আমাদের বলাবলির মধ্যে কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকলেও আমাদের চেতনার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জহির উদ্দিন স্বপন।
শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইন্সটিটিউটে ঐক্য, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ফোরাম ফর বাংলাদেশ স্টাডিজ 'গুম-খুন থেকে জুলাই গণহত্যা: বিচারের চ্যালেঞ্জ' শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠকে তিনি একথা বলেন।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, পরাজিত শক্তি আমাদের ভুল উপস্থাপনের সুযোগ নিতে পারে। আমাদের বলাবলির মধ্যে কিছু ভুল-ভ্রান্তি থাকলেও আমাদের চেতনার মধ্যে কোন পার্থক্য নাই।
তিনি বলেন, বিচার প্রক্রিয়া একটি চলমান প্রক্রিয়া, রাষ্ট্র যতদিন থাকবে, সভ্যতা যতদিন থাকবে ততদিনই এটা চলমান থাকবে। সংস্কারও ততদিন চলতে থাকবে। উন্নয়ন একটা চলমান প্রক্রিয়া। কেউ যেন জনগণের অধিকার চর্চার ক্ষেত্রে শর্ত হিসেবে এটা হাজির না করি।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এই যে বিচার পাবার প্রশ্ন যখন আসে, আমরা উপস্থাপন এমনভাবে করি যে বিচার করার পর সব কিছু হবে, আগে বিচার। একই কথা কিন্তু আমরা বলি আগে সংস্কার করে নিতে, তারপরে সব কিছু। এর আগে কোন কথা নাই। বিচার না হওয়া পর্যন্ত কোন কথা নাই, সংস্কার না হওয়া পর্যন্ত কোন কথা নাই। একই কথা কিন্তু আমরা ফ্যাসিবাদ আমলেও শুনেছি যে, উন্নয়ন আগে। আগে উন্নয়ন করতে হবে তারপর জনগণ, ভোট ইত্যাদি।
জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, আমি বিশ্বাস করতে চাই, অন্তর্বর্তী সরকারের মধ্য থেকে যারা এটা বলেছেন তারা এটা বুঝাতে চাননি। হয়তো উপস্থাপনের ক্ষেত্রে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন। তবে এটা পরিষ্কার, অন্তর্বর্তী শব্দটার মধ্যেই এটা নিহিত আছে তা হচ্ছে এই, জনগণের মালিকানা ছিনতাই করে নিয়েছিল ফ্যাসিবাদ। সেই রাষ্ট্রের মালিকানা ফেরত দেয়ার কাজ চলছে, এর মাঝখানের সময়টাই হচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সময়। অন্তর্বর্তীলীন কথাটায় তাই। যত দ্রুত সম্ভব একটা অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা করা যার মধ্য দিয়ে জনগণ তার প্রকৃত রায়কে প্রকাশ করতে পারবে।
বিএনপি চেয়ারপার্সনের এই উপদেষ্টা বলেন, তবে হ্যাঁ, এটাকে নিশ্চিত করার জন্য যে সংস্কার দরকার, জরুরি, সে সংস্কার আমাদের করতে হবে। অতএব একটি অবাধ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করার জন্য অনিবার্য সংস্কারগুলোকে চিহ্নিত করা, সে প্রশ্নে ঐক্যমত সৃষ্টি করা এবং অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দেয়া, তারপর বাকি যে ঐক্যমতগুলো সৃষ্টি করছি আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়ে তারা আবার সেই সংস্কারগুলো বাস্তবায়ন করবে। এইভাবেই ঐক্য আসবে, সংস্কার আসবে এবং তা দ্রুত নির্বাচিত সরকারের মাধ্যমে বাস্তবায়ন হবে।