বেনাপোল বন্দরে বাণিজ্য বন্ধের হুমকি ভারতীয় ট্রাক চালকদের



আজিজুল হক, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বেনাপোল (যশোর)
বেনাপোল বন্দর

বেনাপোল বন্দর

  • Font increase
  • Font Decrease

বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে সর্বাধিক গুরুত্ব বহন করে থাকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে এ বন্দরে পণ্য রক্ষণাবেক্ষণে বেহাল দশা, পণ্য খালাস ও পরীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে জটিলতা আর জায়গা সংকটসহ নানা অব্যবস্থাপনায় স্থবির হয়ে পড়েছে বাণিজ্যক কার্যক্রম। এতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের ক্ষোভের পাশাপাশি বাণিজ্য বন্ধের হুমকি দিয়েছেন আমদানি পণ্য বহনকারী ভারতীয় ট্রাক চালকরা।

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বাণিজ্য বাড়াতে বন্দরের বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা তাদের রয়েছে। এসব বাস্তবায়ন হলে বাণিজ্যে গতি ফিরবে বলেও জানান তিনি।

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) সকালে ভারতীয় ট্রাক চালকদের বাণিজ্য বন্ধের হুমকির বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন।

জানা যায়, ১৯৭২ সাল থেকে বেনাপোল বন্দরের সঙ্গে ভারতের পেট্রাপোল বন্দরের বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু। এ বন্দর থেকে ভারতের প্রধান বাণিজ্যিক শহর কলকাতার দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ হওয়াতে প্রথম থেকেই এপথে বাণিজ্যে আগ্রহ বেশি দুই দেশের ব্যবসায়ীদের। তবে বেশ কয়েক বছর ধরে বেনাপোল বন্দরে নানা অনিয়ম আর অব্যবস্থাপনায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য। বার বার রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডে ব্যবসায়ীরা সর্বশান্ত হচ্ছেন।

বন্দরে জায়গার অভাবে দিনের পর দিন পণ্য নিয়ে ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় লোকসানের পাল্লা ভারি হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। যার প্রভাব পড়ছে দেশীয় বাজারে আমদানি পণ্যের ওপর। অথচ এ বন্দর থেকে প্রতিবছর সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। ইতিমধ্যে বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনায় ক্ষোভ জানিয়ে ভারতের পেট্রাপোলের বনগাঁ মোটরশ্রমিক অ্যাসোসিয়েশন আল্টিমেটাম দিয়ে বলেছে, দ্রুত পণ্য খালাসসহ অব্যবস্থানার স্থায়ী সমাধান না আসলে সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) থেকে তারা বেনাপোল বন্দরে পণ্য পরিবহন বন্ধ করে দিবেন। এতে দুঃচিন্তায় পড়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বেনাপোল বন্দরের আমদানি-রফতানি সমিতির সহ-সভাপতি আমিনুল হক বলেন, এমনিতেই করোনার কারণে তিন মাস এপথে বাণিজ্য বন্ধ ছিল। আবার যদি আমদানি বন্ধ হয়ে যায় তবে বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়বেন তারা। তবে ভারতীয় ব্যবসায়ীদের দাবিকে সমর্থন করেন তিনি।

সিঅ্যান্ডএফ স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর ররহমান জানান, সুষ্ঠু বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বেনাপোল বন্দরে সমস্যার অন্ত নাই। বন্দরের জায়গার অভাব আর খালাসের যন্ত্রপাতি বিকল থাকায় তারা সময়মতো পণ্য নিতে পারছেন না। অথচ এ বন্দর থেকে প্রতিবছর তারা সরকারকে ৫ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব দিচ্ছেন। নিরাপত্তা সমস্যায় বারবার অগ্নিকাণ্ডে পথে বসছেন ব্যবসায়ীরা। দিনের পর দিন খালাসের অপেক্ষায় ট্রাক দাঁড়িয়ে থাকায় আমদানি খরচ বাড়ছে। সন্তোষজনক সমাধানের মাধ্যমে যাতে বাণিজ্য সচল থাকে তার জন্য আলোচনা চলছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন বলেন, ভারতীয়রা বেনাপোল বন্দরের অব্যবস্থাপনায় ক্ষুব্ধ হয়ে এ পথে বাণিজ্য বন্ধের যে হুমকি দিয়েছেন তার যৌক্তিকতা আছে। উন্নয়ন নিয়ে বেনাপোল বন্দরের কোনো মাথা ব্যথা নাই। বন্দরের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ৪০ হাজার মেট্রিক টন কিন্তু পণ্য থাকে সব সময় ২ লাখ মেট্রিক টন।

