দুই মাসে ব্রহ্মপুত্র নদের গর্ভে সাড়ে তিন শতাধিক বসতভিটা
জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে গত দুই মাসে সাড়ে তিন শতাধিক পরিবারের বসতভিটা নদীর গর্ভে চলে গেছে। বসতভিটা হারিয়ে তারা এখন খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। তবে উপজেলা প্রশাসনের দাবি বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, বন্যার পানি কমার সাথে সাথেই দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের তিলকপুর, কাউনেরচর, গুচ্ছগ্রাম, বেপারীপাড়া, সরকারপাড়া, শেখপাড়ার, গায়েনপাড়া,চরখড়মা, নান্দেকুড়া গ্রামের সাড়ে তিন শতাধিক পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক হাজার একর ফসলি জমি নদীগর্ভে চলে গেছে।
শুক্রবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকালে ওই এলাকায় সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পুরোটাই ও ৬নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা এখন নদীগর্ভে চলে গেছে। সবকিছু হারিয়ে এ অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ বকশীগঞ্জ উপজেলার কলকিহারা, মাইছানিরচর, দুর্গাপুর এবং ইসলামপুর উপজেলার গোয়ালেরচর, ফকিরপাড়াসহ বিভিন্ন উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বছরের পর বছর এ অঞ্চলটিতে নদী ভাঙনের ফলে শত শত বসতবাড়ি ও হাজার হাজার একর আবাদি ফসলি জমি বিলীন হলেও প্রতিকারের কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছেন না কর্তৃপক্ষ।
নান্দেকুড়া গ্রামের জাবর আলী,চাঁন মিয়া, সায়েদ আলী বার্তা২৪.কমকে বলেন, এক সময় আমাদের বসতভিটা ও স্বাচ্ছন্দে দিন চলার মতো ফসলি জমি ছিলো। সর্বনাশা ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে আজ আমরা নিঃস্ব। এ অঞ্চলে আমাদের মতো হাজার হাজার মানুষ আজ বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে পথে বসেছেন। তাদের দুর্দশার শেষ নেই। এমনকি দেখারও কেউ নেই।
নান্দেকুড়া গ্রামের ছানোয়ার হোসেন,আমর আলী, সায়েদ আলী,মহিজলসহ আরও অনেকেই বলেন, প্রতিদিনই নদীতে চলে যাচ্ছে বসতভিটা। গত দুই মাসে আমাদের এলাকার প্রায় সাড়ে তিন শতাধিক ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে।
দেওয়ানগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছামিউল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমার ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড পুরোটাই ও ৬নং ওয়ার্ডের অধিকাংশ এলাকা নদীতে বিলীন হয়েছে। অধিকাংশ এলাকা জুড়ে বছরের পর বছর নদী ভাঙন চলছে। হাজার হাজার মানুষ তাদের বসতভিটা ও আবাদি জমি হারিয়ে অভাব-অনটনে মানবেতর দিনাতিপাত করছে।
এ বিষয়ে দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুলতানা রাজিয়া বার্তা২৪.কমকে বলেন, নদী ভাঙন এলাকাগুলো আমরা পরিদর্শন করে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তারা ওই ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।