দেশে পাট পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে
বৈশ্বিক করোনার সময় দেশে অন্যান্য পণ্যের রপ্তানি কমলেও পাট পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুরের জেলা প্রশাসক মো. আসিব আহসান।
তিনি বলেছেন, করোনার কারণে বিশ্ব বাজারে পণ্য রপ্তানি ও আমদানি মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর মধ্যেও বাংলাদেশে বিভিন্ন জাতের পণ্যের রপ্তানি অনেক কমেছে। তবে বৈশ্বিক করোনার সময় পাটজাত পণ্যের রপ্তানি বেড়েছে। রপ্তানি টার্গেটের চেয়ে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। বিশ্বব্যাপী পাটের গুরুত্ব বেড়ে যাওয়াতে ৭ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি হয়েছে। পাটের বহুমুখী ব্যবহার বাড়াতে পারলে এর তিন গুণ বেশি অর্থাৎ ২১ হাজার কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করা সম্ভব।
শনিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর টাউন হল মিলনায়তনে পাটখাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ বিষয়ক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক এসব কথা বলেন। জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় রংপুর পাট অধিদপ্তর এই সেমিনারের আয়োজন করে।
ডিসি আসিব আহসান বলেন, শ্রমঘন পাটখাতের সাথে দেশের প্রায় চার কোটি মানুষের জীবন-জীবিকা নিবিড়ভাবে সম্পর্কিত। বর্তমানে বাংলাদেশ পাট উৎপাদনে বিশ্বে দ্বিতীয় অবস্থানে। পাট রপ্তানিতে বিশ্বে বাংলাদেশ প্রথম। সরকার পাটের হারানো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাটের উৎপাদন ও ব্যবহার বৃদ্ধি, চাষ সম্প্রসারণ, গুণগতমান উন্নয়ন, পাট শিল্পের বিকাশ ও গবেষণা কার্যক্রম বাড়াতে সরকার প্রধান আন্তরিক।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি ছিলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সরওয়ারুল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন- রংপুর পাট অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কৃষিবিদ মো. সোলায়মান আলী। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন রংপুর জেলা পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা একেএম মাহবুব আলম বিশ্বাস। এতে পাটখাতে সার্বিক সাফল্য, সুবিধাদি, পাটজাত পণ্যের ব্যবহারের সুফল এবং পণ্যে পাটজাত মোড়কের বাধ্যতামূলক ব্যবহার আইন নিয়ে প্রবদ্ধ উপস্থাপন করে বাংলাদেশ জুট রিসোর্স ইনস্টিটিউট-বিজেআরআই রংপুরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মো. আবুল ফজল মোল্লা।
বক্তারা পরিবেশ বান্ধব সোনালী আঁশ পাটের বিশ্বখ্যাতি, কৃষি জমিতে পাটের গুরুত্ব এবং পাট নিয়ে বাংলাদেশের সম্ভাবনা ও সমস্যাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরে আলোচনা করেন। এতে বলা হয়, বর্তমানে দেশে সরকারি, বেসরকারি মিলে ৩০৭টি পাটকল রয়েছে। এরমধ্যে ২৮২টি বেসরকারি, বাকি ২৫টি সরকারি পাটকল। পাট ও পাট জাতীয় পণ্যের রেকর্ড আছে ১৬৩টি। বর্তমানে সেই সংখ্যা বেড়ে ২৮৫ তে পৌঁছেছে।
সেমিনারে পাট চাষী, ব্যবসায়ী, পাট পণ্য উৎপাদনকারী, ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা অংশ নেন। শতভাগ মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করে স্বাস্থ্যবিধি মেনে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।