কেন্দুয়ায় তিন রঙের তরমুজ চাষে রুবেল মিল্কীর সাফল্য

  • নেত্রকোনা প্রতিনিধি, বার্তা২৪.কম, নেত্রকোনা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় এক ক্ষেতেই তিন রঙের তরমুজ চাষ করে নতুন গল্পের সূচনা করলেন কৃষক রুবেল মিল্কী।

রুবেল মিল্কীর গ্রামের বাড়ি উপজেলার বড়তলা গ্রামে। ইউটিউব চ্যানেল দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হন তিনি। কৃষক রুবেল মিল্কী একই ক্ষেতে হলুদ, কালো ও সবুজ রঙের তরমুজের চাষ করে এলাকায় তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। কেন্দুয়ায় কালো ও সবুজ রঙের তরমুজ চাষ হলেও হলুদ রঙের তরমুজ এটাই প্রথম।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে বড়তলা গ্রামে গেলে দেখা যায়, রুবেল মিল্কীর ক্ষেতের মাচায় দুলছে হলুদ, কালো ও সবুজ রঙের ছোট বড় অসংখ্য তরমুজ। বাহারী রঙের তরমুজ দেখতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীসহ সাধারণ মানুষ। এদের মধ্যে কেউ কেউ পরিবারের জন্য কিনে নিচ্ছেন রসালো ফলটি।

কৃষক রুবেল মিল্কী জানান, তার কুয়েত প্রবাসী ছোট ভাই শওকত মিল্কীর পরামর্শে ও ইউটিউব চ্যানেল দেখে বাড়ির পাশে প্রায় ৫০ শতক জমিতে এই ব্যতিক্রমী তরমুজ চাষে শুরু করেন। ঢাকা থেকে এই বীজ সংগ্রহ করেছেন। প্রথম অবস্থায় এই ফলচাষ করতে গিয়ে খরচ একটু বেশি হয়েছে তার। সম্প্রতি সময়ে উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিট শকের  প্রভাবে তরমুজ ক্ষেতের বহু ফল ঝরে গিয়েছে। ওই হিট শকের কবলে না পড়লে ফলন আরও বেশি হতো। উপরে হলুদ ভিতরে লাল আর উপরে সবুজ ভিতরে হলুদ খেতে সুস্বাদু তরমুজগুলো স্থানীয় বাজারে ভাল চাহিদা রয়েছে এবং দামও পাচ্ছেন ভালো। সব ফল তো স্থানীয় বাজারে বিক্রয় করা সম্ভব না। গাড়ি খুঁজছি দুই-তিন দিনের মধ্যে ঢাকায় পাঠাবো বলে জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

কৃষক রুবেল আরও বলেন, প্রায় ৫০ শতক জমিতে তরমুজ চাষ করতে গিয়ে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আশা করছি দুই থেকে আড়াই লাখ টাকা বিক্রি করতে পারব। গত শীত মৌসুমে ৭০ শতক জমিতে কোয়াস চাষ করেছিলাম। ফলন ভালো হয়েছিল। ৭০ হাজার টাকা খরচ করে প্রায় আড়াই লাখ টাকা বিক্রয় করেছিলাম। তরমুজও স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছি সাইজ অনুযায়ী দাম। প্রতি পিচ তরমুজ ১০০ টাকা থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি করতে পারছি।

কৃষি অফিসের লোকজনের পরামর্শ নিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে রুবেল জানান, কৃষি অফিসের লোকজন আমাদের এলাকায় আসে না। কেন্দুয়ায় গিয়ে আমিও সময় পাই না পরামর্শ নিতে। যতক্ষণে কেন্দুয়ায় যাব ততক্ষণে আমার অনেক কাজ করা যাবে।

বাবার কৃষি কাজে সহায়তা করেন কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী আতাহার আনাস মিল্কী ফাহিম।

ফাহিম বলেন, লেখাপড়ার পাশাপাশি বাবার কৃষিকাজে সাহায্য করি। ইউটিউব চ্যানেল দেখে কোন সময় কি প্রয়োগ করতে হবে বাবাকে জানালে তা প্রয়োগ করেন। ধান চাষ তো সবাই করে। আর ধান চাষে লাভ কম। তাই তরমুজ চাষ করেছি।

দর্শনার্থী মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য স্বাভাবিক তরমুজের চেয়েও এই তরমুজগুলো দেখতে সুন্দর খেতেও সুস্বাদু। তবে দাম একটু বেশি। দুই কেজি ওজনের একটি তরমুজ ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবুও ভালো যে এ রমজানে মজাদার ভিন্ন জাতের এ তরমুজটি আমরা পাচ্ছি। সাধারণ তরমুজের বাজারও তো চড়া।

কেন্দুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা একেএম শাহজাহান কবীর বলেন, কেন্দুয়ায় বানিজ্যিকভাবে তরমুজ চাষের বিষয়টি আগে আমার জানা ছিলো না, কেউ আমাকে জানায়নি, আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। রুবেল সাহেব যদি এধরণের তরমুজ চাষ করে থাকে, তবে তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়।