পাতায়া বিচের পাশে সেলিম প্রধানের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট, আছে ৯টি প্রতিষ্ঠান
অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের মধ্যে ১৩ কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৬ টাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া থাইল্যান্ডে অনলাইন ক্যাসিনোর হোতা সেলিম প্রধানের ৯টি প্রতিষ্ঠান একটি বাগানবাড়িও ও দুটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে।
অবৈধভাবে অর্থ পাচারের তথ্য প্রমাণ পাওয়ার পর আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সেই অভিযোগ পত্রে সেলিম প্রধানের এসব সম্পত্তির তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে।
সিআইডির এএসপি (মিডিয়া) জিসানুল হক বার্তা২৪.কমকে বলেন, গুলশান থানায় র্যাবের দায়ের করা মামলাটির তদন্ত শুরু করে সিআইডির ফিন্যানশিয়াল ক্রাইম ইউনিট। প্রায় এক বছর তদন্তের পর অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে অবৈধ উপার্জন এবং বিদেশে সেলিম প্রধানের অর্থ পাচারের প্রমাণ পাওয়া যায়। যার ভিত্তিতে সংস্থাটির পক্ষ থেকে সেলিম প্রধানসহ ছয়জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম খান জানান, অনলাইন ক্যাসিনোর মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের মধ্যে ১৩ কোটি ২৮ লাখ ৮৯ হাজার ১৪৬ টাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া থাইল্যান্ডে সেলিম প্রধানের ৯টি প্রতিষ্ঠান একটি বাগানবাড়িও রয়েছে।
এই কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন মো. আক্তারুজ্জামান, মো. রোমান, আরিফুর রহমান ওরফে সীমান্ত আরিফ, চৌধুরী গোলাম মাওলা ওরফে শাওন এবং ইয়াংসিক লি। তাদের সবাইকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়া হয়েছে।
গত বছরের শেষ দিকে র্যাবের ক্যাসিনো বিরোধী অভিযানে গ্রেফতার হন সেলিম প্রধান। দেশত্যাগের আগ মুহূর্তে বিমানবন্দর থেকে গ্রেফতারের পর সেলিম প্রধানকে নিয়ে তার অফিসে অভিযানে যায় র্যাব।
গুলশান-২-এ মমতাজ ভিশনে সেলিম প্রধানের অফিস থেকে নগদ সাত লাখ টাকা, ৭৭ লাখ টাকা সমমানের বিদেশি মুদ্রা ও আট কোটি টাকার চেক উদ্ধার করে র্যাব। এছাড়া সেখানে বিদেশি মদ ও হরিণের চামড়া পাওয়া যায়।
পাচারের উদ্দেশ্যে বিপুল পরিমাণ দেশি-বিদেশি মুদ্রা রাখার অপরাধে সেলিম প্রধানে বিরুদ্ধে একটি মানি লন্ডারিং মামলা করে র্যাব।
গোয়েন্দারা বলছেন, সেলিম প্রধানের আসল পরিচয় নিয়ে ধোঁয়াশা থাকলেও তাকে অনেকেই চেনে থাই ডন হিসেবে। কারণ তার বিপুল অংকের বিনিয়োগ রয়েছে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক ও পাতায়া শহরে। ঢাকার বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী রাজনীতিক থাইল্যান্ডে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছেন। এসব অর্থ পাচারে সহায়তা করেছেন সেলিম প্রধান। এছাড়া আন্তর্জাতিক ক্যাসিনো নেটওয়ার্কের সঙ্গেও তিনি জড়িত।
তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানান, সেলিম প্রধান এক সময় থাইল্যান্ডের ডন হিসেবে পরিচিত ছিলেন। থাইল্যান্ডের পাতায়া বিচ ঘেঁষা পাশাপাশি দুটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট ভবন রয়েছে তার। পাতায়া শহরেও প্রধান স্পা নামে একাধিক বিউটি সেন্টার রয়েছে। এর বাইরে সেলিম প্রধানের জাপানের রাজধানী টোকিওতে বাড়ি রয়েছে। কিন্তু টোকিওতেও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে কালো তালিকাভুক্ত হয় তিনি।