মহেশখালীতে মিলবে নিরাপদ খাবার পানি



স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
মহেশখালীতে মিলবে নিরাপদ খাবার পানি

মহেশখালীতে মিলবে নিরাপদ খাবার পানি

  • Font increase
  • Font Decrease

কক্সবাজারের দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর বাসিন্দারা খাবার পানির জন্য প্রধানত অগভীর নলকূপ, পুকুর ও নদীর ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু এসব উৎসের পানি অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শরীরের জন্য অনিরাপদ এবং জৈব ও রাসায়নিক- উভয়দিক থেকেই মানুষের খাবারের অনুপযোগী হয়ে থাকে। লবণাক্ততার হার বেড়ে যাওয়ায় মিঠাপানির প্রাপ্যতাও সেখানে ক্রমশ কমে আসছে। এসব কারণে মহেশখালীর স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠছে, বিশেষত নারী ও শিশুদেরকে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। কারণ কেবল দূরবর্তী জায়গায় গিয়ে পানি সংগ্রহ করার জন্যই তাদেরকে দিনে ৪-৫ ঘণ্টা ব্যয় করতে হয়। এতে কর্মক্ষম নারীদের উৎপাদনশীলতা কাজে লাগানোর সুযোগ যেমন নষ্ট হয়, তেমনি শিশুরাও শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়।

এছাড়া অনিরাপদ পানি পানের কারণে সেখানকার মানুষ ব্যাপকহারে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয় এবং মারাত্মক অসুস্থ হয়ে পড়ে। ফলে সার্বিকভাবে তাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বেড়ে যায়। পানিবাহিত রোগের প্রকোপের পাশাপাশি এই দ্বীপ উপজেলার মানুষজন গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল প্যাথোজেনস বা ক্ষতিকর জীবাণুর আক্রমণে পেটের নানান রোগে আক্রান্ত হন। যা সার্বিকভাবে তাদের স্বাস্থ্য ও পুষ্টি ক্ষমতাকে বিপর্যয়ের মুখে ঠেলে দেয়।

"বিশুদ্ধ পানি ও নিরাপদ খাওয়ার পানি পাওয়ার মতো কোনো নির্ভরযোগ্য উৎস ছিল না। তখন জীবন ছিল ভীষণ কঠিন। আমার মতো অনেক নারীকেই তাদের পরিবারের পানির চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টা হেঁটে দূর-দূরান্ত থেকে পানি আনতে হতো। এাছাড়া আমাদের ছেলে-মেয়ে সহ পরিবারের অন্য সদস্যদেরকে পেটের অসুখ সহ প্রতিনিয়ত নানান পানিবাহিত রোগে ভুগতে হতো।

আজ সে অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখন আর পানি আনতে দূরে যেতে হয় না। বসতঘরের কাছেই বিশুদ্ধ ও নিরাপদ খাওয়ার পানি পাচ্ছি। কথাগুলো বলছিলেন,  কক্সবাজার জেলার দূরবর্তী দ্বীপ উপজেলা মহেশখালীর প্রত্যন্ত গ্রামের গৃহিনী সুফিয়া খাতুন।

সম্প্রতি সমন্বিত টেলিযোগাযোগ অবকাঠামো সেবা প্রদানকারী কোম্পানি ইডটকো বাংলাদেশ, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি সংস্থা ‘ব্র্যাক’ এর সহযোগিতায় মহেশখালীর প্রত্যন্ত এলাকায় রিভার্স অজমোসিসভিত্তিক ‘ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট’ বা পানি পরিশোধন প্ল্যান্ট উদ্বোধন করেছে।

এতে করে সুফিয়া খাতুন ছাড়াও কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর এক হাজারেরও বেশি সংখ্যক পরিবারের জন্য নিরাপদ খাবার পানি নিশ্চিত হয়েছে।

সম্প্রতি ভার্চ্যুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পটি উদ্বোধনের সময় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) এর ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিকি স্টেইন এবং ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস অ্যান্ড ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন (ওয়াশ) প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মো. আকরামুল ইসলাম সহ অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 