অবহেলা অযত্ন খোলা আকাশের নিচে এসব পণ্য বৃষ্টির পানি-কাদাতে ভিজে মান নষ্ট হচ্ছে। বারবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নের দাবি জানানো হলেও নজরদারি কম বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

এদিকে বেনাপোল বন্দরকে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার জোর দাবি তুলেছেন ব্যবসায়ী নেতারা।

ভারত-বাংলাদেশ ল্যান্ডপোর্ট এমপোর্ট-এক্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন নিয়ে বারবার বন্দর কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও তাদের উদাসীনতায় খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বাণিজ্যিক কার্যক্রম। যার খেসারত ভোগ করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। সরকারও হারাচ্ছে কাঙ্ক্ষিত রাজস্ব। অথচ যেসব বন্দরে এখনও বাণিজ্য শুরু হয়নি সেখানে উন্নয়ন ও প্রশাসনিক ব্যয় শুরু হয়েছে। কিন্তু বেনাপোল বন্দর দিয়ে দেশের ৭০ শতাংশ ব্যবসায়ীদের বাণিজ্যের চাহিদা থাকলেও যথাযথ উন্নয়ন নাই। বন্দরের গুরুত্ব বুঝে সরকারকে উন্নয়ন করতে হবে। তবে ভারত অংশে পেট্রাপোল বন্দরে ২০০৮ সালে স্থলবন্দর ঘোষণার পর অর্থমন্ত্রণালয়ের অধীনে নিয়ে সেখানে আগামী দুইশ বছরের পরিকল্পনা নিয়ে যেমন আধুনিকমানের সবধরনের অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে তেমনি বেড়েছে নিরাপত্তা ব্যবস্থা। রয়েছে এসি ওয়ারহাউজ, সিসি ক্যামেরা, সীমান্তরক্ষী বিএসএফয়ের সশস্ত্র নিরাপত্তা। যার কোনোটাই বেনাপোল বন্দরে নাই বলেও জানান তিনি।

তিনি আরও জানান, উন্নয়ন বাড়াতে হলে বন্দরকে নৌ পরিবহনের অধীন থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে হবে। যা ইতিমধ্যে ভারত সরকার পেট্রাপোল বন্দরে করেছে। বেনাপোল বন্দরের যথাযথ উন্নয়ন করতে হলে দ্রুত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় থেকে সরিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নিতে হবে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক (প্রশাসন) আব্দুল জলিল বলেন, ইতিমধ্যে বন্দরের বেশ কিছু অবকাঠামো উন্নয়ন হয়েছে। তবে বাণিজ্য সম্প্রসারণে নতুন জায়গা অধিগ্রহণ, পণ্যগার বাড়ানো, চুরি রোধে সিসি ক্যামেরা ও বন্দরের চারপাশে প্রাচীর নির্মাণের পরিকল্পনা তাদের রয়েছে।

বন্দরকে নৌ পরিবহনের অধীন থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীনে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা সরকারের উচ্চপর্যায়ের সিদ্ধান্তের বিষয়।

উল্লেখ্য, দেশের চলমান ১২টি বন্দরের সবচেয়ে বড় আর বেশি রাজস্ব দাতা বেনাপোল বন্দর। বাণিজ্যিক দিক থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের পর বেনাপোল বন্দরের অবস্থান। বেনাপোল বন্দরে আমদানি পণ্য রক্ষণাবেক্ষণে বন্দরে ৩২টি ওয়ার হাউজ, একটি ট্রান্সশিপমেন্ট ইয়ার্ড, একটি রফতানি টার্মিনাল ও একটি ভারতীয় চ্যাচিজ রাখার টার্মিনাল রয়েছে। তবে তা চাহিদার তুলনায় অনেক কম।

