বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ: শখ থেকে বাণিজ্যিকরণের স্বপ্ন
রাজবাড়ীর কালুখালীর মোহনপুর গ্রামের জনাব আলী মন্ডলের ছেলে মো. রিয়াজ মাহমুদ (৩০)। ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজ থেকে ইংরেজিতে মাস্টার্স শেষ করেন। ছাত্রাবস্থায় তার শখ ছিল বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণ পালনের। কিন্তু জীবিকার তাগিদে বিশ্ব ব্যাংকের একটি প্রকল্পে চাকরি নেন তিনি। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে ফিরে আসেন বাড়িতে।
বন মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদন নিয়ে ২০১৮ সালে শখের বশে দুটি হরিণ পালন শুরু করেন তিনি। সেই দুটি থেকে এখন মোট ৬ টি হরিণ হয়েছে তার খামারে। নিজ বাড়ির আঙ্গিনায় শখের বশে হরিণ পালন করে অভাবনীয় সাফল্যে অর্জন করেছেন তিনি। চিড়িয়াখানা বা পার্কে হরিণের দেখা মিললেও বাড়ির আঙ্গিনায় হরিণের পাল- আশ্চর্যই বটে। আর হ্যাঁ- এই কাজটি করেছেন রিয়াজ মাহমুদ।
এখন তিনি স্বপ্ন দেখছেন ভবিষ্যতে এই খামারটি সম্প্রসারণ করে দুই শতাধিক হরিণ পালনের। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সেটি সম্ভব হবে কিনা, তা নিয়ে অনিশ্চিত এই যুবক। আইনি জটিলতা থাকার কারণে তাকে এগোতে হচ্ছে ধীর গতিতে। তবে তিনি হাল ছাড়তে নারাজ।
তরুণ এই উদ্যেক্তা মো. রিয়াজ মাহমুদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, হরিণ এখন বিলুপ্তির পথে। এই প্রাণিকে টিকিয়ে রাখতে হলে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে। হরিণ একটি লাভজনক প্রাণীও বটে। এটিকে যদি বাণিজ্যিক ভাবে পালনের জন্য সরকার আইনি প্রক্রিয়া সহজজাত করেন তাহলে এটি দেশের অর্থনৈতিক খাতে অনেক ভূমিকা রাখতে পারবে।
তিনি আরো বলেন, হরিণ যাতে সবাই পালন করতে পারে সে জন্য নীতিমালা শিথিলসহ ট্যাক্স কমানো ও লাইসেন্স গণহারে দেওয়া উচিত। হরিণের বিলুপ্তি ঠেকাতে গবাদী পশুর ন্যায় হরিণের খামারের অনুমোদন দেওয়া উচিত।
তরুণ এই উদ্যেক্তা বলেন, বন বিভাগের অনুমতি নিয়ে ২০১৮ সালে বরিশালের একটি খামার থেকে দুটি হরিণ কিনে আনি। সে দুটি হরিণ থেকে এখন আমার এখানে ছয়টি হরিণ হয়েছে। যার প্রতিটি সরকারি মূল্য ৭০ হাজার টাকা করে। বর্তমান ৪৪ শতাংশ জমির উপর আমার এই খামারটি। এটিকে সম্প্রসারণ করে এক একর জমির উপর করার ইচ্ছা রয়েছে। সরকারি অনুমতি পেল সেটি করার স্বপ্ন দেখছি। যেখানে দুই শতাধিক হরিণ পালন করা যাবে।
কালুখালী উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. প্রদীপ কুমার সরকার বার্তা২৪.কমকে বলেন, হরিণ যেহেতু একটি অর্থকারি প্রাণী সেহেতু বাণিজ্যিক ভাবে হরিণের খামার তৈরি করা গেলে দেশের অর্থনৈতিকখাতে নতুন মাত্রা যোগ হতে পারে। কালুখালীতে যে খামারটি রয়েছে সেটিতে আমরা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সব সময় সহযোগিতা করছি। এ সহযোগিতার ধারা অব্যাহত থাকবে।