রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরিতে কাজ করবে মিয়ানমার



ইসমাঈল হোসাইন রাসেল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা, ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা, ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

রোহিঙ্গাদের আস্থা তৈরিতে বাংলাদেশে আসবে মিয়ানমার প্রতিনিধি দল। তারা রোহিঙ্গাদের সার্বিক পরিস্থিতি ঘুরে ঘুরে দেখবে। পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে মিয়ানমার সরকারের সার্বিক অবস্থা জানাবে এবং তাদের আস্থা তৈরিতে কাজ করবে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর নেতৃত্বে বাংলাদেশের একটি প্রতিনিধি দল গত ৯ থেকে ১১ আগস্ট মিয়ানমার সফর করেন। সে সময় দুই দেশের মধ্যে আলোচনায় এ সিদ্ধান্ত হয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সফরকালে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলটি মিয়ানমারের একাধিক মন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক এবং রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন পরিদর্শন করে, তাদের প্রস্তুতি দেখেন।

প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক, শরণার্থী বিষয়ক কমিশনার আবুল কালামসহ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে গঠিত যৌথ কার্যকরী কমিটির (জেডাব্লিউজে) সদস্যরাও ছিলেন।

হেলিকপ্টারে প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ঘুরে উত্তর রাখাইনের রোহিঙ্গা অধ্যুষিত গ্রামগুলো দেখেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল।

সূত্র জানিয়েছে, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে ইতোমধ্যে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে মিয়ানমার। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি শুরু হবে। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একসঙ্গে কাজ করবে। এই প্রক্রিয়া তরান্বিত করতে দুই পক্ষের মন্ত্রী পর্যায়ে হটলাইন স্থাপনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তারা সরাসরি কথা বলে সিদ্ধান্ত নেবে। বাংলাদেশে যেসব রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে, তাদের পরিচিতি যাচাই-বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু প্রযুক্তিগত বিষয় রয়েছে। সেগুলো দুই দেশই দেখবে। তবে এ ক্ষেত্রে দুই দেশ নিজ নিজ খরচ বহন করবে।

এদিকে বিভিন্ন দেশ ও সংস্থার সহযোগিতায় মিয়ানমার সরকার ইতোমধ্যে রোহিঙ্গাদের জন্য বাড়িঘর নির্মাণ করেছে। যারা বাড়িঘর পাবেন না, তাদের নগদ অর্থ ও বাড়ির নির্মাণসামগ্রী দেওয়া হবে। তারা নিজের বাড়ি নিজেরা তৈরি করে নেবেন। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার পর, প্রথমে তাদের অস্থায়ী নিবাসে রাখা হবে। তবে একমাসের মধ্যে তাদের স্থায়ী নিবাসে স্থানান্তর করা হবে।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে মিয়ানমারকে বলা হয়েছে, রোহিঙ্গাদের দীর্ঘদিন অস্থায়ী নিবাসে রাখা যাবে না। তারা বাংলাদেশ সরকারকে আশ্বস্ত করেছে, একমাসের মধ্যেই রোহিঙ্গাদের স্থায়ী নিবাসে রাখা হবে।

রোহিঙ্গাসহ রাখাইন রাজ্যের সব জাতিগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল করা হবে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের পর তাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত করতে চায় মিয়ানমার সরকার। তবে শুধু রোহিঙ্গা নয়, রাখাইন রাজ্যের সব জাতিগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য তারা কিছু প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এছাড়া তাদের প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ডিজি এম. দেলোয়ার হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে দুই পক্ষ রাজি হয়েছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ প্রক্রিয়া শুরু হবে। কিছুদিন পূর্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তারা সেখানকার পরিস্থিতি ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। মিয়ানমার সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তন কাজ দ্রুতই শুরু হবে। তারা আমাদের জানিয়েছে রোহিঙ্গাদের পুনর্বাসনের জন্য ঘর বাড়ি, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, উপাসনালয় তৈরি করা হচ্ছে।