   

বরিশালে গরমে ধানকাটা শ্রমিকের মৃত্যু



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে জমিতে ধান কাটতে গিয়ে গরমে অসুস্থ হয়ে জামাল ফরাজী (২৬) নামের এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) সকালে উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের নরসিংহা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মৃত জামাল ফরাজী বাগেরহাটের মোড়লগঞ্জ উপজেলার ফুলতলা গ্রামের সৈয়দ ফরাজীর ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শনিবার সকালে উজিরপুর উপজেলার বড়াকোঠা ইউনিয়নের নরসিংহা এলাকার মোখলেস খানের জমিতে বোরো ধান কাটছিলেন জামাল ফরাজীসহ অন্যান্য শ্রমিকরা। এসময় গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েন জামাল। পরে তাকে উজিরপুর উপজেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।

বোরো ধান কাটার সময় গরমে অসুস্থ হয়ে জামাল ফরাজীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাফর আহমেদ জানান, যথাযথ আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

;

পানির লাইনে ময়লা, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুই ইউনিটে উৎপাদন হ্রাস



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

কালবৈশাখী ঝড়ের সময় পানির লাইনে কচুরিপনাসহ ময়লা ঢোকায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানি লিমিটেড (এপিএসসিএল) এর দুটি ইউনিটের স্ট্রীম টারবাইন অংশ বন্ধ রয়েছে। এতে অন্তত ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।

শুক্রবার (৩ মে) রাতে কালবৈশাখী ঝড়েরর সময় এ ময়লা ঢোকার ঘটনা ঘটে। বন্ধ ইউনিট দুটি হল ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (নর্থ) এবং ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (সাউথ)।

কারখানা কর্তৃপক্ষ পাইপ লাইনের ময়লা অপসারন শেষে ইউনিট দুটি চালুর চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত এগুলো চালু হয়নি। এদিকে বিদ্যুৎ কেন্দ্রে গ্যাসের চাপ সর্বনিন্ম পর্যায়ে থাকায় চলমান সব কটি ইউনিট রয়েছে উৎপাদন ঝুঁকিতে।

আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানি লিমিটেড এর কারিগরি বিভাগের তথ্যমতে, বর্তমানে এপিএসসিএল এ প্রায় সাড়ে ১৬শ মেগাওয়াট (১৬৪৬) ক্ষমতা সম্পন্ন ৬টি ইউনিট থেকে ১৫‘শ ৭০ মেগাওয়াট (১৫৭০) বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব। ইউনিটগুলি হল-৫৩ মেগাওয়াটের একটি গ্যাস ইঞ্জিন, ২২৫ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট, ২০০ মেগাওয়াটের মডিউলার প্লান্ট, ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (নর্থ ), ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (সাউথ) এবং ৪০০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্ট (ইষ্ট)। প্রতিটি কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টে দুই প্রক্রিয়ায় (গ্যাস টারবাইন এবং স্ট্রীম টারবাইন ) বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এদিকে চলমান ইউনিটগুলির যন্ত্রপাতি ঠান্ডা রাখতে এবং কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের স্টিম টারবাইন চালু রাখতে মেঘনা নদী থেকে পাম্পের মাধ্যমে পাইপ দিয়ে পানি নেয়া হয়।