ইডটকো যেসব জায়গায় টাওয়ার স্থাপন করে তার আশপাশের জনগোষ্ঠী, বিশেষত: স্থানীয় সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকার উন্নয়নে সহায়তা প্রদান করতে ইডটকো সামাজিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তারই অংশ হিসেবে মহেশখালীতে স্থাপিত টাওয়ারের আশপাশের জনগোষ্ঠীর জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহে দু’টি পানির প্ল্যান্ট স্থাপন করা হয়েছে। প্ল্যান্ট দু’টি স্থাপন করা হয়েছে মহেশখালীর উত্তর মেহেরিয়াপাড়া জামে মসজিদ এবং কুতুবজম মডেল হাই স্কুলে। ইডটকোর টাওয়ার-টু-কমিউনিটি (টিটুসি) কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার (সিএসআর) আওতায় স্থাপিত প্রকল্প দু’টির আশপাশের দরিদ্র ও অতিদরিদ্র প্রায় ১,০০০ পরিবার প্ল্যান্টগুলো থেকে সহজেই নিরাপদ খাবার পানি সংগ্রহ করতে পারবে। কাজেই নিরাপদ খাবার পানির দুষ্প্রাপ্যতা নিরসনের মাধ্যমে স্থানীয় অধিবাসীদের স্বাস্থ্য ঠিক রাখার ক্ষেত্রে প্রকল্প দু’টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা যাচ্ছে। টেকসই প্ল্যান্ট দু’টি থেকে তারা বিনামূল্যে কিংবা ভর্তুকি মূল্যে নিরাপদ খাবার পানি সংগ্রহ করতে পারবেন। ব্র্যাকের ওয়াশ প্রোগ্রামের (ইজঅঈ ডঅঝঐ চৎড়মৎধসসব) সাথে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গৃহিত এই প্রকল্প দু’টি মহেশখালীর প্রত্যন্ত এলাকায় বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ ও তার নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস সহ অন্যান্য রোগ-জীবাণু থেকে রক্ষা পেতে হাত ধোয়ার বিষয়ে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করবে।

এ প্রসঙ্গে ইডটকো বাংলাদেশের কান্ট্রি ম্যানেজিং ডিরেক্টর রিকি স্টেইন বলেন, ''সামাজিকভাবে একটি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইডটকো দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণে গুরুত্ব দিয়ে থাকে। নিরাপদ খাবার পানির নিশ্চয়তা মানুষের অন্যতম মৌলিক অধিকার। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা-৬ (এসডিজি-৬) অর্জনে বাংলাদেশের যে প্রতিশ্রুতি রয়েছে, সেটি পূরণে সবার জন্য নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, ব্র্যাকের সহযোগিতায় নেওয়া এই অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্প মহেশখালীর প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের, বিশেষত: নারী ও শিশুদের স্বাস্থ্যগত উন্নতি নিশ্চিত করবে।''

ব্র্যাকের কমিউনিকেবল ডিজিজেস অ্যান্ড ওয়াটার, স্যানিটেশন অ্যান্ড হাইজিন (ওয়াশ) প্রোগ্রামের ডিরেক্টর মো. আকরামুল ইসলাম বলেন, ''কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ইডটকোর সাথে যৌথভাবে আমরা নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রকল্প চালু করেছি। এতে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মানুষ, বিশেষ করে- নারী ও মেয়েশিশুরা ভীষণ উপকৃত হবে। নিরাপদ পানির চরম সঙ্কটে রয়েছে এমন জনগোষ্ঠীর সহায়তার লক্ষ্যে আমাদের গৃহিত প্রচেষ্টায় শরিক হওয়ার জন্য আমরা ইডটকোকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এই উদ্যোগ স্থানীয় অনেক পরিবারকে পানিবাহিত রোগের প্রকোপের পাশাপাশি কোভিড- ১৯ মহামারীর সংক্রমণ থেকে রক্ষা করবে।"

   

উপজেলা নির্বাচনে ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রীই ‘স্বজন’: প্রধানমন্ত্রী



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

উপজেলা নির্বাচনে ‘স্বজন’ সংজ্ঞায় আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পারিবারিক ফর্মূলা কী- নিজের ছেলে, মেয়ে ও স্ত্রী! এর বাইরে তো পরিবার হয় না! আমরা চাচ্ছি, ইলেকশনটা (নির্বাচন) যেন প্রভাবমুক্ত হয়! মানুষ যেন স্বাধীনভাবে ভোটটা দিতে পারেন’!