এদিকে সোমবার (৩ সেপ্টেম্বের) পররাষ্ট্রমন্ত্রী মন্ত্রিসভায় মিয়ানমার সফরের সার্বিক বিষয় অবহিত করেছেন। এ বিষয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম জানান, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনের জন্য রাখাইন এলাকায় বাড়িঘর নির্মাণ হয়েছে। এজন্য মিয়ানমার সরকার ৪২টি জায়গা নির্ধারণ করেছে। সেই জায়গাগুলোও তাদের দেখানো হয়েছে।

এছাড়া তারা তিনটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গঠনের কর্মপরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। সার্বিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনে মিয়ানমার সরকারের সার্বিক পরিস্থিতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী দেখে এসেছেন। আশা করছি, শীঘ্রই তারা প্রত্যাবর্তন শুরু করবে।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের জন্য ক্যাম্প তৈরি ও বর্ডার পর্যায়ে অভ্যর্থনা কেন্দ্র তৈরি করা হবে। সেখানে একসঙ্গে ৩০ হাজার মানুষ রাখা যাবে। প্রথমে ক্যাম্পের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করে নেওয়া হবে। এরপর তাদের অভ্যর্থনা কেন্দ্রে নেওয়া হবে। সেখানে থেকে তাদের যে বাসস্থানে রাখা হবে সেখানে স্থানান্তর করা হবে।

গত বছরের আগস্টের শেষের দিকে মিয়ানমারের রাখাইনে শুরু হওয়া নৃশংসতার পর এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নাগরিক পালিয়ে বাংলাদেশে আসতে বাধ্য হন। এর বেশিরভাগই মুসলিম। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবর্তনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয় গত বছরের নভেম্বরে। তার অধীনে ২৩ জানুয়ারি রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তন শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, তা এখনো হয়নি।

   

আরসার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে: র‌্যাব



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

মিয়ানমারের সন্ত্রাসী গোষ্ঠী আরসার বিরুদ্ধে র‌্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। কোন প্রকার তথ্য পেলেই অভিযান চালানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার আরাফাত ইসলাম।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে কারওয়ান বাজার মিডিয়া সেন্টারে এক প্রশ্নের উত্তরে র‌্যাবের মিডিয়া অ্যান্ড লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের একটা আতঙ্কের নাম আরসা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। এই আরসা গোষ্ঠী বিভিন্ন সময়ে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে হত্যাকানণ্ড অপহরণসহ নানান অপরাধের সাথে জড়িত। এর আগে আমরা নানা ধরনের অভিযান পরিচালনা করে এখন পর্যন্ত ১১০ জন আরসা সদস্যকে গ্রেফতার করেছি এবং বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ও অস্ত্র সরঞ্জামাদী উদ্ধার করেছি।

তিনি আরও বলেন, র‍্যাবের অব্যাহত নজরদারি, গোয়েন্দা তাৎপরতা অভিযানের প্রেক্ষিতে আরসা নেতৃত্ব শূন্য হয়ে যায়। পাশের দেশ থেকে অস্ত্র আসছে এমন গোয়েন্দা তথ্য থেকে আমরা গতকাল অভিযান চালিয়ে দুইজন কে গ্রেফতার করেছি।

আরাফাত বলেন, আরসার এ ধরনের কর্মকাণ্ডকে নিষ্ক্রিয় রাখতে আমরা স্থানীয় থানা এবং সংশ্লিষ্টদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ রাখছি। আমরা তাদের ট্র্যাকিং করছি এবং তাদের বিরুদ্ধে আমাদের গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত আছে। আমরা যখনই কোন তথ্য পাচ্ছি আমরা অভিযান চালাচ্ছি।

গত বুধবার ভোর রাতে কক্সবাজারের উখিয়ার গহিন পাহাড়ে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি অস্ত্র, গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার করেছে র‍্যাব। এ অভিযানের সময় আরসা কমান্ডার মাস্টার সলিমুল্লাহ (৩৮) এবং তার সহযোগী মো. রিয়াজকে (২৭) গ্রেফতার করা হয়। তারা দুজনই মিয়ানমারের রোহিঙ্গা নাগরিক।

;