শুক্রবার রাতে ঝড়ের সময় পাইপে কচুরিপনাসহ প্রচুর ময়লা ঢোকে। এতে পাম্প বন্ধ ও পাইপ লাইপ লাইনে পানি প্রবাহ ব্যাঘাত ঘটে। ফলে ৪৫০ মেগাওয়াটের কম্বাইন্ড সাইকেল পাওয়ার প্লান্টের (নর্থ এবং সাউথ) স্ট্রীম টারবাইন অংশ বন্ধ হয়ে যায়। কর্তৃপক্ষ ময়লা পরিস্কার করে চালু করার চেষ্টা করলেও বিকেল পর্যন্ত চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে সন্ধা ও রাতের মধ্যেই ইউনিট দুটির স্ট্রীম টারবাইন অংশ চালু করা সম্ভব হবে বলে জানান কর্তৃপক্ষ। এদিকে বর্তমানে কেন্দ্রে গ্যাসের চাপ সর্বনিন্ম পর্যায়ে (মাত্র ২৪ বার) থাকায় চলমান ইউনিটগুলিও উৎপাদন ঝুকিতে রয়েছে। কারণ এ নিচে আসলে ইউনিট চালু রাখা সম্ভব নয়।

আশুগঞ্জ পাওয়ার ষ্টেশন কোম্পানি লিমিটেড এর নির্বাহী পরিচালক (পরিচালন ও সংরক্ষণ) প্রকৌশলী মো. আব্দুল মজিদ বলেন, পানির পাইপ লাইনে ময়লা ঢুকে দুটি প্লান্টের স্ট্রীম টারবাইন বন্ধ রয়েছে। রাতের মধ্যে দুটি টারবাইনই উৎপাদনে আসবে বলেও জানান তিনি।

;

বৃষ্টি-বন্যার আগেই ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত কৃষক



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

সারাদেশে চলমান তীব্র তাপপ্রবাহে জনজীবনে যখন হাঁসফাঁস অবস্থা, মানুষ যখন একটু স্বস্তি পেতে বৃষ্টির জন্য হাহুতাশ করছে, দেশজুড়ে চলছে ইসতিসকার নামাজ আদায়। তবুও এই মুহূর্তে বৃষ্টি চান না ব্রাহ্মণবাড়িয়ার হাওড় এলাকার কৃষকরা।

মাঠে সোনালি ধান, হাওর ও বিল থেকে কেটে ঘরে তোলার পর বৃষ্টি এলেই ভালো হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। তাদের মতে আরো ৭ থেকে ১০দিন বৃষ্টি না আসলে তারা জমির ধান ঘরে তুলতে পারবেন। তবে দ্রুত ধান কেটে ঘরে তোলার ব্যবস্থা নেয়ার জন্য কৃষকদের জানিয়েছেন কৃষি বিভাগ।


জেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় মোট ১ লাখ ১১ হাজার ৬৯৬ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ করা হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২৯১ হেক্টর বেশী। আর এই জমি থেকে ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ লাখ ১৫ হাজার ৫৪৩ মেট্টিক টন ।চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভাল হয়েছে। এতে খুশি কৃষকরা। তবে প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় না ঘটলে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন তারা। জেলার বিভিন্ন হাওড়াঞ্চলসহ উজানে থাকা জমিতে গিয়ে দেখা যায়- তীব্র তাপদাহ উপেক্ষা করেই মাঠে ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। আর কিষাণীরা ব্যস্ত কেটে আনা ধান মাড়াই ও শুকানোর কাজে। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অবিরত কাজ করে যাচ্ছেন। তীব্র রোদ, ভ্যাপসা গরম কিছুই তাদের কাজে ব্যাঘাত ঘটাতে পারছে না। ঘাম ঝড়িয়ে ফলানো ফসল ঘরে তুলতে না হয় আরেকটু বেশি ঘাম ঝরাবেন। তবুও এই সময়ে বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি কিংবা বন্যার মত কোন দূর্যোগ চান না তারা।

নাসিরনগরের মেন্দি হাওড়ে কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছর আবহাওয়া ভালো থাকায় ভালো ফলনের আশা করছেন তারা। এমন অবস্থায় বজ্রসহ বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি কিংবা বন্যা হলে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হবে। এছাড়াও বৃষ্টি ও উজান থেকে ঢল এলে হাওড়াঞ্চলের নিচু এলাকার জমি তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে ফসল তুলতে না পারা কৃষকরা বিপাকে পড়বেন। তাই সব মিলিয়ে রোদ আর গরম যত বেশিই হোক, কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারলেই খুশি তারা।

