বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে অনেক আগেই দেশ উন্নত হতো: প্রধানমন্ত্রী



সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

  • Font increase
  • Font Decrease

জাতীয় সংসদে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কর্মময় ও বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর আলোচনার জন্য সাধারণ প্রস্তাব উত্থাপনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। তিনি বেঁচে থাকলে অনেক আগেই উন্নত দেশে পরিণত হতো বাংলাদেশ।

সোমবার (৯ নভেম্বর) সন্ধ্যায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে শুরু হওয়া সংসদ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার পর জাতীয় সংসদের কার্যপ্রণালী-বিধির ১৪৭ বিধির আওতায় এই প্রস্তাব উত্থাপন করেন শেখ হাসিনা। এরপর ওই প্রস্তাবের ওপর সাধারণ আলোচনা শুরু হয়। আলোচনায় অংশ নেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সাবেক চিফ হুইপ আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহ প্রমুখ।

প্রস্তাব উত্থাপনের আগে প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, একটি জাতিকে আত্মপরিচয় দেওয়া এটি কঠিন কাজ। বঙ্গবন্ধু সেটা করেছেন। আর এটা করতে গিয়ে তাকে অত্যাচার নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। পাকিস্তান সৃষ্টির পেছনে পাকিস্তানিদের কি অবদান ছিল জানি না। তবে পূর্ববঙ্গের মানুষের বড় অবদান ছিলো। কিন্তু সেই পাকিস্তান সৃষ্টির পর পূর্ববঙ্গের মানুষের ওপরই নির্যাতন নেমে আসে। বঙ্গবন্ধু তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নামেন। জাতির পিতা সব সময় মানুষের জন্য চিন্তা করতেন। পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার ৭/৮ মাসের মধ্যে বঙ্গবন্ধুকে তিনবার গ্রেফতার করা হয়। তিনি অল্প সময়ের মধ্যে ৬ দফা দিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ৬ দফার সমর্থনে যেখানেই বক্তব্য দিতে গেছেন সেখানেই তিনি গ্রেফতার হয়েছেন।

প্রধনমন্ত্রী বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ নিয়েই বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে চাই। দুর্ভাগ্য আমাদের ৭৫ এর ১৫ আগস্ট যদি না ঘটতো তাহলে বহু আগেই বাংলাদেশ উন্নত দেশে পরিণত হতো। এক সময় ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নামও মুছে ফেলা হয়েছিলো। এতো কষ্ট করে যিনি স্বাধীনতা এনে দিলেন। সেই স্বাধীন দেশটা যখন তিনি গড়ে তুলছিলেন তখনই তাকে হত্যা করা হয়।

আবেগ আপ্লুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, পাকিস্তানের কারাগারে তাকে এতো নির্যাতন করা হতো সেটা তিনি আমাদের বলেননি। আমার ছোট বোন রেহানা প্রায়ই জিজ্ঞাসা করতো, তিনি বলতেন তুই সহ্য করতে পারবি না, জানার দরকার নেই। বঙ্গবন্ধুকে শুধু রাষ্ট্রপতি হিসেবে হত্যা করা হয়নি, পরিবারের সব সদস্যকে হতাা করা হয়। আমার ছোট ভাইটিও রেহাই পায়নি। আমরা বিদেশে ছিলাম তাই বেঁচে গিয়েছিলাম।