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাস কম থাকবে



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

উত্তরা, উত্তরখান এলাকায় শনিবার গ্যাসের কম থাকবে

  • Font increase
  • Font Decrease

গ্যাস পাইপলাইনে নির্মাণের প্রয়োজনীয় কাজের জন্য শনিবার (১৮ মে) রাজধানীর উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান এলাকায় গ্যাস সরবরাহ কম থাকবে।

শুক্রবার (১৭ মে) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ।

এতে বলা হয়েছে, শনিবার সকাল ৯টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত মোট ১৫ ঘণ্টা উত্তরা, উত্তরখান, দক্ষিণ খান ও এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের স্বল্পচাপ বিরাজ করবে। গ্রাহকবৃন্দের সাময়িক অসুবিধার জন্য তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ আন্তরিকভাবে দুঃখিত।

;

চিংড়ি ঘেরে মিলল ২ মরদেহ, শর্ট সার্কিট দিয়ে হত্যার অভিযোগ



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কক্সবাজার
ছবি: বার্তা ২৪

ছবি: বার্তা ২৪

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার শহরের খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে চিংড়ি ঘের থেকে দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর জানায় স্থানীয়রা।

শুক্রবার (১৭ মে) সকাল ১১ টায় খুরুশকুল মনুপাড়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের পাশে এ মরদেহ দুটি পড়ে থাকতে দেখেছে স্থানীয় লোকজন।

নিহতরা হলেন, খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকার বাসিন্দা জামালের ছেলে আবদুল খালেক (২৫) এবং আবু তাহেরের ছেলে মো. ইয়াছিন। উভয়ের বাড়ি খুরুশকুল মনু পাড়া এলাকায়। তারা দুইজনে পেশায় মৎস্যজীবী বলে জানিয়েছেন স্বজনরা।

খুরুশকুলের চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী জানিয়েছেন, গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে এসেছেন। মরদেহ দুটি প্রত্যক্ষ করে দেখেছেন তাদের শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক শর্টের চিহ্ন রয়েছে। তারা দুইজন মনুপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানান তিনি।

নিহত ইয়াছিন আরাফাতের মা জানিয়েছেন, তার ছেলে গতকাল রাত ১০টার সময় বাড়ি থেকে বের হয়। আজকে সকালে তার মরদেহ পাওয়া যায়। তবে কে বা কারা তাদের হত্যা করেছে সে বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান তিনি। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে ছেলে হত্যার সঠিক বিচার দাবি করেন তিনি।

স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাদের গায়ে মারধরের এবং বৈদ্যুতিক শর্টের আঘাত রয়েছে। কে বা কারা তাদের মেরে ফেলে রেখেছে সেই বিষয়ে এখনো কেউ কিছু বলছে না।

তবে চেয়ারম্যান শাহজাহান সিদ্দিকী এবং সেখানকার ইউপি সদস্য নাসির উদ্দীনের দাবি সাবেক ইউপি সদস্য শামসুল হুদার মাছের ঘেরে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ এর শর্ট সার্কিট দিয়ে তাদের হত্যা করা হয়েছে।

কক্সবাজার সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি অপারেশন) শাকিল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিকভাবে একজনের পায়ে এবং আরেকজনের বাঁ হাতের নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে ময়নাতদন্তের পর হত্যার মূল কারণ জানা যাবে।

;

দীর্ঘ শত্রুতা ও প্রতিশোধের জেরে হত্যাকাণ্ড, গ্রেফতার ৪



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নড়াইলের লোহাগড়া এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিকদার মোস্তফা কামালকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় জড়িত চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব।

গ্রেফতারকৃতরা হল- প্রধান আসামি শুটার সাজেদুল মল্লিক (২৫), পাভেল শেখ (২৮), মামুন মোল্যা (২৬) ও মো. রহমত উল্লাহ শেখ (১৯)।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের বায়েজিদ ও নড়াইল এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা উক্ত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকার করেছে বলে জানান র‍্যাব।

র‍্যাব জানায়, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপন এর মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