বৃহস্পতিবার (২ মে) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে থাইল্যান্ড সফর পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের পরিবারের অনেকে তো দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আগে থেকেই নির্বাচন করেন। যিনি এমপি হয়েছেন, তার বহু আগে থেকেই হয়ত ইউনিয়ন বা উপজেলা চেয়ারম্যান তার স্ত্রী। তবে এটা ঠিক, এক জায়গায় বউকে দিলো, আরেক জায়গায় ছেলেকে দিলো, সেটা ঠিক না! কর্মীদেরও মূল্যায়ন করা উচিত। সবকিছু নিজেরাই নিয়ে নেবো, আমার নেতাকর্মীদের জন্য কিছু রাখবো না, সেটা তো হয় না!

তিনি বলেন, সবাই দাঁড়াচ্ছে। দাঁড়িয়েছে। ইলেকশন করছে, এটার অর্থ হলো- নির্বাচনটা অর্থবহ করা।

কয়েকটি দলের নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গে টেনে শেখ হাসিনা বলেন, অনেকগুলি রাজনৈতিক দল নির্বাচন বর্জন করছে। বর্জন করে কেন! কারণ, নির্বাচন করার মতো সক্ষমতায় তারা নেই। ‘পার্লামেন্ট ইলেকশন’ করতে হলে জনগণকে তো দেখাতে হবে, পরবর্তী নেতা বা প্রধানমন্ত্রী কে হবেন! আপনার কাছে যদি উপযুক্ত নেতা না থাকে, তখন তো ছুতো খুঁজতে হয়। ইলেকশন করলাম না, বাস্তবতা তো সেটাই! আমাদের দেশে তো সেটাই হচ্ছে! সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে যদি জনগণকে দেখান, জনগণ তো নেবে না। রাজনীতি করতে হলে তো ঝুঁকি নিতেই হয়!

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ’৭৫-এর পরে আমাকে দেশে আসতে দেবে না। রেহানাকে তো পাসপোর্টটাও দেয়নি! যুদ্ধাপরাধী যাদের বিচার শুরু করেছিলেন জাতির পিতা, যারা সাজাপ্রাপ্ত আসামি, তাদের ছেড়ে দিয়ে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছিল, তারাই মন্ত্রী, উপদেষ্টা, ক্ষমতায়। খুনিরা ক্ষমতায়! ওই অবস্থায় তো আমি দেশে ফিরে এসেছি। আমার জীবন ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বার বার আঘাত এসেছে কিন্তু আমি বেঁচে গেছি। এটাই অনেকের কষ্ট। এতবার মারবার চেষ্টার পরও বেঁচে গেলাম কেন!

আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসেছে বলেই ‘উন্নয়ন’ হয়েছে, এ মন্তব্য করে তিনি আরো বলেন, বিশ্বে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার বা কথা বলার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে বাঙালিদের। আগে তো নাম শুনলেই বলতো ‘গরিব’, ‘ভিক্ষুকের জাত’, সেই দুর্নামটা ঘোচাতে পেরেছি কি না, সেটাই বড় কথা!

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আরো অনেক দেশেই নির্বাচন হচ্ছে। আমরা দেখবো, সেখানকার মানুষ কী রকম ভোট দেয়। আমরা সেটাও দেখবো। আমাদের প্রচেষ্টা হচ্ছে, প্রক্রিয়াটাকে আরো গণমুখী ও স্বচ্ছ করা!