সংসদে উত্থাপিত লিখিত প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদের অভিমত এই যে, ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা ও স্থপতি, বাঙালির অবিসংবাদিত মহান নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি জাতির অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জনে তিনি সারা জীবন সংগ্রাম করেছেন। জেল-জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন সহ্য করেছেন। কিন্ত অন্যায়ের সঙ্গে কখনো আপস করেননি। ১৯৪৭-৪৮ থেকে ১৯৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ১৯৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট গঠন, ১৯৬৬ এর ছয় দফা, ১৯৬৮ এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ১৯৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, ১৯৭০ এর নির্বাচন - দীর্ঘ ২৪ বছরের সংগ্রাম আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে অর্জিত হয়েছে আমাদের স্বাধীনতা। ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বজ্র কন্ঠে ধ্বনিত হয়েছে ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণে উদ্বুদ্ধ হয়ে বাংলার নিরস্ত্র জনগণ ঘরে ঘরে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে দুর্গ গড়ে তুলেছিল। ২৬ মার্চ ১৯৭১ এর প্রথম প্রহরে জাতির পিতা শেখ মুজিব স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপর দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে ৩০ লাখ মহান শহীদ ও ২ লাখ মা বোনের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ হিসেবে বিশ্বের মানচিত্রে স্থান লাভ করে। বঙ্গবন্ধু আমাদের দিয়েছেন একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। লাল সবুজের পতাকা ও সংবিধান। বঙ্গবন্ধু বিশ্বসভায় বাঙালিকে আত্মপরিচয় নিয়ে গর্বিত জাতিরূপে মাথা উঁচু করে চলার ক্ষেত্র রচনা করেছেন। স্বাধীনতার পর একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গড়ে তোলার জন্য মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন তিনি। সেই সময়কালে বাংলাদেশের উন্নয়নের সামগ্রিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়নের কাজ শুরু করেন তিনি। ২০২০ সালে জন্মশতবার্ষিকীতে মুজিববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে তার বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক এবং কর্মময় জীবন ও দর্শনের ওপর জাতীয় সংসদে বিশেষ আলোচনার মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হউক।

প্রধানমন্ত্রীর ওই প্রস্তাবটি নিয়ে টানা চার দিন আলোচনা শেষে আগামী বৃহস্পতিবার প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে গ্রহণ করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে (মুজিববর্ষ-২০২০) স্মরণীয় করে রাখতে এই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে গত রোববার জাতীয় সংসদের এই বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতার নিজের একটা আত্মবিশ্বাস ছিল কারণ এই বাঙালি জাতিকে নিয়েই তো তিনি যুদ্ধ করে বিজয় অর্জন করেছে স্বাধীনতা এনেছে। কাজেই সেই আত্মবিশ্বাস নিয়েই চলতেন। কিন্তু আমাদের সব থেকে দুর্ভাগ্যে বার বার গ্রেফতার করেছেন কারাগারে ছিলেন আমরা তো সন্তান হিসেবে একটানা দুই বছরও বাবার স্নেহ ভালোবাসা পাইনি। দেখা হয়েছিল বন্দী খানায়।

তিনি বলেন, ইতিহাস আসলে মুছে ফেলা যায় না ইতিহাসও প্রতিশোধ নেয়। আজকে সেই নাম আর কেউ মুছতে পারবে না ইতিহাস আর কেউ মুছতে পারবে না এটা হচ্ছে বাস্তবতা। এটা সৌভাগ্য ২০২০ সাল জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছি এই পার্লামেন্টে আমরা আছি।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমি মনে করি আল্লাহ মানুষকে একটা কাজ দেয় সেই কাজ না শেষ হওয়া পর্যন্ত আল্লাহ রক্ষা করেন। আল্লাহ আমাকে রক্ষা করেছেন জাতির পিতা আমাদের মাঝে নেই তার যে আদর্শ প্রতিটি কথা প্রতিটি লাইন আমাদের জন্য যে কত গুরুত্বপূর্ণ কতটা শেখার।

   

চট্টগ্রামে ১২ মেট্রিক টন বিটুমিনসহ গ্রেফতার ২



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ মেট্রিক টন চোরাই বিটুমিনসহ চক্রের ২ সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) র‌্যব-৭ পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

র‌্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, চট্টগ্রাম মহানগরীর সদরঘাট থানাধীন দক্ষিণ নালাপাড়া এলাকায় একটি গোডাউনে অবৈধ উপায়ে ক্রয়-বিক্রয় করার উদ্দেশ্যে চোরাই বিটুমিন মজুদ করছে-এমন তথ্যের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার র‌্যাব সাতের একটি বিশেষ আভিযানিক দল অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাব আসামি সুমন চন্দ্র দে (৩৮) ও মোঃ আব্দুল্লাহ আজিজকে (৪০) আটক করতে সক্ষম হয়।

জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা স্বীকার করে যে, পরস্পর যোগসাজসে দীর্ঘদিন যাবৎ বিভিন্ন মাধ্যমে অবৈধ উপায়ে বিটুমিন সংরক্ষণ করে এবং পরবর্তীতে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে পাইকারি ও খুচরা বিক্রয় করে আসছে তারা। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি বিটুমিন পরিবহনে ব্যবহৃত ১টি কাভার্ড ভ্যান জব্দ করা হয়।

জব্দকৃত চোরাই বিটুমিনের আনুমানিক মূল্য ১২ লাখ টাকা বলে জানায় র‌্যাব।

;

বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহতের ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা: তাপস



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪. কম, ঢাকা
ছবি: বার্তা২৪.কম

ছবি: বার্তা২৪.কম

  • Font increase
  • Font Decrease

মুগদায় করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়ির ধাক্কায় নিহত স্কুল শিক্ষার্থী মাহিন আহমেদের পরিবারের পাশে থাকার এবং এ দুর্ঘটনায় দোষী সকলের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস মাহিন আহমেদের পরিবারকে সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানাতে নিহতের বাড়িতে যান। পরে তিনি গণমাধ্যমের সাথে মতবিনিময়কালে এসব কথা বলেন।

ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, গতকাল রাত আনুমানিক নয়টার সময় মুগদার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্বর্তীকালীন বর্জ্য স্থানান্তর কেন্দ্র হতে বর্জ্য স্থানান্তরকালে করপোরেশনের বর্জ্যবাহী গাড়িতে দুর্ঘটনা কবলিত হয়ে ছোট্ট বালক মাহিন নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় আমরা অত্যন্ত শোকাহত। আমরা জানাজায় অংশগ্রহণ করেছি। ছোট্ট শিশু হারানোর ঘটনায় বাবা-মাকে কোন ভাষাতেই সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা আমাদের নেই। আমরা নিহতের পরিবারের পাশে থাকব।

এ দুর্ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা হবে জানিয়ে ঢাদসিক মেয়র ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, এ দুর্ঘটনায় ইতোমধ্যে মামলা নেওয়া হয়েছে। আমরা কঠোর থেকে কঠোরতর শাস্তি চাইছি। এই দুর্ঘটনায় যেন সম্পূর্ণ সুষ্ঠু বিচার হয় সেটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। একটি বিষয় উল্লেখ্য যে, আমাদের নির্ধারিত গাড়িচালক গাড়ি না চালিয়ে অন্যকে দিয়ে ভাড়া খাটিয়ে গাড়িটি চালানো হচ্ছিল। আমরা এ ধরনের অনিয়ম কোনভাবে বরদাশত করবো না। এ ঘটনায় কঠোরতর প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রকম কার্যক্রমে যারা জড়িত তাদের সকলের বিরুদ্ধে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কঠোর ব্যবস্থা নেবে। এ ধরনের ঘটনায় আগেও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। জড়িতদের চাকুরিচ্যুত করেছি, ছাটাই করেছি। আবার অনেক নতুন নিয়মিত গাড়িচালক নিয়োগ দিয়েছি। ফলে বিগত ২ বছর করপোরেশনের গাড়ি দ্বারা কোনো রকম দুর্ঘটনা ঘটেনি। গতকালের এই অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা আমাদেরকে অত্যন্ত শোকাহত করে তুলেছে। এবারও আমরা কঠোর ব্যবস্থা নিবো। যাতে করে এ ধরনের দুর্ঘটনার আর কোনো পুনরাবৃত্তি না ঘটে।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান, পরিবহন মহাব্যবস্থাপক মো. হায়দর আলী, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসিম আহমেদ, অঞ্চল-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম, স্থানীয় ৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. সিরাজুল ইসলাম ভাট্টি, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মাকসুদা শমশের প্রমুখসহ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

;

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম
৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

৯ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ ঘোষণা

  • Font increase
  • Font Decrease

সড়ক দুর্ঘটনায় চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেকিম কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) বিকেল সাড়ে তিনটায় শুরু হওয়া জরুরি সিন্ডিকেট সভায় শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে এক ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী ৯ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে এবং ১২ মে থেকে যথারীতি চালু হবে।

