আমার মতো ভুল যেন কেউ না করে!
অভাবের সংসারে উচ্চ মাধ্যমিকের গণ্ডি পেরোতে পারিনি। পরিবারের ইচ্ছের বিরুদ্ধে নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করি। অল্প কিছুদিন সুখের সংসারও হয়। এরপর স্বামীর চাহিদা মোতাবেক টাকা (যৌতুক) দিতে না পারায় গর্ভবতী থাকা অবস্থায় স্বামী চলে যায়।
পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি আমার আগেও আরও এক স্ত্রী ও ছেলে-মেয়ে রয়েছে স্বামীর বিয়ে করা আগের ঘরে। এখন আট মাসের কন্যা সন্তান নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। বাবা-মায়ের সংসারে বোঁঝা হয়ে কোন রকমে বেঁচে আছি। আমার মতো আর কোন মেয়ে যেন এমন ভুল আর কেউ না করে বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন নাছিমা আক্তার (২৫) নামের এক নারী।
রোববার বিকেলে মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবে আলাপ হলে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গড়পাড়া ইউনিয়নের পাঞ্জনখাড়া গ্রামের চা বিক্রেতা আলাল উদ্দিনের মেয়ে নাছিমা আক্তার এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি বলেন, পাঁচ বছর আগে মানিকগঞ্জ শহরে আলাপ হয় একই জেলার দৌলতপুর উপজেলার জামিরকান্দি এলাকার শুকুর আলীর ছেলে মো. আজিমের সাথে। এরপর প্রেম-ভালোবাসার এক পর্যায়ে ৫ লাখ টাকা দেনমহরে আজিমের সাথে বিয়ে হয় তার।
বিষয়টি প্রথমে পরিবারের লোকজন মেনে না নিলেও পরে স্বামীসহ তাকে মেনে নেয় তার পরিবার। সুখে-শান্তিতে কেটে যায় প্রায় দু’বছর। এরপর ব্যবসার উদ্দেশ্যে ৫ লাখ টাকা দাবি করে আজিম। চাহিদা মোতাবেক টাকা দিতে না পারায় সংসারে নেমে আসে অশান্তি। এভাবেই কেটে যায় আরও দু’বছর।
নাছিমা-আজিমের সংসারে আগমন হয় নতুন অতিথির। জন্মগ্রহণ করে এক কন্যা সন্তান। তবে আজিম পূর্বের সিদ্ধান্তে অনড় অবস্থানে থাকে। শুরু হয় বিবাদ। এসব বিষয়ে কোর্টে মামলাও চলমান। স্বামী না থাকায় আট মাসের শিশুকে নিয়ে অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে নাছিমা।
এসব বিষয়ে নাছিমা আরও বলেন, বিয়ের পর প্রায় দু’বছর বেশ সুখে-শান্তিতেই ছিলেন তিনি। পরে যৌতুকের টাকা দিতে অপারগ হওয়ায় শুরু হয় মারধর, নির্যাতন। দীর্ঘদিন স্বামী বাড়ি না যাওয়ায় খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে (আজিম) আগেও আরেকটি বিয়ে করেছেন। সেখানেও ছেলে-মেয়ে রয়েছে।
এমনকি তার সাথে সংসার বিচ্ছিন হয়ে যাওয়ার পর আগের স্ত্রী-সন্তান এবং তাকে (নাছিমা) ও তার সন্তান রেখে আরেকটি বিয়ে করে আজিম। এভাবে কিছু দিন পর পর বিয়ে করাই তার (আজিমের) স্বভাব। দীর্ঘদিন ধরে কোর্টে মামলা চলমান রয়েছে। আট মাসের কন্যা শিশুকে নিয়ে নিজের ভুলের মাসুল গুনতে হচ্ছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, তার মতো আর কোন মেয়ে যেন এমন ভুল না করে।
এসব বিষয়ে জানতে আজিমের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।