেন, গরমের এ সময় ডায়রিয়া বেড়ে যায়। আবহাওয়া পরিবর্তন ও ময়লাযুক্ত পানি পান করাসহ বিভিন্ন কারণে জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্টোরে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুদসহ আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি রয়েছে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ রয়েছে।

;

হাটহাজারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
হাটহাজারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু

হাটহাজারীতে ট্রেনে কাটা পড়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

 

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে তেলবাহী ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে উপজেলার হাটহাজারী পৌরসভার আবুল কালামের মাদ্রাসার সামনে রেললাইনে এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম।

স্থানীয়রা জানান, হাটহাজারীর ১১ মাইল এলাকায় ১০০ মেগাওয়ার্ড পিকিং পাওয়ার পয়েন্টের জন্য ফার্নেশ ওয়েল বহনকারী একটি ট্রেনে কাটা পড়ে লোকটি। এসময় তার শরীর থেকে পুরো মাথা বিছিন্ন হয়ে যায়। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করেছে। নিহত ওই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।

ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা খবর পাওয়ার পর একটি টিম পাঠিয়েছি। এখনো ওই ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।’

;