শুক্রবার (১৭ মে) দুপুরে রাজধানীর কারওয়ান বাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সংস্থাটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম। 

তিনি বলেন, গত ১০ মে নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামালকে দুর্বৃত্তরা অতর্কিত হামলা করে ও এলোপাথারি গুলি করে হত্যা করেন। ওই ঘটনায় ভিকটিমের বড় ভাই বাদী হয়ে লোহাগড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। একজন সাবেক ইউপি সদস্য হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হলে র‌্যাব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে মাঠে নামে। এরই ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার (১৬ মে)  রাতে র‌্যাব-৬, র‌্যাব-৭ এবং র‌্যাব-১০ এর যৌথ আভিযানে  ওই  হত্যার ঘটনায় জড়িত শুটারসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।

আসামিদের বরাত দিয়ে কমান্ডার আরাফাত ইসলাম বলেন, দীর্ঘ বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে। ভুক্তভোগী নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার মল্লিকপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও একই ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের সাবেক মেম্বার আকবর হোসেন লিপনের সঙ্গে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকে শত্রুতা বিরাজমান ছিল।

তিনি আরও বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ভুক্তভোগী মোস্তফা কামাল এবং আকবর হোসেন লিপনের অনুসারীদের মধ্যে একটি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে লিপন গুরুতর আহত হয় এবং তার একটি হাত কাটা পড়ে। পরবর্তীতে লিপন ও তার অনুসারীরা মোস্তফা কামাল এর উপর প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ খুঁজতে থাকে। লিপনের নির্দেশনায় ঘটনার দিন সকালে তার ছোট ভাইয়ের বাড়িতে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা ভিকটিম মোস্তফা কামালকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী মোস্তফা কামালের অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে ঘটনার দিন সন্ধ্যায় গ্রেফতারকৃত সাজেদুলসহ অন্যান্য আসামিরা সুইচ গিয়ার চাকু, রাম দাসহ বিদেশি অস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে অবস্থান নিয়ে ওৎ পেতে থাকে। ঘটনাস্থলে পৌঁছানো মাত্রই সুযোগ বুঝে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের হাতে থাকা বিদেশি পিস্তল দিয়ে মোস্তফা কামালকে লক্ষ্য করে ৩ রাউন্ড গুলি করে; যার মধ্যে ২ রাউন্ড গুলি তার বুকে ও পিঠে লাগে।

র‍্যাব জানান, গ্রেফতারকৃত সাজেদুল স্থানীয় একটি পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর ১ম বর্ষের ছাত্র। সে আকবর হোসেন লিপন এর অন্যতম প্রধান সহযোগী। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, ডাকাতি, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতো বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি, চুরি ও চাঁদাবাজি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত রহমত উল্লাহ শেখ পেশায় একজন শ্রমিক। সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ মারামারি, ছিনতাই, মাদক সেবনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত সাজেদুল এর সহযোগী হিসেবে তাকে উক্ত হত্যাকান্ড সংঘটিত করার জন্য ১ লক্ষ টাকায় চুক্তিবদ্ধ করা হয়েছিল এবং হত্যাকাণ্ডের সময় সে গ্রেফতারকৃত সাজেদুল সাথে প্রত্যক্ষভাবে অংশগ্রহণ করেছিল বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি সংক্রান্ত ১টি মামলা রয়েছে এবং উক্ত মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত পাভেল স্থানীয় একটি স্কুল থেকে এইচএচসি পর্যন্ত পড়ালেখা করে। সে লিপনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে কাজ করতো। সে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি সহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত রয়েছে বলে জানা যায়। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ৩টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

গ্রেফতারকৃত মামুন মোল্যা পেশায় একজন গাড়ি চালক। সে লিপনের নেতৃত্বে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সাথে জড়িত। তার কাছে থাকা ছুরি চাকুসহ অন্যান্য দেশি-বিদেশি আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গ্রেফতারকৃতরা ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে মোস্তফা কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে। তার বিরুদ্ধে নড়াইলের লোহাগড়া থানায় মারামারি ও চুরি সংক্রান্ত ২টি মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

;