একনেকে ৭৯৬ কোটি টাকার চার প্রকল্প অনুমোদন
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ছয় হাজার ৭৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে ৬২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস থেকে পাওয়া ঋণ সহায়তা বাবদ পাওয়া যাবে ১৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) একনেক চেয়ারপারসন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এবং রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে মন্ত্রী ও সচিবরা একনেক সভায় অংশগ্রহণ করেন।
সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি ৭৯৬ কোটি ৪৫ লাখ টাকা ব্যয় সম্বলিত চারটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন প্রায় ৬২৩ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক উৎস হতে প্রাপ্ত ঋণ ১৭২ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
অনুমোদিত প্রকল্পসমূহের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের “বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ (চট্টগ্রাম- ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌ-পথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ) (১ম সংশোধিত)” প্রকল্প; ভূমি মন্ত্রণালয়ের “মৌজা ও প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং” প্রকল্প এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের দু'টি প্রকল্প যথাক্রমে “ভৈরব নদ পুনঃখনন (২য় পর্যায়) প্রকল্প ও “নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ি উপজেলার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে খাল পুনঃখনন শীর্ষক” প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে তিনটি নতুন প্রকল্প এবং একটি সংশোধিত। সংশোধিত প্রকল্পটি হলো নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয়ের ‘বাংলাদেশ আঞ্চলিক অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন প্রকল্প-১ (চট্টগ্রাম-ঢাকা-আশুগঞ্জ ও সংযুক্ত নৌ-পথ খনন এবং টার্মিনালসহ আনুষঙ্গিক স্থাপনাদি নির্মাণ)’ প্রকল্প। ৩২০০ কোটির চেয়ে ব্যয় বেড়ে এখন প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৩৪৯ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এতে সময়ও বেড়েছে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে শুরু হওয়া প্রকল্পটির সময় দেড় বছর বাড়িয়ে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ভূমি মন্ত্রণালয়ের ‘মৌজা ও প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং’ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ৩৩৭ কোটি ৬০ লাখ টাকা। ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ভৈরব নদ পুনঃখনন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পের খরচ ধরা হয়েছে ২৩৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। চলতি বছরের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ, চাটখিল, সেনবাগ ও সোনাইমুড়ি উপজেলার জলাবদ্ধতা দূরীকরণের লক্ষ্যে খাল পুনঃখনন’ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৭১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। চলতি বছরের অক্টোবর থেকে ২০২৩ সালের জুনের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
একনেক সভায় কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুর রাজ্জাক, তথ্য মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক অংশ নেন।
সভায় মন্ত্রীপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক, পরিকল্পনা কমিশনের সদস্যবৃন্দ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সমূহের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।