মূল সার্ভারকে পাশ কাটিয়ে এনআইডি জালিয়াতির চেষ্টা: ডিজি

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

মূল সার্ভারকে পাশ কাটিয়ে এনআইডি জালিয়াতির চেষ্টা: ডিজি

মূল সার্ভারকে পাশ কাটিয়ে এনআইডি জালিয়াতির চেষ্টা: ডিজি

মূল সার্ভারকে পাশ কাটিয়ে জালিয়াতকারীরা এনআইডি জালিয়াতির চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন (এনআইডি) অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো: সাইদুল ইসলাম।

তিনি বলেছেন, "মূল সার্ভারে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। মূল সার্ভারের আগে প্রাইমারি সার্ভার, লেয়ার ওয়াইজে এটা করতে হয়। সুতরাং মূল সার্ভার সুরক্ষিত। জালিয়াতি করে যে এনআইডি করছে সেটি কিন্তু মূল সার্ভার থেকে নয়। তারা যেহেতু টেকনিক্যালি সাউন্ড, তারা মূল সার্ভারকে পাশ কাটিয়ে এই জালিয়াতির চেষ্টা করছে।"

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৩ অক্টোবর) দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে তিনি সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, "কুষ্টিয়ার কেইসটি দেখলে বিষয়টি ক্লিয়ার হওয়া যাবে, সাবরিনার কেইসটি। যেখানে ২০০৯ এবং ২০১৫ সালের ফিঙ্গার প্রিন্ট, সফটওয়ার দুই রকম। সেগুলো নিয়ে অ্যানালাইসিস করছি, কারা এটি করেছিলো, কারা ফিঙ্গারপ্রিন্ট নিয়েছিলো। ফিঙ্গার প্রিন্ট উদ্দেশ্যমূলকভাবে নিয়েছিলো কিনা। সবকিছু নিখুঁতভাবে বের করার চেষ্টা করছি।"

বিজ্ঞাপন

এনআইডির ডিজি বলেন, এনআইডি নিয়ে কোন অন্যায়কে প্রশ্রয় দেইনি দেবো না। আমরা সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করেছি। ঢাকার ১৫টি অফিসে অভিযান চালিয়েছি। যারা অপরাধের সাথে জড়িত তাদের শনাক্ত করেছি, এবং তদন্ত কমিটি করেছি। তবে যারা অপরাধ করেনি তারা যাতে কোন সমস্যায় না পড়ে সেটিও দেখছি। আমরা লালমনিরহাটে এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় অভিযান চালিয়ে ২ জনের অনিয়মের সাথে জড়িত থাকার তথ্য পাই। এ নিয়ে ৫ সদস্যের গঠিত কমিটি যাচাই বাছাই করে তাদের দোষী সাব্যস্ত করে। তাদের বিরুদ্ধে ১৬,১৭,১৮ ধারা অনুযায়ী মামলা হয়েছে। থানা নির্বাচন অফিসারকে নির্দেশ অনুযায়ী তারা মামলা করেছে। তাদের উকিল নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছি, সেখানে উকিল নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যাতে দোষীরা শাস্তি পায় সেজন্য সব ব্যবস্থা নিয়েছি।

তিনি জানান, ২০১৩ সাল থেকে ৩৯ জন কর্মকর্তা কর্মচারীকে অনিয়মের অভিযোগে চাকরিচ্যুত করেছি। যারা প্রকল্পের কর্মকর্তা তাদের কোন অনিয়ম পেলে প্রথম চাকরিচ্যুত করতাম, কিন্তু  দেখা গোছে তারা অনেকে এসব কাজে এক্সপার্ট। তারা বাইরে চক্র করে অনিয়ম করার অপচেষ্টা চালায়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যদি কোন কর্মকর্তা অনিয়মে জড়িত হয় তাহলে শুধু চাকরিচ্যুত নয় মামলাও করব। যদি এনআইডি জালিয়াতিতে জড়িত থাকলে কঠোর শাস্তি দেয়া হবে।

সার্ভারে অনেকের দুটি এনআইডি সচল থাকছে। ১২ বছর হয়ে গেল ইসির সার্ভারের বয়স। এত বছরেও কেন সার্ভারটি ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব হলো না? এমন প্রশ্নের জবাবে এনআইডির ডিজি বলেন, ’১১ কোটি লোকের সার্ভার এটা। আমরা গতবার যখন হালনাগাদ পরিচালনা করি, তখন কিন্তু আমরাই বের করেছি ২ লাখ ৭ হাজার ৬৩৫ জন ব্যক্তি যারা দ্বৈত ভোটার হতে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য চেষ্টা করেছিল। সুতরাং আমরা যে পারছি না, তা নয়। তবে একটি জিনিসকে ম্যাচুর্ড পর্যায়ে আসতে সময় ও রিসোর্স প্রয়োজন।
 
তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় এনআইডির জালিয়াতি, আমি বলবো একটা পুরো সিস্টেম, যারা এর সাথে জড়িত, তাদের জালিয়াতি। এনআইডি পর্যন্ত আসার আগেই যে জালিয়াতি হচ্ছে, সেগুলোও তো রোধ করতে হবে। মূল শেকড় যদি উঠাতে না পারি, তাহলে কিন্তু এই জালিয়াতি ঠেকানো অত্যন্ত কঠিন। মূল শেকড়টা কারা সেটা তো আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারছেন। প্রথম প্রশ্ন, জন্ম নিবন্ধন কে দিচ্ছেন? জন্ম নিবন্ধন যদি দেয়, অনলাইনে যদি আমরা নিবন্ধন সঠিক পাই, তাহলে কিন্তু আইনগতভাবে আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বাধ্য। যদি জন্ম নিবন্ধন সঠিক পাই, যদি নাগরিকত্ব সঠিক পাই, যদি শিক্ষাগত যোগ্যতা সঠিক পাই, যদি ওয়ারিশন সনদ সঠিক পাই – এসব সঠিক পেলে এনআইডি উইংয়ের পক্ষে এনআইডি না দেয়া কঠিন আইনগতভাবে।
 
এটা একটা সমন্বিত প্রায়স। এটা শুধু নির্বাচন কমিশন ও এনআইডি উইংয়ের একার পক্ষে এ ধরনের দুর্নীতি রোধ করা অত্যন্ত কঠিন। এজন্য আমরা পরিকল্পনা করছি এ মাসের শেষের দিকে স্থানীয় সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ এনআইডি কার্যক্রমের সাথে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। সেখানে বিষয়গুলো তুলে ধরবো আমরা। যাতে করে এনআইডি কর্তৃপক্ষের কাছে আসার আগেই বিষয়গুলো ধরা পড়ে যায় বা জন্ম নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার জালিয়াতি না করতে পারে।