আমরা এই প্রথম আইন করে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। আর্থিকভাবে এটি প্রধানমন্ত্রী দপ্তরনির্ভর ছিল। সেখান থেকেও মুক্ত করে স্বায়ত্তশাসিত করে দিয়েছি। আলাদা বাজেট করে দিয়েছি।

;

নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম, নীলফামারী
নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

নীলফামারীতে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধার মৃত্যু

  • Font increase
  • Font Decrease

নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় ফুস বালা (৮০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ঘাতককে আটক করতে না পারলেও মোটরসাইকেলটি জব্দ করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২ মে) সকালে উপজেলার ব্রাক অফিসের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত বৃদ্ধা কেশবা জুগিপাড়ার মৃত শুরেন চন্দ্র রায়ের স্ত্রী।


প্রদক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, নিহত বৃদ্ধা সকালে গাছের ডাল কুড়ানোর সময়ে রাস্তা পার হচ্ছিলেন। এসময়ে দ্রুত গতিতে আসা মোটরসাইকেলটি ধাক্কা দিলে বৃদ্ধা ছিটকে পড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।


কিশোরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) পলাশ চন্দ্র মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় মোটরসাইকেলটি জব্দ করা হয়েছে। এবিষয়ে আইনি কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন।

;

চলতি মাসেই শুরু হচ্ছে খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চলাচল



ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বাগেরহাট
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

গত বছরের নভেম্বরে উদ্বোধন হলেও স্থায়ী জনবল নিয়োগসহ নানা জটিলতায় খুলনা-মোংলা রুটে ট্রেন চালু করা যায়নি। কবে নাগাদ রেল চালু হবে সেটি নিয়েও ধোয়াশা কাটছিল না। ফলে খুলনা-মোংলা রুটে রেল চালুতে জট দেখা দেয়। তবে সমস্যার জটিলতা অবসান এবং আপাতত অস্থায়ী জনবল দিয়ে এ মাসেই খুলনা-মোংলা রুটে বাণিজ্যিকভাবে রেল চালুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এজন্য মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) বিকেলে খুলনা থেকে মোংলা রেলপথের চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়। খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান ও রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল মন্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চূড়ান্ত পরীক্ষা সম্পন্নের সময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ রেলওেয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অবকাঠামো) ও প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান, মহা-ব্যবস্থাপক (পশ্চিম) অসীম কুমার তালুকদার, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) এ এম সালাহ উদ্দীন, প্রধান যান্ত্রিক প্রজেক্ট (পশ্চিম) মুহাম্মদ কুতরত- ই- খুদা, প্রধান বৈদ্যুতিক প্রকৌশলী (পশ্চিম) মুহাম্মদ শফিকুর রহমান, প্রধান সংকেত ও টেলিযোগাযোগ প্রকৌশলী টেলিকম (পশ্চিম) সৈয়দ মো. শহিদুজ্জামান, পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ বীর বল মন্ডল ও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম।

রেল লাইনের প্রকল্প পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, রেল লাইনে বিভিন্ন ধাপের ফিনিশিংয়ের কাজ বাকি ছিল, সেটি সম্পন্ন করা হয়েছে। চূড়ান্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষাও শেষ। বাণিজ্যিকভাবে রেল চালুর জন্য খুলনা-মোংলা রুট পুরোপুরি উপযোগী করে দেওয়া হয়েছে। তবে স্থায়ী জনবল নিয়োগের বিষয়টি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে আটকে থাকায় অস্থায়ী জনবল দিয়ে আপতত রেল চালানোর জন্য রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) কাছে সবকিছু বুঝিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।


এ বিষয়ে খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, ফিনিশিংয়ের কাজ শেষ করে মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) চূড়ান্ত পরীক্ষা করা হয়েছে। লাইন চালুতে দরকার প্রয়োজনীয় জনবল। এই রুটে আটটি স্টেশন ও লাইন ক্লিয়ারিংয়ে ৫৭৬ জন জনবলের অর্গানোগ্রাম করা হয়েছে। সেটিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে রয়েছে। তবে আপাতত অস্থায়ী জনবল নিয়োগ দিয়ে রেল চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

নির্দিষ্ট তারিখ উল্লেখ না করে এমাসের যেকোন দিন রেল চালুর বিষয়টি মাথায় রেখে স্টেশনের আসবাবপত্র, রেলস্টেশন ও রেলক্রসিংগুলোতে অস্থায়ী জনবল নিযুক্ত, রুটে চলাচলকারী রেলের সময়সূচি, ভাড়া ও শিডিউল চূড়ান্ত করা হচ্ছে। এসব প্রক্রিয়া শেষ করে খুলনা-মোংলা রুটে এ মাসেই বাণিজ্যিকভাবে রেল চলানো হবে বলে জানিয়েছেন রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের (পাকশী) বিভাগীয় প্রকৌশলী-১ (ভারপ্রাপ্ত) বীর বল মন্ডল।

