লকডাউনে দৌলতদিয়া ঘাট !
যে ঘাট দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ ও যানবাহন নদী পার হয়, সেই ঘাট এখন জনমানব শূন্য। ঘাটে নেই কোন যানবাহন। নেই কারো পদচারনা। এ যেন একেবারেই ভিন্ন এক ভূতুরে পরিবেশ। অলস বসে আছে ফেরিগুলো।
মরণব্যাধী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অপ্রতিরোধ্য ভাবে বেড়ে যাওয়ায় সারা দেশে চলছে সর্বাত্মক লকডাউন। আর তারই প্রভাব এসে পড়েছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষের প্রবেশদ্বার রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরি ঘাটে। সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে চিরচেনা রূপ হারিয়েছে ব্যস্ততম এই ঘাটটি।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) সকালে দৌলতদিয়া ঘাট এলাকাতে দেখা যায় জনমানব শূন্য। নিঃষ্প্রাণ ঘাট এলাকা। ঘাট এলাকাতে নেই কোন যানবাহন। জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরণের সেবা বন্ধ রেখেছে ঘাট কর্তৃপক্ষ। অ্যাম্বুলেন্স ছাড়া কোন যানবাহনই নদী পার হতে দেখা যায়নি। ফেরিগুলো অলস বসে আছে ঘাটে।
এ ছাড়া গোয়ালন্দ মোড়ে গিয়েও দেখা যায় একই চিত্র। পুরো এলাকা যানবাহন শূন্য। ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও দৌলতদিয়া-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কেও নেই কোন গাড়ি। স্থানীয় লোকাল বাস কিংবা ছোট কোন গাড়িও চোখে পড়েনি তেমন একটা। যাত্রীদেরও নেই তেমন আনাগোনা। সড়কে টহল দিতে দেখা গিয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যদের।
অন্যদিকে ঘাট এলাকা কঠোর নজরদারিতে রেখেছেন স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ। এদের নজরদারিতে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে পুরো দুর্বার গতিতে। বিনা প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হলেই গুণতে হচ্ছে জরিমানা। কোন ধরণের নিয়ম ভঙ্গ করলেই শাস্তি।
বাগেরহাট থেকে ছেড়ে আসা অ্যাম্বুলেন্স চালক সাকাব মাহমুদ বার্তা২৪.কমকে বলেন, দেশে সর্বাত্মক লকডাউন চলছে আমরা জানি। তাই মুমূর্ষু রোগী না হলে আমরা ঘর থেকে বের হচ্ছিনা। সরকার নির্দেশিত নির্দেশনা মেনে চলার চেষ্টা করছি।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, লকডাউন অমান্য করার কারো কোন ধরণের সুযোগ নেই। আমরা প্রশাসন সব সময়ই মাঠে রয়েছি। সরকার ঘোষিত সকল নির্দেশনা যাতে সবাই মেনে চলে তার জন্য প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। মানুষকে সচেতনও করা হচ্ছে। তাছাড়া যেহেতু ঘাটটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেহেতু আমরা এদিকে বিশেষ নজরদারি রেখেছি।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থার (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারি মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) ফিরোজ শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, ঘাট সবগুলো ফেরি নোঙর করা রয়েছে। জরুরি সেবা প্রদান বাদে সব ধরণের সেবা আমরা বন্ধ রেখেছি।