ঋণের বোঝা ১১৮ কোটি টাকা, ১ যুগ ধরে অচল মাগুরা টেক্সটাইল মিল
অপরিশোধিত ঋণসহ ১১৮ কোটি টাকা লোকসানের বোঝা নিয়ে দীর্ঘ এক যুগের বেশি সময় ধরে মাগুরা টেক্সটাইল মিলটি অচল অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
মিলটি বন্ধ থাকা অবস্থায় বেশ কয়েকবার সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে চালু করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বিটিএমসি। যে কারণে সর্বশেষ ২০০৮ সাল থেকে এটি একেবারে অচল অবস্থায় পড়ে আছে। এ কারণে ভৌত অবকাঠামো সহ প্রায় ৪০ কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যবস্থাপনা ব্যয় প্রতিবছর তিন কোটি টাকা সরকারকে লোকসান গুনতে হচ্ছে।
দাপ্তরিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৫ সালে মাগুরা শহরের ভায়না মোড় এলাকায় ১৬.১৭ একর জমির উপর এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক ও রোমান সরকারের সহযোগিতায় ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ ৪৬ হাজার টাকা ঋণ নিয়ে মিলটি স্থাপিত হয়। ৭৫১ জন শ্রমিক নিয়ে ২৫ হাজার টাকু বিশিষ্ট মেশিনটি চালু করা হয়। কিন্তু মাত্র ১৪ বছরের মাথায় ১৯৯৯ সালে ট্রেড ইউনিয়নের দুর্বলতায় দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ৭০ কোটি টাকা লোকসানের দায়ে বিটিএমসি মিলটিকে লে-অফ ঘোষণা করে। একই কারণে ২০০৫ সালে ১০৩ কোটি টাকা ঋণ মাথায় নিয়ে তৃতীয়বারের মতো মিলটি বন্ধ হয়। সর্বশেষ ২০১৬ সালে ১০৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে চতুর্থবারের মতো মিলটি চালু করে নতুন ব্যবস্থাপনা কমিটি। দুই বছরে ২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা লোকসান দেখানো হয়।
বর্তমানে অপরিশোধিত ঋণসহ লোকসানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১১৮ কোটি টাকা। শুধু তাই নয়, কাজ বন্ধ থাকা অবস্থায় বর্তমানে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য সরকারকে প্রতি বছর প্রায় তিন কোটি টাকা গচ্চা দিতে হচ্ছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, এটিকে লাভজনক করতে হলে জাতীয়করণের বিকল্প কিছু নেই।
মাগুরা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ জানায়, মিলটি কোনো সময় লাভের মুখ দেখে নাই। বরং ক্ষতির অংকটা বেড়েছে। এটিকে ব্যক্তিমালিকানায় দিয়ে লাভজনক করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে।
মাগুরা টেক্সটাইল মিলের বর্তমান ব্যবস্থাপক (কারিগরি ) নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান, মিলটি রাষ্ট্রীয়করণ করার উদ্দেশে ২০১০ সালের ১০ জুন ও ২৬ আগস্ট দুইবার দরপত্র আহ্বান করেছে প্রাইভেটাইজেশন কমিশন। কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান দরপত্র না কেনায় এটির কোনো উন্নয়ন হয়নি। বর্তমানে মিলটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তারা আগামীতে মিলটি চালু করার ব্যাপারে সরকারের সঙ্গে কাজ করবে। এটি চালু হলে মাগুরা জেলার এক হাজারের বেশি লোকের কর্মসংস্থান হবে।