নেত্রকোনায় গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা, দেবর আহত
নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলা সদরের পশ্চিমপাড়া গ্রামে লিপি আক্তার (৩৫) নামের এক গৃহবধূকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ সময় আহত হন লিপি আক্তারের চাচাতো দেবর রাসেল মিয়া (৩০) নামের এক যুবকও।
রোববার (৪ অক্টোবর) ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত লিপি আক্তার পূর্বধলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের জালাল উদ্দিনের ছেলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্য আজিজুল ইসলামের স্ত্রী। আজিজুল বর্তমানে পঞ্চগড়ে বিজিবিতে কর্মরত রয়েছেন।
আহত রাসেল মিয়া একই বাড়ির আলাল উদ্দিনের ছেলে ও লিপি আক্তারের স্বামীর চাচাতো ভাই।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, লিপি আক্তার তার ১২ বছর বয়সের ছেলে আলিফকে নিয়ে ঘটনার দিন রাতে নিজ বসতঘরের একপাশে ও লিপির দেবর সিরাজুল ইসলাম তার স্ত্রীকে নিয়ে একই ঘরের অন্য পাশে ঘুমাচ্ছিলেন।
দেবর সিরাজুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ ঘরে গোঙানির শব্দ শুনে তারা জেগে দেখেন ঘরের মেঝেতে লিপি ও রাসেল গলা কাটা অবস্থায় পড়ে আছে। তখন তাদের ডাক চিৎকারে বাড়ির লোকজন এসে আহত দুইজনকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক লিপিকে মৃত ঘোষণা করেন এবং রাসেলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।
বিষয়টি নিয়ে কথা হলে লিপির শ্বশুর জালাল উদ্দিন জানান, তার ছেলে আজিজুল প্রায় ১৫ বছর আগে বিজিবিতে যোগদান করেন। এর কিছুদিন পর উপজেলার জারিয়া গ্রামের লিপিকে বিয়ে করেন। তাদের দাম্পত্য জীবন ভালো চললেও গত ৩/৪ বছর ধরে লিপির সঙ্গে রাসেলের পরকীয়ার সম্পর্কের কথা শোনা যাচ্ছিল। এক সপ্তাহ আগে তার ছেলে আজিজুল ছুটিতে বাড়িতে এসে এ নিয়ে পারিবারিকভাবে দেন দরবার করে কর্মস্থলে ফিরে যায়।
এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জুয়েল পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোরশেদা খাতুন, পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান, পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রফিকুল ইসলাম ও ময়মনসিংহ থেকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ক্রামই সিন ইউনিটের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে দুপুরে কথা হলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোরশেদা খাতুন জানান, ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি (কাগজ কাটার এন্টিকাটার) উদ্ধার করা হয়েছে। এখনও ঘটনার প্রকৃত কারণ বলা যাচ্ছে না। তদন্ত চলছে।