প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিন উপলক্ষে ‘পরম্পরা কানন’ উদ্বোধন



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরম্পরা কানন উদ্বোধন

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পরম্পরা কানন উদ্বোধন

  • Font increase
  • Font Decrease

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) কর্তৃক দুই দিনব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উত্তরায় ৭৪টি গাছের চারা রোপণের মাধ্যমে ‘পরম্পরা কানন’ উদ্বোধন করা হয়েছে।

গাছের চারাগুলো উত্তরা সেক্টর ১১ ও ১৩ এর চৌরাস্তা হতে ১২ নম্বর সেক্টরের ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তার মিডিয়ানে লাগানো হয়েছে। ‘পরম্পরা কানন’ এর উদ্বোধন করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। একটি অন্তর্ভূক্তিমূলক শহরের প্রতীক হিসেবে গাছের চারাগুলো বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ রোপণ করেন। মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ওয়ার্ড কাউন্সিলর, মুক্তিযোদ্ধা, ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ এই ৭৪টি গাছের চারা রোপণ করেন।

এ উপলক্ষে সোনারগাঁ জনপথ রোডের জমজম টাওয়ার সংলগ্ন স্থানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, বঙ্গবন্ধু সারাজীবন দেশের জন্য, মানুষের জন্য লাল সবুজের পতাকার জন্য সংগ্রাম করেছেন। তিনি একটি পতাকা দিয়ে গেছেন, স্বাধীন রাষ্ট্র দিয়ে গেছেন। আমরা যদি তাকে ভালোবাসি তাহলে রাস্তা, ফুটপাতের ওপর যেখানে সেখানে গাড়ি পার্ক করতাম না; ফুটপাতে নির্মাণসামগ্রী রাখতাম না; অবৈধভাবে দখল করতাম না।

তিনি আরও বলেন, আমার ক্ষমতা আছে, আমার টাকা আছে, আমি রাস্তার মধ্যে ফুটপাতের মধ্যে রড সিমেন্ট রেখে দিব। আমি রাজনৈতিক দলের ছবি ব্যবহার করে এ সকল অবৈধ কাজ করবো, এগুলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন পছন্দ করেন না, জাতির জনক বঙ্গবন্ধুও পছন্দ করতেন না। তাই আসুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে প্রতিজ্ঞা করি, বঙ্গবন্ধুর এই বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় অবৈধভাবে কেউ কিছু করবো না। জনপ্রতিনিধি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী আমাদের সাথে থাকলে দখলদাররা কিছুই করতে পারবে না। কারণ রাষ্ট্রের চেয়ে শক্তিশালী আর কিছু হতে পারে না।

পরম্পরা ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি সম্পর্কে আতিকুল ইসলাম বলেন, বাঙালি জাতি-রাষ্ট্রের জন্ম ও বিকাশের ইতিহাস বঙ্গবন্ধু ও শেখ হাসিনার ইতিহাস। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে এ জাতি-রাষ্ট্রের জন্ম। তার স্বপ্ন ছিল সোনার বাংলা গড়ার। শেখ হাসিনার হাতে এর উন্নয়ন ও বিকাশ। সোনার বাংলা অর্জনে আমরা অনেক কিছুতেই সফল। বঙ্গবন্ধু থেকে শেখ হাসিনা, এই পরম্পরাই বাঙালি জাতির পরম্পরা। মুক্তিযুদ্ধ থেকে উন্নয়নের পরম্পরা। আমাদের নতুন প্রজন্মকে এই পরম্পরা জানতে হবে। এ লক্ষ্যে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আয়োজন ‘পড়ি পরম্পরা, জানি নেতৃত্ব’। এই পরম্পরার মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা সম্পর্কে বর্তমান প্রজন্মকে জানানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ দুইটি গ্রন্থাগারের মাধ্যমে স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবার এবং শেখ হাসিনা সম্পর্কে প্রকাশিত বই ডিএনসিসির প্রতিটি ওয়ার্ডের ঘরে-ঘরে পৌঁছে দেওয়া হবে।

