পত্রিকায় ‘পাত্র চাই’ বিজ্ঞাপন, ২০ কোটি টাকা আত্মসাৎ সাদিয়ার

  • স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

সাদিয়া জান্নাত ওরফে জান্নাতুল

সাদিয়া জান্নাত ওরফে জান্নাতুল

পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে বিয়ে করে কানাডা, আমেরিকায় নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎকারী চক্রের মূল হোতা জন্নাত নামের এক নারীসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন (সিআইডি)।

মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সিআইডি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গ্রেফতারকৃতরা হলো- সাদিয়া জান্নাত ওরফে জান্নাতুল, জান্নাতের দ্বিতীয় স্বামী হাসান ওরফে জিহাদ, সিরাজুল ইসলাম ওরফে সিরাজ, ফিরােজ মিয়া, তামান্না।

এ বিষয়ে সিআইডির সিনিয়র এসপি জিসান জানান, বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে বিয়ের নামে প্রতারণার অভিযোগে জান্নাত নামের এক নারী ও তার স্বামী এবং তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ পর্যন্ত প্রতারণার মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক হয়েছে জান্নাত। প্রথম স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা স্বামীকে নিয়ে নামেন অভিনব এই প্রতারণায়।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, চলতি বছরের আগস্ট মাসে একটি পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী কানাডার নাগরিক, ডিভাের্সি সন্তানহীন, নামাজি পাত্রীর জন্য ব্যবসার দায়িত্ব নিতে আগ্রহী বয়স্ক পাত্র চেয়ে একটি বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। আগ্রহীদের একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে বারিধারার একটি বাড়িতে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরে সিআইডির কাছে অভিযোগ দেওয়া ভুক্তভোগী নাজির হোসেন ওই বিজ্ঞাপন দেখে মােবাইলে যােগাযােগ করেন। পরে তার সঙ্গে গুলশানের একটি রেস্টুরেন্টে দেখা করেন জান্নাত। এ সময় ভুক্তভোগী দেড় লাখ টাকা ও পাসপাের্ট তুলে দেন জান্নাতের হাতে।

জান্নাত নাজির হোসেনকে জানায়, তিনি নিজেই পাত্রী। কানাডায় ২০০ কোটি টাকার ব্যবসা আছে। কিন্তু বর্তমানে কানাডায় অনেক শীত থাকার কারণে নাজির হোসেনকে নেওয়া যাচ্ছে না। পরে দেশে ব্যবসার জন্য টাকা আনার কথা বলে ট্যাক্স, ভ্যাট, ডিএইচএল বিল ইত্যাদির খরচের কথা বলে সর্বমােট এক কোটি ৭৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়। পরে মোবাইল বন্ধ করে দিয়ে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। পরে ভুক্তভোগী নাজির হোসেন এ বিষয়ে সিআইডিতে অভিযােগ করেন। একইভাবে অন্য একজন ভুক্তভোগীর সঙ্গে দেখা করতে আসার সময় প্রথমে জান্নাতকে গ্রেফতার করে সিআইডি। পরে তার কাছ থেকে তিন জন ভুক্তভোগীর পাসপাের্ট, ১০টি মােবাইল ফোন, তিনটি মেমােরি কার্ড, সাতটি সীল, অসংখ্য ব্যবহৃত সীম, প্রতারণার শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের হিসাবের খাতা এবং ব্যাংক এশিয়ায় ৪৮ লাখ টাকা জমা দেওয়ার স্লিপ উদ্ধার করা হয়।

সিআইডিতর এই কর্মকর্তা জানান, উদ্ধার করা খাতায় বিগত দিনের প্রতারণার হিসাব এবং ভুক্তভোগীদের নাম ঠিকানা পাওয়া যায়। জান্নাতের নেতৃত্বে এই চক্রটি গত ১০ বছর ধরে এমন প্রতারণা করে আসছে। এখন পর্যন্ত সিআইডি তাদের ২০ কোটি টাকার সম্পত্তির সন্ধান পেয়েছে।

জান্নাত নিজে কোনো দিন কানাডা না গেলেও কথাবার্তা ও পোশাক-আশাক দেখিয়ে মানুষকে বিশ্বাস করায়। তাদের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণা ও পাসপোর্ট জালিয়াতি আইনে মামলা রয়েছে।