প্রকল্পের টাকা চেয়ারম্যানের পকেটে, রাস্তা মেরামতে এলাকাবাসী
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়নের হাছিয়া নামাপাড়া গ্রামে ভেঙে যাওয়া কাঁচা রাস্তা ও সেতুর মুখ স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেছেন এলাকাবাসী। আর সেই রাস্তাকে কাজের বিনিময়ে খাদ্য (কাবিখা) প্রকল্প দেখিয়ে বরাদ্দ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে উত্তোলন করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন, ৬ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে তারা সবাই মিলে রাস্তাটি মেরামত করছেন। প্রকল্পের বরাদ্দ সম্পর্কে তারা কিছুই জানতেন না।
মঙ্গলবার (২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় সূত্র ও তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ২০২০-২১ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ২ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। দেড় মাস আগে প্রকল্পের বরাদ্দের প্রথম দুই কিস্তির এক লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিলেও চেয়ারম্যান কাজই শুরু করেননি৷
এলাকাবাসী জানায়, গত বন্যায় ওই গ্রামের একমাত্র চলাচলের কাঁচা রাস্তাটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। রাস্তা-সংলগ্ন সেতুর দুই পাশের মুখও ভেঙে যায়। এ কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তি পোহাচ্ছিলেন ৬ গ্রামের প্রায় ৪ হাজার মানুষ। রাস্তা ও সেতুর মুখ মেরামতের জন্য স্থানীয়রা একাধিকবার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও সাড়া মেলেনি। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমান জুয়েলের উদ্যোগে ভেঙে যাওয়া রাস্তা ও সেতুর দুই মুখ মেরামত করেন এলাকাবাসী।
ওই গ্রামের নজরুল ইসলাম বলেন, চলাচলের সুবিধার্থে আমরা গ্রামবাসী মিলে কাজটি করেছি। এখন শুনছি, চেয়ারম্যান ওই রাস্তাটি সংস্কারের জন্য দুই লাখ ৫৯ হাজার টাকা বরাদ্দ পেয়েছেন। টাকা উত্তোলন করলেও কোনো কাজ করেননি।
এ ব্যাপারে বালুয়া মাসিমপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ময়নুল হক বলেন, ওই রাস্তাটি মেরামতে শুধু শ্রমিক দিয়ে হবে না। এর জন্য ভেকু (এক্সক্যাভেটর) লাগবে। ভেকু না পাওয়ায় কাজটি করতে দেরি হয়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোশফিকুর রহমান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, রাস্তাটি সংস্কার করার জন্য ইতিমধ্যেই ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তির ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যান। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুন ভূঁইয়া বলেন, তদন্ত করে আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।