‘পরম্পরা কানন’ নিয়ে মেয়র বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিন উপলক্ষে আজ আমরা এখানে ৭৪টি গাছের চারা লাগাচ্ছি। এই চারাগুলো লাগাচ্ছেন ডিএনসিসির ৫৪ জন ওয়ার্ড কাউন্সিলর এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ৭৪তম জন্মদিনটিকে তাৎপর্যময় করে রাখতে এই ‘পরম্পরা কানন’। এতে একদিকে সবুজ ঢাকা গড়ার প্রত্যয় যেমন আছে, অন্যদিকে সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে নিয়ে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ‘সবাই মিলে সবার ঢাকা’ গড়ার অঙ্গীকারও বটে।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিশ্বের যে প্রান্তেই গিয়েছি সেখানে আমাকে মানুষ অবাক বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করে, তোমাদের নেতা শেখ হাসিনা এত দ্রুত কিভাবে দেশকে পাল্টে দিলেন? এর চাবিকাঠি কী? কীভাবে এত দ্রুত উন্নয়ন করলেন? আমি একটি কথাই বলেছি, তিনি বঙ্গবন্ধুর কন্যা, জাতির জনকের রক্ত তার ধমনীতে প্রবাহিত। তিনি দেশকে ভালোবাসেন, জনগণকে ভালোবাসেন, এদেশের মাটি ও মানুষকে তিনি ভালোবাসেন। তাদেরকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তিনি স্বপ্ন দেখেন এবং তা বাস্তবায়ন করেন। বাংলাদেশের মানুষ এজন্য তাকে চারবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত করেছেন।

মন্ত্রী আরও বলেন, ১৯৮১ সালে তিনি যখন এলেন, বাংলাদেশ জেগে উঠলো। মানুষ বলে শেখের বেটি এসেছে। বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। তিনি বাংলার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে চষে বেড়িয়েছেন। যেখানে গিয়েছেন সেখানেই বঙ্গবন্ধু কন্যাকে জনগণ বুকে আঁকড়ে ধরেছে, তাকে এগিয়ে নিয়েছে, তার সাথে থাকবেন বলে উৎসাহ দিয়েছে।

শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার বলেন, একদিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠনে বঙ্গবন্ধু যখন কাজ করছেন, অন্যদিকে যুদ্ধাপরাধীরা দেশকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছিল, স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করার জন্য তারা কাজ করেছে। বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশ থমকে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে নিয়ে মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আজ বিশ্বনেত্রী, বিশ্বের নির্যাতিত-নিপীড়িত মানুষের নেত্রী। তিনি বিশ্ব মানবতার মা, বিশ্ব মানবতার নেত্রী। সারাবিশ্ব আজ তার নেতৃত্বের প্রতি অবাক হয়ে আছে, বাংলাদেশের মতো একটি দরিদ্র দেশ তার নেতৃত্বে কীভাবে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে পুলিশের মহাপরিদর্শক বেনজীর আহমেদ, ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সেলিম রেজা, র‌্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, সংসদ সদস্য শবনম জাহান শিলা, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার শফিকুল ইসলাম, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান, এফবিসিসিআই সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, ওয়ার্ড কাউন্সিলর শরিফুর রহমান বক্তব্য রাখেন।

   

দুই জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজার এবং সিলেটে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দর সমূহের জন্য দেয়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এ তথ্য জানা গেছে।

এতে বলা হয়, কক্সবাজার এবং সিলেট অঞ্চলসমূহের উপর দিয়ে পশ্চিম অথবা উত্তরপশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এদিকে বুধবার (১ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগের দু’এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। এছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

;

পটুয়াখালীতে বালিচাপা দেওয়া অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার 



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

পটুয়াখালীতে বালির স্তুপ থেকে এক ৪০ বছর বয়সী অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার (১ মে) রাত ৭ টায় সদর উপজেলার শিয়ালি এস এস ফিলিং স্টেশনের পাশে বালির স্তুপ থেকে ওই অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

স্থানীয়রা জানান, বুধবার বিকেলে দোকান খোলার পরে পচা দূর গন্ধে বসা যাচ্ছিলো না। পরে চৌকিদারকে কল দিলে চৌকিদার খোঁজ করতে করতে বালির স্তুপের ভিতরে থেকে একটি হাত দেখতে পায়। পরে পুলিশে খবর দিলে পুলিশ এসে এক অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। 

পটুয়াখালী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোহাম্মদ সাজেদুল ইসলাম সজল বলেন, বালির স্তুপ সরিয়ে অজ্ঞাত এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতের পরিচয় শনাক্তে কাজ চলছে। ধারণা করা হচ্ছে দুই দিন আগে ওই ব্যক্তিকে হত্যা করে বালিচাপা দেওয়া হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে হত্যাকারীদের আইনের আওতায় আনা হবে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।

;

শুধু মে দিবসই নয়, ঈদেও ছুটি মেলে না চাতাল শ্রমিকদের



আল মামুন, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মহান মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস কি জানে না জেলার চাতাল শ্রমিকরা। মে দিবসে সরকারিভাবে বন্ধ থাকলেও কাজ চালিয়ে যেতে হয় তাদের। জীবনের সাথে যুদ্ধ ও হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে কোনোরকমে বেঁচে আছেন তারা। চাতাল শ্রমিকরা দিন রাত বৃষ্টিতে ভিজে, রোদে পুড়ে ধান থেকে চাল উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের কোটি কোটি মানুষের চালের দাহিদার যোগান দেন। সেই চাতালের নারী ও পুরুষ শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত হয়ে আসছেন। শুধু মে দিবসই নয় ঈদেও মেলেনা ছুটি।