প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন হয়। জমি অধিগ্রহণ, রেললাইন, রেলসেতু নির্মাণসহ পুরো প্রকল্পের ব্যয় তখন ধরা হয়েছিল এক হাজার ৭২১ কোটি টাকা। এরপর ২০১৫ সালে সংশোধিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবে (ডিপিপি) ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি ৬১ লাখ টাকা। এরপর ২০২১ সালে ফের সময় ও ব্যয় বাড়ে। তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। সর্বশেষ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সেই মেয়াদ ২০২৪ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত করা হয়।

অন্যদিকে, প্রকল্পের কাজ রূপসা নদীর ওপর ৫ দশমিক ১৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে রেলসেতু, ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত ৬৪ কিলোমিটার পথ হলেও স্টেশনগুলোর ডাবল লাইন হিসাব করে ৯১ কিলোমিটার রেলপথ, নয়টি প্ল্যাটফর্ম এবং ১০৭টি ছোট সেতু ও ৯টি আন্ডারপাস নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে সিগনালিং ও টেলিকমিউনিকেশনের কাজও শেষ করা হয়।

জানা গেছে, ২০২৩ সালের ১লা নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি যৌথভাবে ভার্চুয়ালি খুলনা-মোংলা রেললাইন প্রকল্প উদ্বোধন করেন। এর আগে ৩০ অক্টোবর ফুলতলা থেকে মোংলা পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে রেল চালানো হয়।

এদিকে, রেল চলাচল শুরু হলে এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ এবং ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর দিয়ে দ্রুত ও কম খরচে মালামাল নিতে পারবে। মোংলার সঙ্গে রেলপথে যাতায়াত সুবিধার পাশাপাশি আরও গতিশীল হবে মোংলা বন্দর। ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারিত হবে। সুন্দরবন কেন্দ্রীক পর্যটন বিকাশে আরো সহায়ক হবে এ রুট।

;

সিটি করপোরেশনের সিল নিজেই মারতেন মিল্টন: ডিবি প্রধান



স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম
ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

  • Font increase
  • Font Decrease

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেছেন, সিটি করপোরেশনের সনদ ছাড়াই রাতের আধাঁরে মরদেহ দাফন করতেন ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রমের চেয়ারম্যান মিল্টন সমাদ্দার। এমন কি তিনি নিজেই মৃত সনদে সিটি করপোরেশনের সিল মারতেন। এই বিষয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

বৃহস্পতিবার (২ মে) দুপুরে রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়েজিত এক সংবাদি সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন মিল্টন সমাদ্দারকে আমরা গতকাল রাতে গ্রেফতার করেছি। ইতোমধ্যে তিনটি মামলা হয়েছে। তার মধ্যে রাতের আধাঁরে সিটি করপোরেশনের সনদ ছাড়াই মৃতদেহ দাফন করার অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করে আদালতে পাঠিয়েছি। রিমান্ডে আসার পর তার যে অপকর্মগুলো আছে সে বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

দায়ের হওয়া মামলার বিষয়ে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, রাতের আধাঁরে মিল্টন সমাদ্দার মরদেহ দাফন করতেন। সিটি করপোরেশনের সিল নিজেই মারতেন। সেই কাগজগুলো আমরা উদ্ধার করেছি। মরদেহ দাফন করার ক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের সনদ সে নিতো না। সে নিজেই লিখে, সাইন করত। সিলসহ কাগজ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আরও দুজন ভুক্তভোগী তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে থানায় আছেন। দ্রুতই সেগুলো নথিভুক্ত হবে।

মিল্টনের স্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না জানতে চাইলে হারুন বলেন, মিল্টনকে রিমান্ডে আনার পরে তার স্ত্রীকেও ডাকবো। তবে কোনো ভুক্তভোগী যদি মামলা করেন তাহলে তার স্ত্রীকেও আমরা গ্রেফতার করবো।

;