সুশীল সমাজের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী

  • সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

নাম না উচ্চরণ করে এক শ্রেণির সুশীল সমাজের কড়া সমালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবী গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ান। কিন্তু তারা গণতন্ত্র খুঁজে পান জরুরি অবস্থা যখন জারি হয় তখন অথবা মিলিটারি ডিকটেটর আসলে তখন তারা গণতন্ত্রের স্বাদ পান। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশে তারা গণতন্ত্র পায় না। তাদের চরিত্র হচ্ছে চাটুকারিতা করা, তোষামোদি করা। যারা এভাবে হঠাৎ করে ক্ষমতা দখল করে তারা এই তোষামোদকারীদের হায়ার (ভাড়া) করে। কিন্তু সত্যিকার গণতান্ত্রিক ধারা যখন থাকে তখন এদের মূল্য থাকে না। তখন যতই বুকে লিখে রাখুক ইউজ মি অথবা আমাকে ব্যবহার কর। গণতান্ত্রিক সরকার তো তাদের ব্যবহার করবে না।

রোববার (৩০ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ শত প্রতিকূলতার মধ্যেও সামনের দিকে এগিয়েছে। আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর অনুমোদন লাভ করেছে। ১২৬টা দেশ বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ, ওআইসি, কমনওয়েলথসহ প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানের সদস্য পদ পেয়েছে। আন্তর্জাতিক সকল সংস্থায় বাংলাদেশের মতো এত অল্প সময়ের মধ্যে কোনো দেশ সদস্য পদ অর্জন করতে পারেনি। জাতির পিতার নেতৃত্বে ছিল বলে এটা সম্ভব হয়েছিল। কিন্তু এত কিছু পরেও কিছু লোক বলে কিছুই নাকি হয়নি। কোনো উন্নয়নই নাকি হয়নি, কিছুই নাকি করেননি। সেই কথা বলা লেখা শুরু করে। ইয়াহিয়া খান যা করেছিল জিয়াউর রহমানও তাই করেছে এরশাদও তাই করেছে। গণতন্ত্র মুখে ছিল কিন্তু বাস্তবে কি ছিল? জিয়াউর রহমান ‘৭৫ পরবর্তী ক্ষমতায় আসার পর আমাদের পার্টির কত মানুষকে সে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।

তিনি বলেন, এক একজনকে তুলে নিয়ে গেছে খবরও পাইনি। সেই সঙ্গে একটার পর একটা ক্যু হয়েছে। সেনাবাহিনীর হাজার হাজার সদস্য, অফিসার এবং যারা বিশেষ করে মুক্তিযোদ্ধা প্রত্যেকটা মুক্তিযোদ্ধা অফিসার যারা রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছে এই দেশকে স্বাধীন করেছে তাদেরকে হত্যা করেছে জিয়াউর রহমান। জেলখানায় চার জাতীয় নেতার হত্যা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জিয়াউর রহমানের যেন আলাদা একটা রাগই ছিল। সৈনিকরা অনেকে জানতই না তার কি অপরাধ। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রতিরাতে ৮-১০টা করে ফাঁসি হতো। তাদের চিৎকারে কারাগারের আকাশ বাতাস ভারী হত। এমন দিন নাই জিয়াউর রহমানের হাতে মানুষের মৃত্যুদণ্ড হয়নি। এভাবে সারাদেশে একটা খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তার ওপর জাতির পিতার হত্যাকারীদের বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দিয়ে পুরস্কৃত করেছিল। এখানে গণতন্ত্রটা কোথায়? মার্শাল ল অর্ডিন্যান্স জারি করে যারা ক্ষমতায় আসে তারা গণতন্ত্র দিতে পারে না।

বিজ্ঞাপন

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অনেক বুদ্ধিজীবী অনেকেই গণতন্ত্র খুঁজে বেড়ান, কিন্তু তারা গণতন্ত্র খুঁজে পান জরুরি অবস্থা যখন জারি হয় তখন অথবা মিলিটারি ডিকটেটর আসলে তখন তারা গণতন্ত্রের স্বাদ পান। কিন্তু গণতান্ত্রিক পরিবেশে তারা গণতন্ত্র পায় না। তাদের চরিত্র হচ্ছে চাটুকারিতা করা তোষামোদি করা। যারা এভাবে হঠাৎ করে ক্ষমতা দখল করে তারা এই তোষামোদকারীদেরকে হায়ার করে। তারা সব সময় এ ধরনের ব্যবহার হওয়ার জন্য তৈরি থাকে। কিন্তু সত্যিকার গণতান্ত্রিক ধারা যখন থাকে তখন এদের মূল্য থাকে না। তখন যতই বুকে লিখে রাখুক ইউজ মি অথবা আমাকে ব্যবহার কর। গণতান্ত্রিক সরকার তো তাদের ব্যবহার করবে না, তখনই তাদের চিৎকার গণতন্ত্র নাই, এটা নাই, সেটা নাই। জনগণের মৌলিক চাহিদা পূরণ করা, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করা, জনগণের পেটের খাবার জোগার করা, তাদের শিক্ষা-চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। তাদের মৌলিক চাহিদা পূরণ এটাই তো তাদের মূল লক্ষ্য। আর একমাত্র গণতন্ত্রিক সরকার হলেই সেটা সম্ভব। বাংলাদেশের মানুষ ৭৫ এর পর প্রথম উপলব্ধি করেছে। যখন আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর সরকার গঠন করেছে তখনই তারা বুঝতে পেরেছে অন্তত সরকার যে তাদের সেবক তাদের সেবা করে তাদের কল্যাণে কাজ করে একমাত্র তখনই তারা উপলব্ধি করেছে। কারণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া সংগঠন আমরা সেই আদর্শ বুকেই নিয়েই কাজ করি।