নাসিরনগর উপজেলার গোয়ালনগর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, বিভিন্ন এলাকার হাওরের ধান কাটা শেষ পর্যায়ে। উজানের কিছু ধানি জমি আছে এগুলো কাটতে আরো এক সপ্তাহ সময় লাগবে। এ সময়টাতে বৃষ্টি না হলে কষ্টের ফসল ঘরে তুলতে পারবেন তিনি। যদি এর মধ্যে বৃষ্টি হয় তাহলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে বলে জানান তিনি।


উপজেলার দাতমন্ডল গ্রামের কৃষক আব্দুল ওয়ারিশ বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি মওসুমে পাঁচ কানি জমিতে নতুন জাতের বঙ্গবন্ধু ধানের আবাদ করেছেন। আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভাল। প্রতি কানি জমিতে ২১ মণ ধান হয়েছে। ইতিমধ্যে তারা কষ্টের সোনালী ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।

তিনি আরো বলেন, বৃষ্টি সবাই চাচ্ছে কিন্তু আরো কয়েকদিন পরে হলে আমাদের জন্য ভাল হয়। এমন রৌদ্রজ্জ্বল আকাশ কয়েকটা দিন থাকলে নিরাপদে ফষলগুলো ঘরে তুলতে পারতাম। তাহলে আমাদের ফসল ঘরে তুলতে পারব। তীব্র গরমে ফসল কাটার জন্য পর্যাপ্ত শ্রমিক পাওয়া যায়না। যাদের পাচ্ছি তাদেরকে প্রতিদিন ৭শ টাকা করে দিয়ে ধান কাটাচ্ছি। কৃষি বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে সামনে ঝড় বৃষ্টি আসতে পারে। তাই পাকা ধান দ্রুত কাটতে বলা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার উপ-পরিচালক সুশান্ত সাহা বার্তা২৪.কমকে বলেন, চলতি মওসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে কৃষকের কষ্টের ফসল যাতে কোন ঝামেলা ছাড়াই যাতে ঘরে তুলতে পারেন এই জন্য জেলা কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের নানা পরামর্শ দেয়া হয়েছে। একই সাথে উপজেলা কৃষি অফিসার, মাঠকর্মীসহ বিভিন্ন স্থানে মাইকিং ও প্রচারণার মাধ্যমে ৮০ ভাগ ধান পেকেছে এমন ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য বলা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে হাওড়াঞ্চলের ৯১ ভাগ ধান কাটা শেষ আশা করছি ৯ তারিখের মধ্যে অবশিষ্ট ধান কেটে ঘরে তুলতে পারবে কৃষক। এছাড়াও উজানে যেসব জমি রয়েছে এরমধ্যে ৫১ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। সেগুলো চলতি মে মাসের মধ্যেই কাটা শেষ হবে।

;

নওগাঁয় দেয়ালচাপায় প্রাণ গেল রাজমিস্ত্রির



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নওগাঁর সাপাহারে মাটির দেয়াল চাপা পড়ে আব্দুল জলিল (৩৫) নামের এক রাজমিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার (৪ মে) দুপুরে উপজেলার ভাগপাড়ল গ্রামের সাত্তার আলির বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আব্দুল জলিল গোপালপুর ময়নাকুড়ি গ্রামের সেন্টু রহমানের ছেলে।

জানা যায়, পাকা করার জন্য ঘরের দেয়ালের নিচে মাটি কেটে সরানোর হচ্ছিল। এসময় কিছু বুঝে উঠার আগেই দেয়াল ভেঙে জলিলের উপরে পড়ে। এতে চাপা পড়েন রাজমিস্ত্রি আব্দুল জলিল। তাৎক্ষণিক তাকে উদ্ধার করে সাপাহার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোফাজ্জল হোসেন তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ বিষয়ে সাপাহার থানার অফিসার ইনচার্জ পলাশ চন্দ্র দেব বলেন, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিলো। নিহতের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

;