এতে আরও বলা হয়, গতকাল (বৃহস্পতিবার) শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের বিষয়টি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় সম্পদ নষ্ট না করার শর্তে হলে অবস্থান করতে পারবে শিক্ষার্থীরা।

বিষয়টি বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেছেন চুয়েটের সহকারী রেজিস্ট্রার (সমন্বয়) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।

তিনি বলেন, সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, আগামী ৯ মে পর্যন্ত সকল পরীক্ষা ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকব। ১২ মে থেকে যথারীতি ক্লাস ও পরীক্ষা শুরু হবে। দুইজন মেধাবী ছাত্রের অকাল মৃত্যুতে উদ্ভুত পরিস্থিতির কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

যদিও বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রোর (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবিরের সই করা চিঠিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক/স্নাতকোত্তর পর্যায়ের সকল একাডেমিক কার্যক্রম (পরীক্ষাসহ) বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। পরে এদিন রাতে প্রশাসনের সাথে বৈঠক শেষে ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন স্থগিত করে।

এর আগে, গত সোমবার মোটরসাইকেলে ঘুরতে বের হয়ে বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের দুই শিক্ষার্থী। ওইদিন আনুমানিক বেলা সাড়ে তিনটায় চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থানার জিয়ানগরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। এ ছাড়া গুরুতর আহত হন পুরকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাকারিয়া হিমু। এই ঘটনায় শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে মাঠে নামেন। আন্দোলন চলার সময় শিক্ষার্থীরা বাসেও আগুন দেন।

;

চট্টগ্রামের আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা গ্রেফতার



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, চট্টগ্রাম ব্যুরো
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

চট্টগ্রামের সাতকানিয়ার আলোচিত সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডখ্যাত দেলোয়ার হোসেন ওরফে বগাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাতে উপজেলার পশ্চিম আমিলাইশ এলাকা থেকে এই সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার করা হয়।

বগার বিরুদ্ধে সাতকানিয়ার কাঞ্চনা গ্রামে ডাকাতি করতে গিয়ে শিশু হত্যা, অপহরণ, ইয়াবা, ছিনতাই, ডাকাতি ও সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনের সময় সাতকানিয়ার সাবেক এমপির স্ত্রী-শ্যালকের ওপর হামলাসহ কমপক্ষে ১০টি মামলা রয়েছে।

বগাকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার। তিনি বলেন, ইয়াবা মামলায় বগাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সাতকানিয়া ও বাকলিয়া থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

৩ মাসে বগার নেতৃত্বে ২২ হামলা:

৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনের পর থেকে প্রায় প্রতিদিনই প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালিয়েছে সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড বগা। গত তিনমাসে সাতকানিয়ার চরতি-আমিলাইশ এলাকায় অন্তত ২২টি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে এই সাইফুল বাহিনী। এরমধ্যে কমপক্ষে ১০টি ঘটনায় থানায় অভিযোগ জমা পড়েছে এই বাহিনীর বিরুদ্ধে। বাকিরা ভয়ে মুখ খোলেননি।

নতুন সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর উপজেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বদলে যেতেই নির্বাচনের দিন সন্ধ্যা থেকে শুরু হয় সাইফুল বাহিনীর অত্যাচার। দক্ষিণ চরতিতে নৌকার সমর্থকদের বাড়ি-ঘর ও দোকানে হামলা ও লুটপাট চালায় সাইফুল বাহিনী। এ সময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুকের বাড়ি ও ডেকোরেশনের দোকানে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়।

নির্বাচনের পরের দিন সোমবার খতিরহাট এলাকায় নৌকা সমর্থক জিল্লুর রহমানকেও মারধর করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের আগের দিন শনিবার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার নুরুল আমিন কে গুলি করে মেরে ফেলার হুমকি দেয় সন্ত্রাসী সাইফুলের বড় ভাই জসিম উদ্দিন।