সরেজমিনে জেলার চাতাল কলগুলোতে গিয়ে জানা যায়, ১৯৮০ সালের প্রথম দিকে জেলার আশুগঞ্জে চাতাল কলের গোড়াপত্তন শুরু হয়। ধীরে ধীরে সড়কপথ, রেলপথ ও নৌপথে যোগাযোগ সহজ ও অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার কারণে এখানে এ শিল্পের দ্রুত প্রসার ঘটে। এছাড়াও এখানে দেশের অন্যতম বৃহত্তম আশুগঞ্জ তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র ও গ্যাসের সহজলভ্যতার কারনে চাতাল কল স্থাপন দিনে দিনে বৃদ্ধি পেতে থাকে।

দেশের পূর্বাঞ্চলীয় বৃহত্তর ধান ও চাউলের মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় রয়েছে প্রায় ৩’শতাধিক চাতালকল। আর এখানে নিয়োজিত আছে প্রায় ১০ সহস্রাধিক নারী ও পুরুষ শ্রমিক। যারা দিনে রাতে কাজ করছেন ধান থেকে চাল উৎপাদন কাজে। এ চাতাল কলগুলো থেকে প্রতিদিন ৩০/৩৫ হাজার টন চাল দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হচ্ছে। আর এই চাতাল কলগুলোতে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাউল বস্তাবন্দী করা পর্যন্ত সকল কাজ করতে হয় নারী ও পুরুষ শ্রমিকদের। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, সুনামগঞ্জ, বরিশাল, সাতক্ষীরা, নওগাঁ ও ময়মনসিংহ সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায়। আন্তর্জাতিক শ্রম দিবস বা মে দিবস কি তারা জানেন না। এই দিনে সরকারিভাবে ছুটির কথা থাকলেও কাজ করতে হয় চাতাল শ্রমিকদের।

শ্রমিকরা তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে যুগের পর যুগ বঞ্চিত হয়ে আসছেন

ভাই ভাই অটো রাইস মিলের শ্রমিক কালা মিয়া বলেন, প্রায় ৮ বছর যাবত চাতাল মিলে কাজ করে যাচ্ছি। এখন পর্যন্ত কোনদিন মে দিবসের ছুটি আমাদের মালিকরা দেন নাই। সরকারিভাবেও এমন নির্দেশনা আছে কিনা আমার জানা নাই।

খান মোহাম্মদ অটো রাইস মিলের চাতাল শ্রমিক মো. হানিফ মিয়া বলেন, মে দিবস বা আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসের কথা কখনো শুনি নাই। এই দিনে আমরা কখনও কোনদিন কাজ বন্ধ রাখি নাই। কাজ না করলেতো পেটে খাবার মিলবে না। তাই কাজ করে যাই; ছুটির চিন্তা করি না।

চাতাল কন্যা মরিয়ম বেগম আক্ষেপ করে বলেন, মানুষের ঘুরাঘুড়ি করার অনেক ইচ্ছা থাকে। তারা তা করতেও পারে। আমাদেরও ইচ্ছা করে অন্য মানুষদের মত বিভিন্ন উৎসবে একটু বেড়ানোর। কিন্তু আমাদের দ্বারা তা আর সম্ভব হয় না।

আরেক চাতাল কন্যা রুমা বেগম  বার্তা২৪.কমকে বলেন, মানুষ যখন বিভিন্ন দিবসে ঘোরাঘুড়ি করে তখন আমার অনেক খারাপ লাগে। কারন প্রায় ৭ বছর যাবত আমি কাজের কারনে স্বশুর বাড়িতে যেতে পারি না। কোন ভাবেই কয়েকটা দিন বন্ধ করতে পারি না। ছুটি চাইলেও আমাদের ছুটি দেওয়া হয়না। আর আমাদের বেতন হয় উৎপাদন অনুযায়ী। তাই ইচ্ছা করলেই পেটের খাবার জোগার করার কথা চিন্তা করে যেতে পারি না।

এদিকে ভাই ভাই অটো রাইস মিলের মো. অলিউল্লাহ বার্তা২৪.কমকে বলেন, আসলে মালিকের সাথে চুক্তি অনুযায়ী ও উৎপাদন অনুসারে তাদের কাজ হয়। তাই বন্ধ করা না করা এটা তাদের ব্যাপার। আর চাতাল শ্রমিকরা অনেককেই শিক্ষিত নয়। তাই তারা মে দিবস সম্পর্কে তেমন কিছু জানেন না। তবে তারা যদি এই দিন কাজ না করতে চান এই ক্ষেত্রে মালিকের পক্ষ থেকে কোন বাধা নিষেধ নেই।

বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ এর আশুগঞ্জ শাখার সাধারণ সম্পাদক তানশেন আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, অনেক চেষ্টা করেছি মালিক ও শ্রমিকদের বুঝানোর জন্য। রাইস মিল মালিক ও সরদারের জন্য আমরা পারি না। শ্রমিকদের সাথে কথা বলেছি কিন্তু সরদার এই জিনিসটা তারা বুঝাতে দেয় না। মালিকরা তাদের দিয়ে কাজ করায়।

কাজ করে যান; ছুটির চিন্তা করেন না

বিভিন্ন সময়ে এসব দাবি নিয়ে আমরা মালিকেদের সাথে আলোচনা করলেও এখন পর্যন্ত কোনো দাবিই তারা মানেনি। তাই মে দিবসে সরকারি বন্ধ পালনসহ চাতাল শ্রমিকদের নূন্যতম মাসিক মজুরি প্রদানের জন্য চাতাল মালিকদের সমন্বয়ে একটি নীতিমালা প্রণয়নের আহ্বান জানাচ্ছি।

জেলা রাইস মিল মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠান থাকলেও এ অবহেলিত ও বঞ্চিত শ্রমিকদের পাশে তাদের কাউকেই দেখা যায়নি। জেলার রাইস মিল গুলোতে শ্রমিক দিবসে কোন বন্ধ থাকে না। সরকারিভাবে কোন উদ্যোগ নিলে আমরা সেভাবে ব্যবস্থা নেব। অবশ্যই এই দিনে শ্রমিকদের বন্ধ থাকা দরকার।

এই বিষয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান বার্তা২৪.কমকে বলেন, জেলার চাতালকলগুলোতে শ্রমিকদের মে দিবসে কোন বন্ধ থাকে না বিষয়টি আমার জানা নাই। যেহেতু জেনেছি তাদের যেন মে দিবসে কাজ বন্ধ থাকে সেই বিষয়ে চাতাল মালিকদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

;

হাসপাতালের এক্সরে মেশিন নষ্ট, ভোগান্তিতে রোগীরা



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নীলফামারী 
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর সৈয়দপুরের ১০০ শস্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতালে হাত এক্সরে করাতে এসে মমতা বেগম শুনেন, সরকারি হাসপাতালে এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়ে গেছে। বাইরের হাসপাতালে এক্সরে করাতে বেশি টাকা লাগে যা বহন করা কষ্টসাধ্য।

হাসপাতালটিতে এক্সরে মেশিন টানা ২০ দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় সেবা-বঞ্চিত হচ্ছেন কয়েকশত মানুষ৷ বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত ফি দিয়ে প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এক্সরে করছেন রোগীরা। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রোগী ও স্বজনদের।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন শহর ছাড়াও জেলার বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রায় ২০০ মানুষ চিকিৎসা নিতে আসেন এ হাসপাতালে। একদিনে দুর্ঘটনাসহ হাত-পা ভাঙা নিয়ে চিকিৎসা করাতে আসেন গড়ে ২০-২৫ জন। গত ১৬ এপ্রিল হঠাৎ এক্সরে মেশিনের ইউপিএস নষ্ট হওয়ার কারণে অচল হয়ে যায়। এখন পর্যন্ত মেশিনটি অচল হয়ে আছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এক্সরে করতে আসা রোগীরা মেশিন নষ্ট হওয়ায় ফেরত যাচ্ছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ রুমের দরজায় একটি চিরকুটে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে সাময়িক সময়ের জন্য এক্সরে বন্ধ আছে লিখে রেখেছেন। বিশেষ করে দূর থেকে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।  

চিকিৎসা নিতে আসা রোগী হালিম বলেন, আমার ছোট বাচ্চা অসুস্থ। বাসায় খেলার সময়ে পড়ে গিয়েছিলো খুব কান্নাকাটি করছে। হাসপাতালে ডাক্তারের পরামর্শে এক্সরে করাতে আসলাম  এসে শুনি মেশিন নষ্ট এখন বাইরে বেশি টাকা দিয়ে এক্সরে করাতে হবে। 

আরেক রোগী জিয়ারুল হক বলেন, এখানে এক্সরে করতে আসলাম এসে শুনি মেশিন নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। পরশুদিন এসেও আমি ঘুরে গেছি; আজকেও মেশিন ঠিক হয়নি ৷ এখানে করলে আমারা সুবিধা পাই। বাইরে করাতে গেলে বেশি টাকাও লাগে কষ্টও হয়।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর ১০০ শস্যা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার নাজমুল হুদা বলেন, এক্সরে মেশিন নষ্ট হয়েছে। আমরা এটি দ্রুত চালু করার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। 

;