যশোরে কাঠ ব্যবসায়ী মোস্তফা খুনের রহস্য উদঘাটন

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, যশোর
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

যশোরের চুড়ামনকাটি এলাকার কাঠ ব্যবসায়ী গোলাম মোস্তফা (৫৫) খুনের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সুদের টাকার জালে আটকে পড়ার ক্ষোভ ও কাঠের ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য গোলাম মোস্তফাকে হত্যার পরিকল্পনা করে আবদুল্লাহ আল মামুন।

বাস চালক বন্ধুর সহায়তায় মোবাইল ফোনে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয় মোস্তফাকে। এরপর মাদক সেবন করিয়ে নদের পড়ে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করা হয়। বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি করে প্রেস ব্রিফিং এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন। এই ঘটনায় দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

গত ২৫ অক্টোবর সকালে যশোর সদর উপজেলার কাশিমপুর ইউনিয়নের ঘোনা গ্রামের ভৈরব নদ থেকে গোলাম মোস্তফার ভাসমান মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে মামলা করেন নিহতের স্ত্রী সালমা বেগম। বুধবার ডিবি পুলিশ দুইজনকে গ্রেফতার করে। তারা হলেন- সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি গ্রামের আবদুর রহমানের ছেলে আব্দুল্লাহ আল মামুন (৩৩) ও সদর উপজেলার শাখারীগাতি গ্রামের মাজেদ মোল্যার ছেলে সহিদুল ইসলাম (৩৭)।

প্রেস বিফ্রিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, নিহত গোলাম মোস্তফা পেশায় একজন কাঠ ব্যবসায়ী। ব্যবসার পাশাপাশি এলাকায় তিনি সুদের কারবারও করতেন। একই এলাকার বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুনও কাঠ ব্যবসায়ী। তবে তিনি আর্থিকভাবে সচ্ছল ছিলেন না। তাই কয়েক বছর আগে গোলাম মোস্তফার কাছ থেকে দুই লাখ ৪৩ হাজার টাকা সুদে ধার নেন। সেই টাকা বিভিন্ন সময়ে পরিশোধ করেছেন। কিন্তু গোলাম মোস্তফা সুদের দাবি করে আসায় ঋণের জাল থেকে বের হত পারছিল না আব্দুল্লাহ আল মামুন। একই সাথে গোলাম মোস্তফা এলাকায় বড় কাঠ ব্যবসায়ী ছিলেন। এজন্য তার ব্যবসাও ভাল যাচ্ছিলো না। সুদের টাকার ক্ষোভ আর ব্যবসায় আধিপত্য বিস্তার করার জন্য গোলাম মোস্তফাকে হত্যার পরিকল্পনা করে মামুন।

বিজ্ঞাপন

গত ২৪ অক্টোবর শহরের মণিহার এলাকায় গিয়ে বাস চালক বন্ধু সহিদুলের সাথে দেখা করে মামুন। সহিদুলকে ক্রেতা সাজিয়ে চুড়ামনকাটি বাজারে আনে। তার কথামত গোলাম মোস্তফা চলে আসা। এরপর তিনজন সলুয়া বাজারে গিয়ে ফেনসিডিল পান করেন। সেখান থেকে ফিরে চুড়ামনকাটি বাজার থেকে গাঁজা কিনে সন্ধ্যার দিকে ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে তারা গাঁজা সেবন করেন। এক পর্যায়ে মামুন ছুরি বের করে মারতে উদ্যত হলে তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। ভৈরব নদের পাড়ে পড়ে যান গোলাম মোস্তফা। এ সময় সহিদুল তাকে চেপে ধরে, আর মামুন গলায় ছুরি চালিয়ে হত্যা করে।

পুলিশ সুপার আরো বলেন, হত্যাকাণ্ডে দুইজন জড়িত ছিল। তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমের মোবাইল ফোন, হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বার্মিজ চাকু, মোটরসাইকেল ও জড়িতদের দুটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। তাদেরকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সালাউদ্দিন শিকদার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গোলাম রব্বানী শেখ, ডিবি ওসি সোমেন দাস প্রমুখ।