মুমূর্ষু স্বামীকে রক্ত দেওয়ার আশ্বাসে গৃহবধূকে ধর্ষণ
গুরুতর অসুস্থ স্বামীকে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করেন স্ত্রী শারমিন (ছদ্মনাম)। ভর্তির পরই কর্তব্যরত ডাক্তার তার স্বামীর শরীরে রক্ত প্রয়োজন বলে জানান। স্ত্রী ছুটে যান হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকে। ওই সময় সেখানে থাকা কয়েকজনের মধ্যে একজন রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
পরে মিরপুর এলাকার মণিপুর পাড়ার একটি বাসায় নিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন আশ্বাস দেওয়া ওই ব্যক্তি। আর এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেন এক নারী। আটক করা হয়েছে তাদের দুজনকেই।
শনিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বিকালে র্যাব থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।
ঘটনার বিষয়ে র্যাব-২ এর উপ-অধিনায়ক মেজর এইচ এম পারভেজ আরেফিন বলেন, রক্ত জোগাড় করে দেওয়ার কথা বলে ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে চলতি মাসের ১৫ তারিখ। ওই দিন বিকালে শারমিনের (ছদ্মনাম) স্বামী হঠাৎ অসুস্থ হয়ে গেলে তাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগে ভর্তি করেন। পরে দায়িত্বরত ডাক্তার তার স্বামীর জন্য রক্ত প্রয়োজন জানিয়ে জরুরি রক্তের ব্যবস্থা করার পরার্মশ দেন। তখন রক্তের সন্ধানে স্ত্রী হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ব্লাড ব্যাংকের সামনে গিয়ে ৩ থেকে ৪ জনকে দেখতে পান। তাদেরকে তার স্বামীর জন্য ‘ও’ পজিটিভ রক্তের প্রয়োজন জানালে তাদের মধ্যে ধর্ষক মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব রক্তের ব্যবস্থা করে দেওয়ার আশ্বাস দেন। একদিন পরে তিনি নিজেই যোগাযোগ করেন।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব হাসপাতালের ব্লাড ব্যাংক শাখার কেউ না। তিনি নিজেও একজন চিকিৎসা প্রার্থী। তার মা একই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরের দিন ১৬ সেপ্টেম্বর রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে মিরপুরের মধ্য মনিপুর পাড়ায় অবস্থিত শিফা ভিলার ভাড়াটিয়া মাশনু আরা বেগম ওরফে শিল্পীর বাসায় ওই গৃহবধূকে নিয়ে যান মনোয়ার। পরে শিল্পীর সহযোগিতায় মনোয়ার হোসেন ওরফে সজীব ওই গৃহবধূকে ধর্ষণ করেন। এ সময় শান্তা সজিবের হাত থেকে বাঁচতে চিৎকার করেন। তখন তার গলা চেপে ধরে এবং প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেন। পরে গৃহবধূ লোকলজ্জার ভয় ও স্বামীর অসুস্থতার কারণে ধর্ষণের বিষয়টি গোপন রাখেন।
কিন্তু বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কল দিয়ে রক্তের ব্যবস্থা হয়েছে জানিয়ে তার সঙ্গে আবার দেখা করতে বলেন মনোয়ার। তখন গৃহবধূ ফের ধর্ষিত হওয়ার ভয়ে তার স্বামীকে ধর্ষণের বিষয়টি খুলে বলেন। পরে তারা দু’জনে র্যাব-২ এর কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করলে অভিযুক্তদের মিরপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়।