এছাড়া নির্বাচনের পর ৫ ফেব্রুয়ারি চরতি ইউনিয়ন পরিষদ কার্য়ালয়ে ঢুকে বর্তমান চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। পরে দক্ষিণ চরতি এলাকার ডিশ ব্যবসায়ী নুর মোহাম্মদের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে পরিবারসহ বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে সাইফুল বাহিনী। নির্বাচনের পর থেকে এখনো ঘর ছাড়া নুর মোহাম্মদের পরিবার। চরতি ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি মাইনুদ্দিনকে অপহরণ করে মারধর দক্ষিণ চরতির আরাফাত সিকদারকে মারধর করে এই সাইফুল বাহিনী।

নির্বাচনের আগে ২১ ডিসেম্বর দক্ষিণ চরতি কাটাখালী ব্রিজের পাশে নৌকার পথ সভায় অস্ত্র ও লাঠি-সোটা নিয়ে হামলা চালায় সাইফুল ও তার বাহিনী। এই সময় নৌকা সমর্থক চরতী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রুহুল্লাহ চৌধুরী, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মান্নান, মিছদাকুল বেসারত চৌধুরী, মোহাম্মদ রফিক, রবিউল ইসলাম ও মোহাম্মদ ফয়সালসহ কমপক্ষে ৮-১০ জন আহত হন।

এর দুইদিন আগে ১৯ ডিসেম্বরও নৌকার পথসভা শেষে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি সদস্য ইলিয়াছ শাহীনকে মারধর করে সাইফুল বাহিনী। ওইদিনও ইলিয়াছ শাহীনের ফার্মাসি ও কৃষক লীগ নেতা ফারুককে বাড়ি-দোকানে হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি নুর হোসেন কেও মারধর করে সাইফুল। এলাকাবাসীর অভিযোগ, নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে এমন কোনো দিন নেই যে- সন্ত্রাসী সাইফুল ও তার বাহিনী দ্বারা এলাকার মানুষের উপর হামলার ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সন্ত্রাসী সাইফুল কোনো পদ পদবিতে না থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের পরিচয়ে এলাকায় সন্ত্রাসী কার্য়াক্রম চালিয়ে আসছেন। এতদিন পর্যন্ত সাবেক এমপি আবু রেজা মোহাম্মদ নেজামুদ্দিন নদভীর অনুসারী হিসেবে এলাকায় তার পরিচিতি ছিল। গত বছর প্যানেল চেয়ারম্যান নির্বাচনকে ঘিরে ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল্লাহ চৌধুরীর সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হলে তখন থেকে এম এ মোতালেবের দিকে ভিড়েন সাইফুল মেম্বার। মোতালেব দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিলে তারপর থেকে আরো হিংস্র হয়ে উঠেন তিনি।

এর আগে ২০১৮ সালে সন্ত্রাসী সাইফুল বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে ভিটে-মাটি ছেড়ে যায় দক্ষিণ চরতির ১০ পরিবার। নারী ও শিশুসহ এসব পরিবারের প্রায় অর্ধ শতাধিক লোকজন দীর্ঘ এক বছর নিজেদের ভিটে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়ার পর উদ্ভাস্তুর মতো দিনযাপন করে। বাড়ি-ভিটে ফিরে পেতে ২০১৯ সালের ২৭ এপ্রিল চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করেন উদ্ভাস্তু পরিবারসহ এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন।

সাইফুল বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ডার হিসেবে এসব মারধর ও হামলার ঘটনায় নেতৃত্ব দিচ্ছে ইয়াবা ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন (বগা)। ইতোমধ্যে দুই-তিন বার জেলেও গিয়েছে এই ইয়াবা ব্যবসায়ী। সাতকানিয়ার পশ্চিম অঞ্চল (চরতি, আমিলাইশ, কাঞ্চনা, এওচিয়া ও নলুয়া) সহ চন্দনাইশের বৈলতলী, আনোয়ারার হাইলধর ও বাঁশখালীর পুকুরিয়া অঞ্চলের অস্ত্র ও ইয়াবা ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ করে সাইফুল ও তার বাহিনী। এছাড়া রয়েছে খাল ও সাঙ্গু নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও পাহাড় কেটে মাটি ব্যবসা।

সাইফুল বাহিনীর অন্য সদস্যদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রিটন সরকার।

 

;